বিআইডব্লিউটিএ
১০ বছরে ২৬ হাজার ১৮১টি নদী তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ: নৌপ্রতিমন্ত্রী
২০১৪-২৪ সালের মধ্যে নদীর তীর থেকে ২৬ হাজার ১৮১টি ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এছাড়া এসময়ে ১ হাজার ১৬০ দশমিক ৬২ একর নদী তীরবর্তী দখল হওয়া জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে নৌপ্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
বিআইডব্লিউটিএ নদী তীরগুলোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান নৌপ্রতিমন্ত্রী।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাজধানী ঢাকার চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথের মোট দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী ও মিরকাদিমে চারটি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর রয়েছে যেগুলো অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী পরিবহনের জন্য এসব অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
মন্ত্রী বলেন, নদী পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। নদী পুনরুদ্ধারের জন্য সকল অংশীদারদের নিয়ে একটি আমব্রেলা ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউআইপি) প্রস্তাব করেছে বিশ্বব্যাংক।
এই প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত হবে এবং পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে।’
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মাহবুবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ এবং কনটেইনার পণ্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে হ্যান্ডলিং করা হয়।
৪ মাস আগে
ড্রেজিংয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ১০টি নৌপথ পরিত্যক্ত: এসসিআরএফ
নদী খনন ও ড্রেজিংয়ে (পলি অপসারণ) অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ১০টি নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। রবিবার (৩১ মার্চ) সংগঠনটির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার নদী খনন ও পলি অপসারণ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিলেও সংশ্লিষ্টদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে।
লঞ্চমালিক নেতাদের বরাত দিয়ে এসসিআরএফ আরও জানায়, ৩১টি নৌপথ সচল থাকলেও সেসব পথের বিভিন্ন স্থানে নাব্য সংকট রয়েছে। ফলে লঞ্চ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এ কারণে সচল নৌপথগুলোতে লঞ্চের সংখ্যা কমছে।
আরও পড়ুন: বিআইডব্লিউটিএ’র খননকৃত ১২টি নৌপথের অর্ধেক পরিত্যক্ত: এসসিআরএফ
নৌযাত্রী, নৌশ্রমিক ও অধিকার কর্মীদের বরাতে এসসিআরএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, নদী খনন ও পলি অপসারণে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নেই। এ কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ কাজে লাগামহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার এ খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিচ্ছে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ১৫ বছরেও নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জিত হয়নি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের মধ্যে ৪১টি স্বীকৃত নৌপথ থাকলেও ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনাল থেকে মাত্র ৩১টি রুটে বাণিজ্যিক লঞ্চসহ পণ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করছে। তীব্র নাব্য সংকটের কারণে বাকি নৌপথগুলোতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার লঞ্চের যাত্রীসংখ্যা এক বছরে ৩৪ শতাংশ কমেছে: এসসিআরএফ
৭ মাস আগে
নৌপথ-নদীবন্দর ঠিক আছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নৌপথ-নদীবন্দর ঠিক আছে কি না, এগুলো ব্যবহারে মানুষ উপকৃত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বুধবার (২০ মার্চ) নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের সাক্ষাতকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সমুদ্রগামী জাহাজে নাবিকদের বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র টোটাল ডেভেলপমেন্ট ও চারিত্রিক কাঠামো অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর(ডিপেন্ড) করে। যেখানে উন্নয়ন কাজ (ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক) হয়, সেখানে কিছু প্রশ্ন থাকতেই পারে। কাজটি সঠিকভাবে করছি কি না, সেটা হলো বড় বিষয়। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে পথ দেখানো। সে পথে সবাই হাঁটবে।
খালিদ মাহমুদ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু আপনার, আমার সবার। ৭৫- এর পর বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করেছিল। ৭৫- এর পর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাল ধরেছে। একাত্তরের আগে দলমত নির্বিশেষে বঙ্গবন্ধু সবার ছিলেন।
তিনি বলেন, এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাপোর্ট লাগে। আর সে সাপোর্টটি হলো বঙ্গবন্ধু। তিনি কীভাবে দেশ নিয়ে ভেবেছেন। সে বিষয়টি ধারণ করতে হবে। আমাদের মূল জায়গাটি হলো মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। সে আদর্শকে ধারণ করে কাজ করুন।
আরও পড়ুন: পানগাঁও আইসিটিকে মুখ থুবড়ে পড়তে যাবে না: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নদীতে সেতুর কম পিলার চান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
৭ মাস আগে
