শিক্ষাব্যবস্থা
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা, তবুও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে। এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে উদ্যোক্তাদের একটি প্রজন্ম তৈরি করতে হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমন হতে হবে যাতে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে।’
‘আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে সংস্কার করা উচিত, যাতে এই শিক্ষাব্যবস্থা একটি প্রজন্মের উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে পারে। এছাড়া আমাদের এমন শিক্ষা দরকার, যা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মানুষ হতে সাহায্য করে। আমাদের তরুণদের মধ্যে সৃজনশীলতার যে সম্ভাবনা রয়েছে তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করেই নির্বাচন আয়োজন করব: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা উচিত নয় যেখানে শুধু পরীক্ষার নম্বরের ওপর জোর দেওয়া হয়। পরীক্ষার নম্বর কত পেল সেটাই যে সবকিছু নয়, এটি সকলের উপলব্ধি করা উচিত।’
দেশের সমাজে জেনারেশন গ্যাপ কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নতুন প্রজন্মের ভাষা, তাদের আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তার প্রক্রিয়া বুঝতে হবে।… আমাদের জানতে হবে কীভাবে প্রবীণ প্রজন্ম তাদের অভিজ্ঞতা তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে শেয়ার করে নিতে পারে।’
‘তরুণ ও প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে, এটি সমস্যা তৈরি করবে। আমাদের অবশ্যই দুই প্রজন্মের মধ্যে ধ্যান-ধারণার ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে।’
এজন্য জাতীয় পাঠ্যক্রমে পারিবারিক মূল্যবোধের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জোবায়ের উপস্থিত ছিলেন।
১ মাস আগে
বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটের শিক্ষাব্যবস্থা
চলতি বছরে টানা তৃতীয় দফা বন্যায় সিলেটের অবস্থা বিপর্যস্ত। সড়ক, কৃষি, মৎস্য, অবকাঠামোসহ নানা খাতে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের উত্তর-পূর্বের এই জেলা। ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষা খাতেও।
বন্যার কারণে জেলার প্রায় ৫০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ আছে। এর মধ্যে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি জমে আছে আর বাকিগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ অবস্থায় ঈদের ছুটির পর থেকেই বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান।
শিখন ঘাটতি কমাতে ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি কমিয়ে ২ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৬ জুন থেকে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান শুরু হয়। তবে সিলেটের অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঈদের পর আর পাঠদান শুরু হয়নি। একই অবস্থা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোরও। ঈদের ছুটির পর ৩ জুলাই থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও বন্যার কারণে সিলেটে তা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে জানা গেছে, বন্যার কারণে সিলেট জেলায় ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে ৭৮টি। এছাড়া কয়েকটি কলেজে পানি উঠে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার মোট ১ হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯৮টিই এখন বন্ধ। এর মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৩৭, বিশ্বনাথে ২, বালাগঞ্জে ৫৫, ফেঞ্চুগঞ্জে ৩২, গোলাপগঞ্জে ২৭, বিয়ানীবাজারে ৫৪, জকিগঞ্জে ২৩, কানাইঘাটে ৪, জৈন্তাপুরে ৩, গোয়াইনঘাটে ২, কোম্পানীগঞ্জে ৬৫, দক্ষিণ সুরমায় ২২ ও ওসমানীনগরে ৭২টি বিদ্যালয় রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশাদ বলেন, ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আর বাকিগুলোতে পানি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাইদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘বন্যার কারণে জেলায় ৭৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয় রয়েছে ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। কুশিয়ারা অববাহিকার এসব এলাকায় বন্যার পানি কমছেই না।’
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পানি কমলে বাড়তি ক্লাসের মাধ্যমে এই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’
