কৌশল
জলবায়ু অভিযোজন-প্রশমন কৌশলগুলো ন্যায়সঙ্গত হতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন ও প্রশমন কৌশলগুলো ন্যায়সঙ্গত হতে হবে এবং সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রাধান্য দিতে হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংকট মোকাবিলায় ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বাড়াতে হবে। উন্নত দেশগুলোর অর্থ সাহায্য কিছু আর্থিক সমস্যার সমাধান করলেও প্রকৃত জলবায়ু ন্যায়বিচার হবে না।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করায় ছাত্র-জনতার অভিযোগ নিরসনের উপায় হলো: আইন উপদেষ্টা
রবিবার (২০ অক্টোবর) ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত সেমিনারে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে থাকবে।
এসময় পরিবেশ উপদেষ্টা অভিযোজন পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং তরুণদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার আহ্বান জানান।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরা এবং উচ্চাভিলাষী প্রশমন উদ্যোগ নিয়ে কথা বলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
এদিকে কপ-২৯ সম্মেলনের আগে, বাংলাদেশে নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের গুরুত্বও তুলে ধরেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এসময় বক্তব্য দেন- পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, নির্বাহী পরিচালক ড. এস এম মুনজুরুল হান্নান খান, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।
সেমিনারে বিভিন্ন সিএসও, জলবায়ু কর্মী এবং নীতি বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। সেমিনারের মূল লক্ষ্য ছিল কপ-২৯ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশে নাগরিক সমাজের একটি একক অবস্থান গঠন করা।
আলোচনা মূলত অভিযোজন কৌশল, জলবায়ু অর্থায়ন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জলবায়ু সহনশীলতা গঠনে তাদের ভূমিকা নিয়ে ছিল।
অনুষ্ঠানের শেষে কপ- ২৯ সম্মেলনে জোরালো অ্যাডভোকেসির আহ্বান জানানো হয়, যাতে বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কণ্ঠস্বর শোনা যায়।
উপস্থিত প্রতিনিধিরা আশা প্রকাশ করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং সহনশীলতা গঠনে বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করবে।
আরও পড়ুন: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে কৃষকের স্বার্থে কাজ করতে আহ্বান কৃষি উপদেষ্টার
১ মাস আগে
উন্মুক্ত চীনের বাজার: বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর কৌশল
বিভিন্ন পদ্ধতিগত ও কৌশলগত কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার থেকে লাভবান হওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি রপ্তানি বাড়াতে চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, চীনে গুনগত, মানসম্পন্ন ও বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ অতিরিক্ত ২৭ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে এবং এর বাজার শেয়ার এক শতাংশে উন্নীত হতে পারে। তবে এই প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাধার বিষয়ও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এর মধ্যে একটি প্রধান বাধা হলো তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের ওপর বাংলাদেশের অতিমাত্রায় নির্ভরতা। যদিও চীন ১০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করে। তবে উচ্চ-মানের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের অক্ষমতা তার রপ্তানি অর্জনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন: ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু, ভালো অংশীদার: বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে চীন। আর বাংলাদেশের রপ্তানি ৮৪ শতাংশ তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল।’
ড. রাজ্জাক বলেন, ইতালি ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে উন্নতমানের পোশাককে অগ্রাধিকার দেয় চীন এবং এ ধরনের প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। চীনের বাজারে প্রবেশ করতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে এবং পণ্যের গুণগত মান উন্নত করতে হবে।
তিনি চীনমুখী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং বাণিজ্য চুক্তি সইসহ কার্যকর নীতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বাধাগুলো হলো:
- চীনা খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব।
- বিপণন, বিক্রয় ও বিক্রয়োত্তর পরিষেবাগুলোতে অপর্যাপ্ত অংশগ্রহণ।
- সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বাধা
- চীনা লেবেলিং ও প্যাকেজিংয়ে কঠোর প্রবিধান।
ড. রাজ্জাক মূল্য প্রতিযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, একই মানের বাংলাদেশি পণ্যের তুলনায় চীনা পণ্যের দাম অনেক সময় কম থাকে। চীনের ক্রমবর্ধমান ই-কমার্স খাত আরেকটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ এই বাজারে কার্যকরভাবে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের আরও দক্ষতার প্রয়োজন।
