সতর্কতা
আ'লীগের সতর্কতায় বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা বিফল: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের সতর্কতায় বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা বিফল হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গণমিছিলের নামে বিএনপি-জামায়াত ঢাকা শহরে একটা বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল।
কিন্তু পুরো শহর জুড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এরপরও বিএনপির প্রধান সহযোগী জামায়াতে ইসলামী পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ বাহিনীর ধৈর্য্যের কারণে তারা সেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উন্নত দেশগুলোই দায়ী: তথ্যমন্ত্রী
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড়ে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সব কথা বলেন।
'ঢাকায় শুক্রবার বিএনপির গণমিছিল কর্মসুচি থেকে পুলিশের ওপর জামায়াত-শিবিরের হামলার ঘটনা কেন হলো এবং পুলিশের কি প্রস্তুতি ছিল'-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে ১০ ডিসেম্বর বিএনপি বুঝতে পেরেছে তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। দশ লাখ মানুষের সমাবেশ করবে বলে তারা সেখানে বড়জোর ৫০-৬০ হাজার মানুষ জমায়েত করতে পেরেছে। এরপর থেকেই বিএনপি আসলে হতাশ।
এছাড়া তাদের রাজনীতি পুরোটাই ষড়যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। সেই কারণেই তারা একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'বিএনপি বিদেশিদের পদলেহন করার নীতি অবলম্বন করেছে। সেটি করেও কোনও লাভ হয়নি। তারা যেভাবে মনে করেছিল বিভিন্ন রাষ্ট্র বা দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের পক্ষে নানা ধরনের কথা বলবেন, আপনারাও দেখতে পারছেন, সেটি হয় নাই।'
ড. হাছান বলেন, 'তাদের (বিএনপি) রাজনীতিটা একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে- দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। দেশের জনগণ সেটা কোনোভাবেই হতে দেবে না। বিশৃঙ্খলা তৈরি করার উদ্দেশ্যেই তারা নানা ধরনের কর্মসূচি দিয়েছে।
সেই কর্মসূচিতে তাদের কর্মীদের যেভাবে আশা করেছিল সেভাবে হয়নি। তাদের রাজনীতি সেই একই জায়গায় আছে। গত ১০ ডিসেম্বরও তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এখনও সুযোগ পেলে একই কাজ করবে। তারা সেখান থেকে সরে আসতে পারেনি। তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।'
বিএনপিকে মোকাবিলার প্রশ্নে তিনি বলেন, '২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপির নাশকতা মোকাবিলা করেছি। বিএনপি কি করতে চায়, কতটুকু করতে পারে আমরা জানি। সেটা মোকাবিলা করার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কি করতে হবে সেটাও আমরা জানি। সুতরাং বিএনপি সেই পুরনো পরিস্থিতি আর কখনো সৃষ্টি করতে পারবে না।'
আরও পড়ুন: সাপের মতো খোলস বদলায় বিএনপি জোট: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির ডাকা গণমিছিল গাঁধার ডিম পাড়ার মতো হবে: তথ্যমন্ত্রী
ওমিক্রনের নতুন সংক্রমণরোধে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বাড়তি সতর্কতা
ওমিক্রনের নতুন সাব-ভেরিয়েন্টের (বিএফ.৭) সংক্রমণরোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, সাম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ওমিক্রনের সাব-ভেরিয়েন্ট বিএফ.৭ শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশেও তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত রবিবার দেশের সকল স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে ওমিক্রন বিএফ.৭ বৃদ্ধি: দেশের প্রবেশপথগুলোতে পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা
তিনি জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিমের সদস্যরা রুটিনমাফিক কাজ চলমান রেখেছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বন্দরে বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাফর ইকবাল জানান,করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রী আসা-যাওয়া এখনও বন্ধ আছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ওমিক্রনের সাব-ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে: আইসিডিডিআর,বি’র সমীক্ষা
বাংলাদেশে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
