ইলিশ মাছ
ধার-দেনা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলের
ইলিশ মাছের প্রজনন বাড়াতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রবিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরা। ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলে নতুন উদ্যমে নদীতে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন। মাছঘাট ও জেলে পল্লিতে দেখা গেছে খুশির আমেজ। বিগত দিনের ধার-দেনা মিটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন জেলেরা।
রবিবার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগে কয়েকদিন ধরে চলে জেলেদের প্রস্তুতি। ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা মেঘনা নদীর মাছঘাটে চোখে পড়ছিল জেলেদের প্রস্তুতি। কেউ নৌকা মেরামত করছিলেন, কেউবা ট্রলারে রং (আলকাতরা) করছিলেন। আবার কেউ শেষ সময়ে ইঞ্জিনের খুঁটিনাটি ত্রুটিগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছিলেন। জেলেরা তাদের নৌকা, জাল গুছিয়ে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। তবে অপেক্ষার অবসান ঘটে রবিবার রাত ১২টার পর। নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমে পড়েন জেলেরা। প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পেলে ২২ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে সব ধার-দেনা কাটিয়ে উঠার স্বপ্ন দেখছেন জেলেরা। মাছের আড়ৎগুলোতে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এমনটাই মনে করছেন আড়ৎদাররাও।
জেলেরা জানিয়েছেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার জন্য গেল ১৩ অক্টোবর থেকে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞার জারি করা হয়। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়ে। বিকল্প কোনো কর্ম সংস্থান না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে গত ২২ দিন জেলেদের চরম দুর্ভোগে দিন কাটে। অনেকে ধার-দেনা করে সংসার চালাতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখন সময় এসেছে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার। প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ পেলে ঋণ শোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে মনে করছেন জেলেরা।
মৎস্য বিভাগের হিসেবে, ভোলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৭ জন। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সরকারি ভিজিএফের ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ জেলের জন্য। নিবন্ধিত জেলের বাইরে আরও লক্ষাধিক জেলে রয়েছেন। তাই সব জেলের ভাগ্যে চাল জুটেনি।
১ মাস আগে
ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে পড়ে ফেরির লষ্কর নিখোঁজ
ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার তেঁতুলিয়া নদীতে পড়ে ‘কৃষ্ণচূড়া ফেরি’র এক লষ্করের নিখোঁজ হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটে। ভোলা-বরিশাল নৌরুটে চলাচল করে ‘কৃষ্ণচূড়া ফেরি’।
নিখোঁজ আমিরুল ইসলাম (২৫) ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সালতা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, এ ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ ও কোস্ট গার্ড যৌথ অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু বিকাল পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় নদী থেকে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে ফেরি কৃষ্ণচূড়া লোড হচ্ছিল। লোড শেষে ফেরিটি বরিশালের লাহারহাট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। ফেরিতে গাড়ি লোড হওয়ার একপর্যায়ে লষ্কর আমিরুল ইসলাম ফেরির পাশ দিয়ে ভাসমান একটি ইলিশ মাছ দেখতে পান।ওই ইলিশ মাছটি উঠাতে গিয়ে ফেরি থেকে পা পিছলে নদীতে পরে যান তিনি। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় মুহুর্তের মধ্যে তিনি ফেরির নিচে চলে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করতে ফেরিতে থাকা অন্য স্টাফরা এগিয়ে আসলেও আমিরুল পানিতে তলিয়ে যায়।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ডুবুরি দল নিখোঁজ আমিরুলকে উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
ভোলা ফায়ার সার্ভিসের সদস্য মো. হাফিজুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে ভোলা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধার অভিযান চালায়।
তিনি বলেন, তবে ভোলায় ডুবুরি দল না থাকায় বরিশাল থেকে একটি ডুবুরি দল এসেছে। তারা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির ভেদুরিা-লাহারহাট ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) কাওছার আহমেদ খান জানান, বিকাল পর্যন্ত নিখোঁজ আমিনুলের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাকে উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবি, নিখোঁজ ৩
নিউজিল্যান্ডে তিমির সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাডুবে নিহত ২, নিখোঁজ ৩
২ বছর আগে
ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম চড়া
ভরা মৌসুমেও দাম বেশি হওয়া খুলনায় ইলিশ মাছ সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। বিভিন্ন বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় দাম কমার আশায় আছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা।
খুলনার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ জুলাই থেকে ইলিশ ধরা শুরু হলেও চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ কম থাকাতে এখন প্রতিটি পাইকারি ও খুচরা বাজারে ইলিশ দাম বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেকেই বাজারে যাচ্ছেন কিন্তু ইলিশ না কিনে ফিরছেন।
খুলনার গল্লামারি বাজার, সন্ধ্যা বাজার, নিউমার্কেট বাজার, রুপসা বাজার, নতুন বাজার, বয়রা বাজার, খালিশপুর বাজারসহ সকল বাজারে ইলিশের দাম চড়া।
আরও পড়ুন: তীব্র খরায় বাগেরহাটে আমন উৎপাদন ব্যাহত
খুলনার পাইকারি মাছ বাজারের দেড় কেজি ইলিশ প্রতি মণ (৫৫ হাজার থেকে ৫৭ হাজার) টাকা, এক কেজি ইলিশ প্রতি মণ (৫০ হাজার থেকে ৫২ হাজার) টাকা, ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ (৪৩ হাজার থেকে ৪৪ হাজার) টাকা এবং ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ (৩২ হাজার থেকে ৩৩ হাজার) টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফলে বড় ইলিশ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ভাগ্যে জুটছে না।
খুলনার ৫ নং ঘাটে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের আওতাধীন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং রূপসা মাছ বাজার খুলনায় পাইকারি ইলিশের উল্লেখযোগ্য দুটি ব্যবসা কেন্দ্র।
এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ছয় দশক ধরে পাইকারি মৎস্য বিক্রয় করছেন শেখ সাইদুল ইসলাম। ১৯৫৯ সাল থেকে তার বাবা এই ব্যবসা শুরু করেন এবং বাবার হাত ধরে তিনি এই ব্যবসায় আসেন। তিনি ছাড়াও এই কেন্দ্রে ছয় জন মৎস্য ব্যবসায়ী (মহাজন) রয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
শেখ সাইদুল ইউএনবিকে জানান, দক্ষিণ বাংলার বরিশাল, বরগুনা, ভোলা থেকে এখানে ট্রলারে করে ইলিশ মাছ আসে। যা সকাল ১০টার মধ্যে খুচরা বিক্রেতারা ক্রয় করে বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যায়। কিন্তু এখন সড়ক ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় জেলেরাই ট্রাক ও পিকআপে করে ইলিশ নিয়ে যায়। আগে মহাজনরা মাছ বিক্রি করে পাঁচ শতাংশ কমিশন পেত, এখন সেটি তিন শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি জানান, গত বছর তিনি আট কোটি টাকার মাছ বিক্রি করলেও তেমন মুনাফা অর্জন করতে পারেননি।
এর মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর ফলে আরেক দফা ইলিশের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদীতে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে যা ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘অপরিকল্পিত’ শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মরে যাচ্ছে শত শত গাছ
খুলনা জেলার মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, এবার ইলিশের দাম বেশি হওয়ার কারণ ডিজেলের (তেল) দাম বৃদ্ধি, আশানুরূপ মাছ না পাওয়া এবং একশ্রেণির ধনী মানুষের নিম্নবিত্তের দিকে না তাকিয়ে ফ্রিজে ইলিশ কিনে ভর্তি করে রাখা।
উল্লেখ, গত ১ নভেম্বর ২০২১ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। ১ জুলাই থেকে মাছ ধরা শুরু হলেও গত বছরের তুলনায় এবারের উৎপাদন কম। আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের শেষ দিন পর্যন্ত মা ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
২ বছর আগে
নিষেধাজ্ঞার দুই মাস পর আবার ইলিশ ধরা শুরু
ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শনিবার মধ্যরাতে শেষ হওয়ায় জেলেরা আবার মাছ ধরার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার জেলেরা মাছ ধরার জাল ও ট্রলার তৈরি করে রাত ১২টার পর নদীতে ইলিশ ধরা শুরু করছেন।
ইউএনবি চাঁদপুর সংবাদদাতা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সারাদেশের পাঁচটি অভয়ারণ্যে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মধ্যরাত থেকে প্রায় ৫২ হাজার জেলে মাছ ধরা আবার শুরু করায় জেলে পাড়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
বিগত বছরের মতো এবারও চাঁদপুরের মতলব উত্তর সাতনল থেকে হাইমচর চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কাজ বন্ধ থাকায় ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলে সরকারি সহায়তা পেয়েছেন।
শনিবার সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, হরিণা, বাহরিয়া, লক্ষ্মীপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় জেলেরা মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে তারা তাদের মাছ ধরার নৌকা মেরামত করেছেন।
ইমাম হোসেন ব্যাপারী (৬২) নামে এক জেলে জানান, নদীতে লুকানো চর থাকায় ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়তে পারে।
এর আগে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে গত ১ মার্চ থেকে দুই মাসের জন্য ইলিশ ধরা, বিক্রি, মজুদ ও পরিবহনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী- ছয়টি জেলার ইলিশের অভয়ারণ্য এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান
২ বছর আগে
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন: বেনাপোলে বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শনিবার সকাল থেকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। মহাত্মা গান্ধীর ১৫৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে ভারতে সরকারী ছুটি থাকায় এই আমদানী রপ্তনী কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আমদানী রপ্তানী বন্ধ থাকায় দু দেশের বন্ধ এলাকায় আটকা পড়েছে শতশত পণ্য বোঝাই ট্রাক। যার অধিকাংশই বাংলাদেশের রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল।
আরও পড়ুন: অটোমেশনের আওতায় এলো বেনাপোল বন্দর
পেট্রাপোল বন্দরের স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র জানান, আমাদের ভারতের মহাত্মা গান্ধীর ১৫৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে সরকারী ছুটি থাকায় বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে আমদানী রপ্তানী বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। রবিবার সকাল থেকে আমদানী রপ্তানী বাণিজ্য আবার স্বাভাবিক গতিতে চলবে।
বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, ভারতের মহাত্মা গান্ধীর ১৫৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সে দেশে সরকারী ছুটি থাকায় বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আজ শনিবার সকাল থেকে আমদানী রপ্তানী বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
বন্দর দিয়ে শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ রপ্তানী হচ্ছে ভারতে। তবে বেনাপোল বন্দরের লোড আনলোড প্রক্রিয়া স্বাভাবিক আছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজু আহম্মেদ জানান, দু দেশের মধ্যে আমদানী রপ্তানী বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও পাসপোর্ট যাত্রী পারপার স্বাভাবিক রয়েছে।
আরও পড়ুন: জন্মাষ্টমীতে বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ
৩ বছর আগে
ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে: মন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন যে, এ বছর নদীতে ইলিশ উৎপাদন কিছুটা কমেছে। কিন্তু এর আগে ক্রমাগতভাবে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। এ বছর ঠিক কারণে দেশজুড়ে ইলিশের উৎপাদন কমেছে তার কারণ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেড পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দিপু মনি বলেন, ‘কি কারণে ইলিশের উৎপাদন কমেছে, এটি মৎস্য বিষেষজ্ঞরা আমাদেরকে গবেষণার মাধ্যমে পরামর্শ দিলে, সে অনুযায়ী আমরা নিয়শ্চয়ই উদ্যোগ গ্রহণ করবো।’
আরও পড়ুন: ইলিশ নিয়ে কথকতা
মন্ত্রী জানান, আমরা সব সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় একসঙ্গে কাজ করেছি। তার নির্দেশনায় কাজ করে বিগত বছরে ইলিশের উৎপাদন ক্রমাগতভাবে বহুগুণ বৃদ্ধি করতে পেরেছি। এ বছর ইলিশ উৎপাদন কম হওয়ার নিশ্চয়ই কোন প্রাকৃতিক কারণ থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করেই এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ইলিশের জালে ৫২২ কেজি ওজনের শাপলা পাতা মাছ!
৩ বছর আগে
ইলিশ নিয়ে কথকতা
ইলিশ নিয়ে অতি পুরাতন রূপকথাসম এক কল্পকাহিনী দিয়ে শুরু করা যাক। একদিন নদীর পাড়ে বসবাসকারী এক হরিণের সাধ হলো ইলিশের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় নামার। ইলিশকে বলতেই সে রাজি হয়ে গেল। শর্ত ছিল যে হারবে তার শরীরের এক টুকরো বিজয়ীকে দিতে হবে। তীব্র সেই প্রতিযোগিতায় জয় হলো ইলিশের। হার মেনে নিল হরিণ। নিজের শরীর থেকে কিছুটা মাংস পুরস্কার হিসেবে ইলিশের গায়ে তুলে দিল। সেই থেকেই ইলিশ মাছ তার শরীরের গাদার অংশে গর্বভরে বয়ে বেড়াচ্ছে হরিণের মাংস। সেই ছোটবেলা থেকেই দাদী-নানীর কাছ থেকে এই কাহিনী শুনেই বড় হয়েছি। আজও ইলিশের গায়ে সেই হরিণের মাংসের দেখা মেলে!
