তিরস্কার
১৫ আগস্টে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ না করায় আ.লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর তিরস্কার
জাতির জনক ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ না করায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন সম্মুখ সারির নেতাদের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘তখন অনেক স্লোগান ছিল। কোথায় গেল সেই সব মানুষ? এমন একজনও ছিল না যিনি এই রক্তপাতের প্রতিবাদ করার সাহস দেখিয়েছেন। কেন তারা তা করতে পারেননি?’
মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক স্মরণসভায় ভাষণ দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব প্রশ্ন তুলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল দল যার এত সমর্থক ও নেতা ছিল, কিন্তু একজন মানুষও এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি।
তিনি উল্লেখ করেন, ১৫ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির মেঝেতে বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়ে ছিল।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) তাঁর সঙ্গে কিছু নেননি, তিনি তাঁর জনগণের জন্য সবকিছু রেখে গেছেন। তিনি জনগণের জন্য একটি দেশ, একটি জাতি, পরিচয় এবং আত্মপরিচয় রেখে গেছেন,’ বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন।
জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাফন (দাফনের কাফন) ত্রাণ বস্ত্র দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল যা দরিদ্র মানুষকে দেয়ার কথা ছিল।
আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা, মা, ভাইরা তাদের সঙ্গে কিছুই নেননি।এমনকি তাদের নামাজে জানাজাও করা হয়নি।’
‘আমার একটা প্রশ্ন আছে, অনেক নেতা এখানে (বিআইসিসিতে) আছেন। জাতির পিতা তাদের অনেককে ফোন করেছিলেন, তারা কী করেছিলেন,’ তিনি জিজ্ঞাসা করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে একজন মানুষ বেঁচে থাকতে সবাই পাশে থাকে, কিন্তু মৃত ব্যক্তির পাশে কেউ থাকে না। ‘এটি বেদনাদায়ক বাস্তবতা...আমি কিছুই আশা করি না...’।
আরও পড়ুন: জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধু সৌভাগ্যবান যে তিনি বঙ্গমাতাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেয়েছিলেন: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
ঘোড়ার মাংস হালাল: আদালত
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরী হাটে ঘোড়ার মাংস খাওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
আদালতের বিচারক মামলার এজাহারকারী ও বোদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিপন কুমার বসাক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহিদুল ইসলামকে তিরস্কার করেছেন। একই সঙ্গে বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান ও বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুস সোবহানকে দ্বায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মতিউর রহমান এই আদেশ দেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল সত্ত্বেও বিনা অপরাধে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমানের (৩৩) বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) ও পেনাল কোডের ২৭৩ ধারায় এজাহার দায়ের করা হয়। আদালত এজাহার দায়েরর জন্য এসআই লিপন কুমার বসাক এবং মামলার তদন্তে গাফিলতি পরিলক্ষিত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহিদুল ইসলামকে তিরস্কার করেন। ভবিষ্যতে মামলা তদন্তকালে নিজ দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সতর্ক করা হয়।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়া ও কুকুর উপহার দিল ভারত
আদালতের আদেশে আরও বলা হয়, আসামিদ্বয় ঘোড়ার মাংস হালাল মনে করে খাওয়ার জন্য ঘোড়া জবাই করেছিলেন। সহি বুখারীসহ একাধিক হাদিস শরীফে ঘোড়ার মাংস হালাল মর্মে উল্লেখ আছে। সেহেতু আসামিদ্বয় মাংস খাওয়ার উদ্দ্যেশে ঘোড়া জবাই করে কোনও অন্যায় করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয় না। মামলার প্রতিবেদনে এ নিয়ে কোনও সঠিক তথ্য না থাকায় আদালত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরী হাটে ঘোড়া জবাই করার অভিযোগে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমান (৩৩) নামে দুই যুবককে আটক করে। এ সময় ৩৫ কেজি ঘোড়ার মাংসও জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: ঘোড়ার পিঠে চড়ে ‘ভিক্ষা’ করেন বাচ্চা
জব্দকৃত মাংস থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে বাকি মাংস বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানের উপস্থিতিতে মাটি চাপা দেয়া হয়। পরদিন বোদা থানার এসআই লিপন কুমার বসাক বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলাহাজতে পাঠায়। সাতদিন হাজতবাসের পর ২৯ ডিসেম্বর আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন। ওই দিনই আদালত ঘোড়ার মাংস হালাল নাকি হারাম তা ব্যাখাপূর্বক বাদীসহ সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানকে প্রতিবেদন দিতে বলেন।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চলতি বছরের ৩০ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
৩ বছর আগে