মার্কিন সতর্কতা সত্ত্বেও ওপেকের সিদ্ধান্তে তেল উৎপাদন কমাবে সৌদি ও আবুধাবি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্তকতাকে আমলে না নিয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তেল উৎপাদন কমানোর জন্য ওপেক এবং তার মিত্রদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে। এর আগে মার্কিন দূত বিশ্বের সামনে ‘অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা’ সম্পর্কে সতর্ক করেছিল।
সোমবার আবুধাবি আন্তর্জাতিক পেট্রোলিয়াম প্রদর্শনী ও সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবকে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোকে সমর্থন করতে দেখা যায়।
সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রী যুবরাজ আবদুল আজিজ বিন সালমান ইভেন্টের সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আসন্ন জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ২৪ নারী গৃহকর্মী উদ্ধার
যুবরাজ করতালি দিয়ে বললেন, ‘আমরা আমাদের ছাড়া অন্য কারও ওপর নির্ভরশীল নই।’
আমিরাতের জ্বালানি মন্ত্রী সুহেল আল-মাজরুই সেই কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন।
আল-মাজরুই বলেছেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারে যে ওপেক ও ওপেক+ এর সহকর্মীরা বিশ্বকে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে আগ্রহী। ‘তবে আমরা বিশ্বের একমাত্র তেল উৎপাদনকারী নই।’
ওপেক ও রাশিয়ার নেতৃত্বে অন্যান্য দেশগুলোর একটি ছোট কনফেডারেশন অক্টোবরের শুরু থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত দিনে ২ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমাতে সম্মত হয়েছিল।
সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওপেক জোর দিয়ে বলেছে যে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগতা থেকেই তাদের সিদ্ধান্ত এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিশ্লেষকরা পশ্চিমের মুদ্রাস্ফীতি এবং পরবর্তী সুদের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও তেলের সরবরাহ প্রভাবিত হওয়ার কারণে মন্দার আশঙ্কা করছেন।
রাষ্ট্রয়াত্ত্ব আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান আহমেদ আল জাবের জোর দিয়ে বলেছেন যে ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে রয়েছে’।
আমেরিকান রাজনীতিবিদরা ইতোমধ্যে পেট্রলের দাম বাড়ানোর সম্ভাব্য সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নৌপরিবহন খাতে সৌদি বিনিয়োগের আশ্বাস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গডড়ে এক গ্যালন গ্যাসোলিনের দাম এখন তিন দশমিক ৭৬ ডলার- যদিও তা জুন মাসে গ্যালনপ্রতি রেকর্ড পাঁচ ডলার থেকে কম। বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেল সোমবার ব্যারেল প্রতি ৯৫ ডলারে উঠেছিল।
জ্বালানি বিষয়ক মার্কিন দূত আমোস হোচস্টেইন বলেছেন, ‘আমি মনে করি দিনের শেষে, আমরা বিশ্বব্যাপী একটি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হচ্ছি’।
হচস্টেইন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইভেন্টের পরে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জুলাই মাসে সৌদি আরব সফর করেছিলেন এবং একটি বৈঠকের আগে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
সম্প্রতি সৌদি আরবকে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘তারা যা করেছে, ইতোমধ্যে তার প্রভাব পড়ছে।’
সৌদি আরব পাল্টা জবাব দিয়ে প্রকাশ্যে দাবি করেছে যে বাইডেন প্রশাসন ওপেক-এর তেল উৎপাদন কমাতে এক মাস সময় বাড়াতে চেয়েছে।
২০১৮ সালের সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগির জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রিয়াদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কে দূরত্ব এসেছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে যে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিব: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
মিয়ানমারের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মধ্য মিয়ানমারে তার শিরশ্ছেদ করা দেহ বিভৎসভাবে প্রদর্শনের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বৃহস্পতিবার বলেছেন, সেনাবাহিনী সামরিক শাসনের বিরোধিতাকে দমনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করা অনেকগুলো অপকর্মের সর্বশেষ ঘটনা এটি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং গ্রামীণ ম্যাগওয়ে অঞ্চলের তাউং মিন্ট গ্রামে তোলা ছবিতে দেখা যায়, ৪৬ বছর বয়সী স তুন মো-এর মাথাবিহীন দেহটি স্কুলের বন্ধ গেটের সামনে মাটিতে ফেলে রেখে তার মাথাটি ওপরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। গত বছর থেকে বন্ধ থাকা স্কুলটিও পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সামরিক সরকার বা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম কেউই এই শিক্ষকের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেনি।