ড. রাজ্জাক মনে করেন, বাংলাদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব স্থাপনে চীনা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে। এসব কারখানা চীন ও অন্যান্য দেশে রপ্তানির জন্য পণ্য উৎপাদন করতে পারত। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ বাড়বে।
আরও পড়ুন: চীনে ৮-১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘোষণা বেইজিংয়ের
একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন মৃধা। তিনি উল্লেখ করেন, চীনের কিছু বিনিয়োগকারী চীনা পণ্যের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বাজার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের উৎপাদন শিল্প বাংলাদেশে স্থানান্তরের কথা বিবেচনা করছে।
চীনের আরও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ৮ থেকে ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরকালে বেইজিংয়ে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে চীনা কারখানা স্থাপনের ফলে চীনে বাংলাদেশি রপ্তানির পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করছেন মৃধা।
বর্তমানে বাংলাদেশ চীন থেকে বছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি করে এবং চীনে রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে। এই বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা মোকাবিলায় চীনা বিনিয়োগকারীদের সিরামিক, চামড়া, ওষুধ, বৈদ্যুতিক গাড়ি, উচ্চমানের পোশাক ও গৃহস্থালি সরঞ্জামের মতো খাতে লাভজনক প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।
চীনের বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশাধিকার বাড়ানোর জন্য কৌশলগত বহুমুখীকরণ, গুণগত মানোন্নয়ন ও শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি প্রয়োজন। আসন্ন শীর্ষ সম্মেলন এবং সম্ভাব্য চীনা বিনিয়োগ রপ্তানি বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করতে পারে। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে উপকৃত করবে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর: বিজনেস সামিটে ৭০০ কোটি ডলারের তহবিল চাইবে বাংলাদেশ
৪ মাস আগে
আহমেদ রুবেলের বর্ণাঢ্য জীবন
আহমেদ রুবেল একজন দরাজ কণ্ঠের অভিনেতা। তাই পর্দায় তার অভিনয়ের সঙ্গে সংলাপ বলার কৌশল তাকে অন্য অনেকের থেকে আলাদা করা যায়। ৫৫ বছর বয়সে বিদায় জানালেন এই পৃথিবীকে এই মানুষটি।
সেলিম আল দীনের ‘ঢাকা থিয়েটার’ এর মধ্য দিয়ে অভিনয়ের দুনিয়ায় পা রাখেন আহমেদ রুবেল। পরে টিভি নাটকে তার শুরু হয় গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নযাত্রা’ দিয়ে। প্রথম টিভি নাটক দিয়ে দর্শকের নজরে আসেন তিনি।
এরপর তার তুমুল জনপ্রিয়তা আসে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘প্রেত’ দিয়ে। কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের নাটকে নিয়মিত দেখা যেত তাকে।
আরও পড়ুন: অভিনেতা আহমেদ রুবেল আর নেই
১৯৯৩ সালে ‘আখেরী হামলা’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন রুবেল। এরপর ‘চন্দ্রকথা’, ‘ব্যাচেলর’, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর’সহ বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন রুবেল।
ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হিসেবেও দীর্ঘদিন মঞ্চে কাজ করেছেন দাপুটে এই অভিনেতা। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক ‘অতিথি’, ‘নীল তোয়ালে’, ‘বিশেষ ঘোষণা’, ‘প্রতিদান’, ‘নবাব গুন্ডা’, ‘এফএনএফ’ প্রভৃতি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মানুষ আমাকে কলকাতার চেয়ে বেশি ভালোবাসে: স্বস্তিকা
অভিনেতা আহমেদ রুবেলের পুরো নাম আহমেদ রাজিব রুবেল। ১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতার নাম আয়েশ উদ্দিন। রুবেলের বেড়ে উঠা ঢাকা শহরেই। পরিবারের সঙ্গে সবশেষ গাজীপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, নির্মাতা নুরুল ইসলাম আতিকের ‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমাটিতে ৮ বছর আগে অভিনয় করেছিলেন আহমেদ রুবেল।
আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ছবিটি মুক্তি পাবে। এর আগে আজ (বুধবার) সন্ধ্যা ৭টায় বসুন্ধরা সিটির লেভেল-৮-এর স্টার সিনেপ্লেক্স উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে যাওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই গুণী অভিনেতা।
আরও পড়ুন: আহমেদ রুবেল: একজন প্রথিতযশা অভিনয়শিল্পী
৯ মাস আগে
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কিত গবেষণা
সারসংক্ষেপ
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ চীনের শিক্ষার ক্ষেত্রে ‘নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ’র প্রতিভা প্রশিক্ষণের জন্য নতুন প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই নিবন্ধে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভার (চীনের বাংলা ভাষার শিক্ষার্থী) বর্তমান পরিস্থিতি আলোচনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশলগত তাৎপর্য তুলে ধরে চীনে বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোন দেশে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার, বেশি মানসিক রোগ?
