মৃত্যুহার
মা-শিশুর মৃত্যুহার কমাতে ৫০০ সরকারি স্বাস্থ্য ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা সেবা শুরু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, মা ও শিশুর মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে আমরা ৫০০টি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে ৪০০টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই ২৪ ঘণ্টা সেবা চালু করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব কনভেনশন হলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ৯-১৪ ডিসেম্বর ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’- পালন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর দেশে এখনও ৬৫ হাজার শিশু এবং সাড়ে ৪ হাজার মা মাতৃত্বকালীন মারা যায়। এই সংখ্যা অনেক। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার আমরা অন্তত পাঁচ ভাগ মা ও শিশু মৃত্যুহার কমাতে সক্ষম হয়েছি। তবুও এখনও বছরে এত মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘এখন আমাদের আগামীর লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যু হার ৭০ শতাংশ কমাতে হবে এবং শিশু মৃত্যুহার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। তবে, এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের অবশ্যই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে হবে, মায়েদের বাসায় প্রসবের পরিবর্তে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের দিকে মনোযোগী হতে হবে এবং সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রসমূহকে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস ব্যবস্থায় কাজ করতে হবে।’
বর্তমানে প্রাইভেট স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে সিজারিয়ান ব্যবস্থা বেড়ে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সিজার (অস্ত্রোপচার) করে বাচ্চা নেওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিনা কারণে অনেক মায়েরাও সিজার করে বাচ্চা নিতে আগ্রহী থাকেন। এটি কাম্য নয়।’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতের যন্ত্রপাতিও জলবায়ুবান্ধব হওয়া উচিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘একবার সিজার করে বাচ্চা নিলে ওই মায়ের পরবর্তীতে বাচ্চা প্রসবে সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও সারা জীবনের জন্য অন্যান্য সমস্যা নিয়ে চলতে হতে পারে। এটি এভাবে চলতে পারে না। দেশে বাড়িতে প্রসব এবং সিজার করে বাচ্চা নেওয়া অর্ধেকের বেশি কমাতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী ৯-১৪ ডিসেম্বর ছয় দিনব্যাপী পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের উদ্বোধন করেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ এবং ইউএনএফপিএ’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিস ক্রিস্টিাইন ব্লোকসসহ আরও অনেকে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু এনডিসি।
সভায় জুম অনলাইনে দেশের ৮০টি উপজেলা হাসপাতাল স্বাস্থ্য প্রতিনিধি যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘ভেক্টর বাহিত রোগ বৃদ্ধির জন্য জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী’
দেশের স্বাস্থ্যখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে: স্পিকার
১ বছর আগে
বাংলাদেশের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পানিতে ডুবে মৃত্যুহার কমাতে রেজ্যুলেশন
বিশ্বব্যাপী পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্দেশ্যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের যৌথ নেতৃত্বে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে।
সোমবার(২৯ মে) জেনেভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এ রেজ্যুলেশনটিতে ৭৪টি দেশ কোস্পন্সরশিপ করেছে।
রেজ্যুলেশনের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ তাদের বক্তব্যে স্বল্পোন্নত দেশসমূহে পানিতে ডুবে মৃত্যুহার সর্বাধিক উল্লেখ করে বলেন যে, অল্প খরচেই এ মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো ইতোমধ্যে শিশুদের সাঁতার শেখানোর মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে।
বাংলাদেশ তার বক্তব্যে বলেন, যে মৃত্যুহার কমাতে আইন প্রবর্তন, প্রজেক্ট গ্রহণ এবং অর্থ বরাদ্দ করার মাধ্যমে পানিতে ডুবে মৃত্যুহার কমাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।এ রেজ্যুলেশনে দ্রুততার সঙ্গে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট এজেন্সিসমূহ, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং এনজিওদের সমন্বয়ে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বাংলাদেশের ডা. নাজনীন আনোয়ার
বাংলাদেশে প্রতিদিন পানিতে ডুবে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩০ জন শিশু মারা যায়। ১৮ বছর বয়স সীমার বিবেচনায় এ মৃত্যুহার ৪০। এ দু’টি পরিসংখ্যানের আলোকে বলা যায়, এ মৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়া হলে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য ম্রিয়মান হয়ে যেতে পারে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশী মানুষ প্রাণ হারায়।
বিশ্বে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এ মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশী। এ রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার হবে যা পানিতে ডুবে মৃত্যুহার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ভাবমূর্তি বাড়বে বলে আশা করা যায়।
উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত প্রথম রেজ্যুলেশনও বাংলাদেশ এবং আয়ারল্যান্ডের উদ্যোগে গৃহীত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ত্যাগে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
১ বছর আগে
বজ্রপাতে মৃত্যুহার কমাতে সরকার কাজ করছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
বজ্রপাতের মত দুর্যোগে মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, ‘বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দেশবাসীকে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের আটটি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর স্থাপন করা হয়েছে। এটি সফল হলে জনসমাগম হয় এরূপ আরও বেশিসংখ্যক স্থানে লাইটনিং এরেস্টার বা বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হবে। তাছাড়া সরকার বজ্রপাতে যেখানে মৃত্যুর হার বেশি সেসব অঞ্চলে বজ্রপাত আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী শনিবার ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত 'বজ্রপাত' বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বাংলাদেশে ২০১৫ সাল থেকে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও দিন দিন বজ্রপাতের পরিমাণ বাড়ছে এবং এতে হতাহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। তাই ভবিষ্যতে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আব্দুল ওয়াহ্হাব। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স বিভাগ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকরা এবং বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা সেমিনারে অংশ নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, দুর্যোগে ঝুঁকি হ্রাসে জীবন ও সম্পদের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয়, টেকসই ও নিরাপদ দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তা হিসেবে ‘বজ্রপাত কেন এবং কিভাবে’ বিষয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম আরশাদ মোমেন, ‘বজ্রপাত থেকে জীবন বাঁচানো এবং সর্তকতা’ বিষয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জীবন পোদ্দার এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ফারুক আহমেদ অনুষ্ঠানে বজ্রপাতের মত দুর্যোগে সর্তকতা ও করণীয় বিষয়ে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বজ্রপাতে মৃত্যু ২
বজ্রপাতের সময় করণীয়
৩ বছর আগে