শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী
তিন দফা দাবিতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
অতিরিক্ত ভর্তি ফি, সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি বাতিলসহ সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- যৌক্তিকভাবে ভর্তি, সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি কমিয়ে তা শিক্ষার্থীদের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে, পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল এবং আগামী ২ সেমিস্টার ৪ মাস করে শেষ করতে হবে।
৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি কার্যকর না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রসায়ন বিভাগের আসাদুল্লাহ আল গালিব, সমাজকর্ম বিভাগের মুজাহিদ ইমন, মুহাম্মদ আলী, মুরাদ মিয়া, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের মাহবুবুল হাসান পবন ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ফয়সাল হোসেন।
এ সময় আজাদ শিকদার জানান, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি ছিল ৮ হাজার ১০০ টাকা। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তা বাড়িয়ে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তি ফির পাশাপাশি কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফি। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত তত্ত্বীয় প্রতি ক্রেডিটের মূল্য ছিল ১০৫ টাকা, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে তা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ টাকা। এছাড়া, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক প্রতি ক্রেডিটের মূল্য ছিল ১৬০ টাকা যা ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করেছিলাম তারা শিক্ষার্থীবান্ধব হয়ে উঠবে। কিন্তু আমরা বারবার দাবি নিয়ে গেলেও প্রশাসন তাতে ভ্রুক্ষেপ করছে না। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর আগের প্রশাসনের চাপিয়ে দেওয়া পদ্ধতিগুলো এখনও বাতিল করেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উৎস শিক্ষার্থীরা হতে পারে না উল্লেখ করে এই শিক্ষাথী বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে বারবার বলেছি, পূর্ববর্তী প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওপর অযৌক্তিকভাবে ভর্তি, ক্রেডিট ও সেমিস্টার ফি চাপিয়ে দিয়েছিল, যা শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম করে অর্থ নেওয়ার মতো।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উৎস বিশ্ববিদ্যালয় বের করবে, কিন্তু আমরা দেখতে পাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এদিকে নজর না দিয়ে আয়ের উৎস হিসেবে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, অযৌক্তিক ফি বাতিল করে শিক্ষার্থীবান্ধব ফি নিশ্চিত করুন।’
পবন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটায় অতিরিক্ত সুযোগ দেওয়ার কোনো অর্থ দেখি না। এতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হন।’
শাবিপ্রবিতে পোষ্য কোটা বাতিলসহ বিভাগীয় পর্যায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, প্রশাসনের সঠিক সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে অবাঞ্ছিত ও আজীবন নিষিদ্ধ সেই উর্মি!
১ সপ্তাহ আগে
নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
চাকরির বাজারে বিক্রি না হয়ে নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা। করোনার প্রায় দুই বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় অবসর সময়কে কাজে লাগিয়েছেন এই উঠতি উদ্যোক্তারা। পর্যাপ্ত সময়, স্বল্প মূলধন, অনলাইন নির্ভর বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করেই তরুণ উদ্যোক্তারা গ্রাহকদের সেবার মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
এদের মধ্যে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের একটি অংশ রয়েছে। উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে তারা নিজ নিজ কর্মস্থানে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
চাঁদপুরের ছেলে মো. রাকিবুজ্জামান পড়াশোনা করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর দেড় মাসের মাথায় করোনায় বন্ধ হয়ে যায় তার নিজ বিদ্যাপীঠ।পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার পর বছরের প্রথম দিন শাবিপ্রবির গেইটে চালু করেন ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট ‘দ্য বাইট ক্যাভ’।
আরও পড়ুন: ভ্যানচালক বাবা ও চা বিক্রেতা মায়ের মেয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণে যাচ্ছে পর্তুগাল
শিক্ষার্থী মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, এসএসসি পাস করার পর ১৭ বছর বয়সে মাথায় শুধু ঘুরপাক খেতে থাকে পড়াশোনার পাশাপাশি যেভাবেই হোক স্বনির্ভর হতে হবে। আর তার জন্য চাই পুঁজি। কলেজের পুরো সময়টা চলে গেলো কিছুটা পুঁজি জমাতে। ভার্সিটিতে পা রাখতে না রাখতেই 'করোনা'র মধ্যে পড়লাম। করোনাকালীন যেই সময়টা বাড়িতে ছিলাম, সেই সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করলাম। রান্না-বান্নার প্রতি আমার সব সময়ই একটা আগ্রহ ছিল এবং বাসায় প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের রান্না করে আম্মুকে টেস্ট করাতাম। এই আগ্রহ থেকেই ভাবলাম ভার্সিটি গেইটে রেস্টুরেন্ট দেয়ার কথা।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমি যেই ক্ষেত্রেই কাজ করতে যাই বা ব্যবসা দাঁড় করাতে যাই না কেন, প্রথমে সেই সেক্টরে আমাকে নিজের প্রবেশ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। বাড়িতে করোনাকালীন সময়ে সন্ধ্যার পরের সময়টা এক বন্ধুর রেস্টুরেন্টে কাটাতাম। প্রায় ছয় মাস সেখানে আমি সময় দিলাম শুধু নিজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য। অবশেষে অনেক বাধা বিপত্তির পর ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনে আমি ‘দ্য বাইট ক্যাভ’ রেস্টুরেন্টটি চালু করেছি। আমার সঙ্গে আমারই ডিপার্টমেন্টের বন্ধু মো. মহিউল ইসলাম যুক্ত রয়েছে।
মো.রাকিবুজ্জামান বলেন, আমার শুরু থেকে একটাই লক্ষ্য ছিল-স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি বাজেটে কোয়ালিটিসম্পন্ন খাবার সরবরাহ করা। আমার রেস্টুরেন্টের কাস্টমারদের একটা বড় অংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খাবারের গুণগত মানের দিক ভালো হওয়ার কারণে খুব অল্প দিনেই ‘দ্য বাইট ক্যাভ’ সবার আস্থা অর্জন করেছে। আমাদের অনলাইন পেইজ দ্য বাইট ক্যাভ ও ফুড পান্ডা অ্যাপের মাধ্যমে আমাদের রেস্টুরেন্টের সেবা পুরো সিলেট শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আমার স্বপ্ন আছে দ্য বাইট ক্যাভের আরও একটি ব্রাঞ্চ চালু করার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আদিবা মালিহা পড়াশোনার পাশাপাশি সময় দিচ্ছেন মেয়েদের গহনার দিকে।
২ বছর আগে
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের এনআইডি নিবন্ধনের তথ্য দেয়ার নির্দেশ
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) মেডিকেল সেন্টার থেকে যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়া টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের এনআইডি ছাড়া টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেবে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এজন্য আগামী ১৮ নভেম্বরের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে শিক্ষার্থীদের এনআইডি নিবন্ধনের তথ্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারে মারা গেলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন জানান, যেসব শিক্ষার্থী এনআইডি ছাড়া টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে তাদের দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক এনআইডির তথ্য দিতে হবে। এজন্য যারা এখনো এনআইডির নিবন্ধন করেননি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করে প্রক্টর বরাবর প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী সপ্তাহ থেকে ক্যাম্পাসে এনআইডি বুথ বসবে। ক্যাম্পাসে এনআইডির নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শেষ হলে যথাসময়ে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নতুন ইতিহাস তৈরি হল: শাবিপ্রবি উপাচার্য
তিনি জানান, যেসব শিক্ষার্থী এনআইডি দিয়ে মেডিকেল সেন্টার থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে তারা চাইলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল বা নির্ধারিত কেন্দ্র থেকে ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবে।
৩ বছর আগে