প্রবন্ধ
বঙ্গমাতার ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব-এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্মাতক পর্যায়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। যার উদ্যোগে ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ। রবিবার বিকাল ৪টায় একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত হিসাবে ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক জনাব আশরাফুল আলম পপলু।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ৮-৩১ আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত সারাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক এই দুই বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার ও ফেলোশিপ প্রদান
২ বছর আগে
ঢাবি’র দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ সত্য নয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি’র) দুই শিক্ষক সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের গবেষণা প্রবন্ধকে দুর্বল ও মানহীন বলে অভিহিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধান ট্রাইব্যুনাল। তবে প্রবন্ধে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ‘লেখকদ্বয় অভিযুক্ত প্রবন্ধটিতে প্রতি পাতায় ফুট নোট উল্লেখ করেনি। কিন্তু প্রতি প্যারায় উদ্বৃতির পূর্বে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়া প্রবন্ধটির শেষেও রেফারেন্সে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের রেফারেন্স দিয়েছেন। প্রবন্ধের কোথাও মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের কোন উদ্বৃতিকে লেখকদ্বয় নিজের উদ্বৃতি বলে দাবি করেননি তাই তাদের কার্যক্রমকে সরাসরি চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় না।’
এছাড়া ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্তের নামে যে সময়ক্ষেপণ করেছে সেটাও তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে দুই শিক্ষকের প্রবন্ধ নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। তদন্ত শেষ হয় ২০১৯ সালে এবং ট্রাইবুনাল গঠিত হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। এতো দীর্ঘমেয়াদী তদন্তের ফলে এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে। একইভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে যা কখনো ন্যায় বিচারের জন্য কাম্য নয়। এত দীর্ঘসূত্রিতা মূলত ন্যায়বিচারকে পরাভূত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সামিয়া রহমানের পদাবনতির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ট্রাইব্যুালের প্রতিবেদনে এসব পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই দুই শিক্ষকের পদাবনতির সিদ্ধান্ত জানায় ঢাবি’র সিন্ডিকেট। যার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি দাখিল করতে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে ট্রাইব্যুনালের এই প্রতিবেদন দাখিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা 'এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম' শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ' জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল 'ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি'তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর 'দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার' নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু
শুধু মিশেল ফুকোরই নয়, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের 'কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম' গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর তাদের একাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহবায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ জমা দিলে গত ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেটের সভায় পদাবনতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এই সুপারিশের পরই শিক্ষক সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকে শিক্ষা ছুটি শেষে চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর একই পদে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। পরে এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সামিয়া রহমান হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৫ সেপ্টেম্বর সামিয়া রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পদাবনতি দেয়ার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে হাইকোর্ট সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথিও তলব করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ‘আলী রীয়াজ স্নাতকোত্তর গবেষণা পুরস্কার ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন
সামিয়া রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, তলবের পরিপ্রেক্ষিতে সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথি ও অন্যান্য প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত আগামী রবিবার শুনানির দিন ঠিক করেছেন।
৩ বছর আগে