সংঘর্ষ
সপ্তাহজুড়ে সংঘর্ষের পর স্বাভাবিক হচ্ছে বাংলাদেশ, নিহত প্রায় ২০০: এপি
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা বিশৃঙ্খলার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। বুধবার সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা ও অফিস চালু হয়েছে। এক সপ্তাহজুড়ে চলা এ সহিংসতায় প্রায় ২০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় দেশের বেশিরভাগ অংশে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ সাত ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করার পরে হাজার হাজার গাড়ি রাজধানীর রাস্তায় দেখা গেছে।
বুধবার(২৪ জুলাই) ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালুর পর কয়েক ঘণ্টার জন্য অফিস ও ব্যাংকের কার্যক্রম চালানো হয়।
আরও পড়ুন: জবিতে বিকাল ৪টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ, ছাত্রীদের বিক্ষোভ
পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকায় কারফিউ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত ১৬ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় অন্তত ১৯৭ জন নিহত হয়েছেন বলে বুধবার (২৩ জুলাই) শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলোর খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কোনও সরকারি সূত্র থেকে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেনি।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়দের জন্য সরকারি চাকরির ৩০ শতাংশ সংরক্ষিত কোটা বাতিলের দাবিতে ১৫ জুলাই থেকে সপ্তাহজুড়ে পুলিশ ও ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ চলে।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও ডানপন্থী জামায়াতে ইসলামী এই বিক্ষোভে সমর্থন জানানোর পর এই বিশৃঙ্খলা মারাত্মক আকার ধারণ করে। দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় অনেক সরকারি স্থাপনায় হামলা করা হয়।
রবিবার সুপ্রিম কোর্ট মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কোটা ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে সিভিল সার্ভিসের ৯৩ শতাংশ চাকরি মেধাভিত্তিক হবে এবং অবশিষ্ট ২ শতাংশ জাতিগত সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় কার্যকর করতে মঙ্গলবার পরিপত্র জারি করে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এই রায় বাস্তবায়নে তারা প্রস্তুত।
তবে রবিবারের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে সময় নেয় বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার তারা জানায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং পরবর্তী সরকারি বিজ্ঞপ্তি বিক্ষোভকারীদের পক্ষে রয়েছে।
তবে বিক্ষোভের সময় রক্তপাত ও মৃত্যুর জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।
গত জানুয়ারির নির্বাচনে শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো জয়ী হওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলগুলো তাদের বর্জন করার পর এই বিক্ষোভ বাংলাদেশ সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধের পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সরকার জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়।
বিক্ষোভকারীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, কোটা পদ্ধতি বৈষম্যমূলক এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উপকৃত করছে। এর পরিবর্তে তারা যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা চেয়েছিল।
কোটা সংস্কারের পক্ষে যুক্তি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ এবং ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার নারীরা দলমত নির্বিশেষে সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রায়ই রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতায় ইন্ধন যোগানোর জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতার উপর দমনপীড়ন চালানো হয়।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কারের দাবিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বুধবার(২৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করেছে সরকার। এরপর বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অফিস ও ব্যাংকের কার্যক্রম চালু ছিল। একই সঙ্গে ঢাকার কয়েকটি প্রধান সড়কে যানজট ছিল চোখে পড়ার মতো।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বারবার বলেছেন, বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং ডানপন্থী জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ক্যাডাররা বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিল। রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশনের সদর দপ্তর, একটি ফ্লাইওভারের দুটি টোল প্লাজা এবং একটি এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকায় মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনসহ অনেক সরকারি স্থাপনায় হামলা চালায় তারা। এছাড়া শত শত সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
প্রধান বিরোধী দলের সদর দপ্তরে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকায় বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে লাঠি, লোহার রড এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির জন্য সরকারকে দায়ী করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ছয় দিন পর মঙ্গলবার রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আংশিকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে।
প্রধান ডাটা সেন্টারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং ফাইবার অপটিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার জন্য তিনি বিক্ষোভকারীদের দায়ী করেন। তাদের দুর্বৃত্ত আখ্যা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ধীরে ধীরে সারা দেশে ইন্টারনেট সচল করা হবে। তবে আপাতত করপোরেট ব্যবসা, ব্যাংক, কূটনৈতিক অঞ্চল এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হবে।
কয়েকদিন আগে কারফিউ জারিসহ দেখামাত্র গুলি (শুট অন সাইট অর্ডার) করার বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। এ সময় সামরিক সদস্যদের রাজধানী ও অন্যান্য অঞ্চলে টহল দিতে দেখা গেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সারা দেশে ২৭ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়।