মূল শব্দ: ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’, বাংলাভাষী প্রতিভা
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকেই চীন ও বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ছিল। নিউ তাং রাজবংশের দ্বিতীয় খণ্ডের ২২১(পর্ব) প্রাচীন ভারতীয় মগধ রেকর্ড করেছে। মিং ইতিহাসের ৩২৬ খণ্ডেও ‘বাংলা’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে চীন ও বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর উভয়পক্ষ রাজনীতি, অর্থনীতি, সামরিক ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর সহযোগিতা করেছে। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা দুই দেশ সফর করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় বাড়ছে এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে।
(১) নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ নির্মাণের কৌশলগত তাৎপর্য
নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, "আপনি যদি কোনো লোকের সঙ্গে এমন ভাষায় কথা বলেন যা তিনি বোঝেন, এটি তার মনে থাকবে। আপনি যদি তার নিজের ভাষায় তার সঙ্গে কথা বলেন, তিনি স্মরণ করবেন।” ভাষা ও চিন্তার সম্পর্ক নিয়ে অনুমানকে সামনে রেখেছিলেন আমেরিকান সাপির ও তার শিষ্য ওল্ফ। তারা বিশ্বাস করেন, সমস্ত উচ্চ পর্যায়ের চিন্তাভাবনা ভাষার উপর নির্ভর করে। (সাপির, ১৯২১), ভাষার কাঠামো একটি নির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্যদের আচরণ ও চিন্তাভাবনা নির্ধারণ করে অনুমানটি স্পষ্ট করেন সাপির-ওল্ফ। সুতরাং, অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি ও চিন্তাভাবনা বোঝার জন্য, আরও ভালো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও মিডিয়া বিষয়ক যোগাযোগ বাড়াতে নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজের নির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ।
বৈশ্বিক কৌশলগত বিন্যাস ও সম্প্রসারণে, অনেক দেশ নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ নির্মাণকে জাতীয় কৌশলের উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে। চীনের নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ কৌশল নির্মাণকাজ একবিংশ শতাব্দীতে একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ আন্ডারগ্রাজুয়েট ট্যালেন্ট ট্রেনিং বেস’ ও ‘স্পেশালিটি কনস্ট্রাকশন সাইটস’ সহায়তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে। চীন তার নিজ দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কযুক্ত দেশগুলোর সরকারি ভাষা (৮৮টি নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজ) পড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়কে সহায়তা দেবে।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ নির্মাণের মূল চাবিকাঠি হলো আন্তঃসংযোগ। আর ভাষার আন্তঃযোগিতা হলো আন্তঃসংযোগ অর্জনের ভিত্তি। ভাষা পরিকল্পনার কৌশলগুলো প্রচারের ফলে নন-কমন ল্যাঙ্গুয়েজের প্রতিভা প্রশিক্ষণের পরিমাণ, গুণমান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির উচ্চতর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
(২) চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশলগত তাৎপর্য
বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির মাতৃভাষা, জাতিগত সংস্কৃতি, ধারণার বাহক ও জাতীয় আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সাহিত্য সৃষ্টির জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহার করেন। ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার জন্য ‘ভাষা আন্দোলন’ হয়। এই আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের জাতিগত ভাবনা জাগিয়ে তোলে এবং শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশিদের কাছে বাংলা ভাষা হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক প্রতীক, জাতীয় গর্ব ও জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। ‘বাংলাদেশি সংস্কৃতি একটি সম্মিলিত সংস্থান; যা শ্রেণি, অঞ্চল ও ধর্মীয় সীমানা জুড়ে বাংলাদেশিদের ঘনিষ্ঠ ইউনিটে আলোকিত করতে পারে।’ (উইলিয়াম ভন শ্যান্ডেল, ২০১১)
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’র অন্তর্ভুক্ত একটি দেশ হিসাবে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং মূলত কয়েকটি বড় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে চীনের সঙ্গে একমত হয়। আন্তর্জাতিক বিষয়ে চীন ও বাংলাদেশের নেতারা নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরালোভাবে বিকাশ লাভ করেছে। চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠেছে। চীনের দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ এবং তৃতীয় বৃহত্তম ইঞ্জিনিয়ারিং চুক্তি বাজার। বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণ চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ভালো প্রতিবেশী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে এবং আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বিকাশে নবদিগন্তের হাতছানি
২. ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের বর্তমান পরিস্থিতি
(১) পেশাদার প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির পরিমাণ কম
চীনের মূল ভূখণ্ডে বর্তমানে শুধু পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক পর্যায়ের কোর্স চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনান ন্যাশনালিটিস বিশ্ববিদ্যালয়, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ও ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়াও, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইনর কোর্স হিসেবে বাংলা ভাষা চালু রয়েছে।
নিবন্ধনের বছর অনুযায়ী, চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এখানে বাংলা বিভাগ ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ পর্যন্ত মাত্র সাতটি ব্যাচ এখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মেজর ২০১৬ সালের পরে নামভুক্ত হয়। ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটি ২০১৬ সালে, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ ২০১৭ সালে, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ২০১৮ সালে এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০ সালে।
তালিকাভুক্তির পরিমাণের ক্ষেত্রে, চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০ জন, গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজে প্রায় ১২ জন, ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ১৫ জন, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ জন এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সামগ্রিক অর্থে শিক্ষার্থী ভর্তির পরিসর ছোট এবং প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তির পরিকল্পনাও নেই। ২-৪ বছরের মধ্যে শুধু একবার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
তবে গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজ প্রতি বছর বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ভর্তি করে। চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এত ঘন ঘন শিক্ষার্থী ভর্তির স্কুল আর নেই। বর্তমানে গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের প্রথম বাংলা ভাষা স্নাতক কোর্সের দুটি ব্যাচ রয়েছে।
(২) শিক্ষকদের দক্ষতা অপর্যাপ্ত
শিক্ষকদের দৃষ্টিকোণ থেকে, চীনের বাংলা ভাষা বিষয়ে চীনা শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বল্প, পেশাগত ডিগ্রি কম এবং শিক্ষণ অভিজ্ঞতাও অপর্যাপ্ত। যে কয়েকজন অভিজ্ঞ প্রবীণ শিক্ষক ছিলেন তারা অবসর নিয়েছেন, কেবলমাত্র একজন শিক্ষক আছেন যিনি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা ভাষা পড়াচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে যেসব শিক্ষক আছেন তাদের বেশিরভাগই সবেমাত্র স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
চীন যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দুজন চীনা শিক্ষক আছেন। ইউনান ন্যাশনালিটিস ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগে তিনজন চীনা শিক্ষক আছেন। বেইজিং ফরেন স্টাডিজের বাংলা বিভাগে শুধু একজন চীনা শিক্ষক আছেন এবং ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তিনজন চীনা শিক্ষক আছেন। গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের বাংলা ভাষা বিভাগে মোট ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন চীনা শিক্ষক ও ২ জন বাংলাদেশি শিক্ষক। মোট শিক্ষকের সংখ্যায় এখানে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা বিষয়ে সর্বাধিক। তবে শিক্ষকদের একাডেমিক স্তর ও পাঠদানের অভিজ্ঞতাও উন্নত করা দরকার।
(৩) উচ্চ পর্যায়ের বাংলাভাষী প্রতিভার ঘাটতি
