সুদান
সুদানের পূর্বাঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ১২০: জাতিসংঘ
সুদানের পূর্ব-মধ্যাঞ্চলের একটি শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের যোদ্ধাদের কয়েকদিনের হামলায় ১২০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের একটি গ্রুপ ও জাতিসংঘ।
সুদানের সামরিক বাহিনীর কাছে একের পর এক বিপর্যয়ের শিকার হওয়ার পর এটি ছিল গোষ্ঠীটির সর্বশেষ হামলা। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ আফ্রিকার দেশটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। লাখ লাখ জনগণকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং দেশটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
আরএসএফ যোদ্ধারা গত ২০-২৫ অক্টোবরের মধ্যে গেজিরা প্রদেশের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের গ্রাম ও শহরগুলোতে তাণ্ডব চালান। তারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালান এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এছাড়া তারা খোলা বাজারসহ ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি লুটপাট করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের ট্র্যাকিং ম্যাট্রিক্সের রবিবারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে তাম্বুল শহর এবং পূর্ব ও উত্তর গেজিরার অন্যান্য গ্রামের ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ আগামী সপ্তাহে সুদান সফরের আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘গেজিরা প্রদেশে হত্যাকাণ্ড এবং ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন সুদানের জনগণের উপর এই সংঘাতের অগ্রহণযোগ্য মানবিক ক্ষতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।’
সংঘাত বন্ধে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নষ্ট করার সময় নেই। লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।’
সুদানে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন এনকোয়েতা-সালামি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'এগুলো নৃশংস অপরাধ। নারী, শিশু এবং সবচেয়ে অরক্ষিত লোকেরা এমন একটি সংঘাতের ধকল বহন করছে; যা ইতোমধ্যে বহু জীবন কেড়ে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ২০০০ সালের গোড়ার দিকে দারফুর গণহত্যার সময় ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা ও গণহত্যাসহ যে ভয়াবহতা সংঘটিত হয়েছিল তার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে।
জানজাভিদ নামে পরিচিত আরব মিলিশিয়া থেকে আরএসএফ সৃষ্টি হয়েছিল। সুদানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশির দারফুরের মধ্য বা পূর্ব আফ্রিকান হিসেবে চিহ্নিত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এসব বিদ্রোহীদের একত্রিত করেছিলেন। এ সময় জানজাভিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য নৃশংসতার অভিযোগ আনা হয় এবং দারফুর গণহত্যার সমার্থক হয়ে ওঠে। জানজাভিদ গ্রুপগুলো এখনো আরএসএফকে সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন: সুদানে মসজিদে বিমান হামলায় নিহত ৩১
সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সারিহা শহরে কমপক্ষে ১২৪ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে ত্রাণ সংস্থাগুলো যাতে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে, সেজন্য 'নিরাপদ করিডোর' খোলার জন্য আরএসএফকে চাপ দিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'আহতদের সাহায্য করা বা চিকিৎসার জন্য তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় নেই।’
অনলাইনে বেশকিছু ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। এর কিছু আরএসএফ যোদ্ধারা নিজেরাই শেয়ার করেছে। সেসব ফুটেজে দেখা গেছে, আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যরা বন্দিদের ওপর নির্যাতন করছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সামরিক ইউনিফর্ম পরা এক ব্যক্তি এক বৃদ্ধের চিবুক ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন এবং পেছনে অন্য সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্লোগান দিচ্ছেন।
ওই ভিডিওতে করা মন্তব্যে আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
আরএসএফের বিরুদ্ধে গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের ওপর গুলি চালানোর পাশাপাশি 'বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার' সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে গণতন্ত্রপন্থি দল ও গোষ্ঠীগুলোর জোট কোঅর্ডিনেশন অব সিভিলিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস।
এক বিবৃতিতে জোটটি 'এই ব্যাপক লঙ্ঘনের জন্য আরএসএফকে দায়ী' করেছে এবং প্রস্তুতকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী সফলভাবে আরএসএফের দখলে থাকা এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করার পর গেজিরায় এ হামলা চালানো হলো।
সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুম ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে এবং আরএসএফের কাছ থেকে বিশাল এলাকা পুনরুদ্ধার করে। এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুর দিকে তারা গেজিরা প্রদেশের কৌশলগত পার্বত্য এলাকা জেবেল মোয়া এবং গেজিরা ও নিকটবর্তী সিন্নার প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ দখল করে আরএসএফ বাহিনীকে হটিয়ে দেয়।
অক্টোবরে আরএসএফের একজন শীর্ষ কমান্ডার, গেজিরার ডি ফ্যাক্টো শাসক আবু আকলাহ কেইকেল পক্ষত্যাগ করেন এবং সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