গত বছর অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। দুই হাজার ৩০০ এর বেশি বেসামরিক মানুষকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয় এই জান্তা সরকারকে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস টুইটারে বলেছেন, ‘মিয়ানমার সামরিক শাসকদের দ্বারা ম্যাগওয়ে অঞ্চলে স্কুল শিক্ষককে গ্রেফতারের পর শিরোচ্ছেদ করে বিকৃতভাবে প্রকাশ্যে আনার খবরে আমরা হতবাক।’ ‘শিক্ষককে হত্যা সহ সকল নৃশংস সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দাবি করেন তিনি।’
সেপ্টেম্বরে, উত্তর-মধ্য মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে বৌদ্ধ বিহারের একটি স্কুলে হেলিকপ্টার হামলায় অন্তত সাতজন তরুণ ছাত্র নিহত হয়। সামরিক সরকার হামলার দায় অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার কমিটি জুন মাসে বলেছে, সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকে স্কুল ও শিক্ষা কর্মীদের ওপর ২৬০টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সব সময় একই দাবি করে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার অশান্ত হয়েছে। নাগরিকরা দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী মারাত্মক শক্তি প্রয়োগ করেছিল।জান্তা বাহিনীর নিপীড়ন ব্যাপকভাবে সশস্ত্র প্রতিরোধের দিকে পরিচালিত করে। যা পরবর্তীতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এটিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
দেশটির সেনাবাহিনী গ্রামাঞ্চলে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানকালে তারা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া এবং লক্ষাধিক মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া, এমনকি আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় কোনও সংস্থাকে তাদের মানবিক সহায়তার সামান্য বা কোনও প্রবেশাধিকার দেয়নি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালত মনে করছে যে ২০১৭ সালে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযানে সেখানে একটি নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে। এতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের প্রায় সাত লাখের বেশি সদস্যকে জীবন রক্ষার্থে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
নিহত শিক্ষক স টুন মো একজন প্রবীণ শিক্ষাবিদ ছিলেন।যিনি তার জন্মস্থান থিত নি নাউং গ্রামে দেশের গণতন্ত্রপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠিত একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেয়ার আগে সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
সামরিক শাসনের বিরোধী একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠন হলো জাতীয় ঐক্য সরকার। যারা নিজেকে দেশের বৈধ প্রশাসনিক সংস্থা হিসেবে দাবি করে। চলতি বছর দেশের কিছু অংশে একটি অন্তর্বর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে স্কুলগুলোর একটি নেটওয়ার্ক খোলা হয়েছে। তারা বিশ্বাস করেছিল নিজেদের রক্ষা করতে এটির প্রতি অনুগত সশস্ত্র মিলিশিয়ারা যথেষ্ট শক্তিশালী।
স টুন মো তার গ্রামের স্কুলে এবং নিকটবর্তী অন্য একটি স্কুলে গণিত পড়াতেন এবং থিট নি নাউং-এর প্রশাসনের সাথে জড়িত ছিলেন, যেখানে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি এর আগে ম্যাগওয়েতে একটি বেসরকারি স্কুলে ২০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। স্কুলটি ম্যাগওয়ে নামেও পরিচিত।
বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুতে দেরীতে একটি বিবৃতিতে এনইউজি-এর শিক্ষা শাখা শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তাকে এবং অন্যান্য নিহত শিক্ষকদের ‘বিপ্লবী নায়ক’ হিসেবে প্রশংসা করেছে এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
চলতি মাসে প্রায় ৯০ জন সরকারি সৈন্যের একটি বাহিনী অন্তত বেশ কয়েকটি গ্রাম্য এলাকায় অভিযান চালানোর সময় তার মৃত্যু ঘটে।