চীনে বাংলাভাষী প্রতিভার কাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে। প্রশিক্ষণ এখনও স্নাতক ডিগ্রি পর্যায়ে রয়েছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষা বিষয়ে এখনও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কোনো কোর্স চালু হয়নি। অনেক শিক্ষার্থী অন্যান্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়েন বা সরাসরি চাকরি করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের চাকরির সঙ্গে বাংলা ভাষার কোনো সম্পর্ক নেই।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে, বাজারে এমন উচ্চ-পেশাদার প্রতিভার প্রয়োজন আছে; যারা দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিস্থিতি জানে এবং অর্থায়নে পেশাদার জ্ঞান অর্জন করে, যেমন- আইন, অর্থনীতি, বাণিজ্য ইত্যাদি। যে দেশে বিনিয়োগ করছেন, সে দেশের জাতীয় পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি না বোঝার কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ব্যর্থতা ও বিনিয়োগের ক্ষতির অনেক ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বেদনায় ভরা দিন: শেখ হাসিনা
১ বছর আগে
বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার কৌশল প্রণয়ন করা হচ্ছে: অর্থমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর রূপরেখা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তার আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের কৌশল নিয়ে কাজ করছেন তারা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করার সময় তিনি সংসদে বলেছিলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে টেকসই উত্তরণ এবং উত্তরণ-পরবর্তী বাস্তবতাগুলো মোকাবিলা করার কৌশলগুলো এখনই নির্ধারণ করা দরকার।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট অর্থনীতি এই চারটি মূল স্তম্ভের ভিত্তিতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১), চতুর্থ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৫-২০২৫) এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রস্তুত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭৬১,৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই পরিকল্পনাগুলো এখন বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে যা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সামগ্রিকভাবে বর্তমান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, চলতি হিসাবের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা।
বিশেষ করে তিনি বলেন, শুল্ক যৌক্তিককরণ, রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে দেশীয় সম্পদ সংগ্রহ, ভর্তুকি প্রত্যাহার বা নগদ সহায়তা বা বিকল্প অন্বেষণ এখন বিবেচনা করা উচিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জিডিপির শতাংশ হিসাবে রাজস্বের পর্যাপ্ত প্রবৃদ্ধি, সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা নিশ্চিত করা এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় অর্থায়ন সহজতর করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় মেটাতে দেশি ওবিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত এবং প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের ব্যবস্থা করার জন্য।
আরও পড়ুন: আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি অর্থনীতিতে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছে: অর্থমন্ত্রী
১ বছর আগে
মামলা পুনরুজ্জীবিত: সরকারবিরোধী আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা
বিএনপির সাম্প্রতিক সময়ের সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতিকালে দলের নেতারা বলছেন, আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যে সরকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু বিচারাধীন মামলা পুনরুজ্জীবিত করছে।
কিছু বিএনপি নেতা ও আইনজীবী বলছেন, সরকার বিরোধী দলকে একটি বার্তা দিতে কিছু দলের নেতাদের কারাগারে পাঠাতে পারে যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
কিন্তু সরকার অতীতে বারবার বিএনপির এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা আদালতকে প্রভাবিত করে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ থাকলেও সরকার সামগ্রিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব ‘নার্ভাস’ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সতর্ক সুসংঘবদ্ধ বাধা সত্ত্বেও সরকার আমাদের সমাবেশে জনগণের অংশগ্রহণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই, সরকার আমাদের দমন করতে তাদের দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে আরও জোরদার করতে মরিয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমাদের সাম্প্রতিক সফল সমাবেশ থেকে এটা স্পষ্ট যে এই ধরনের রাজনৈতিক কৌশল কাজ করবে না।’
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতের বিচার চালিয়ে যাওয়ার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০০১-২০০৬ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে ২০১৪ সালে মামলাটি করে দুদক।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ আরও নয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক মামলার বিচার ঢাকাসহ অন্যত্র নিম্ন আদালতে চলছে।