একটি স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ফলে আরএসএফ যোদ্ধারা কেইকেলের অনুগত হিসেবে পরিচিত গেজিরার গ্রাম ও শহরগুলোতে হামলা চালায়।
২০২৩ সালের এপ্রিলে খার্তুমে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সুদানে যুদ্ধ শুরু হয়।
এই যুদ্ধ গণহত্যা এবং জাতিগতভাবে উসকানি দিয়ে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। বিশেষ করে দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে, যেখানে আরএসএফের নৃশংস আক্রমণ চলছে।
সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা অনুসারে, সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১১
৩ সপ্তাহ আগে
সুদানে মহামারী রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে ৩৪ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
সুদানে পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ৩৪ লাখ শিশু মারাত্মক মহামারী রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট জানান, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে কলেরা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, হাম ও রুবেলার মতো রোগ আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আক্রান্ত রাজ্য ও এর বাইরে শিশুদের অবস্থা মারাত্মকভাবে খারাপ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চলমান অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে টিকাদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া এবং স্বাস্থ্য, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছে। সুদানের অনেক শিশুর পুষ্টির অবস্থার অবনতি তাদের আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনিসেফ গত ৯ সেপ্টেম্বর সুদানে ৪ লাখ ৪ হাজার ডোজ ওরাল কলেরা টিকা সরবরাহ করে। অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সুদানে টিকা দেওয়া ৮৫ শতাংশ থেকে প্রায় ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে।
এতে বলা হয়, সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোর ৭০ শতাংশের বেশি হাসপাতালেই কার্যকম বন্ধ রাখতে হয়েছে। কয়েক মাস ধরে বেতনও পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা।
আরও পড়ুন: বন্যায় বিপর্যস্ত সুদানের ৭ লাখ মানুষ
গত বছরের এপ্রিলে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এসএএফ এবং র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৬৫০ জন মারা গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এসময় কলেরা, ম্যালেরিয়া, হাম ও ডেঙ্গু জ্বরের মতো মহামারী রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, যেসব রোগের কারণেও অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৭ আগস্ট দেশটিতে কলেরার প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করেন সুদানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাইথাম মোহাম্মদ ইব্রাহিম। কলেরা ছড়িয়ে পড়ার জন্য সংঘাতের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত অবস্থার অবনতি এবং অপরিষ্কার পানির ব্যবহারকে দায়ী করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১৫ জুলাই থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ৩২৮ জনের মৃত্যুসহ ১০ হাজার ২২ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানে কলেরার প্রাদুর্ভাব, আক্রান্ত সাড়ে ৯ হাজার, মৃত্যু ৩১৫
২ মাস আগে
সুদানে আরএসএফের হামলায় ৪০ বেসামরিক নাগরিক নিহত
মধ্য সুদানে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।
বেসরকারি একটি সংগঠন আবু গৌতা প্রতিরোধ কমিটি এক বিবৃতিতে জানায়, গেজিরা প্রদেশের আবু গৌতা এলাকার গৌজ আল-নাকা গ্রামে আরএসএফের হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাস্তুচ্যুত গ্রামবাসীদের গ্রামে ফিরে আসতে আরএসএফ বাধা দেওয়ায় বেশ কিছু লাশ দাফন করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিবৃতির মাধ্যমে তারা নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোকে আরএসএফের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে গৌজ আল-নাকার বাসিন্দারা গ্রামে যেয়ে লাশগুলো দাফন করতে পারে।
এ হামলার বিষয়ে আরএসএফ এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ) গেজিরার রাজধানী ওয়াদ মাদানি থেকে সরে যাওয়ার পর এই প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আরএসএফ।
সুদানে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে সহিংস সংঘাত চলছে এসএএফ ও আরএসএফের মধ্যে। যার ফলে অন্তত ১৬ হাজার ৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
২ মাস আগে
সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ২৫, আহত ৩০
পশ্চিম সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী আল ফাশিরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) আর্টিলারি হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।
উত্তর দারফুর রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রধান ইব্রাহিম খাতির সিনহুয়াকে বলেন, 'সোমবার আরএসএফ আবু শৌক শিবিরের বাজার লক্ষ্য করে চারটি গোলা নিক্ষেপ করে।
আহতদের চিকিৎসার জন্য আবু শৌক এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সৌদি হাসপাতাল ও সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার আল ফাশিরের প্রতিরোধ কমিটি তাদের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে জানায়, আরএসএফ সোমবার আল ফাশিরের সাব-সাহারান কলেজে বোমা বর্ষণ করেছে। এতে কলেজের প্রধান হল, পরীক্ষাগার, মর্গ এবং অন্যান্য ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
এ হামলা নিয়ে আরএসএফের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