একজন গ্রামবাসী ফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে(এপি) জানিয়েছেন যে তিনি স টুন মো সহ প্রায় দুই ডজন গ্রামবাসীর মধ্যে ছিলেন যারা রবিবার সকাল সাড়ে নয়টায় একটি চিনাবাদাম খেতে একটি কুঁড়েঘরের পিছনে লুকিয়ে ছিলেন। যখন বেসামরিক নাগরিকদের সঙ্গে 80 টিরও বেশি সশস্ত্র সৈন্যের একটি দল এসে পৌঁছায়। আকাশে তাদের সামরিক অস্ত্র দিয়ে গুলি করছিল এবং তারা গাইড হিসেবে বেসামরিক লোকদের নিয়োগ করে অভিযানে অংশ নেয়।
কর্তৃপক্ষের শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা এড়াতে গ্রামবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছিলেন। কারণ তারা সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েছিল। তাদের ফোন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছিল তারা। এবং একজন অফিসারের নির্দেশে দল থেকে তিনজনকে আলাদা করেছিল। সে সময় কেবলমাত্র টুন মো স'কে নিয়ে গিয়েছিল।
গ্রামবাসী বলেছিলেন, ‘সে সময় আমাদের মাথা নত ছিল এবং আমরা তাদের দিকে তাকানোর সাহস করিনি। পরে একজন সৈন্য তাকে ডাকল এসো।’ ‘ মোটাসোটা এসো, আমাদের অনুসরণ কর,’ এবং তাকে নিয়ে গেল। সৈন্যরা তার সঙ্গে নম্র আচরণ করেছিল, তাই আমরা ভাবিনি যে এটি ঘটবে’।
তিনি বলেন, স তুন মোকে থিট নি নাউং থেকে এক কিলোমিটার (প্রায় এক মাইল) উত্তরে তাউং মিন্ট গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরের দিন তাকে সেখানে হত্যা করা হয়।
গ্রামবাসী আরও বলেন, ‘সোমবার সকালে জানতে পারি তাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন ভালো শিক্ষককে হারানো খুবই দুঃখজনক যার ওপর আমরা আমাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য নির্ভরশীল ছিলাম।’
তাউং মিন্ট গ্রামের আরেকজন গ্রামবাসী বলেছেন, সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি স তুন মো-এর লাশ দেখতে পান।
তাউং মিন্টের গ্রামবাসী বলেছেন , ‘প্রথমে আমি আমার বন্ধুদের ডেকেছিলাম। তারপরে আমি শরীরের দিকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে তাকিয়েছিলাম। আমি অবিলম্বে জানতাম যে এটি শিক্ষক স তুন মো। তিনি গত কয়েক মাসে একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে আমাদের গ্রামে যেতেন। তাই আমি তার মুখ চিনতে পেরেছি।’ যিনি নিজের নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করতে বলেছিলেন।
তার বন্ধুর তোলা ফটোতে শিক্ষকের শরীর ও মাথা দেখা গেছে। সু চির ছবি সম্বলিত একটি পুরনো প্রচারণার পোস্টারে মৃতদেহের উরু ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
গ্রামবাসীদের মতে, তার ডান হাত থেকে বিচ্ছিন্ন আঙ্গুলগুলো তার উরুর মধ্যে রাখা হয়েছিল। একটি তিন আঙুলের স্যালুট হল একটি অঙ্গভঙ্গি যা দেশের আইন অমান্য আন্দোলন দ্বারা গৃহীত হয়েছে।, যা ‘দ্য হাঙ্গার গেমস’ সিরিজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে।
রবিবার সৈন্যদের দ্বারা আংশিকভাবে পুড়িয়ে দেওয়া স্কুলের বাইরের দেওয়ালে একটি অশুভ সতর্কবাণীসহ গ্রাফিতি লেখা রয়েছে: ‘আমরা ফিরে আসব, তুমি (অপরাধী) যারা পালিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
ঝড়ের আশঙ্কায় সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত
স্থল নিম্নচাপ দুর্বল হলেও ঝড়ের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার আবহাওয়া অফিস এক বিশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের ওপর স্থল নিম্নচাপ আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে দুর্বল হয়ে একটি সুচিহ্নিত নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং মধ্যপ্রদেশের কেন্দ্রীয় অংশ ও এর সংলগ্ন এলাকায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে।
আরও পড়ুন:সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত
বুলেটিনে আরও উল্লেখ করা হয়, এটি আরও দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালন ঘটছে। ঝড়ো হাওয়া সামুদ্রিক বন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রভাব ফেলতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি আসতে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল এবং তাদের উপকূলীয় দ্বীপ ও চরগুলো জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
আরও পড়ুন:সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল
সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত
সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত
সম্ভাব্য ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, পূর্ব মধ্য-বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘণীভূত হতে পারে।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপে পরিণত ‘অশনি’, নামল সতর্ক সংকেত