আরও পড়ুন: খুলনার সমাবেশে খারাপ কিছু হলে সরকার দায়ী থাকবে: ফখরুল
বিএনপি বলছে, বর্তমানে প্রায় ৩৬ লাখ বিএনপি নেতাকর্মী এক লাখের বেশি মামলার মুখোমুখি। তারা বলছেন, এই অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার প্রায় ১৪ বছর ধরে হত্যা, গুম, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাসহ বিভিন্ন দমনমূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিয়ে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের নেতাদের মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করতে পারে এবং আমাদের কর্মীদের নিরাশ করার জন্য বারবার আমাদের আক্রমণ করতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পাল্টে যাবে।’
মোশাররফ সতর্ক করে বলেন, ‘এটা হলে আমাদের নেতারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন জোরদার করতে আরও উৎসাহিত হবেন। এটি সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করবে এবং দেশে ও বিদেশে শাসনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে সাহায্য করবে যা এর ক্ষমতাচ্যুতকে ত্বরান্বিত করবে।’
এই নেতা বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা এখন বাঁচা-মরার আন্দোলনে থাকায় জেলে যেতে ভয় পান না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপার্সন চার বছর আগে জেলে গেলেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে অবস্থান করছেন। তা সত্ত্বেও আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ এবং আমাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে তারা যখন বিএনপির ক্ষতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন দলের আরও কয়েকজন নেতাকে কারাগারে রেখে তারা দলকে দুর্বল করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের কাঠামো দুর্বল নয় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন চালানোর জন্য দলটির অনেক ‘বিকল্প নেতা’ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাই সরকারের কৌশল হিসেবে কিছু নেতা বা কর্মীদের জেল দিয়ে কোনো লাভ হবে না।’
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা
২ বছর আগে
সময় ও খরচ বাঁচাতে গবেষকরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ওষুধ উদ্ভাবনে কাজ করছে
জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ হয় এবং কখনও কখনও এর জন্য কয়েক দশক পর্যন্ত সময় লেগে যায়। আর তাই সময় ও খরচ কমিয়ে আনতে গবেষকরা একটি নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ওষুধ উদ্ভাবনের কৌশল তৈরি করছেন।
প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণ (এনএলপি) কৌশলের মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রোটিন ও ওষুধের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটানোর মাধ্যমে তারা এটি তৈরির চেষ্টা করছে। এ পদ্ধতিটি ব্যবহার করে তারা প্রায় ৯৭ শতাংশ সফলতা পাওয়ার দাবি করেছেন।
সম্প্রতি ব্রিফিংস ইন বায়োইনফরমেটিক্স জার্নালে এ সংক্রান্ত একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
এক্ষেত্রে ওষুধ ও প্রোটিনের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়ার ফলে প্রতিটি প্রোটিন মিশ্রনকে ভাষায় প্রকাশ করা হয় এবং উভয়ের মধ্যে হওয়া এই জটিল মিথস্ক্রিয়ার ফলে উদ্ভূত বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশে ডিপ লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
এএনআই জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প প্রকৌশল ও ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপক ও এই গবেষণার একজন সহ-লেখক ওজলেম গারিবে বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রচলন বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের কিছু কাজ এআই এর দ্বারা করা যাবে। আপনি প্রোটিন ও ওষুধের মিথস্ক্রিয়াগুলোর মধ্যকার বৈচিত্র্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য দেখতে পারেন এবং খুঁজে বের করতে পারেন যে কোনটিকে এক করা সম্ভব আর কোনটি সম্ভব না।’
আরও পড়ুন: ‘স্টেম সেল’ ব্যবহার করে কৃত্রিম ইঁদুর ভ্রূণ তৈরি
তারা যে মডেলটি তৈরি করেছে তা অ্যাটেনশনডিটিআই নামে পরিচিত। প্রোটিন মিশ্রনের ভাষা ব্যবহার করে ব্যাখ্যাযোগ্য হওয়ার ঘটনা এই প্রথম।
এ পদ্ধতিটি ওষুধ গবেষকদের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে কার্যকরী বৈশিষ্ট্যসহ জটিল প্রোটিন বন্ধন শনাক্ত করা যায়। যার মাধ্যমে একটি ওষুধ কাজ করবে কি না তা বোঝা যায়।
