আসামির মৃত্যুদণ্ড
হাটহাজারীতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তাসনিম সুলতানা তুহিন নামে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রিয়াদ উদ্দীন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে লাশ গুম করার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ধর্ষকের বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
চার বছর আগে ধষর্ণের শিকার হয়ে নিহত ওই শিক্ষার্থী হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: নারায়ণগঞ্জে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
আদালতের রায়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রিয়াদ উদ্দীন সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আইনি লড়াইয়ের পর প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে বিজ্ঞ বিচারক মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তবে মামলার অপর দুই আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ ও নিগার সুলতানাকে খালাস দেয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
মামলার বিবরণীতে উল্লেখ্য করা হয়, ২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাছনিম সুলতানা তুহিনকে (১৩) পৌর এলাকার ফটিকা শাহজালাল পাড়া সালাম ম্যানশনের দ্বিতীয় তলা থেকে অপহরণ করে একই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আসামি মুন্না স্কুলছাত্রী তুহিনকে ধর্ষণ করে।
আত্মরক্ষার্থে তুহিন চিৎকার দিলে মুন্না তার মুখ চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মুন্না তার বাবা-মায়ের সহযোগিতায় তুহিনের লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ঘরের সোফার নিচে রাখে।
১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পালাতে গিয়ে মুন্না পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে মুন্নার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানা ঘর থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর তুহিনের বড় ভাই বাদী হয়ে শাহনেওয়াজ সিরাজ ওরফে মুন্নাকে প্রধান আসামি ও তার বাবা শাহ জাহান সিরাজ এবং মা নিগার সুলতানার নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আয়ুব খান বলেন, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৭ ধারায় মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপর ধারায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে এ মামলায় মুন্নার বাবা-মাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
সাংবাদিক আফতাব হত্যা মামলায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
২ বছর আগে
সাতক্ষীরায় আলোচিত ফোর মার্ডার মামলার একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চার জনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মামলার একমাত্র আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ: স্বামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রায়হানুর রহমান (৩৬) উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছেলে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার খলিষা গ্রামের রায়হানুর রহমান বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়া দাওয়া করতো। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো। এর জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবি সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয়র সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়া। এরপর ভোরের দিকে হাত-পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ সময় তাদের চার মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে লাশের পাশে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি ময়না খাতুন বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মন্ডলের কাছে রায়হানুর নিজেই হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় মাদক মামলায় বাস সুপারভাইজারের মৃত্যুদণ্ড
গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম আসামি রায়হানুর রহমানের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় গত ১৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। আজ মঙ্গলবার সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
৩ বছর আগে