কর্মচাঞ্চল্য
২ বছরের মধ্যে মোংলা বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দেশের পুরোনো মোংলা বন্দরে উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এই বন্দরে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য যেভাবে তৈরি হবার কথা, তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি এই বন্দর।
মোংলা বন্দরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্র্যান্ডিংয়ের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (৬ অক্টোবর) সকালে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের অভিনন্দন
সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মোংলা বন্দরকে নিয়ে বেশি বেশি প্রচার-প্রচারণার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, মোংলা বন্দর এতদিন প্রচারের বাইরে ছিল। আপনারা যদি এই বন্দরকে নিয়ে প্রচারণা করেন, তাহলে এটি দেশ-বিদেশে আরও অনেক বেশি পরিচিতি লাভ করবে।
তিনি আরও বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রচারণার পদক্ষেপ হিসেবে প্রচারপত্র তৈরি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রচারপত্র তারা আমাদের দেশের বাইরে যে কূটনৈতিক মিশন রয়েছে, সেখানেও পাঠাবে। এছাড়া, মোংলা বন্দরকে দেশে বিদেশে তুলে ধরার লক্ষ্যে চলতি মাসে (নভেম্বর) টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে ‘ইত্যাদি’ মোংলা বন্দরে ধারণ করা হবে।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে কন্টেইনার টার্মিনাল নেই। আশা করছি অতি সত্তর একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। চীনের অর্থায়নে জি টু জি পদ্ধতিতে একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরো খরচটাকে কিভাবে কমানো যায় এ বিষয়ে কমিটি কাজ করেছে। বাংলাদেশে বোধহয় এটি প্রথম যেখানে চুক্তি হবার পরও পুরো বাজেটকে কম করা হয়েছে। প্রায় ২৭৫ কোটির মতো বাজেট কমিয়ে আনা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ একটি কমিটি ৭ দিন ধরে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বাজেট কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। দুইটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ এবং কিছু আনুষঙ্গিক কাজ আশাকরি দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর যে বিশাল চাপ রয়েছে, তা কমে আসবে। বর্তমান বিশ্বে রিজিওনাল কানেক্টিভিটি খুব দরকার। এ জন্য মোংলা বন্দরকে আন্তর্জাতিক বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। প্রতিবেশী ল্যান্ড-লকড দেশ যেমন নেপাল, ভুটান তাদের জন্য এই বন্দর ব্যবহারের উপযোগী হবে। এখানে রেল, নৌ ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মোংলা বন্দরকে আঞ্চলিক বন্দর হিসেবে ব্যবহার করার বিষয় আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুটি স্থলবন্দর যা আঞ্চলিক সংযোগের জন্য তৈরি হচ্ছে, একটি আখাউড়া আরেকটি সিলেটে। সিলেটে যেটি হবে সেটা নেপাল ও ভুটানের কাছাকাছি। আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের ওপর নির্ভর করবে যে তারা এই স্থলবন্দরটিকে ব্যবহার করতে দেবে কিনা। আমি আশা করি, তারাও চাইবে এই আঞ্চলিক সংযোগটি যেন হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ভারতের অর্থায়নে আরেকটি প্রকল্প আছে যেটি এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। দুইটি ইয়ার্ড ও আনুষঙ্গিক রাস্তা তৈরি হবে। ভারত এ প্রকল্পে কনসাল্টটেন্ট নিয়োগ করলেও ঠিকাদার নিয়োগ করেনি, তাই কার্যক্রম শুরু হয়নি। আশা করি চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের বর্তমান অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
মোংলা বন্দরের বেশ কিছু জায়গা আছে অব্যবহৃত, এই অব্যবহৃত জায়গাগুলো কাজে লাগাতে চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ইকোপার্ক তৈরি করা হলে দেশি-বিদেশি পর্যটক এখানে ঘুরতে আসবে।
এছাড়া মোংলা বন্দরের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
উপদেষ্টা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং কাজের মান ও অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। চলমান সকল প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেন। পরিদর্শনকালে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান এবং বন্দরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১ মাস আগে
কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ঠাকুরগাঁওয়ের কারখানায়, সুদ মওকুফের দাবি ব্যবসায়ীদের
লকডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বিসিক শিল্পনগরীর কারখানাগুলোতে। ফলে দীর্ঘ সময়ে অভাব অনটনে থাকা শ্রমিকদেও মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন সবাইকে করোনা টিকার আওতায় আনা হলে এবং ব্যাংক লোনের সুদ মওকুফ করলে কোন ধরনের সমস্যা ছাড়া স্বাভাবিকভাবেই কারখানা চালু রাখা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ জারি থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রাখা হয় জেলার বিসিক শিল্পনগরীর কলকারখানাগুলো। এতে বেকার হয়ে পরে হাজার হাজার শ্রমিক। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর ধীরে ধীরে ব্যবসায়ীরা এসব প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়। কর্মস্থলে আবারও যোগ দিয়েছে শ্রমিকেরা। কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পায় অভাব অনটনে দিনযাপন করা শ্রমিক।
ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীতে গড়ে উঠা সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান রাজ্জাক গ্রুপের গোল্ডেন ফাইবার ইন্ডাট্রিজ নামের জুটমিল। এছাড়া আটা, ময়দা, সুজি, সাবান ও প্লাস্ট্রিকের কয়েকটি কারখানা চালু হয়েছে।
করোনার বিধিনিষেধ শিথিলতার পর বর্তমানে এই জুটমিলে তিন শিফটে প্রায় ৬০০ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। এ থেকে দৈনিক উৎপাদন হচ্ছে পাটের তৈরি ৫ হাজার পিচ সুতার রোল ও ৫ হাজার পিচ বস্তা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব উৎপাদিত সুতা ও বস্তা পাঠানো হচ্ছে দেশের অন্যান্য জেলায়। চালু হওয়ার পর জুটমিলে কাজ ফিরে পেয়ে এখন অনেকটাই খুশি শ্রমিকরা। তবে করোনা টিকা প্রদান অব্যাহত থাকলে কলকারখানা খোলা রাখা সম্ভব বলে জানান কারখানার মালিকরা।
১৯৮৭ সাল থেকে ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরীর ১৫ একর জমিতে গড়ে উঠে ছোট-বড় ৫১টি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে জুট মিলেই ৬০০ এবং বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোসহ মোট ১ হাজার ৫৩৫ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছে।
কারখানার শ্রমিকরা বলেন, এতদিন কারখানা বন্ধ থাকায় আমাদের খুব খারাপ অবস্থায় কাটাতে হয়েছে। এখন কারখানা খুলেছে, নিয়মিত বেতন পাচ্ছি, সংসারও চলছে ভালোভাবে।
আরও পড়ুন: সৌদি খেজুর চাষে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুবেল
৩ বছর আগে