আরও পড়ুন: মহাকাশের প্রথম রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে নাসা
সাশ্রয়ী দামে করোনা শনাক্তের কিট উদ্ভাবন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের
২ বছর আগে
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার একে অপরকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখা উচিত: হাইকমিশনার
শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার প্রফেসর সুদর্শন সেনেভিরত্নে বলেছেন, বর্তমানের নতুন বিকশিত এই বিশ্বে দুই দেশের সম্পর্কের মূল্যায়ন করা দরকার।
তিনি বলেন, এই অংশীদারিত্ব অপরিহার্য হয়ে উঠেছে; কারণ আমাদের একতাবদ্ধতার ফলে দুটি দেশ বঙ্গোপসাগরের চারপাশের অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দুই দেশ (বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা) সার্ক, বিমসটেক এবং আইওআরএ’র প্রতিনিধিত্ব করা বৃহত্তর পরিবারের অংশীজন।
শনিবার গণমাধ্যমের সামনে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা বন্ধুত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে দেয়া তার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় হাইকমিশনার সেনেভিরত্নে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা এবং কলম্বোর একসঙ্গে সমৃদ্ধি প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ে মার্কিন প্রতিবেদনের মান নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন
তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাপী পাওয়ার ব্লকগুলোর আগ্রহের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হল ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরে তাদের সম্পৃক্ততার আকাঙ্খা।
দূত আরও বলেন, বর্তমানে আমরা তীব্র প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব প্রত্যক্ষ করছি, যার ওপর দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যত নির্ভর করছে। কারণ বিশ্বব্যাপী নিউলিবারেল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আক্রমণাত্মকভাবে এই অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে৷
তিনি বলেন, নিশ্চিতভাবে এটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশি দেশগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য ও সৌহার্দ্যকে পরিবর্তন করতে পারে।
দূত বলেন, এর প্রভাব মূলত বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উপকূলে অনুভূত হয়।
তিনি বলেন, এই দুই দেশ (বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কা) বঙ্গোপসাগরের দুটি কৌশলগত প্রান্তে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা বৃহত্তর বিশ্ব ব্যবস্থায় ‘গেটওয়ে’ প্রবেশ ও প্রস্থান পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গোপসাগর মূলত একটি মহাসাগরীয় মহাসড়ক। এই হিসেবে আমাদের দুই দেশের ভবিষ্যত এবং টিকে থাকার সক্ষমতার বিষয়টি ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসৈকতের সুরক্ষাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা মেট্রোরেল নির্মাণের অগ্রগতির প্রশংসা থাই রাষ্ট্রদূতের
তিনি বলেন, এটি এখন স্বীকৃত যে বঙ্গোপসাগর বিশ্বের অন্যতম সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকা। তাই এর প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদের বিষয়ে উচ্চ প্রতিযোগিতা রয়েছে।
সেনেভিরত্নে দুই দেশের জনগণ এবং বিশ্বের জন্য উপহার হিসেবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে আরও ৫০ বছরের বন্ধুত্ব ও সংহতির কামনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বেসরকারি খাতের শিপিং কোম্পানিগুলো সম্প্রতি যৌথ উদ্যোগে কাজ শুরু করেছে এবং সরকারি মালিকানাধীন শিপিং করপোরেশনগুলো একসঙ্গে কাজ করছে।
হাইকমিশনার বলেন, বিপরীত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটা আনন্দের বিষয় যে বাংলাদেশ এফডিআই হিসেবে পুঁজি বিনিয়োগের সীমাবদ্ধতা তুলে নিয়েছে।
যদিও ২০০৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় এফডিআই-এর বহিঃপ্রবাহ ছিল প্রায় চার মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ থেকে প্রাথমিক বিনিয়োগের দিকে তাকিয়ে আছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির প্রশংসায় মার্কিন অ্যাম্বাসেডর
২ বছর আগে
কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিল: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ কৌশলগত কারণে জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিল, ভারতও বিরত ছিল। এসময় তিনি প্রশ্ন রাখেন,বিএনপির মহাসচিব কি জাতিসংঘে ভারতের ভোটদানে বিরত থাকার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেবেন?
