তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ কৌশলগত কারণে জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিল, ভারতও বিরত ছিল। এসময় তিনি প্রশ্ন রাখেন,বিএনপির মহাসচিব কি জাতিসংঘে ভারতের ভোটদানে বিরত থাকার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেবেন?
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রেক্ষাগৃহে ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে চট্টগ্রাম থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য-‘জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকা সংবিধান লঙ্ঘন’ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘে বাংলাদেশসহ সকল দেশই বিভিন্ন সময়ে অনেক ক্ষেত্রে ভোটদানে বিরত থাকে। এবার যখন জাতিসংঘে এই প্রস্তাব আনা হয়, তখন ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন-ভারত কেনো ভোটদানে বিরত ছিল সেটিরও একটি ব্যাখ্যা যদি তিনি দেন।’
বিএনপি নেতারা আসলে সব বিষয়ে মতামত দিতে দিতে কোনটাতে কি বলবেন খেই হারিয়ে ফেলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং আমরা অবশ্যই যে কোনো সংঘাতের বিরোধী। পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হোক, শান্তি বিরাজ করুক সেটিই আমরা চাই। কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিলো। ভারতও বিরত ছিলো।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিকরাও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবে: তথ্যমন্ত্রী
এসময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘চল্লিশের দশকে যখন বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়, তখন এক আনা অর্থাৎ ১৬ পয়সায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেতো। অর্থাৎ দেখতে হবে, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে কি না। গত ১৩ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ, আর নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ, মধ্যম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিও এমনই। তাছাড়া ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর তুলনায় দেশে ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হার অনেক কম।’
এর আগে চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছে দিতে বস্তুগত উন্নয়নের সঙ্গে প্রয়োজন আত্মিক ও মানবিক তথা জাতিগত উন্নয়ন। আর শিশুতোষ চলচ্চিত্র শিশু-কিশোরদের মেধা-মনন-দেশপ্রেম-মমতার বিকাশ ঘটিয়ে জাতিগত উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ধারাবাহিকভাবে শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজকদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান ড. হাছান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আজকের শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতাই হতে পারে আগামীর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী। আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে, তার প্রস্তুতির জন্য এমন আয়োজন অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
'চিল্ড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ' সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে উৎসব উপদেষ্টা চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম, ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামুল কবীর, উৎসব পরিচালক তরুণ চলচ্চিত্রকার শাহরিয়ার আল মামুন অনুষ্ঠানে তাদের বক্তব্যে উৎসবের নানা দিক তুলে ধরেন।
ফিল্ম আর্কাইভে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবে শিশু-কিশোরদের নির্মিত ও শিশু-কিশোরদের জন্য নির্মিত ৩৮ টি দেশের ১১৭ টি চলচ্চিত্র সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উন্মুক্তভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলা ও অসমীয়া সংস্কৃতির যোগসূত্র গড়বে চলচ্চিত্র: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারতের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা: তথ্যমন্ত্রী