সিলেটে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় গত ২৯ মে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় সিলেটের সীমান্তবর্তী ৬ উপজেলা। ৮ জুনের পর থেকে এই বন্যার পানি কিছুটা কমে আসে।
তবে ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা শুরু হয়। এতে সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায়ই বন্যা দেখা যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ। ২৫ জুন দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমা শুরু হয়।
১ জুলাই থেকে ফের অতিবৃষ্টিতে ঢল নামলে আবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে ফের দেখা দিয়েছে বন্যা
৫ মাস আগে
১১ দফা দাবিতে বরিশালে বেসরকারি শিক্ষকদের মানববন্ধন
শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, মূল বেতনের ৪০ ভাগ মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়াসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বরিশালে মানববন্ধন করেছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) বরিশালের উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষক নিহত
মানববন্ধন শেষে শিক্ষক নেতারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।
বক্তারা বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা, যা বাস্তবায়নের জন্য মানসম্মত শিক্ষার দরকার। যদি শিক্ষার মানোন্নয়ন না করা যায়, তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে না।
বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকদের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়াতে হবে। যদি মানসম্মত শিক্ষক পেতে হয়, তাহলে শিক্ষকদের মানসম্মত সম্মানি দিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের মাঝে কোনোরকম বৈষম্য যাতে না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বেসরকারি শিক্ষকদের পরিবার বিপর্যস্ত।
তারা বলেন, যদি ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা ঘরে বসে থাকবো না, আমরা এ সরকারকে বাধ্য করবো ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিতে।
জেলা বাকশিসের সভাপতি উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে বক্তৃতা দেন কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান সেলিম, বরিশাল জেলার সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মশিউর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক জাকির হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক কামাল চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বাসের ধাক্কায় কলেজশিক্ষক নিহত
কুড়িগ্রামে ইয়াবা জব্দ, কলেজশিক্ষক গ্রেপ্তার
১ বছর আগে
আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষা ও প্রসঙ্গ কথা
দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৩২টি স্কুলকে সরকারিকরণ এবং বেশ ক’টি নতুন সরকারি স্কুল নির্মাণের পরও ২০১৯ সালের নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী দেশে মাধ্যমিক স্তরের সরকারি স্কুলের সংখ্যা মাত্র ৬৬৫টি। ১৯৯০ সালের পর গত তিন দশকে ছাত্রীদের শিক্ষার হার আনুমানিক ৫ গুন বেড়েছে। ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ বালিকা। বর্তমানে দেশে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা নামমাত্র বাধ্যতামূলক এবং কেবলমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবৈতনিক। তবে ভর্তি ফি, পুনঃভর্তি ফি’র চাপমুক্ত নয়।
স্বাধীনতার পর দেশে প্রাইমারি স্কুলের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজারের বেশি, মাধ্যমিক ৬ হাজারের কম। বর্তমানে মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাইমারি পাশ করার পর এখন প্রায় ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে হাইস্কুলে ভর্তি হচ্ছে যা আশাব্যাঞ্জক। যেখানেই পড়ুক, সব শিশু যেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ করে সেটা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। মধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে আরও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ না করলে কাঙ্খিত ভিত্তি নির্মিত হবে না। সেই লক্ষ্যে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে সৃদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রবেশদ্বারকে সুগম করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাণিজ্য/কলা/বিজ্ঞান ইত্যাদি বিভাজন উচ্চমাধ্যমিক খেকে কার্যকর হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এর বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক ভাবনা চিন্তা আশার পালে হাওয়া দিচ্ছে।