সন্দ্বীপে জেটি ও টার্মিনাল নির্মাণে বিআইডব্লিউটিএ ও ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চুক্তি সই
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে জেটি ও টার্মিনাল ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁয়ে বিআইডব্লিউটিএ এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তিপত্রে সই করেন বিআইডব্লিউটিএ'র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক এ এস এম আশরাফুজ্জামান এবং ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের পরিচালক তরফদার মো. রুহুল সাইফ।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নতুন জেটি ও টার্মিনাল ভবনের মাধ্যমে সন্দ্বীপের মানুষের দীর্ঘদিনের দুঃখ-কষ্ট ঘুচে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন এ জেটি নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসবে। পর্যটন ও অর্থনীতিতে ব্যাপক গতি সঞ্চারিত হবে।
তিনি বলেন, সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় সন্দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হচ্ছে। সন্দ্বীপে অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। সন্দ্বীপে ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জেটি আছে। সন্দ্বীপের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী রাতে চলাচলের জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে সন্দ্বীপ চ্যানেলে 'বয়া' বসানো হয়েছিল।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান তরফদার মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি ফাঁকা, আমদানি-রপ্তানিতে ভাটা
সন্দ্বীপ অংশে আরসিসি জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজটি করবে ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
উল্লেখ্য, সরকার দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের যাত্রীদের সুষ্ঠু ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতকরণ, নৌ-পর্যটন সুবিধাসহ আধুনিক ল্যান্ডিং সুবিধা দেওয়া, ক্রমবর্ধমান বাল্ক কার্গো এবং পণ্য ও মালামাল লোডিং-আনলোডিংয়ের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ ও টেকনাফ (সাবরাং ও জালিয়ার দ্বীপ) অংশের জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এসব কাজ বাস্তবায়ন করবে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ওই প্রকল্পের চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ অংশে আরসিসি জেটি ও টার্মিনাল ভবনসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নির্মাণ করা হবে। সন্দ্বীপ অংশে আরসিসি জেটিসহ ও টার্মিনাল ভবনসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নির্মাণে ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
২০২৫ সালের জুনের মধ্যে আরসিসি জেটি ও টার্মিনাল ভবন এর পাশাপাশি বাউন্ডারি ওয়াল, পার্কিং ইয়ার্ড, তীররক্ষাসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হবে। ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থ এর জেটি নির্মিত হবে।
সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণের জন্য ২৫ দশমিক ৮৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের সংস্থান রয়েছে। দোতলা বিশিষ্ট একটি টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনের প্রতিটি ফ্লোর হবে ২৭৭৭২ বর্গমিটারের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ ডিসেম্বর ২০২২ চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশের জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্দরে সার্ভিস জেটির উদ্বোধন
জেটিঘাট মেরামত: সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ
১০ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় হামুন: বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'হামুন' ক্রমশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বরিশালের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও চাঁদপুর জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। তবে বরিশাল নদীবন্দরে ২ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নদীবন্দরে এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় 'হামুন' তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
ভোলার উদ্দেশে নদী বন্দরে আসা যাত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। এখন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়ে নদীবন্দরে এসে দেখি সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আবার মেয়ের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
আরেক যাত্রী রবিন বলেন, জরুরি কাজের জন্য মেহেন্দিগঞ্জের ভাষানচরে যাওয়ার উদ্দেশে নদী বন্দরে এসেছিলাম। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি কোনো লঞ্চ যাবে না। এখন বাধ্য হয়ে সড়ক পথে যেতে হবে।
মেডিকেল কলেজের ছাত্র সাব্বির বলেন, বাড়ি যাওয়ার জন্য সহজে ছুটি মিলে না। অনেক কষ্ট করে আজ ছুটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। কিন্তু লঞ্চ ঘাটে এসে দেখি ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে সব লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা অনেকটা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।
১ বছর আগে
বিআইডব্লিউটিএ’র খননকৃত ১২টি নৌপথের অর্ধেক পরিত্যক্ত: এসসিআরএফ
