বাঁধের ওপর আশ্রয়
ভাঙনে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে বাঁধে আশ্রয়!
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নদ-নদীর পানি বাড়া-কমার পাশাপাশি ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। ভাঙনের শিকার হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানো এসব পরিবার স্থান নিয়েছে ওয়াপদার বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খোলা আকাশের নিচে।
উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার, গঙ্গাধর ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীর সারা বছর ধরে ভাঙলেও এখন বন্যার পানি বাড়া-কমার সাথে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত এক সপ্তাহে দুধকুমার নদের ভাঙনে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড় মিনাবাজার এলাকা, হাজীর মোড়, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়মানি, বেরুবাড়ি ইউনিয়নের ফান্দের চর এলাকায় প্রায় ৫০টি বাড়ি নদীতে চলে গেছে। আর এক মাসে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড়বাড়ি, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানিরকুটি, ওয়াপদাঘাট, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চরবেরুবাড়ীসহ কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদ, শতশত বিঘা আবাদী জমি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে গঙ্গাধর নদীর তীব্র ভাঙন, দিশেহারা ৩ গ্রামের মানুষ
এদিকে, গঙ্গাধর নদীর ভাঙনে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের রঘুর ভিটা, কৃষ্ণপুর, রাম দত্ত এলাকার প্রায় ২০টি বাড়ি ও আবাদী জমি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙন অব্যাহত রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের নারায়ণপুর ও নুনখাওয়া ইউনিয়নে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়নের হাজীর মোড় এলাকার মামুনুর রশিদ জানান, গেল এক সপ্তাহ জুড়ে দুধকুমার নদের ভাঙন বেড়ে গেছে। এতে করে নদের তীরবর্তী এলাকার বসত ভিটা, আবাদী জমি নদের গর্ভে চলে যাচ্ছে।
বেরুবাড়ি ইউনিয়নের ফান্দেরচর এলাকার মজিদুল ইসলাম জানান, একমাস থেকে ফান্দের চর এলাকায় তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরের এক তৃতীয়াংশ দুধকুমার নদে বিলিন হয়েছে।
বল্লভের খাষ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেন জানান, গঙ্গাধরের ভাঙনে তার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। বসত ভিটা হারানো কিছু পরিবার স্থানীয় স্কুল ঘরে কিছু পরিবার খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আব্দুলাহ আল ওয়ালিদ মাছুম জানান, প্রায় দুইমাস থেকে দুধকুমার নদের ভাঙন তীব্র হয়েছে। তার ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এসব মানুষ অসহায়ভাবে দিন যাপন করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তাদের জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম জানান, ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন: তিস্তার ভাঙন: কুড়িগ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক মো. মোক্তার হোসেন জানান, ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় আপদকালীন ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা তা আমরা দেখছি।
৩ বছর আগে