এতে বলা হয়, এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। সমুন্দ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নামল ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
নামল সতর্ক সংকেত
সিডনিতে বন্যা: ৫০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ
বন্যায় অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর সিডনি এবং তার আশেপাশে শত শত বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
সিডনির স্টেট ইমার্জেন্সি সার্ভিস ম্যানেজার অ্যাশলে সুলিভান বলেছেন, জরুরি প্রতিক্রিয়া দলগুলো সিডনির বিভিন্ন এলাকার রাস্তা, বাড়ি ও গাড়িতে আটকে থাকা ১০০ জনকে উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের মণিপুরে ভূমিধসে নিহত বেড়ে ৪৭
১৬ মাসের মধ্যে এ এলাকায় এটি চতুর্থ বন্যা, যা অঞ্চলটিতে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি করেছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ডমিনিক পেরোটেট বলেছেন, ৫০ হাজার মানুষকে নিরাপদে বাড়ি ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়ার আদেশ এবং সতর্কতা দেয়া হয়েছে।
পেরোটেট আরও বলেন, দয়া করে সতর্ক থাকুন। আমাদের রাজ্য জুড়ে আকস্মিক বন্যার জন্য এখনও যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে হামলা, নিহত ৬
করোনার ৪র্থ ঢেউ: সতর্কতার আহ্বান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের
প্রায় চার মাস পর গত বুধবার দেশে একদিনে করোনা শনাক্ত আবার এক হাজার ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় মহামারির চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে।
তারা অমিক্রনের দুটি সাব-ভেরিয়েন্ট-বিএ.৪-৫ কে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কোভিড সংক্রমণের হার বেড়েছে বলে মনে করছেন। তাদের আশঙ্কা, আগামী সপ্তাহগুলোতে করোনা শনাক্ত আরও বাড়তে পারে, শুরু হতে পারে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন।
তবে নতুন ঢেউ আগেরগুলোর মতো মারাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, খুব বেশি সংখ্যক লোক সংক্রমণ বা টিকা দেয়ার মাধ্যমে কিছু ধরণের অ্যান্টিবডি অর্জন করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. রোবেদ আমিন, আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. এম মুশতাক হোসেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা মুজাহেরুল হক ইউএনবির সাথে আলাপকালে এসব পর্যবেক্ষণের কথা জানান।
তারা কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার ওপর জোর দেন। যার মধ্যে রয়েছে সবাইকে মাস্কের ব্যবহার এবং সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের সংক্রমণ কমাতে কোভিড ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজের কভারেজের আওতায় আনার জন্য ভ্যাকসিনেশন বৃদ্ধি করা।
বাংলাদেশে বুধবার ১ হাজার ১৩৫ এবং বৃহস্পতিবার ১ হাজার ৩১৯ জন নতুন করে করোনায় শনাক্ত হয়েছে।
এর আগে দেশে ২৫ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ দৈনিক ১ হাজারের বেশি (১ হাজার ৪০৯ জন) করোনা শনাক্ত হয়েছিল, যেখানে ১১ জন মারা গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ৯ হাজার ২১৪ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ১১ কোটি ৮৬ লাখের বেশি মানুষ এখন পর্যন্ত কোভিড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ পেয়েছে এবং ১২ কোটি ৮৯ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছে।
এছাড়া দেশে ২ কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। সরকার এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের কোভিড এর টিকা দিয়েছে।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ওমিক্রনের সাব-ভেরিয়েন্ট বিএ.৪-৫ বিশ্বব্যাপী অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। আমি মনে করি এই দুটি সাব-ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ আমাদের দেশে কোভিড শনাক্ত বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে। আমরা এটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিন সিকোয়েন্সিং রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।’