সামরিক বাহিনীর তিন বিভাগের প্রধান, শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা ও রাজনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তিনি সহিংসতার জন্য বিরোধীদের দোষারোপ করেছেন এবং অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করেছেন।
মার্কিন দূতাবাস রবিবারের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল ও অপ্রত্যাশিত বলে বর্ণনা করে বলেছে, দূতাবাসের আশেপাশে বন্দুক, টিয়ার গ্যাস ও অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তারা আমেরিকানদের সতর্ক হতে, বড় ভিড় এড়িয়ে চলতে এবং ভ্রমণ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কোটা বাতিলের দাবিতে বাকৃবিতে আবারও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ
কোটা সংস্কার: সারা দেশে পুলিশ-ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ৬
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত ও শত শত আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সংঘর্ষে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুইজন ও রংপুরে একজন নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের ষোলশহর থেকে মুরাদপুর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আকরাম (২৪) ও পথচারী ফারুক (৩৫) নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের ছাত্র আবু সাঈদ (২২) বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত হন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে ঢাকা কলেজের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (আনুমানিক ২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আকাশ ও মামুন নামে দুই পথচারী ঢাকা কলেজ এলাকা থেকে লাশ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।
এছাড়া ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত
কোটা আন্দোলন: সংঘর্ষের জেরে ৩ বিভাগীয় শহরসহ বগুড়ায় বিজিবি মোতায়েন
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের কয়েকটি বিভাগীয় শহরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকালে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও বগুড়ায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত
আজ বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলামের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ইউএনবির চট্টগ্রাম সংবাদদাতা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিনজন নিহত হওয়ায় পর বিকাল থেকে তিন প্লাটুন বিজিবি অবস্থান নিয়েছে।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কারকারীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ছাত্রদলের
সিরাজদিখানে ২ দলের সংঘর্ষে ৯ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ২০ জন আহত
মুন্সীগঞ্জে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দলের সংঘর্ষে ৯ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
সিরাজদিখান পূর্ব চান্দেরচরে বুধবার (১০ জুলাই) ঘটনাটি ঘটে।
এই ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ ১, আটক ৩
পুলিশ জানায়, প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব চান্দেরচর গ্রামে দুই দলের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় দলের ৯ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গিয়ে ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
এ ঘটনায় তথ্য সংগ্রহের সময় স্থানীয় সাংবাদিক সালাউদ্দিন সালমানকে ডেকে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’
এর আগে একই কারণে গত ২১ জুন উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়।
আরও পড়ুন: মাগুরায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০, আটক ৪
জমি নিয়ে বিরোধ: মুন্সীগঞ্জে টেঁটাবিদ্ধ যুবক নিহত, আহত ১১
ভারতে দোতলা বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ১৮
ভারতের উত্তরাঞ্চলে যাত্রীবাহী একটি বাসের সঙ্গে দুধবহনকারী ট্রাকের সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
বুধবার (১০ জুলাই) ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি এক্সপ্রেসওয়েতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দেশটির পুলিশ কর্মকর্তা অরবিন্দ কুমার জানান, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি এক্সপ্রেসওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়েছেন। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল আছে। বাসটি ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য বিহার থেকে রাজধানী নয়া দিল্লি যাচ্ছিল।
কুমার বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। একইসঙ্গে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য তদন্ত শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন: আসামের বন্যায় নিহত বেড়ে ৩৮
সরকারি কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ রাঠি জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বাসটি সম্ভবত দ্রুত গতিতে ছিল। সেই সময় দুধের ট্রাকটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে দুটি গাড়িই উল্টে যায়। এতে বাসের একপাশ দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। যার ফলে যাত্রীরা গাড়ি থেকে ছিটকে পড়েন। টেলিভিশনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় মৃতদেহগুলো রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়। বেশিরভাগ দুর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া গাড়ি চালানো, সঠিকভাবে রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ না করা। এছাড়া যানবাহনগুলো পুরোনো হওয়ার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
গত মে মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাস পাহাড়ি মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৫ ভারতীয় সেনাকে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা
সিলেটে ২ পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত, আহত ১০