এই গল্প থেকে একটা কথা পরিস্কার হলো যে ইলিশ গভীর জলের অতি দ্রুত গতির মাছ। ইলিশ তার জীবনকালে অধিকাংশ সময় সাগরে থাকলেও ডিম ছাড়ার সময় হলে সাগর থেকে (আমাদের দেশের বেলায় বঙ্গোপসাগর) চলে আসে মিঠা পানির নদীতে। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রথমে মেঘনা, সেখান থেকে পদ্মা। কখনো ধীরে, কখনো বা দৌড়ে চলে একেবারে আরিচাঘাট পর্যন্ত। এই চলার পথে মিঠা পানির সংস্পর্শে ইলিশের গা থেকে নোনা বিলীন হতে থাকে।
কাজেই ইলিশ ডিম ছাড়ার সময় ও পরে যত বেশিদূর উজানে দৌড়াবে তত বেশি তার স্বাদ হবে। তার আকার পরিবর্তন হবে, দেখতে হবে নাদুস-নুদুস, অতি আকর্ষণীয়। বলা হয় নদীর পলিমাটি, বিশেষ করে পদ্মার মাটি না খেলে ইলিশের শরীরে তেল জমে না, স্বাদও হয় না। এ কারণেই পদ্মার ইলিশের যে অনুপম স্বাদ তা অন্য কোন নদীর ইলিশে পাওয়া যায় না।
দুঃখের বিষয় পদ্মা নদীতে এখন আর ইলিশ তেমন পাওয়া যায় না। সাগর মুখেই এখন জেলেরা ইলিশ ধরে নেয়। সাগরস্থল পেরিয়ে মেঘনায় যখন আসে সেখানেই তার যাত্রা শেষ হয়ে যায়। পদ্মা নদীতে আসার তেমন সুযোগ হয় না। কাজেই মাওয়া ঘাটে বা ঢাকার বাজারে পদ্মার ইলিশ বলে যে মাছ গ্রাহকের থলিতে গছিয়ে দেয়া হয় তার প্রায় পুরোটাই ফাঁকি।
আমরা যারা পদ্মা পাড়ের মানুষ, তারা জানি কোনটা কোন নদীর মাছ। ছোটবেলায় প্রথম যেদিন একা একা মাছ কেনার জন্য গ্রামের বাজারে গিয়েছিলাম, তার আগে পদ্মার ইলিশ সঠিকভাবে চেনার তালিম দেয়া হয়েছিল।
ছোট মুখ, চওড়া পিঠ এটাই হলো পদ্মার ইলিশের প্রধান চেহারা। মেঘনাসহ অন্য নদীর মাছ লম্বাটে মুখ, লম্বা দেহ নধরকান্তি হবে না। মাছ কিনে দুরু দুরু বুকে মায়ের মাছ কাটার বটির সামনে দাঁড়াতাম পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য। বটিতে এক কোপ দিতেই মা বুঝে ফেলতেন এটা পদ্মার মাছ কিনা। পদ্মার মাছের ঘ্রাণও ভিন্নতর। সেটা রান্নার আগেও। আর ইলিশ যদি সত্যি পদ্মার হয় তবে সে রান্না করার সময়ই পাড়া-প্রতিবেশীদের জানান দেয়। এক ঘরে ইলিশ রান্না হলে তার ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের বারো ঘরে। আজ কি আমরা সেই ঘ্রাণ পাই? আমরা যারা পদ্মা পাড়ের বা পদ্মার কাছকাছি এলাকার মানুষ তাদের মুখে পদ্মার ইলিশ না হলে রসনার তৃপ্তি হয় না। ইলিশ খাব তো পদ্মার ইলিশই খাব। সেই পদ্মাও নেই, নেই তার ইলিশও। কাজেই ইলিশ এখন আর মুখে রোচে না।
ইলিশ নিয়ে আমাদের দেশে অনেক ধাপ্পাবাজি আছে। পদ্মার ইলিশ খাওয়ানোর কথা বলে হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলছে ক্রেতাদের পকেট কাটার উৎসব।
পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ বাংলার সংস্কৃতি বলে বিজ্ঞাপনের ঝলক তুলে চলছে ঠগবাজির বাণিজ্য। অনলাইনে, সুপারশপে, বাজারে, ফুটপাতে, ভ্যানে এই ভরা মৌসুমে ইলিশের ছড়াছড়ি। কেজি প্রতি মূল্য ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা। মজার ও বেদনার ব্যাপার হলো, এরা সবাই বলে: ‘নিয়ে যান, এটা পদ্মার ইলিশ।’ এমন কী নয়া দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে বাঙালি প্রধান এলাকার মাছের বাজারে ঘটা করে সাইন বোর্ড টাঙ্গানো আছে, এখানে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায়। দেড় কেজি কিংবা তারও চেয়ে বেশি ওজনের লোভনীয় আকারের ইলিশ মেলে সেখানে। চার বছর দিল্লি বাসে বহুবার সেই মাছের বাজারে গিয়েছি। তবে পদ্মার ইলিশের সেই ফাঁদে পা দেইনি।
জানি, পদ্মা নদীতে আর তেমন ইলিশ আসবে না। জানি ইলিশের মৌ মৌ সেই ঘ্রাণ পাড়াজুড়ে আর কখনো ছড়িয়ে পড়বে না। তবু ইলিশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে পদ্মা। সেটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।
ফরিদ হোসেন: উপদেষ্টা সম্পাদক, ইউএনবি
আরও পড়ুন: কমছে পদ্মার ইলিশ, বাড়ছে দাম
বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
নিষেধাজ্ঞা শেষে পদ্মায় ইলিশ শিকারে গিয়ে হতাশ জেলেরা
৩ বছর আগে