তিনি বলেন, ভাইরাসে আক্রান্তে বৃদ্ধি আরও অন্তত তিন সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে। তবে এই ঢেউ মারাত্মক নাও হতে পারে। যেহেতু ক্রমবর্ধমান শনাক্তের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এখনও খুব কম, আমরা ধরে নিতে পারি যে এই ঢেউ গুরুতর নাও হতে পারে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন গোষ্ঠী এখন বিভিন্ন ভাইরাসের ক্লাস্টার সংক্রমণ প্রত্যক্ষ করছে। লোকজন মাস্ক না পরে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি বজায় না রেখে এখানে এবং সেখানে ঘোরাফেরা করার কারণে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ছাড়াল
তিনি আরও বলেন, এখনও কোভিড সংক্রমণের আসল চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ ভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে এমন অনেক লোক কোভিড পরীক্ষা করছে না।
রোবেদ বলেন, কোভিড পরিস্থিতির আরও অবনতি হলেও আমরা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। প্রায় ২ হাজার হাসপাতালের বেড কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত।
তিনি জনগণকে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গ্রহণের আহ্বান জানান।
ডা. রোবেদ বলেন, এখনও অনেকে তৃতীয় ডোজ পাননি। টিকা দেয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ বন্ধ নাও হতে পারে, তবে এটি তীব্রতা কমাতে পারে। সুতরাং, বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের সহবাসজনিত রোগ আছে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ম কঠোরভাবে বজায় রাখার পাশাপাশি তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করা উচিত।
সমুদ্র বন্দরে সতর্কতা: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ঘনীভূত
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা লঘুচাপটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামানে ঘনীভূত হওয়ায় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
শনিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে না যেতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি, জনদুর্ভোগ
বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস এক পূর্বাভাসে বলেছে, ‘লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে স্থায়ী নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এবং উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।’
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ এবং রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, সিলেট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী ও পটুয়াখালী জেলাগুলির ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে,সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন: গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি, জনদুর্ভোগ
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ঘনীভূত হতে পারে
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট: যুক্তরাজ্যে নতুন সতর্কতা
দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ শনাক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট ঠেকোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে।
শনিবার যুক্তরাজ্যে দু’জনের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে শনাক্ত হওয়ার পর মাস্ক পড়া ও আন্তর্জাতিক যাত্রীদের পিসিআর পরীক্ষার বিষয়ে কঠোর নিয়ম জারি হয়েছে। শনিবার জার্মানি ও ইতালিতেও নতুন এই ভ্যারিয়েন্টর শনাক্ত পাওয়া গেছে। বেলজিয়াম, ইসরাইল এবং হংকংও ভ্রমণকারীদের মধ্যে এই সংক্রমণ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সংক্রামক বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন, যদি ওমিক্রন সংক্রমণ এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও থাকে তবে তিনি অবাক হবেন না।
এনবিসি টেলিভিশনে ফৌসি বলেছেন, ‘আমরা এখনও এটি শনাক্ত করতে পারিনি, কিন্তু যখন আপনার কাছে এমন একটি ভাইরাস যা ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলাচ্ছে, ফলে শেষ পর্যন্ত এটি সব জায়গায় চলে যেতে পারে।’
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তার দেশে দুজন ব্যক্তি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘ওমিক্রন’: বিশ্বজুড়ে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নতুন এই ভ্যারিন্টের বিস্তার ঠেকাতে এখনই আমাদের কার্যকর পদক্ষে নিতে হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি যাত্রীরা যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পরপরই তাদের পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে এবং তাদের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকতে হবে।