গত ১০ মে থেকে আল ফাশিরে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ) ও আরএসএফের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত চলছে।
এর আগে গত বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানে এসএএফ ও আরএসএফের মধ্যে মারাত্মক সংঘাত শুরু হয়। যে সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৫০ জন প্রাণ হারিয়েছে।
জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, সুদানের আনুমানিক ১০.৭ মিলিয়ন মানুষ এখন দেশের ভেতরেই বাস্তুচ্যুত অবস্থায় আছে। আর প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ২.২ মিলিয়ন।
২ মাস আগে
সুদানে চলমান সংঘাতে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
সুদানে চলমান সংঘাতে শিশুসহ অসংখ্য লোক ধর্ষণ এবং বিভিন্নভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের সমান হতে পারে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের রাজধানী খার্তুমে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহানের নেতৃত্বাধীন দেশটির সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস নামে পরিচিত আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সময়টা ভালো নয়: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার দেশটিতে বিশেষত শহরাঞ্চল এবং গোলযোগপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলেও এই লড়াই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ নিহত এবং ৮০ লাখেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
লড়াইয়ের শুরু থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি সাহায্যদাতা গোষ্ঠী ও অধিকার পর্যবেক্ষকরা অনেকাংশে ঢুকতে পারছেন না, এমন কিছু স্থানের নির্যাতনের নথিতুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে গাজা ও ইউক্রেনের মতো জায়গায় যুদ্ধের কারণে এ সংঘাতের প্রভাব অনেকটা ঢাকা পড়ে গেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ১১৮ জন ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন – যার বেশিরভাগই বাড়িতে ও রাস্তায় আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, এক নারীকে একটি ভবনে আটকে রাখা হয় এবং ৩৫ দিন ধরে তাকে বারবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
উভয় পক্ষের মধ্যেই শিশু সৈনিক নিয়োগ করা হয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবিদেনে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের দ্রুত, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভোলকার টার্ক বলেন, ‘এসব লঙ্ঘনের কিছু ঘটনা যুদ্ধাপরাধের শামিল।’
এই প্রতিবেদন ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়া ও চাদে অনেক সুদানি পালিয়ে গেছে। সেখান থেকেও কিছুটা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোর ফটোগ্রাফ, ভিডিও ও উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গত সপ্তাহে দেশটির উত্তর কোরদোফান রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যদের বিচ্ছিন্ন মাথা বহন করছে।
টার্ক বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে সুদান থেকে মৃত্যু, দুর্ভোগ ও হতাশার বিবরণ বেরিয়ে আসছিল। অর্থহীন সংঘাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে যার কোনো শেষ নেই।’
তিনি বলেন, ‘বন্দুক বন্ধ করতে হবে এবং বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।’
শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেনিয়ার নাইরোবি থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের আঞ্চলিক মুখপাত্র সাইফ মাগানগো বলেন, '(সুদানে) বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এখন ৮০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা সবার জন্য উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।’
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, সুদানের সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অব্যাহত লড়াই কোনো সমাধান বয়ে আনবে না, ‘তাই আমাদের অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি বন্ধ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের বিষয়ে ইসরাইলের শুনানি শুরু জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে
৮ মাস আগে
সুদানের খার্তুমের বাজারে ড্রোন হামলায় ৪০ জন নিহত
সুদানের রাজধানী খার্তুমের একটি বাজারে সেনাবাহিনীর ড্রোন অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওই হামলায় আরও ৭০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
সুদানের নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশটির সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) যুদ্ধের মধ্যে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতের গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ববাসীর মূল্যায়ন: অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন ইস্যুতে ফোকাস করতে জি২০’র প্রতি আহ্বান
বাশাইর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের প্রতিরোধ কমিটি ও দুই স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, খার্তুমের মায়ো এলাকায় অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ড্রোন হামলাটি সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে। তবে নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক কি না তা স্পষ্ট না। আহতদের জন্য চিকিৎসা সহায়তার জরুরি প্রয়োজন।