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাত্র ৬৩ শতাংশ সরকারি স্কুলে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। বেসরকারি স্কুলের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের অভিভাবক। ভর্তিতে অনিয়ম, যথেচ্ছ মাসিক বেতন, ভর্তি ফি, পুনভর্তি ফি সহ নানাবিধ অনৈতিকতার চর্চা শিক্ষার কাঙ্খিত সুন্দর পরিবেশকে ব্যাহত করছে, আহত করছে। নানাবিধ কোটার আবর্তে ভর্তি প্রক্রিয়া বাণিজ্যমুখীতার চোখ রাঙাচ্ছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মানও প্রশ্নবিদ্ধ।
শিখন সংকট:
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে শেখার চাইতে পরীক্ষায় পাশ এবং উচ্চতর গ্রেড অর্জন মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নপত্র মাথায় রেখেই স্কুলের পড়াশোনা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। হাত বাড়ালেই নোটবই আর পা বাড়ালেই কোচিং সেন্টারের খাঁড়াতো আছেই। শঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হচ্ছে জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীই জিপিএ-এর মানে জানে না! ক্লাস সেভেনে পড়া শিক্ষার্থী ‘আমি ৭ম শ্রেণিতে পড়ি’ এই বাক্যের ইংরেজি অনুবাদ জানে না। আবার অনেকে অনুবাদ শব্দের অর্থই জানে না! যোগ্য শিক্ষকের অভাবই এর অবশ্যম্ভাবী কারণ।
চারপাশে নিম্নমানের কিন্ডারগার্টেন নামের প্রাথমিক স্কুল ছড়িয়ে রয়েছে। মুনাফা অর্জনই এসব প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীদের মূল লক্ষ্য। টেনে টুনে গ্র্যাজুয়েট এবং উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক (অধিকাংশ শিক্ষিকা) দিয়েই এসব স্কুলের পাঠক্রম পরিচালিত হয়। শিক্ষকদের বেতন ১৫০০-২০০০ টাকা! শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে ওনারা কোনভাবে পুষিয়ে নেন। এর পরিণাম ভয়াবহ হতে বাধ্য।
ইংরেজি না জানলে কিছুতেই আর চলবেনা এই স্লোগানে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আমরা ছুটছি ভার্সন নামের আকর্ষণে। আর সেই সুযোগে সহজে মুনাফা অর্জনের বাণিজ্যে ঝটপট নেমে পড়েছেন চতুর বেনিয়া সম্প্রদায়। হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে আমরা পতঙ্গসম ঝাঁপিয়ে পড়েছি সন্তানকে ইংরেজির আলোয় আলোকিত করবো আশায়, যে মানের শিক্ষক বাংলা ভাষাই ঠিকমতো জানেন না, তিনি কি ইংরেজি শেখাবেন? ভুল উচ্চারণের ভুলভাল ইংরেজি শিখতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা বাংলাও ভুলে যায়। ওরা এখন বাংরাজী ভাষায় কথা বলে!
কিন্ডারগার্টেন ও ইংলিশ ভার্সন স্কুলের ডামাডোলে একটু একটু করে গুছিয়ে নিতে থাকা বাংলা মাধ্যম স্কুল শিক্ষার্থী সংকটে মুখ থুবড়ে পড়ে। অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে মানসম্মত বাংলা মাধ্যম স্কুলের সংকট দেখা দেয়। সরকারি স্কুলেও শিক্ষার্থী সংকুলান হয় না।
শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে শুরু হয় সৃজনশীল পাঠদানের। চমৎকার সংযোজন। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সামর্থ্য যাচাই করার সুযোগ পায়। কিন্তু এই পদ্ধতির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অপ্রতুলতার কারণে এর সুফললাভ ব্যাহত হচ্ছে।
এবার মূল বিষয়ে আসা যাক। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা যার জন্য ১৯৫২ সালে প্রাণ দিয়েছেন ভাষা শহীদেরা। একাত্তরে ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে ত্রিশ লাখ শহীদ। অথচ সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলন নীরবে চোখের জল ফেলছে।
এমনটা হলে পরে:
চর্চার ক্ষেত্রে বাংলাভাষাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার লক্ষ্যে দেশজুড়ে মানসম্মত বাংলা মাধ্যম স্কুল স্থাপন এখন সময়ের দাবি। বানান এবং উচ্চারণের প্রতি যত্নশীল হওয়ার বিকল্প নেই। নির্দিষ্ট সংখ্যক বানানের জন্য নম্বর কর্তনের বিষয় বিবেচনা করলে কেমন হয়? উচ্চারণ, বানান, শিক্ষাদান পদ্ধতি ইত্যাদি সকল বিষয়ে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণদান নিশ্চিত সুফল বয়ে আনবে।
লেখক: কবি ও শিশু সাহিত্যিক গোলাম কুদ্দুস চঞ্চল
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: শিক্ষা কাঠামো আধুনিক হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
নতুন শিক্ষাক্রমে ছেলে-মেয়েরা আনন্দের মধ্যে পড়াশোনা শিখবে: দীপু মনি
ডেঙ্গু বান্ধব অসহায় ঢাকা!
৩ বছর আগে