সিলেটের গোয়াইনঘাটে ছাগল নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আবদুল মান্নান (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ৫ নম্বর পূর্ব আলীরগাও ইউনিয়নের খলাগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: পলাশবাড়ীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গৃহবধূ নিহত, আটক ১
আবদুল মান্নান খলাগ্রামের কুদরত উল্ল্যাহর ছেলে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের আরও ৮ থেকে ১০ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, একটি ছাগলকে কেন্দ্র করে খলাগ্রামের সাহেদ আহমদ ও পার্শ্ববর্তী নয়াখেল গ্রামের আব্দুল আলিমের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে ঘণ্টাখানেক পর সাহেদ ও আব্দুল আলিমের আত্মীয়-স্বজনরা কথা-কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষে জড়ান। এসময় খলাগ্রামের শাহেদের পক্ষের আব্দুল মন্নানসহ ৭ থেকে ৮ জন এবং আব্দুল আলিমের পক্ষের ২ জন গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুল মান্নানের মৃত্যু হয়।
পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত, আহত ২০
চাঁদপুরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১০
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পুকুরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বাস-পিকআপ সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত ৭
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের পুকুরিয়ায় ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এসময় ঘটনাস্থলেই পিকআপের চালকসহ দুইজন নিহত হন। আহত হন আরও ১০ জন।
তিনি আরও বলেন, আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতেদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে বাস-পিকআপ সংর্ঘষে নিহত ২
খাগড়াছড়িতে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১৫
রাজশাহীতে সংঘর্ষে ২ বাসের চালক নিহত
রাজশাহীরাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।
শনিবার (৩০ জুন) রাত ১১টার দিকে উপজেলার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে কামারপড়া-অভয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- হানিফ পরিবহনের বাসচালক রতন সূত্রধর ও আল-মদিনা পরিবহনের বাসচালক আসাদুল হক। নিহত রতনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় এবং আসাদুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচিতে।
আরও পড়ুন: নাটোরে নিজ ঘর থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
আহতদের গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মদিনা ট্রাভেলস নামের একটি বাস রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। এ সময় ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাচ্ছিল হানিফ পরিবহনের একটি বাস। মদিনা ট্রাভেলসের বাসটি দ্রুত গতিতে একটি ট্রাককে অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা হানিফ পরিবহনের বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই দুই বাসের চালক নিহত হন এবং দুটি বাসের অন্তত ১২ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ছাড়া নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলের দুই পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি মহাসড়ক থেকে সরানোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে সড়কদ্বীপের ওপর বাস উঠে নিহত ১, আহত ১৪
২ অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রসূতির মৃত্যু, বেঁচে গেল নবজাতক
বগুড়ার নন্দীগ্রামে দুই অটোরিকশার সংঘর্ষে যুথি খাতুন নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।
এ সময় আহত হয়েছেন যুথীর মা ও তার ভাই। তবে এ ঘটনায় যুথীর তিন দিনের সন্তান অক্ষত রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কলেজছাত্র নিহত
শনিবার (২৯ জুন) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার কাথম-কালিগঞ্জ সড়কের দলগাছা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত যুথী ভাট শিমলা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে যুথী তার মা জেসমিন (৪৫) ও ছোট ভাই জিহাদের (১৭) সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে নন্দীগ্রাম থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
পথে দলগাছা এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়।
এতে দুইটি অটোরিকশাই উল্টে একই পরিবারের তিনজন আহত হন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক যুথি খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নন্দীগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান বলেন, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। যুথি খাতুন মারা গেলেও তিন দিনের সন্তান অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় গোসলে নেমে স্ত্রীর সামনে ডুবে গেলেন স্বামী
রাতারগুলে গোসলে নেমে কিশোর নিখোঁজ
বাজিতপুরে ট্রাক্টর-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, যুবক নিহত
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে ট্রাক্টর ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. ইয়াসিন হাসান নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় সিফাত ও সানজিদ নামে আরও দুই যুবক আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় ভাই-বোনের মৃত্যু, আহত ৫
শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পৈলেনপুর মরাখলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ইয়াসিন হাসান গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার উত্তরখান গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
আহত সিফাত ও সানজিদ একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে।
বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুর্শেদ জামান বলেন, ইয়াসিন, সিফাত ও সানজিদ মোটরসাইকেল করে বাজিতপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন পৈলেনপুর মরাখলা এলাকায় পৌঁছালে অপরদিক থেকে আসা একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। মোটরসাইকেলে থাকা অপর দুইজন গুরুতর আহত হন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুর্শেদ জামান আরও বলেন, আহত দুইজনকে ভাগলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৯
চুয়াডাঙ্গায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২