প্রতিরোধ কমিটি ও বাশাইর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের দুই স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মতে, আহতদের অনেকের অঙ্গচ্ছেদের প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুটেজ পোস্ট করেছে প্রতিরোধ কমিটি। এতে দেখা যাচ্ছে যে হাসপাতালের একটি খোলা উঠানে সাদা চাদরে লাশগুলো মোড়ানো।
আল জাজিরা জানিয়েছে, সুদানের যুদ্ধে উভয় পক্ষের নির্বিচারে গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। যা বৃহত্তর খার্তুম এলাকাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে।
আল জাজিরার মতে, সংঘাতের পাঁচ মাস পরও আরএসএফ ও সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।
এদিকে সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান জোর দিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী জেদ্দা ফোরামসহ বিভিন্ন উদ্যোগকে স্বাগত জানায় কিন্তু কোনো অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপের অনুমতি দেবে না।
আল জাজিরা জানিয়েছে, আল-বুরহানের নেতৃত্বে সুদানের সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আরএসএফ- এর মধ্যকার উত্তেজনা প্রকাশ্য লড়াইয়ে পরিণত হওয়ায় সুদান এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সহিংস হামলার সাক্ষী হয়ে আসছে।
সিএনএন অনুযায়ী গত মাসে জাতিসংঘ সুদানে গৃহযুদ্ধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কারণ এপ্রিল থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গেছে। দুই দলের লড়াই দেশটিকে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই শুরু হয়। এর ফলে পূর্ব আফ্রিকার দেশটি থেকে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী পালিয়ে যায়। এদিকে মিলিশিয়া জোটের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, বাড়িঘর লুটপাট এবং জাতিগত নির্মূলের অভিযোগে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিএনএন জানিয়েছে, যুদ্ধের চার মাস ধরে যৌন নিপীড়নসহ লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার ঘটনাগুলো ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
জাতিসংঘের মতে অপর্যাপ্ত সাহায্য, বিদ্যুৎ ঘাটতি ও যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতালগুলোর কারণে ইতোমধ্যেই ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উপর চাপ তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত
আফ্রিকান ইউনিয়ন জি২০-তে যোগ দিচ্ছে
১ বছর আগে
যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে দেশে ফিরছেন আরও বাংলাদেশি
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, সরকারের উদ্ধার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহের শুরুতে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে আরও ১০০ বা তার বেশি বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরে আসবেন।
মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রী একটি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, প্রথম ধাপে সুদানে আটকে থাকা ৮০ জন বাংলাদেশিকে ৩০ জুন সুদানের বদর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দোহায় নিয়ে যাওয়া হবে। কারণ এই মুহূর্তে সুদান থেকে জেদ্দা যাওয়ার কোনো ফ্লাইট নেই।
পরে তারা ১ জুলাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরবেন বলেও জানান তিনি।
পোস্টটিতে বলা হয়, বাকি 'নিবন্ধিত' – অর্থাৎ যারা দেশে ফিরে যাওয়ার অভিপ্রায়ে নিবন্ধন করেছেন তারা ২ জুলাই বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরতে পারবেন।
নতুন করে উদ্ধার প্রচেষ্টার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন: ‘আমরা উদ্ধার অভিযান শুরু করার সময়ই কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তন করে একমাসের বেশি সময় আগে নতুন কেউ আগ্রহী না থাকার কারণে তা বন্ধ ঘোষণা করি। কিন্তু আমাদের উদ্ধার ক্যাম্প বন্ধ করার পর পোর্ট সুদানে অনেক বাংলাদেশি জড়ো হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুদানে অপহৃত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী উদ্ধার
খার্তুমের পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যে সংখ্যাটি ১০০ ছাড়িয়েছে। তাদের থাকার উপযুক্ত জায়গা না থাকায় তারা অনেক কষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন।
খোলা আকাশের নিচে লোহিত সাগরের তীরে তাদের রাত কাটে। আমরা তাদের ব্যবহারের জন্য শুধুমাত্র ফ্লোর ম্যাট এবং কিছু জলের ট্যাঙ্ক সরবরাহ করতে পেরেছিলাম গত কয়েকদিনে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছি।
আমাদের কনসুলেট মন্ত্রণালয়কে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন এবং আমরা তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুমোদন দেই। এখন জেদ্দার কোনো ফ্লাইট না থাকায় বদর এয়ারলাইনসে দোহা যাওয়ার নতুন রুট খুলেছে।
আমরা আবার উদ্ধার ক্যাম্প খুলে রেজিস্ট্রেশন শুরু করেছি। গত পরশু পর্যন্ত ১০৪ জন নাগরিক তাদের ফিরে যাওয়ার অভিপ্রায় নিবন্ধন করেছেন। আমরা নিবন্ধনের শেষ তারিখ হিসাবে ২৭ জুন ঘোষণা করেছি। আমরা আশা করছি যে ১৫০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধন করবেন।
যদি আমাদের ১৬০ জনের বেশি যাত্রী থাকে, তারা ২ জুলাই ফ্লাইট নেবেন।
আশাকরি এই পরিবারগুলোর জন্য ঈদের আগে এই সংবাদ কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।’
আরও পড়ুন: সংঘাতপূর্ণ সুদান থেকে দেশে ফিরেছেন ৭২১ জন বাংলাদেশি: সেহেলী সাবরীন
সুদানফেরতদের পুনর্বাসনে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
১ বছর আগে
দক্ষিণ সুদানে অপহৃত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী উদ্ধার