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নয়নখাতের এক প্রকল্পের অধীনে খনন করা ১২টি নৌপথের অর্ধেকই ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় নাব্যতার অভাবে ওইসব নৌপথ যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করতে পারছে না।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়।
৫০৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং বিভাগ।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাত্রী ও পণ্যবাহী জলযানসমূহের নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১৬ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ১২টি নৌপথের নাব্যতা উন্নয়ন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নকাল ছিল অক্টোবর ২০১১ থেকে জুন ২০১৫।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নকালে প্রয়োজনীয় খনন করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে নিয়মিত পলি অপসারণের মাধ্যমে নাব্যতা বজায় রাখা হয়নি। ফলে অর্ধৈক নৌপথ পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে।
এসসিআরএফ জানায়, জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত দুই বছর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এছাড়া নৌ পরিবহন বিশেষজ্ঞ, নৌযান মালিক ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে।
তবে বিআইডব্লিউটিএ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এসসিআরএফ জানায়, প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হলেও সংস্থাটির র ড্রেজিং বিভাগ দীর্ঘ দুই মাসেও চিঠির জবাব দেয়নি।
‘১২ নৌপথ খনন’ প্রকল্পের আওতায় থাকা নৌপথগুলো হলো- ঢাকা-তালতলা-ডহুরী-জাজিরা-মাদারীপুর, লাহারহাট-ভেদুরিয়া, সাহেবেরহাট-টুঙ্গীবাড়ী-লাহারহাট, সদরঘাট-বিরুলিয়া, পাটুরিয়া-বাঘাবাড়ী, ডেমরা-ঘোড়াশাল-পলাশ, ঢাকা-রামচর-মাদারীপুর, ঢাকা-শরীয়তপুর, চাঁদপুর-নন্দীর বাজার-শিকারপুর-হুলারহাট, হুলারহাট-চরচাপিল-গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-দাউদকান্দি এবং ঢাকা-সুরেশ্বর-আঙ্গারিয়া-মাদারীপুর।
তবে এগুলোর মধ্যে সদরঘাট-বিরুলিয়া, ডেমরা-ঘোড়াশাল-পলাশ, হুলারহাট-চরচাপিল-গোপালগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ-দাউদকান্দি নৌপথ কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, নাব্যতা সংকটের কারণে আরো কয়েকটি নৌপথের শুরু থেকে শেষপর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতির কারণে সঠিকভাবে নদী খনন ও নৌপথ সংরক্ষণ হচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
১ বছর আগে
বিআইডব্লিউটিএ'র অতিরিক্ত পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছে দুদক
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বন্দর ও পরিবহন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন ওরফে আরিফ হাসনাতের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক (তদন্ত ও তদন্ত-২) হাফিজুল ইসলামকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিমের আরেক সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র মজুমদার।
বিআইডব্লিউটিএ'র পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর দুদকের এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক (তদন্ত ও অনুসন্ধান-২) মো. হাফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ চিঠি জারি করা হয়।
চিঠিতে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর এবং ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা নদীবন্দর (সদরঘাট) সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ'র প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত আরিফ উদ্দিন ওই সময় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের দায়িত্বে ছিলেন।
আরও পড়ুন: অবৈধ নিয়োগ: জেইউএসটি’র সাবেক ভিসির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
চিঠিতে আরিফ উদ্দিন বিআইডব্লিউটিএতে যোগদানের পর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত তার প্রাপ্ত বেতন-ভাতা এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সংক্রান্ত অফিস আদেশের বিবরণ চাওয়া হয়েছে।
আরিফ উদ্দিন ও তার স্ত্রী, সন্তান ও ভাইদের নামে ব্যবসা বা শেয়ার রাখার জন্য আবেদন ও অনুমোদনসংক্রান্ত সব রেকর্ড চেয়েছে দুদক।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, চলমান তদন্তের স্বার্থে উপরোক্ত তথ্য চেয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট বিআইডব্লিউটিএ'র কাছে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ তা দেয়নি। এ কারণে তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর বিআইডব্লিউটিএ'র পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর আরেকটি চিঠি পাঠিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে একই তথ্য ও নথি চাওয়া হয়।
তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ দুদকে কোনো তথ্য পাঠায়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (প্রশাসন) ওয়াকিল নওয়াজ ইউএনবিকে বলেন, গত মাসের ৩ আগস্ট পাঠানো দুদকের কাছ থেকে কোনো চিঠি পায়নি তার কার্যালয় (বিআইডব্লিউটিএ প্রধান কার্যালয়)। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে তার অফিস ইতোমধ্যে দ্বিতীয় চিঠি পেয়েছে, যা ৩ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়েছিল।
চলতি মাসের ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ কেন দুদককে তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে- জানতে চাইলে ওয়াকিল নেওয়াজ বলেন, তিনি এ বিষয়ে কাজ করছেন এবং খুব শিগগিরই দুদকের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবেন বলে আশা করছেন।
আরিফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনবিকে বলেন, কয়েক বছর আগে তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কিছুই পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর পর কেউ আবার আমার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ এনেছে। দুদক এখন বিষয়টি তদন্ত করছে। দুদকের অনুসন্ধান শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি তার অনুসন্ধান অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে।
আরও পড়ুন: রিজেন্টের সাহেদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার রায় ঘোষণা ২১ আগস্ট
কাস্টমসের অডিট কমিশনার এনামুলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
১ বছর আগে
পরিত্যক্ত নৌপথ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে বিআইডব্লিউটিএ
সরকার নদী খনন এবং পলি অপসারণের মাধ্যমে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌ চলাচলের জন্য নৌপথ পুনরুদ্ধার করার পরিকল্পনা করলেও ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মাত্র সাত হাজার কিলোমিটার নৌপথ চালু করতে পেরেছে।
এর মধ্যে ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে। এর মানে হলো পরিত্যক্ত নৌপথের মাত্র ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের একাধিক সূত্র থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রের মতে, ৫৩টি অভ্যন্তরীণ নৌপথ খননের একটি মহাপরিকল্পনার অধীনে প্রথম পর্যায়ে ২০২৫ সালের মধ্যে ২৪টি নৌপথের ১০ হাজার কিলোমিটার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহারকারী জাহাজ মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন বলছে, কাগজে-কলমে সাত হাজার কিলোমিটার নৌপথ সচল করা হয়েছে। যথাযথ ড্রেজিং ও পলি অপসারণের অভাবে অনেক নৌপথ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ছে।
অধিকারকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে খনন ও পলি অপসারণের কারণে নাব্যতা উন্নয়নে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খনন যন্ত্র ও ড্রেজার স্বল্পতার কারণে আগে নদী খনন ও ড্রেজিংয়ের কাজ ব্যাহত হলেও এখন তেমন কোনো সংকট নেই।
এমওএস সূত্র জানায়, গত ১৪ বছরে বিআইডব্লিউটিএ’র বহরে অক্সিলিয়ারি ভেসেলসহ প্রায় ৩৮টি নতুন ড্রেজার যুক্ত হয়েছে। এর বহরে ড্রেজারের সংখ্যা এখন ৪৫টি। এছাড়া বেসরকারি কোম্পানির ৫০টিরও বেশি ড্রেজার নদী খননে নিয়োজিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদে নৌপথের ২৭ লাখ যাত্রীর চাপ পড়বে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে: জাতীয় কমিটি
২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জাতীয় সংসদে বলেছিলেন যে নৌপথে নাব্যতা রক্ষার জন্য ড্রেজিংয়ের জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে ১৭৮টি নদী পুনঃড্রেজিং করে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌ-পথ পুনরুদ্ধার করা হবে। এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ মে নেত্রকোনায় ভোগাই-কংসা নদী খনন উদ্বোধনের সময় প্রতিমন্ত্রী একই পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কালীপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ভৈরব-কটিয়াদী নৌপথের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের উদ্বোধন শেষে তৎকালীন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছিলেন, সরকার সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩টি নৌপথ ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৪টি নৌপথ খনন করে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ পুনরুদ্ধার করার জন্য ২০০৯ সালে একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল এবং ২০১০ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। তবে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সায়েদুর রহমান স্বাক্ষরিত হিসাব থেকে জানা যায়, উন্নয়ন ও রাজস্ব তহবিলের আওতায় ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে ৮০০ কিলোমিটার নৌপথের নাব্যতা উন্নয়ন করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই সংস্থার নদী নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বর্ষায় ৬ হাজার কিলোমিটার এবং শুকনো মৌসুমে ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটার নৌপথে নৌযান চলাচল করেছে।
২০১৭ সালে এই অধিদপ্তরের আরেকটি চিঠিতে বলা হয়েছিল যে সরকারের বিশেষ মনোযোগের কারণে নৌপথের দৈর্ঘ্য ৫৪৭কিলোমিটার বেড়েছে।
উপরোক্ত পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রথম ছয় বছরে পরিত্যক্ত নৌপথ পুনরুদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএ কোনো সাফল্য পায়নি। এছাড়া দুই দপ্তরের দুই ধরনের তথ্যের কারণে নদী খনন ও পলি অপসারণে প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ খনন করা হয়েছে। এছাড়া, সমস্ত নৌপথে প্রয়োজনীয় নাব্যতা উন্নয়ন করা হয়নি। নদী খননের এই ধীর গতির কারণে ২০২৫ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা অসম্ভব।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন (যাত্রী পরিবহন) সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল ইউএনবিকে বলেন, ‘নদী খনন ও ড্রেজিং কাগজে কলমে করা হয়েছে। আসলে জলপথগুলো পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে বাড়ি যাবে: জাতীয় কমিটি
