বজ্রপাতের মত দুর্যোগে মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, ‘বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দেশবাসীকে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের আটটি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর স্থাপন করা হয়েছে। এটি সফল হলে জনসমাগম হয় এরূপ আরও বেশিসংখ্যক স্থানে লাইটনিং এরেস্টার বা বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হবে। তাছাড়া সরকার বজ্রপাতে যেখানে মৃত্যুর হার বেশি সেসব অঞ্চলে বজ্রপাত আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী শনিবার ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত 'বজ্রপাত' বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বাংলাদেশে ২০১৫ সাল থেকে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও দিন দিন বজ্রপাতের পরিমাণ বাড়ছে এবং এতে হতাহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। তাই ভবিষ্যতে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আব্দুল ওয়াহ্হাব। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স বিভাগ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকরা এবং বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা সেমিনারে অংশ নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, দুর্যোগে ঝুঁকি হ্রাসে জীবন ও সম্পদের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয়, টেকসই ও নিরাপদ দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তা হিসেবে ‘বজ্রপাত কেন এবং কিভাবে’ বিষয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম আরশাদ মোমেন, ‘বজ্রপাত থেকে জীবন বাঁচানো এবং সর্তকতা’ বিষয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জীবন পোদ্দার এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ফারুক আহমেদ অনুষ্ঠানে বজ্রপাতের মত দুর্যোগে সর্তকতা ও করণীয় বিষয়ে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বজ্রপাতে মৃত্যু ২