মেরিনা তাবাসসুম
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাশ্যুম
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী মার্কিন সাপ্তাহিক টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাশ্যুম।
স্থানীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ ধরে রেখে প্রকৃতিবান্ধব টেকসই নকশা তৈরির প্রতিশ্রুতির জন্য এই তালিকায় উদ্ভাবক বিভাগে নাম যুক্ত হয় তার। একই সঙ্গে অভিন্ন গ্রহটি যেসব ঝুঁকির মুখোমুখি হয় সেগুলোকে তিনি অগ্রাধিকার দেন বলে জানানো হয়েছে।
টাইম ম্যাগাজিনের জন্য হার্ভার্ড স্কুল ফর ডিজাইনের ডিন সারাহ হোয়াইটিংয়ের লেখা তাবাশ্যুমের প্রশংসাপত্রে বলা হয়েছে: ‘তাবাশ্যুমের নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার প্রমাণ তার ভবনগুলোতেও দেখা যায়। পৃথিবীর সম্পদ ভোগকারী একজন হিসেবে তার সৃষ্টির যত্ন নেন।’
আরও পড়ুন: সন পদক অর্জন করেছেন বাংলাদেশের স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম
বাংলাদেশের ঢাকায় মেরিনার বানানো বাইত উর রউফ মসজিদ মর্যাদাপূর্ণ আগা খান পুরস্কার জিতেছে উল্লেখ করে সারাহ বলেন, ‘কৃত্রিম কোনো সাহায্য ছাড়াই এই ভবনে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার ঝুঁকি বাড়তে থাকা একটি দেশে তিনি এমন সব বাড়ির নকশা করেছেন যেগুলো কম খরচে নির্মাণ করা যায় ও সহজে সরিয়ে ফেলা যায়। ভবনগুলোতে কেবল প্রাকৃতিকভাবে আলো-বাতাস প্রবেশই নয়; প্রকৃতির কোনো ক্ষতির কারণ যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রেখেছেন তিনি।’
‘তিনি একজন শিক্ষক ও বক্তা এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত। মেরিনা স্থাপত্যকে ব্যক্তিগত কাজ হিসেবে নয় বরং একে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক রূপে তুলে ধরেছেন।’
এর আগে ২০১৬ সালে স্থাপত্যে ভূমিকা রেখে আগা খান পুরস্কার এবং ২০২১ সালে আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড লেটারস অ্যাওয়ার্ডসের সোয়ান পদক পেয়েছিলেন মেরিনা।
২০২২ সালে লিসবন আর্কিটেকচার ট্রিয়েনালে মিলেনিয়াম লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন: ৫০ চিন্তাবিদের তালিকায় স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন মেরিনা তাবাশ্যুম আর্কিটেক্টস। ১৯৯৪ সালে বুয়েট থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৯৫ সাল থেকে আরবানায় কর্মরত ছিলেন। এর সহপ্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন তিনি।
আবদুল্লাহপুরের বাইত উর রউফ মসজিদের জন্য তার তৈরি নকশা দিয়ে পরিচিতি পান। মসজিদটিতে দেশের ঐতিহ্য নকশায় ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের স্থপতিদের অনুপ্রাণিত করেছেন। গম্বুজের ব্যবহার না করা, ব্যতিক্রমী স্তম্ভ, মাটির প্যালেটের ব্যবহার এবং সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে যেটি, সেটি হলো ছাদ ও দেয়ালের ছিদ্র দিয়ে মসজিদের ভেতরে আলোর প্রবাহ।
৭ মাস আগে
সন পদক অর্জন করেছেন বাংলাদেশের স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম
বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম মঙ্গলবার তার মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করেছেন। লন্ডনে স্যার জন সন জাদুঘরের দেয়া ২০২১ সন পদক অর্জন করেছেন তিনি।
শরণার্থী ও জলবায়ু পরিবর্তনের শিকারদের জন্য স্বল্প খরচে অস্থায়ী বাড়ির ডিজাইনের কাজের জন্য মেরিনাকে মর্যাদাপূর্ণ এই স্থাপত্য পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে।
২০১৭ সালে স্যার জন সন জাদুঘর দ্বারা প্রবর্তিত এই পদকটি অনুশীলন, ইতিহাস বা তত্ত্বের মাধ্যমে স্ব স্ব ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখা স্থপতি, শিক্ষাবিদ ও সমালোচকদের স্বীকৃতি হিসেবে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৫০ চিন্তাবিদের তালিকায় স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম
মেরিনা তাবাসসুম আর্কিটেক্টস (এমটিএ) এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান স্থপতি মেরিনার আগে ডেনিস স্কট ব্রাউন, রাফায়েল মোনিও ও কেনেথ ফ্র্যাম্পটনকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
একটি লাইভ ডিজিটাল ইভেন্টে উপস্থিত হয়ে সম্মান প্রাপ্তির পর চতুর্থ সন পদক বক্তব্য দেন তিনি।
তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে বাইত উর রউফ মসজিদ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ ও স্বাধীনতার জাদুঘর। যদিও মেরিনার সাম্প্রতিক কাজে এই স্মারক কাঠামোর বৈপরীত্য দেখা গেছে।
বর্তমানে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করছেন এবং দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে অতি-নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য মোবাইল মডুলার ঘর ডিজাইন করছেন। সবচেয়ে সস্তা ও সহজ উপকরণ, ঢেউতোলা ধাতু ও বাঁশসহ এমন উপকরণ দিয়ে কাজ করছেন যা চাইলেই সরানো যাবে।
মেরিনা বলেন, আমার বর্তমান কাজটি বাংলাদেশের জোড়া সংকটের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে করা হচ্ছে। উদ্বাস্তুদের দুর্দশা, এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বেড়ে চলা আমাদের বন্যা ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে কাজটি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘আনন্দালয়’ বানিয়ে ওবেল পুরস্কার জিতলেন জার্মান স্থপতি
৩ বছর আগে