পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরী হাটে ঘোড়ার মাংস খাওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
আদালতের বিচারক মামলার এজাহারকারী ও বোদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিপন কুমার বসাক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহিদুল ইসলামকে তিরস্কার করেছেন। একই সঙ্গে বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান ও বোদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুস সোবহানকে দ্বায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মতিউর রহমান এই আদেশ দেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল সত্ত্বেও বিনা অপরাধে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমানের (৩৩) বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) ও পেনাল কোডের ২৭৩ ধারায় এজাহার দায়ের করা হয়। আদালত এজাহার দায়েরর জন্য এসআই লিপন কুমার বসাক এবং মামলার তদন্তে গাফিলতি পরিলক্ষিত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহিদুল ইসলামকে তিরস্কার করেন। ভবিষ্যতে মামলা তদন্তকালে নিজ দায়িত্ব পালনে সজাগ থাকতে সতর্ক করা হয়।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়া ও কুকুর উপহার দিল ভারত
আদালতের আদেশে আরও বলা হয়, আসামিদ্বয় ঘোড়ার মাংস হালাল মনে করে খাওয়ার জন্য ঘোড়া জবাই করেছিলেন। সহি বুখারীসহ একাধিক হাদিস শরীফে ঘোড়ার মাংস হালাল মর্মে উল্লেখ আছে। সেহেতু আসামিদ্বয় মাংস খাওয়ার উদ্দ্যেশে ঘোড়া জবাই করে কোনও অন্যায় করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয় না। মামলার প্রতিবেদনে এ নিয়ে কোনও সঠিক তথ্য না থাকায় আদালত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরী হাটে ঘোড়া জবাই করার অভিযোগে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমান (৩৩) নামে দুই যুবককে আটক করে। এ সময় ৩৫ কেজি ঘোড়ার মাংসও জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: ঘোড়ার পিঠে চড়ে ‘ভিক্ষা’ করেন বাচ্চা
জব্দকৃত মাংস থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে বাকি মাংস বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানের উপস্থিতিতে মাটি চাপা দেয়া হয়। পরদিন বোদা থানার এসআই লিপন কুমার বসাক বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলাহাজতে পাঠায়। সাতদিন হাজতবাসের পর ২৯ ডিসেম্বর আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন। ওই দিনই আদালত ঘোড়ার মাংস হালাল নাকি হারাম তা ব্যাখাপূর্বক বাদীসহ সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানকে প্রতিবেদন দিতে বলেন।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চলতি বছরের ৩০ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।