চার্জ গঠন
রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ হত্যা: ২৯ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারকাজ শুরু হলো।রবিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে চার্জগঠন করা হয়।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দ: মামলার চার্জ গঠন ১০ নভেম্বর
তিনি জানান, মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলার নির্ধারিত তারিখ ধার্য ছিল। হত্যা মামলাটিতে পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র নিয়ে আদালত শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত ২৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
ফরিদুল আলম আরও জানান, চার্জগঠনের মাধ্যমে আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
মামলার ২৯ আসামির মধ্যে ১৫ জন আদালতে হাজির ছিল। বাকি ১৪ জন পলাতক। মামলায় মোট ৩১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। মামলার বিচারিক কার্যক্রমের পরবর্তী তারিখে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
এর আগে সাড়ে ৮ মাস তদন্ত শেষে গত ১৩ জুন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত গাজী সালাউদ্দিন। পরে সেটি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আক্তার জাবেদের আদালতে তোলা হয়। এরপর চার্জগঠনের শুনানি হয়।
মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান ছিলেন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তার ভূমিকা ছিল।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ায় লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদল দুর্বৃত্তরা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার ভাই হাবিবুল্লাহ মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটার নাসির ও তার স্ত্রী-শাশুড়ির জামিন, চার্জ গঠন ২৪ জানুয়ারি
মামলাটিতে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ ১৯৯২ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসেন। তখন থেকেই টেকনাফ অঞ্চলে অবস্থান নিয়ে নানাভাবে রোহিঙ্গাদের সংগঠিত করতে থাকেন।
মুহিবুল্লাহ ২০০০ সালের শুরুতে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটস’ নামের সংগঠন, যা এআরএসপিএইচ নামে বেশি পরিচিত। অন্যদেশের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গেও গড়ে তোলেন গভীর যোগাযোগ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ হয়ে ওঠেন প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন।
বিদেশিদের কাছে আগে থেকে পরিচিত হলেও ২০১৭ সালে তিনি বনে যান রোহিঙ্গাদের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সে সময় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলে তাদের যোগাযোগে ভূমিকা রাখতে থাকেন নিয়মিত।
মুহিবুল্লাহ কয়েক দফায় সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। তার উত্থানে সহায়ক হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার ঘটনা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন শেষে বিচার শুরু
২ বছর আগে
ক্রিকেটার নাসির ও তার স্ত্রী-শাশুড়ির জামিন, চার্জ গঠন ২৪ জানুয়ারি
অবৈধ বিয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসির হোসেন, তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা ও শাশুড়িকে সোমবার জামিন দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। একই সাথে আগামী ২৪ জানুয়ারি চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন তিন আসামির উপস্থিতিতে এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে আদালত আজকে চার্জ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। তবে নাসিরের আইনজীবীরা তারিখ পেছানোর জন্য আবেদন করেন।
এর আগে ৩১ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে মামলায় জামিন চাইলে তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
আরও পড়ুন: স্ত্রী-শাশুড়িসহ জামিন পেলেন ক্রিকেটার নাসির
৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মী এখনও ব্যবসায়ী রাকিব হাসানের স্ত্রী। সেই হিসেবে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী পরিচয় দেয়া তামিমা যে বিয়ে করেছেন সেটি অবৈধ।
পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
পরে আদালত ক্রিকেটার নাসির, তামিমা ও তামিমার মা সুমি আক্তারকে ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তামিমা রাকিবকে তালাক দেননি। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেয়ার ফলে তামিমা তাম্মী এখনও রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটার নাসির-তামিমার বিয়ে অবৈধ: পিবিআই
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডাকযোগে তালাকের যে পত্র পাঠানো হয়েছিল তার রিসিটটি সঠিক নয়। তালাক যথাযথভাবে হয়নি জেনেও বিয়ে করেছিলেন নাসির। এ কারণে তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তালাক হয়নি জানা সত্ত্বেও তালাকের তথ্য প্রচার করায় মানহানির ধারাও রয়েছে নাসির হোসেন, তামিমা সুলতানা তাম্মী ও তার মা সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার প্রথম স্বামী মো. রাকিব হাসান বাদী হয়ে মামলা করেন।
ওই দিনই আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর শুনানি শেষে বিকালে আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
৩ বছর আগে
এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: চাঁদাবাজি মামলার চার্জ গঠন পেছাল
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলার চার্জ গঠন পিছিয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) প্রথমবারের মতো গণধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের দুটি মামলার নথিপত্র একসাথে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক আদালতে মামলার অতিরিক্ত চাপ ও স্টেনো না থাকায় চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগ গঠন পিছিয়ে দেন।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এডভোকেট রাশিদা সাঈদা খানম জানান, স্টেনোগ্রাফার না থাকার প্রেক্ষিতে চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়েছে। একই সাথে আদালতে ৩ আসামি অব্যাহতির আবেদন করেছে।
আদালতে মামলা জটের কারণে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগ গঠন পিছিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান অ্যাডভোকেট শহিদুজ্জামান চৌধুরী। পরবর্তী ধার্য তারিখে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগ গঠন ও আসামিদের অব্যাহতির আবেদনের ব্যাপারেও শুনানি হবে।
২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র প্রদান করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
এর মধ্যে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র নারী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ও চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলাটির অভিযোগপত্রটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণ: নতুন করে গঠন হবে মামলার অভিযোগ
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়াকে সরাসরি ধর্ষণে সম্পৃক্ত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আটজনই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শহীদুজ্জামান জানান, এসমি কলেজ ছাত্রবাসে আলোচিত এ ধর্ষণের অভিযোগে একটি ও ভুক্তভোগীর স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করে।
অ্যাডভোকেট মো. শহীদুজ্জামান জানান, বাদীপক্ষ মনে করে একই ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দুই আদালতে বিচারকাজ পরিচালিত হলে সাক্ষীরা দুই আদালতেই সাক্ষী দিতে হবে। এতে নানা অসঙ্গতি দেখা দিবে। এতে বিচার প্রক্রিয়াও ব্যাহত হবার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই দু’টি মামলাই একই আদালতে বিচার করার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। পরে হাইকোর্ট দুটি মামলা একই আদালতে বিচারের আদেশ দেন।
এ আদেশের পর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা একসাথে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১৭ জানুয়ারি আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।
পড়ুন: এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ
এমসি কলেজে ধর্ষণ: ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির বিচার একসাথে চলবে
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে আসা ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।
এ ঘটনায় পরদিন সকালে ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বহুল আলোচিত এ মামলায় ৪৯ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।
৩ বছর আগে