পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
বাংলাদেশে শুধু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, শান্তিপূর্ণ পরমাণু শিল্পও গড়ে তুলেছে রাশিয়া: পুতিন
বাংলাদেশকে ‘দীর্ঘদিনের বন্ধু ও উত্তম অংশীদার’ বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।
রূপপুর প্রকল্পের আওতায় সহযোগিতার অংশ হিসেবে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের পারমাণবিক খাতের জন্য অত্যন্ত যোগ্যতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
পুতিন বলেছেন, পারমাণবিক সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান এমন ৮০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং এ সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কেবল একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি না, বরং একটি সম্পূর্ণ পারমাণবিক সেক্টর তৈরি করছি। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শিল্প গড়ে উঠেছে এবং আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলে এটি করছি।’
বৃহস্পতিবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট ১-এ রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেন।
শুক্রবার রাশিয়ান পক্ষের দেওয়া তার বক্তৃতার ইংরেজি অনুলিপি অনুসারে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পটি দুই দেশের স্বার্থ পূরণ করে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা
তিনি বলেনি, ‘অবশ্যই এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি বাস্তব ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।’
পুতিন বলেন, ‘এই তরুণ প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে আমাদের দেশও ছিল এবং এর অর্থনীতির উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম আমরা। পাশাপাশি আমরা প্রধান শিল্প ও জ্বালানি কাঠামোগুলো নির্মাণে সহায়তা করছি, যাতে বাংলাদেশের জনগণ এর সুফল পেতে থাকে।’
শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির একজন স্বীকৃত বিশ্বনেতা হিসেবে তিনি বলেন, রোসাটম সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ডের পাশাপাশি পরিবেশগত ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে সবচেয়ে উন্নত প্রকৌশল সমাধান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) নিয়মকানুন ও সুপারিশ কঠোরভাবে মেনে নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ভিদের শারীরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত ও নির্ভরযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পে তাদের সহায়তার জন্য আইএইএ-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
পুতিন বলেছেন, স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার প্রচেষ্টা কেবল স্থাপনা নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ‘আমরা পারমাণবিক প্রকল্পের সমগ্র জীবনচক্র জুড়ে আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সহায়তা করব। যার মধ্যে চুল্লির জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ, উদ্ভিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্যও আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
গত বছর থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে
সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা প্ল্যান্টে প্রাথমিক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলো তদারকি করবেন। এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের প্রয়োজনীয় পেশাগত দক্ষতা এবং জ্ঞান তাদের শুধু পারমাণবিক শিল্পেই নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক অর্থনৈতিক খাতেও নিয়োগের সুযোগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এনার্জি ইউনিট ১-এ রাশিয়ান পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহের একটি প্রশংসাপত্র আমাদের বাংলাদেশি সহকর্মীদের কাছে হস্তান্তর করব। এর পরে রূপপুর সরকারি পারমাণবিক সুবিধার মর্যাদা পাবে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রতি তার ব্যক্তিগত মনোযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন- ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি; স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ; বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান; রূপপুর প্রকল্প পরিচালক শওকত আকবর এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণের একটি সাধারণ ঠিকাদারের সিইও আন্দ্রেই পেট্রোভ।
স্টেট কর্পোরেশন রোসাটম ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত একটি আন্তঃসরকারি চুক্তির অধীনে পাবনা জেলায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
প্ল্যান্টটি ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসহ দুটি প্রজন্মের ৩+ চুল্লি নিয়ে গঠিত হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সাইটে কাজ করছেন ৪ হাজারেরও বেশি রাশিয়ান নাগরিকসহ ২০ হাজার বিশেষজ্ঞ।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার নিকট যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দাবির জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
১ বছর আগে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে লাগতে পারে আরও এক বছর
২০২৪ সালের জুলাই মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) ১২০০ মেগাওয়াট প্রথম ইউনিটের কার্যক্রম শুরু করা কথা রয়েছে। এই সময়সীমা পূর্ণ হতে আর মাত্র ১০ মাস বাকি রয়েছে।
তবে বিদ্যুৎ খাতের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ট্রান্সমিশন অবকাঠামো-সম্পর্কিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন অনেকটা বাকি থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
২৪০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের প্রথম ১২০০ ইউনিট চালুর মাত্র ১০ মাস আগে এসে কর্মকর্তারা এখন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করার জন্য আরও এক বছর বা আরও কিছুটা বেশি সময় প্রয়োজন বলে মনে করছেন।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) উভয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও প্ল্যান্টে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সারাদেশে গৃহস্থালি বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চালন লাইনের অভাবে এটি কাজে লাগবে না।
বিএইসি-কে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, পিজিসিবি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ অপসারণ ও সঞ্চালনের কাজ করবে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত
এই প্রথম তারা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের সঞ্চালনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে।
পিজিসিবি-র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউএনবিকে বলেছেন, ‘আরএনপিপি প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করতে আমরা তিনটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি।’
তিনি যে তিনটি চ্যালেঞ্জের উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো- নদী ক্রসিংলাইন নির্মাণ, সাবস্টেশন স্থাপন ও ফ্রিকোয়েন্সি সমন্বয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের জন্য দুটি নদী ক্রসিং প্রয়োজন—যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ৯ কিলোমিটার এবং পদ্মার ওপর দিয়ে ৭ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি পিজিসিবি এই বিষয়ে দুটি পৃথক প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং প্রকল্পগুলো শেষ করতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, আরএনপিপি থেকে বিদ্যুৎ ঢাকায় আসবে ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন ডাবল সার্কিট লাইনের মাধ্যমে। যা ধামরাইয়ে একটি নতুন ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড-সাবস্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি একটি ফার্মকে ট্রান্সমিশন লাইন বসানোর চুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং এর কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে।
পিজিসিবি’র আরেকজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে ইউএনবিকে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আরএনপিপি প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন সিস্টেমে ফ্রিকোয়েন্সি বজায় রাখা। কারণ এটি হবে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বিদ্যুৎ, যেখানে সঞ্চালন ও সরবরাহ নেটওয়ার্কে সবসময় স্থিতিশীল চাহিদা থাকবে।’
তিনি বলেন, প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে পিজিসিবি এ বিষয়ে কাজ করার জন্য রাশিয়া থেকে একজন পরামর্শক নিয়োগ করে। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ওই পরামর্শদাতা হঠাৎ কাউকে না জানিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান।
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ের সমাধান খুঁজতে বর্তমানে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল রাশিয়া সফর করার পরিকল্পনা করছে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান আরএনপিপি থেকে সময়মতো বিদ্যুৎ অপসারণ ও সঞ্চালন শুরু করার বিষয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কথা স্বীকার করে ইউএনবিকে বলেছেন, প্রয়োজনীয় ট্রান্সমিশন অবকাঠামো ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মধ্যে প্রস্তুত হবে কি না এ বিষয়ে তার মন্ত্রণালয় এখনও অন্ধকারে রয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর এনপিপির ইউনিট-২ এর প্রধান কুল্যান্ট পাইপলাইন ঝালাই শেষ: রোসাটম
পিজিসিবি-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া অফিসিয়াল তথ্যের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, আরএনপিপি থেকে বিদ্যুৎ অপসারণ নিশ্চিত করতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একীভূতকরণ ও নিরাপদ পরিচালনার জন্য এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য ১০ হাজার ৯৮১ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফর পাওয়ার ইভাকুয়েশন ফ্যাসিলিটিস অব রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট’-শীর্ষক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।
এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে-১৩ কিলোমিটার নদী ক্রসিংসহ একটি ৪৬৪ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ এবং ৭ কিলোমিটার নদী ক্রসিংসহ একটি ২০৫ কিলোমিটার ২৩০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন, চারটি ৪০০ কেভি বে এক্সটেনশন এবং পাঁচটি ২৩০ কেভি বে এক্সটেনশন।
ফ্রিকোয়েন্সি কন্ট্রোল ও ফ্রিকোয়েন্সি ড্রপ প্রোটেকশন, প্রোটেকশন সিস্টেম, ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল সিস্টেম এবং ‘কোয়ালিটেটিভ আপগ্রেডেশন অব বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম’ সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাজগুলো বাস্তবায়ন করাও এই প্রকল্পের অংশ।
ওয়েবসাইটের একটি হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে পুরো প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং বরাদ্দ দেওয়া অর্থের ৪৮ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে।
পিজিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ৪৬৪ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইনের ১৩ কিলোমিটার নদী ক্রসিংয়ের মধ্যে- ১৫০ কিলোমিটার রূপপুর-ঢাকা, ১৫৪ কিলোমিটার রূপপুর-গোপালগঞ্জ, ৯০ কিলোমিটার রূপপুর-বগুড়া এবং ৫১ কিলোমিটার কালিয়াকৈর-আমিনবাজার সঞ্চালন লাইন নিয়ে গঠিত।
২০৫ কিলোমিটার ২৩০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইনের ৭ কিলোমিটার নদী ক্রসিংয়ের মধ্যে ১৫৮ কিলোমিটার রূপপুর-ঢাকা এবং ৮১ কিলোমিটার রূপপুর-বাঘাবাড়ি লাইনের অংশ রয়েছে।
পিজিসিবি কর্মকর্তারা জানান, জমির ওপর সঞ্চালন লাইন স্থাপনের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ হলেও সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিক নদী পারাপার নির্মাণের কাজও শুরু হয়নি।
আরও পড়ুন: রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন
১ বছর আগে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রাংশবাহী ৪র্থ রুশ জাহাজ মোংলায় ভিড়েছে
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রাংশ নিয়ে আরও একটি রুশ জাহাজ খুলনার মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। রবিবার ‘এমভি ইসানিয়া’ নামের রাশিয়ান পতাকাবাহী ওই জাহাজটি বন্দরের ৮নং জেটিতে নৌঙ্গর করে।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কনভেয়ার লজিস্টিক লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. শিবলী জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমাদানি করা মালামাল নিয়ে এমভি ইসানিয়া নামে এই জাহাজটি ১৭ আগস্ট রাশিয়া থেকে ছেড়ে আসে। ২৪ দিনের মাথায় জাহাজটি মোংলা বন্দরে এসে ভিড়েছে।
তিনি জানান, জাহাজটিতে ২৭৪ প্যাকেজে ৯৮৭ মেট্রিকটন ওজনের বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল মালামাল রয়েছে। জাহাজটি থেকে মালামাল খালাস করার পর সড়ক পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন হামলার পর দ্বিতীয় রুশ জাহাজ মোংলায় পৌঁছেছে
তিনি আরও জানান, এই জাহাজটির শিপিং এজেন্টে কনভেয়ার শিপিং লাইন। কনভেয়ার শিপিং লজিস্টিক লিমিটেড পণ্য খালাস করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছে দেয়ার দায়িত্বে রয়েছে।
মোংলা বন্দর সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে আমদানি করা মালামাল মোংলা বন্দর ব্যবহার করে আনা হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মাঝখানে রাশিয়া থেকে মালামাল আসা বন্ধ ছিল।
১ আগস্ট রাশিয়া থেকে আবারও রূপপুর পারমাণবিক বিদুকেন্দ্রের মালামাল মোংলা বন্দরে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাশিয়া থেকে চতুর্থ চালানে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে জাহাজ এমভি ইসানিয়া মোংলা বন্দরে ভিড়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ১ আগস্ট রাশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি কামিল্লা, ৫ আগস্ট লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি ড্রাগনবল এবং ৬ সেপ্টেম্বর বেলিজ পতাকাবাহী জাহাজ এমভি ইউনিউইসডম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে ভেড়ে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন হামলার পর প্রথম রুশ জাহাজ মোংলায় পৌঁছেছে
২ বছর আগে
ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিভল
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর গোলার আঘাতে দেশটির জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে লাগা আগুন নেভানো হয়েছে। শুক্রবার দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে। তবে রুশ বাহিনী ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে বলেও জানানো হয়।
এর আগে শুক্রবার ভোরে রুশ হামলায় জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। এটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং এ প্লান্ট থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশ আসে।
দেশটির এনেরহোদার শহরের মেয়র দিমিত্রো অরলভ শুক্রবার সকালে বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নেভানো হয়েছে।
ইউক্রেনের আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির এক নম্বর বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এর পাওয়ার ইউনিট সুরক্ষার কোনো ক্ষতি হয়নি।
