লুৎফুল
এস কে সিনহার সঙ্গে দণ্ডিত লুৎফুলকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে দণ্ডিত ব্যাংকটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হককে জামিন দেননি হাইকোর্ট। বুধবার লুৎফুল হকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি মো. সেলিমের একক বেঞ্চ তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। তিনি জানান, ব্যাংকটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হককে তিন বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। সেই দণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করে জামিন চেয়েছেন। আজ আদালত জামিন না দিয়ে তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ (অ্যাডমিশন) করেছেন এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ১১ বছর দণ্ড দেন। এর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের দায়ে চার বছর এবং মানি লন্ডারিংয়ের আরেক ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া এস কে সিনহার ৭৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুটি সাজা একসঙ্গে চলবে বলে তাকে সাত বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে জানান আইনজীবীরা। এ মামলার দুই আসামি টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর আট আসামির মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীমকে চার বছরের দণ্ড দেয়া হয়।
আর ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক ও সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়কে তিন বছরের দণ্ড দেন আদালত।
আরও পড়ুন: এস কে সিনহার ১১ বছর কারাদণ্ড
ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ‘অস্বাভাবিক দ্রুততার’ সঙ্গে চার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ তৈরি করে তা একইদিনে পে-অর্ডারের মাধ্যমে আসামি এসকে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন। পরে এসকে সিনহা নগদ, চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন, যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ চার্জশিট দেন। ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট আদালত অভিযোগ গঠন করেন। পরে বিচার শেষে গত ৯ নভেম্বর রায় দেন বিচারিক আদালত।
আরও পড়ুন: ফের পেছাল এস কে সিনহার মামলা রায়
২ বছর আগে