সিরিয়াল কিলার
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের পর হত্যাই ‘সিরিয়াল কিলার’ মুন্নার নেশা
কখনো গাড়ির হেলপার, কখনো বেকারির কারিগর। প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিয়ে খুন করাই তার নেশা। এক মাসের ব্যবধানে দুটি খুন করে আরও হত্যার পরিকল্পনা ছিল তার। তবে অবশেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ‘সিরিয়াল কিলার’ আব্দুল্লাহ আনসারী মুন্না (২৩)ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার (৩১ অক্টোবর)সকাল সাড়ে ৬টায় কোতোয়ালী থানাধীন সুরগাপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মুন্না কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বারকোটা ভূঁইয়া বাড়ির মো. শহীদুল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে এবং দ্বীন ইসলাম দীনু (১৯) সদরের দুর্গাপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকালে পিবিআই কুমিল্লা কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানায়।
পিবিআই জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জেলার সদর দক্ষিণ থানার বহুল আলোচিত পান্না আক্তার (২৮) ও লাইলী বেগম রিমা (২৬) হত্যার দায় স্বীকার করে একের পর এক লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। মুন্না প্রেমিক সেজে টাকা হাতিয়ে নেয়ার আইডিয়া অন্যের কাছ থেকে পায়।কিন্তু খুন করার পরিকল্পনা তার নিজের। খুনের ধরণ একই।
আরও পড়ুন: বিরাট কোহলির মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি, তদন্ত করছে পুলিশ
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, প্রায় দুই মাস আগে পান্না আক্তারের মোবাইল নম্বর থেকে আসামির মোবাইল নম্বরে কল এলে অভিযুক্ত ও ভিকটিমের পরিচয় হয়। অভিযুক্ত মুন্না ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। অভিযুক্তরা পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগীর কাছ থেকে আগের দাবি অনুযায়ী কোনো টাকা না পাওয়ায় অভিযুক্ত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ভিকটিমকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ চাদরে মুড়িয়ে রাখে। চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে লাশ বস্তাবন্দি করে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে ঘটনাস্থল সদর দক্ষিণ থানাধীন গোপিনাথপুর সার্কিনে ঢাকা-চট্টগ্রামমূখী মহাসড়কের উত্তর পাশে, সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের বিপরীত পাশে ফেলে দেয়।
এক মাস আগে অভিযুক্ত মুন্না তার বন্ধু পারভেজ সঞ্জীবের সহযোগিতায় ভিকটিম লাইলী বেগমের সাথে প্রেম করে। এই প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ভিকটিম গত ০২ সেপ্টেম্বর টাকা নিয়ে জাগরঝিল এলাকায় আসে। ২০ হাজার টাকা এবং দুটি মোবাইল ফোন এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। অভিযুক্ত মুন্না ও দ্বীন ইসলাম ভিকটিমকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। পরে তার লাশ ফেনী মডেল থানাধীন শর্শদী ইউপিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে জঙ্গলে ফেলে দেয়। ফেনী সদর মডেল থানা পুলিশ ১৩ সেপ্টেম্বর নিহতের গলিত লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে পিবিআই কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই হত্যাকাণ্ড একটি ক্লুলেস হত্যা মামলা। আমাদের সদস্যদের আন্তরিকতা এবং আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সিম উদ্ধার করা হয়েছে। এই দুই আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হলে তারা দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে কিশোর আটক
বনানীতে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার রায় ফের পেছাল
৩ বছর আগে