আরও পড়ুন: পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বান করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অপারেশনাল কর্মীরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। এছাড়া ওই এলাকায় বিকিরণের মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে ছিল না। তবে এ ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ হামলার পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতা ফোনালাপ করেছেন। এছাড়া মার্কিন জ্বালানি বিভাগ সতর্কতা হিসাবে এর নিউক্লিয়ার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে সক্রিয় করেছে।
এর আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মুখপাত্র আন্দ্রি টুজ ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, গোলা সরাসরি জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়ছিল এবং এর ছয়টি চুল্লির মধ্যে একটিতে আগুন ধরে যায়। ওই চুল্লিটি কাজ করছে না এবং সংস্কার করা হচ্ছে। তবে এর ভেতরে পারমাণবিক জ্বালানি রয়েছে।
জাপোরিঝিয়ার আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসন জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় করা পরিমাপে দেখা যায় এই অঞ্চলে বিকিরণের মাত্রা ‘অপরিবর্তিত এবং জনসংখ্যার জীবন ও স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে না’।
এদিকে এ হামলার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান করবেন বলে জানিয়েছে তাঁর কার্যালয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার হামলায় ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, জনসন শুক্রবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। ব্রিটেন অবিলম্বে রাশিয়া ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানান।
মধ্যরাতে একটি আবেগঘন বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি একটি বিস্ফোরণের আশঙ্কা করছিলেন যা ‘সবাইকে শেষ করে দেবে। ইউরোপকে শেষ করে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপের জরুরি পদক্ষেপই রুশ সেনাদের থামাতে পারে। একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপর্যয় থেকে ইউরোপ ধ্বংসের অনুমতি দেবেন না।’
২ বছর আগে
রাশিয়ার হামলায় ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর গোলার আঘাতে শুক্রবার ভোরে দেশটির জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন ধরে গেছে। এটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং এ প্লান্ট থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশ আসে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মুখপাত্র আন্দ্রি টুজ ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, গোলা সরাসরি জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়ছিল এবং এর ছয়টি চুল্লির মধ্যে একটিতে আগুন ধরে যায়। ওই চুল্লিটি কাজ করছে না এবং সংস্কার করা হচ্ছে। তবে এর ভেতরে পারমাণবিক জ্বালানি রয়েছে।
টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমরা তাদের ভারী অস্ত্র নিক্ষেপ বন্ধের দাবি জনাই। বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরমাণু বিপদের সত্যিকারের ঝুঁকি রয়েছে।’
দমকলকর্মীদের গুলি করা হচ্ছে বলে তারা আগুন নেভাতে এর কাছে যেতে পারেছেন না বলেও জানান তিনি।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এক টুইট বার্তায় জানায়, ইউক্রেনীয় পারমাণবিক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বলছে রুশ সেনাদের হামলার শিকার ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিকিরণের মাত্রার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সংস্থাটি বলছে, তাদের মহাপরিচালক মারিয়ানো গ্রসি ইউক্রেনীয় প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিগাল ও দেশটির নিয়ন্ত্রক ও অপারেটরের সঙ্গে জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে যোগাযোগ করছেন।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, চুল্লিগুলো এখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং বিকিরণের মাত্রাও স্বাভাবিক রয়েছে।
২ বছর আগে
চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে রুশ সেনারা
ইউক্রেনের চেরনোবিলে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দখলে নিয়েছে রাশিয়ান সামরিক বাহিনী।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে খবরটি নিশ্চিত বলেছেন।
তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রক্ষা করার জন্য ইউক্রেনের জাতীয় রক্ষীদের সাথে লড়াইয়ের পর রাশিয়ান বাহিনী এটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
চেরনোবিল এক্সক্লুশন জোন, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এটি ২ হাজার ৬০০ বর্গ-কিলোমিটার (১ ০০০-বর্গ-মাইল) জঙ্গলের আশেপাশের এলাকা, যা বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্ত এবং ইউক্রেনের রাজধানীর মধ্যে অবস্থিত।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনীয় অফিসাররা এটিকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করেছিল, যাতে ১৯৮৬ সালের ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি না হয়। তিনি এটিকে ‘পুরো ইউরোপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়া আলোচনার জন্য এখনও প্রস্তুত: সের্গেই লাভরভ
