ইলিশ মাছের প্রজনন বাড়াতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রবিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরা। ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলে নতুন উদ্যমে নদীতে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন। মাছঘাট ও জেলে পল্লিতে দেখা গেছে খুশির আমেজ। বিগত দিনের ধার-দেনা মিটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন জেলেরা।
রবিবার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগে কয়েকদিন ধরে চলে জেলেদের প্রস্তুতি। ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা মেঘনা নদীর মাছঘাটে চোখে পড়ছিল জেলেদের প্রস্তুতি। কেউ নৌকা মেরামত করছিলেন, কেউবা ট্রলারে রং (আলকাতরা) করছিলেন। আবার কেউ শেষ সময়ে ইঞ্জিনের খুঁটিনাটি ত্রুটিগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছিলেন। জেলেরা তাদের নৌকা, জাল গুছিয়ে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। তবে অপেক্ষার অবসান ঘটে রবিবার রাত ১২টার পর। নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমে পড়েন জেলেরা। প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পেলে ২২ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে সব ধার-দেনা কাটিয়ে উঠার স্বপ্ন দেখছেন জেলেরা। মাছের আড়ৎগুলোতে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এমনটাই মনে করছেন আড়ৎদাররাও।
জেলেরা জানিয়েছেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার জন্য গেল ১৩ অক্টোবর থেকে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞার জারি করা হয়। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়ে। বিকল্প কোনো কর্ম সংস্থান না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে গত ২২ দিন জেলেদের চরম দুর্ভোগে দিন কাটে। অনেকে ধার-দেনা করে সংসার চালাতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখন সময় এসেছে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার। প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ পেলে ঋণ শোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে মনে করছেন জেলেরা।
মৎস্য বিভাগের হিসেবে, ভোলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৭ জন। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সরকারি ভিজিএফের ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ জেলের জন্য। নিবন্ধিত জেলের বাইরে আরও লক্ষাধিক জেলে রয়েছেন। তাই সব জেলের ভাগ্যে চাল জুটেনি।