সুরেন্দ্র কুমার সিনহা
সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা: জামিন পেলেন নাজমুল হুদা
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পাল্টা মামলায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে নাজমুল হুদা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
আজ মামলাটি চার্জশিট আমলে গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। বিচারক চার্জশিট আমলে নিয়ে বিশেষ জজ আদালত-৯ এ বদলির আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি চার্জ গঠনের জন্য ১৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: ঘুষ গ্রহণ মামলা: আপিল বিভাগে নাজমুল হুদার জামিন
এর আগে, গত ৭ অক্টোবর চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিজের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তি হওয়া একটি মামলার রায় বদলে দেয়া হয়েছে ও উৎকোচ চাওয়া হয়েছে, এস কে সিনহার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেন নাজমুল হুদা।
মামলার চার্জশিটে সে সময় নাজমুল হুদা দাবি করেন, উচ্চ আদালতে ডিসমিস করার পরও প্ররোচিত হয়ে মামলাটির রায় পরিবর্তন করা হয়। মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা এবং আরও একটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির অর্ধেক অর্থাৎ এক কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন সিনহা। তবে দেড় বছরের তদন্তে নাজমুল হুদার এ অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি দুদক।
মিথ্যা অভিযোগ করায় গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
মামলার বিষয়ে তৎকালীন দুদকের সচিব মুহাম্মদ দেলোয়ার বখত বলেছিলেন, নাজমুল হুদা যে মামলাটি করেছেন, সেটি একেবারেই ভিত্তিহীন। দুদকের অনুসন্ধানেও আমরা সেটা প্রমাণ পেয়েছি। দুদক আইনের ২৮ এর ২ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন আর সেটি যদি তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাহলে অভিযোগ দায়েরকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।
আরও পড়ুন: ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ: নাজমুল হুদা দম্পতির মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ
নাজমুল হুদা দম্পতির জামিন বৃদ্ধি
সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্লট বরাদ্ধ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান তাঁর বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
দুদকের মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর নিজ নামে ইতোপূর্বে রাজউক থেকে উত্তরা আবাসিক এলাকায় একটি প্লট বরাদ্ধ পান। পরবর্তীতে তিনি ক্ষমতা অপব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাঁর ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে প্লটের জন্য আবেদন করান এবং তিন কাঠার একটি প্লট বরাদ্ধ করান।
এছাড়া তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এই তিন কাঠার প্লটটিকে পাঁচ কাঠার প্লটে উন্নীত করান। পূর্বাচল থেকে প্লট স্থানান্তর করে উত্তরার সেক্টর-৪ এ প্লটটি রাজউক থেকে অনুমোদনও করান। প্লটের জন্য ব্যয় হওয়া ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। পরবর্তীতে ওই প্লটে ৯ তলা ভবন নির্মাণ করেন।
অনুসন্ধানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নয় তলা এ ভবন নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ছয় কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। এছাড়া এ প্লটের মূল্য হিসেবে রাজউকে পরিশোধ করা হয় ৭৫ লাখ। সে হিসেবে প্লটের মূল্যসহ ভবন নিমার্ণে মোট ব্যয় ৭ কোটি ৬ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। এই সম্পদের মধ্যে কেবল জনৈক খালেদা চৌধুরীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট বিক্রির অগ্রীম বাবদ ৭০ লাখ টাকা টাকা পেয়েছেন তিনি। এ টাকা বাদে অবশিষ্ট ছয় কোটি ৩৬ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা এবং শংখজিত সিংহয়ের নামীয় হিসাবে স্থায়ী ও নগদে জমা আছে ৭৮ লাখ টাকা।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে এই সাত কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকার অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
এসকে সিনহার বই পরাজিত ব্যক্তির হা-হুতাশ: আইনমন্ত্রী