উপদেষ্টা পোদোলিয়াক বলেছেন, ‘একদম অর্থহীন আক্রমণের পরে এটা বলা অসম্ভব যে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিরাপদ আছে কি না।’
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আন্থন হেরাশেঙ্কো সতর্ক করেছেন যে, বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে কোনও আক্রমণ ‘ইউক্রেন, বেলারুশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের পরিস্থিতি ‘গভীর উদ্বেগের সাথে’ পর্যবেক্ষণ করছে এবং ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ এড়াতে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে।
পড়ুন: রুশ হামলা বন্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ চায় ইউক্রেন
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বদলে সংলাপের আহ্বান ঢাকার
২ বছর আগে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: ১১ দিনে ৫ রুশ নাগরিকের মৃত্যু, তদন্ত করছে পুলিশ
গত ১১ দিনে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত পাঁচ রাশিয়ান নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
গত ২৮ জানুয়ারি ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বারচেনকো আলেক্সেইয়ের (৪৮) ও ২ ফেব্রুয়ারি শাকিরভ আলেক্সেইয়ের (৪০) ঘুমের মাঝে মৃত্যু হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি ট্রেস্ট রোসেম নামে রাশিয়ান সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার চুকিন পাভেল (৪৮) অসুস্থ হয়ে মারা যান।
একইদিন রাত ২টার দিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের এসএমইউ-১ নামে আরেকটি সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইন্সটলার তলমাসেফ ভাইয়াসেলভের (৫৯) ১৪ তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে মারা গেছেন ভরতনিকভ আলেকজান্ডার (৪৫) নামে এক রুশ নাগরিক। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নিকিম এটোমস্ট্রয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে গত ১১ দিনে ৫ জন রাশিয়ান নাগরিকের মৃত্য হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, গত ১১ দিনের ব্যবধানে রূপপুরের পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলোর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। শুধু একজনের মাদক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। অন্যদের রিপোর্টে হৃদরোগের কথা বলা হয়েছে।
তবে বিষয়টি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২ রুশ কর্মচারীর মৃত্যু
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে চুল্লি থেকে পড়ে ২ শ্রমিক নিহত
২ বছর আগে
দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের ক্রমবর্মান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযুক্ত জায়গা খোঁজা হচ্ছে।
রবিবার (১০ অক্টোবর) পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল যন্ত্র পারমাণবিক চুল্লিপাত্র (রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল-আরএনপিপি) স্থাপন কাজের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ করার পর আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি উপযুক্ত স্থান পাওয়া যায়, তবে আমরা অবশ্যই প্রকল্পের কাজে হাত দেব। আমার ইচ্ছা পদ্মা নদীর অপর পাড়ে অর্থাৎ দক্ষিণাঞ্চলের কোনও জেলায় এটি নির্মাণ করা হোক।’
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে জায়গা খুঁজছি। কিন্তু প্রয়োজনীয় শক্ত-মজবুত জমি পাওয়া কষ্টকর। তবে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি আমরা আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে পারি, তবে দেশে আর আর বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আছি, তবে এই শেষ নয়। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
তিনি বলেন, ২০৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীণতা প্রাপ্তির শতবর্ষ উদযাপিত হবে। ততদিনে অবশ্যই আমাদের নতুন প্রজন্ম আমাদের দেশটাকে আরও সুন্দর, উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দেশে রূপান্তরিত করবে।
আরও পড়ুন: সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করুন: নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ২১০০ সালের জন্য ডেল্টা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। যাতে করে কখনোই আমাদের দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত না হয়। আমরা চাই বাংলাদেশের এই ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক।
সূত্র অনুযায়ী, ইউনিট-১ এর ভৌত কাঠামোর ভেতরে রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের পারমাণবিক যন্ত্রাংশ স্থাপন সম্পন্ন হবে। এর ফলে এই ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের ভেতরের কাজ প্রায় শেষ হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব জিয়াউল হাসান স্বাগত বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।
পড়ুন: কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পে ধীরগতি: ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে চুল্লি থেকে পড়ে ২ শ্রমিক নিহত
৩ বছর আগে