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রেক্ষাগৃহে ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে চট্টগ্রাম থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য-‘জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকা সংবিধান লঙ্ঘন’ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘে বাংলাদেশসহ সকল দেশই বিভিন্ন সময়ে অনেক ক্ষেত্রে ভোটদানে বিরত থাকে। এবার যখন জাতিসংঘে এই প্রস্তাব আনা হয়, তখন ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন-ভারত কেনো ভোটদানে বিরত ছিল সেটিরও একটি ব্যাখ্যা যদি তিনি দেন।’
বিএনপি নেতারা আসলে সব বিষয়ে মতামত দিতে দিতে কোনটাতে কি বলবেন খেই হারিয়ে ফেলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং আমরা অবশ্যই যে কোনো সংঘাতের বিরোধী। পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হোক, শান্তি বিরাজ করুক সেটিই আমরা চাই। কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিলো। ভারতও বিরত ছিলো।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিকরাও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবে: তথ্যমন্ত্রী
এসময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘চল্লিশের দশকে যখন বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়, তখন এক আনা অর্থাৎ ১৬ পয়সায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেতো। অর্থাৎ দেখতে হবে, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে কি না। গত ১৩ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ, আর নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ, মধ্যম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিও এমনই। তাছাড়া ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর তুলনায় দেশে ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হার অনেক কম।’
এর আগে চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছে দিতে বস্তুগত উন্নয়নের সঙ্গে প্রয়োজন আত্মিক ও মানবিক তথা জাতিগত উন্নয়ন। আর শিশুতোষ চলচ্চিত্র শিশু-কিশোরদের মেধা-মনন-দেশপ্রেম-মমতার বিকাশ ঘটিয়ে জাতিগত উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ধারাবাহিকভাবে শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজকদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান ড. হাছান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আজকের শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতাই হতে পারে আগামীর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী। আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে, তার প্রস্তুতির জন্য এমন আয়োজন অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
'চিল্ড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ' সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে উৎসব উপদেষ্টা চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম, ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামুল কবীর, উৎসব পরিচালক তরুণ চলচ্চিত্রকার শাহরিয়ার আল মামুন অনুষ্ঠানে তাদের বক্তব্যে উৎসবের নানা দিক তুলে ধরেন।
ফিল্ম আর্কাইভে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবে শিশু-কিশোরদের নির্মিত ও শিশু-কিশোরদের জন্য নির্মিত ৩৮ টি দেশের ১১৭ টি চলচ্চিত্র সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উন্মুক্তভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলা ও অসমীয়া সংস্কৃতির যোগসূত্র গড়বে চলচ্চিত্র: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারতের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা: তথ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ঠিক করবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র সচিব
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের কৌশল কি হবে তা নিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বুধবার ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্কে আমাদের কৌশল পরিষ্কার করব। এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তারা এই অঞ্চলে কোনো একক দেশ বা গোষ্ঠীর আধিপত্যের পরিবর্তে একটি মুক্ত, শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল দেখতে চান।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের যৌথ বিবৃতি উল্লেখ করে বলেন, যেখানে ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফ্রান্সে সরকারি সফরে যান।
আরও পড়ুন: সমুদ্র অর্থনীতির ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে এবং সকলের জন্য ভাগ করে নেয়া সমৃদ্ধিসহ একটি ‘মুক্ত, অবাধ, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক’ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স একই দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নিয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ মোমেন বলেন, কিছু দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে এবং এই দেশগুলো তাদের নীতি আলাদাভাবে শেয়ার করছে।
তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নিজেদের অবস্থান এবং ইইউতে থাকা কিছু দেশের নাম উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আইওআরএ- এর মতো একটি বৈঠকে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস) বিষয়ে একমত হওয়া কঠিন হতে পারে।
তিনি বলেন, আইওআরএ-এর সদস্য দেশগুলো তাদের ধারণা শেয়ার করতে পারবে। আগামী জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং ওই বৈঠকে আইওআরএর আইপিএস নির্ধারণ স্পষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: যোগাযোগ প্রযুক্তি ও সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশের সাথে কাজে আগ্রহী মাদাগাস্কার
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারকে শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে ইন্দোনেশিয়া
৩ বছর আগে