দক্ষিণ সুদানে মঙ্গলবার অপহৃত এক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক মো. আশেকুর রহমান, দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ মিশনে (ইউএনএমআইএসএস) ব্যক্তিগত পুলিশ কর্মকর্তা (আইপিও) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক(মিডিয়া) মো. মঞ্জুর রহমানের সই করা একটি পুলিশ মিডিয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আশেকুরকে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিয়ে টহল দেওয়ার সময় একটি স্থানীয় অপহরণকারী দল তাকে অপহরণ করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং এখন অন্যান্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে সুস্থ ও নিরাপদে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: মালিতে ৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর ওপর হামলার ঘটনায় মার্কিন দূতাবাসের দুঃখ প্রকাশ
মালিতে আইইডি বিস্ফোরণে ৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত
১ বছর আগে
সংঘাতপূর্ণ সুদান থেকে দেশে ফিরেছেন ৭২১ জন বাংলাদেশি: সেহেলী সাবরীন
সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর চলমান গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষিতে সুদান থেকে এ পর্যন্ত ৭২১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সুদানে বিগত ১৫ এপ্রিল থেকে সংঘর্ষ চলমান। গত একমাসে এই সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় চারশ’র অধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে সরকারি খরচে সুদানে অবস্থানরত ৭২১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত এনেছে।
সুদানে প্রায় ১৫০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথমপর্বে প্রায় ৮০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দা থেকে একজন কাউন্সেলর সুদানস্থ বাংলাদেশ এম্বাসিকে সহায়তা দেয়ার জন্য পোর্ট সুদানে গিয়ে বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে ৫৭০ জনের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে
তিনি আরও বলেন, সুদানে অবস্থানরত বাকী বাংলাদেশিদেরকে বদর এয়ারলাইন্সে সরকারি খরচে সুদান থেকে জেদ্দা পরিবহন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ৭২১ জন।
আরও ১৬০ জন বাংলাদেশিকে দেশে প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, পোর্ট সুদান বা জেদ্দা কোন স্থানেই যেন প্রবাসীদের অসুবিধা না হয় সেজন্য উভয় স্থানেই তাদের জন্য খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা এবং সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানফেরতদের পুনর্বাসনে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
১ বছর আগে
সুদানফেরতদের পুনর্বাসনে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
সুদানে সাম্প্রতিক গৃহযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার সুদান থেকে ৭ শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশিকে নিরাপদে ফেরত আনার ব্যবস্থা করেছে।
সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ রবিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশি কর্মীদের আর্থ-সামাজিক পুনর্বাসনের বিষয়ে আলোচনার জন্য এক সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এতে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন ৫১ প্রবাসী বাংলাদেশি
সভায় নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:
ক) যেসকল কর্মী দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আগ্রহী তাদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে তিন লাখ টাকা, সহ-জামানতে পাঁচ লাখ টাকা এবং জামানতসহ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ ঋণ দেওয়া হবে।
খ) সুদানফেরত যেসব কর্মী পুনরায় বিদেশ যেতে চান, প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসাপেক্ষে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের পছন্দের দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হবে।
বিশেষ করে সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বোয়েসেল জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অন্য যেসব দেশে কর্মী পাঠায়, সেখানে অগ্রাধিকারভিত্তিতে তাদের নেওয়া হবে।
গ) আগ্রহী কর্মীদের বিনামূল্যে দক্ষতা উন্নয়ন/উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ/কাউন্সেলিং সেবা দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গৃহীত উদ্যোগসমূহ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সুদানফেরত কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে একটি ডাটাবেস তৈরি করা হবে।
এ বিষয়ে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড/সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের (ডিএমও) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ প্রত্যাগত কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
এ ব্যাপারে সুদানফেরত সকলকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বিস্তারিত তথ্যের জন্য প্রত্যাগত কর্মীদের সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে (ডিএমও) যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ডিএমও-এর ঠিকানা www.bmet.gov.bd-তে পাওয়া যাবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো’র মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম এনডিসি, বোয়েসেল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূঞা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সুদান থেকে ৫৭০ জনের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে
সুদান থেকে দেশে ফিরলেন আরও ২৬২ বাংলাদেশি
১ বছর আগে