এছাড়া গত এক দশকে ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার অনেক রুট পরিত্যক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাদল।
তিনি আরও বলেন, তারা ড্রেজিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য একজন লঞ্চ মালিক ও একজন সাংবাদিককে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ তা উপেক্ষা করেছে।
পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক, পরিবেশবিদ, প্রকৌশলী এম. ইনামুল হক ইউএনবিকে বলেন, নদী খননের কিছু মেগা প্রকল্প জনস্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ অনেক নদী অপ্রয়োজনীয় খনন করছে।
তিনি আরও বলেন, কোনো প্রকল্প চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত নদীর আশপাশের এলাকার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করা।
এম ইনামুল আরও বলেন, নদী খনন ও পলি অপসারণের প্রক্রিয়া অপরিকল্পিত।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার দাবি করেন, নদী খনন সঠিকভাবে হয়েছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, প্রথম ধাপে ২০১০ সাল থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার নৌপথ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের ড্রেজিং নিয়ে অনিয়ম ও জবাবদিহিতার অভাবের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, যে কোনো খনন বা ড্রেজিংয়ের কাজ তৃতীয় পক্ষের হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ অনুযায়ী শুরু হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ কাজ শেষ করে নিয়মিত রুট রক্ষণাবেক্ষণ করে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নৌপথে দুর্ঘটনা রোধে দক্ষ মাস্টার-চালক তৈরির আহ্বান ১৫ বিশিষ্ট নাগরিকের
১ বছর আগে
সদরঘাটে পা হারানো কবিরকে এক কোটি টাকা দিতে রুল
সদরঘাটে লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে পা হারানো কবির হোসেনকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৫ জুন) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সচিব, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান ও পূবালী-১২ লঞ্চের মালিক আলী আজগর খালাসীসহ মোট ৮ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে সদরঘাটে লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপ খেয়ে পা হারানো খিলগাঁওয়ের মো. কবিরকে চিকিৎসা ও মানসিক ক্ষতি বাবদ এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে গত ৯ জুন বুধবার হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী তানভীর।
তার আগে ১৮ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘‘এই সংসার চলবে কী করে : লঞ্চের ধাক্কায় পা হারানো কবিরের স্ত্রী’’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেটি সংযুক্ত করে ওই নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, রাজধানীর নবাবপুরে বৈদ্যুতিক পাখার দোকানে দিনমজুরের কাজ করতেন কবির হোসেন (২৮)। ঈদুল ফিতরের এক দিন আগে ১ মে সকালে স্ত্রী, মেয়ে ও তিন বোনকে নিয়ে সদরঘাটে আসেন কবির হোসেন। ঘাটে পটুয়াখালীর একটি লঞ্চ থাকলেও সেটি কানায় কানায় ভরা থাকায় স্বজনদের নিয়ে লঞ্চে উঠতে পারেননি তিনি। অপেক্ষার পর পূবালী-১২ নামের এক লঞ্চ ঘাটে ভিড়তে শুরু করে। বেশি গতি থাকায় এটি পন্টুনে এসে জোরে ধাক্কা দেয়। অন্যদিকে যাত্রীর প্রচণ্ড চাপ পন্টুনে। এ সময় লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপ খেয়ে কবির হোসেনের বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় আলাদা হয়ে যায়। কেটে ফেলতে হলো ওই পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ। আর শাহজালাল নামে আরেক ব্যক্তির ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে ভেঙে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পড়ুন: এবি ব্যাংকের অর্থ আত্মসাত: আসামিদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট
হারুনসহ ডেসটিনির ৪৫ জনের সাজা বাড়াতে হাইকোর্টে দুদকের আবেদন
২ বছর আগে
কালবৈশাখী: শিমুলিয়ায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ফেরি সচল
কাল বৈশাখী ঝড়ের কারণে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে এই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। লঞ্চ ঘাটে আটকেপড়া যাত্রীদের ফেরিতে করে পারাপারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মাইকিংও করা হয়েছে। ঘাটে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লঞ্চে উঠা যাত্রীদের ফেরিতে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ সহকারি পরিচালক ও মাওয়া সহ-বন্দর কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, কাল বৈশাখীর আশঙ্কা ও শিমুলিয়া নদী বন্দর অভ্যন্তরীণ নৌপথে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সঙ্কেত বলবৎ থাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম।
এই দুই নৌপথে ৮৫টি লঞ্চ চলাচল করছিল। ভোর ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করলেও ঈদের কারণে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত রাত ১০টা পর্যন্ত চলাচল করছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে শুক্রবারও রাত ৯টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। তবে ৬টা থেকে আবার চলাচল শুরু করে।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রা: বরিশাল লঞ্চঘাটে যাত্রী কানায় কানায় পূর্ণ
শিমুলিয়ার পরিবর্তে পাটুরিয়া দিয়ে যান চলাচলের অনুরোধ নৌপ্রতিমন্ত্রীর
২ বছর আগে