সুদানের রাজধানী খার্তুমের একটি বাজারে সেনাবাহিনীর ড্রোন অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওই হামলায় আরও ৭০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
সুদানের নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশটির সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) যুদ্ধের মধ্যে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতের গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ববাসীর মূল্যায়ন: অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন ইস্যুতে ফোকাস করতে জি২০’র প্রতি আহ্বান
বাশাইর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের প্রতিরোধ কমিটি ও দুই স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, খার্তুমের মায়ো এলাকায় অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ড্রোন হামলাটি সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে। তবে নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক কি না তা স্পষ্ট না। আহতদের জন্য চিকিৎসা সহায়তার জরুরি প্রয়োজন।
প্রতিরোধ কমিটি ও বাশাইর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের দুই স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মতে, আহতদের অনেকের অঙ্গচ্ছেদের প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুটেজ পোস্ট করেছে প্রতিরোধ কমিটি। এতে দেখা যাচ্ছে যে হাসপাতালের একটি খোলা উঠানে সাদা চাদরে লাশগুলো মোড়ানো।
আল জাজিরা জানিয়েছে, সুদানের যুদ্ধে উভয় পক্ষের নির্বিচারে গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। যা বৃহত্তর খার্তুম এলাকাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে।
আল জাজিরার মতে, সংঘাতের পাঁচ মাস পরও আরএসএফ ও সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।
এদিকে সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান জোর দিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী জেদ্দা ফোরামসহ বিভিন্ন উদ্যোগকে স্বাগত জানায় কিন্তু কোনো অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপের অনুমতি দেবে না।
আল জাজিরা জানিয়েছে, আল-বুরহানের নেতৃত্বে সুদানের সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আরএসএফ- এর মধ্যকার উত্তেজনা প্রকাশ্য লড়াইয়ে পরিণত হওয়ায় সুদান এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সহিংস হামলার সাক্ষী হয়ে আসছে।
সিএনএন অনুযায়ী গত মাসে জাতিসংঘ সুদানে গৃহযুদ্ধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কারণ এপ্রিল থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গেছে। দুই দলের লড়াই দেশটিকে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই শুরু হয়। এর ফলে পূর্ব আফ্রিকার দেশটি থেকে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী পালিয়ে যায়। এদিকে মিলিশিয়া জোটের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, বাড়িঘর লুটপাট এবং জাতিগত নির্মূলের অভিযোগে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিএনএন জানিয়েছে, যুদ্ধের চার মাস ধরে যৌন নিপীড়নসহ লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার ঘটনাগুলো ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
জাতিসংঘের মতে অপর্যাপ্ত সাহায্য, বিদ্যুৎ ঘাটতি ও যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতালগুলোর কারণে ইতোমধ্যেই ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উপর চাপ তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, মারাকেচে ঐতিহাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত