আইইএলটিএস
কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্রমিত নিরীক্ষণ পদ্ধতি ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম সংক্ষেপে আইইএলটিএস। বিদেশে উচ্চশিক্ষা, চাকরিসহ নানা কারণে অভিবাসনের পূর্বশর্ত হিসেবে উত্তীর্ণ হতে হয় এই পরীক্ষায়। ইংরেজি ভাষাভাষি দেশগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার রাষ্ট্রগুলোও আইইএলটিএস স্কোরকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের বহুজাতি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রেও মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে এই যোগ্যতাকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন জেনে নিই, কিভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন।
আইইএলটিএস নিবন্ধনের জন্য যা জানা জরুরি
বাংলাদেশে আইইএলটিএস টেস্ট নিয়ে থাকে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) এডুকেশন। দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরেই এই প্রতিষ্ঠান দুটির একাধিক কেন্দ্র রয়েছে। এগুলোতে সশরীরে নিবন্ধন করে টেস্টগুলোতে অংশগ্রহণ করা যায়। প্রতি মাসেই পূর্ব নির্ধারিত নির্দিষ্ট তারিখগুলোতে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন মডিউলের পরীক্ষা।
মূলত একাডেমিক ও জেনারেল ট্রেনিং (জিটি)- এই দুই ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন নেওয়া হয়ে থাকে। যদি উচ্চশিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হয়, তাহলে ক্যাটাগরি হবে একাডেমিক। আর চাকরি বা অন্য কারণে অভিবাসন প্রার্থীদের জিটি নির্বাচন করতে হবে।
আরো পড়ুন: রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পরীক্ষা কম্পিউটারে অথবা সরাসরি কাগজে (চিরাচরিত পরীক্ষা পদ্ধতি) দেওয়া যায়। কম্পিউটার বেইজ্ড টেস্টের ক্ষেত্রে স্কোর পেতে সময় লাগে ৩ থেকে ৫ দিন। অপরদিকে, পেপার বেইজ্ড টেস্টের ফলাফল আসতে প্রায় ২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও বৈধ পাসপোর্ট ছাড়া আর কোনো কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। কম্পিউটার বা কাগুজে এবং একাডেমিক বা জেনারেল; সর্বক্ষেত্রে আইইএলটিএস টেস্টের জন্য বর্তমান নিবন্ধন ফি ২২ হাজার ৫০০ টাকা।
ধাপে ধাপে আইইএলটিএস পরীক্ষার নিবন্ধন পদ্ধতি
ব্রিটিশ কাউন্সিলে আইইএলটিএস নিবন্ধন
টেস্ট টেকার পোর্টালে অ্যাকাউন্ট তৈরি
শুরুতেই https://eamidentity.britishcouncil.org/account/login- লিংকে যেয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ওয়েবসাইটের এই অংশটির নাম টেস্ট টেকার পোর্টাল। এখানে প্রয়োজন হবে প্রার্থীর নাম, জন্ম তারিখ, এবং একটি ই-মেইল ঠিকানা। অতঃপর একটি অনন্য পাসওয়ার্ড দিয়ে এবং নিবন্ধনের শর্তাবলীতে সম্মতি সূচক টিক চিহ্ন দেওয়ার মাধ্যমে শেষ হবে অ্যাকাউন্ট তৈরির কাজ।
আরো পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এই পোর্টালে অ্যাকাউন্ট করার সুবিধা হলো- পুরো নিবন্ধন একবারে না করে প্রার্থী প্রয়োজনমতো বিরতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। এছাড়া পরবর্তীতে আইইএলটিএস স্কোর চেক করা এবং উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিআরএফ (টেস্ট রিপোর্ট ফর্ম) পাঠানো যাবে এই পোর্টালের মাধ্যমে।
টেস্ট ক্যাটাগরি নির্বাচন
লগইনের পর স্ক্রিনের উপরের বাম কোণে ‘বুক নিউ টেস্ট’-এ ক্লিক করতে হবে। এরপর আসবে টেস্ট ক্যাটাগরি নির্বাচনের পালা। একাডেমিক বা জেনারেল ট্রেনিং থেকে যে কোনো একটি বেছে নিতে হবে।
পরের ধাপে দেশ ও বিভাগ নির্বাচনের পর ফরম্যাট হিসেবে কাগুজে বা কম্পিউটার বেইজ্ড যে কোনো একটি বাছাই করতে হবে।
আরো পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে অ্যাক্সেসিবিলিটি রিকোয়ারমেন্ট বিকল্প। এই ক্যাটাগরিতে তাদের জন্য স্ক্রাইব, সহায়ক প্রযুক্তি, পরিবর্তিত শ্রবণ সিডি, শ্রবণ প্রতিবন্ধী সংস্করণ বা পরীক্ষার স্থানে শ্রবণসহায়ক ডিভাইস বহন করার সুযোগ থাকে।
বিভিন্ন মডিউলের টেস্টগুলো দেখার জন্য প্রথমে কাঙ্ক্ষিত তারিখটি বেছে নিতে হবে। বাছাই করা নির্দিষ্ট তারিখে ভেন্যু ও নিবন্ধন ফিসহ দিনের বিভিন্ন সময়ের টেস্টগুলো দেখা যাবে। এগুলোর মধ্য থেকে পছন্দসই সময় ও ভেন্যু অনুযায়ী ‘বুক টেস্ট’-এ ক্লিক করে টেস্ট বাছাই করা যাবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র সরবরাহ
পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদনের এই মূল ধাপে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হবে। এখানে মাতৃভাষা ও টেস্ট দেওয়ার উদ্দেশ্য যোগ করতে হয়। অতঃপর সংযুক্তি হিসেবে আপলোডের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে পাসপোর্ট বা এনআইডি কার্ডের স্ক্যান কপি।
আরো পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ যদি কাছাকাছি থাকে, তবে আইইএলটিএসে নিবন্ধনের আগেই রিনিউ করে নেওয়া আবশ্যক।
রিভিউ সেকশন
এ পর্যায়ে পরীক্ষার তারিখ, পাসপোর্ট এবং ব্যক্তিগত তথ্য সুক্ষ্মভাবে যাচাই করতে হয়। কোনো ভুল হলে এটিই সঠিক ধাপ তা পরিবর্তন করার।
নিবন্ধন ফি পরিশোধ
এখানে প্রার্থী তাৎক্ষণিকভাবে কিংবা পরবর্তীতে অন্য যে কোনো সময়ে ফি পরিশোধ করতে পারেন।
ঘরে বসেই ফি পরিশোধের জন্য রয়েছে কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং-এর মতো অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম।
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
এগুলোর মধ্য থেকে সুবিধাজনক উপায়টি নির্বাচন করে তার যাবতীয় বিবরণ উল্লেখ করতে হবে। ফি সফলভাবে পরিশোধ হলে প্রার্থীর ই-মেইল ঠিকানায় ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে একটি নিশ্চিতকরণ ই-মেইল পাঠানো হবে।
৩ মাস আগে
ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষা দক্ষতার বিচারে আইইএলটিএস (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম) এখন আর একমাত্র উপায় নয়। সময়-সাপেক্ষ নিরীক্ষণ পদ্ধতি, ব্যয়বহুল নিবন্ধনের কারণে এর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে বিকল্প পরীক্ষাগুলো। সেই সঙ্গে যুগান্তকারী সুবিধা হিসেবে যুক্ত হচ্ছে প্রযুক্তি-বান্ধব বৈশিষ্ট্য। পরীক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্যই সহজসাধ্য হওয়ায় নিমেষেই গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে নতুন পদ্ধতিগুলো। এমনি একটি পরীক্ষা ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট, যেটি ইতোমধ্যে অপরিহার্য যোগ্যতা হিসেবে চাওয়া হচ্ছে উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ডুওলিঙ্গো পরীক্ষা পদ্ধতি, আর কীভাবেই বা এতে অংশ নিবেন।
ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী
কাগজ-কলমে লিখিত পরীক্ষার গন্ডির বাইরে আদ্যোপান্ত সম্পর্ণূ ইন্টারনেট-ভিত্তিক ইংরেজি ভাষার প্রমিত পরীক্ষার নাম ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট (ডিইটি)। সঙ্গত কারণেই এখানে প্রয়োজন হয় নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ এবং ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও স্পিকার সমেত একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার। শুধুমাত্র এই উপকরণগুলো থাকলেই পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে যে কোনো সময়েই অংশগ্রহণ করা যায় ডিইটি পরীক্ষায়।
আমেরিকান প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ডুওলিঙ্গোর ডিইটি চালু করে ২০১৬ সালে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন: চাকরির ইন্টারভিউয়ে প্রত্যাশিত বেতন নিয়ে যেভাবে কথা বলবেন
ডিইটি এমন একটি নিরীক্ষণ ব্যবস্থা, যেখানে পরীক্ষার্থীর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর যাচাইয়ের মাধ্যমে তার মেধাবৃত্তিক অবস্থানকে মূল্যায়ন করা হয়। বিগত প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তুলনামূলক ভাবে একটু কঠিন করে করা হয় নতুন প্রশ্নটি। আর এভাবেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে এগোতে থাকে পুরো পরীক্ষা পদ্ধতি। স্বভাবতই এখানে ব্যবহৃত হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত অ্যালগরিদমের।
ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট পদ্ধতি
পরীক্ষার মোট সময়সীমা ১ ঘণ্টা। প্রশ্ন বাছাইয়ের জন্য ডুওলিঙ্গোর রয়েছে সমৃদ্ধ ডাটাবেস। তাই যতবারই পরীক্ষা দেওয়া হোক না কেন, একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ১ ঘণ্টা সময় বন্টিত থাকে পরস্পর থেকে ভিন্ন ধরনের প্রশ্নাবলি সম্বলিত ৩টি বিভাগে।
প্রশ্ন বিন্যাস ও সময় বন্টন
ইন্ট্রোডাকশন অ্যান্ড অনবোর্ডিং (বরাদ্দ সময় ৫ মিনিট)
এখানে কম্পিউটারের ক্যামেরা, স্পিকার এবং মাইক্রোফোন সঠিকভাবে কাজ করছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের যে কোনো একটি আপলোড করে জমা দিতে হবে। এরপর শুরু হবে পরীক্ষার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা।
আরও পড়ুন: চাকরির জন্য সিভি তৈরিতে যে বিষয়গুলো পরিহার করবেন
অ্যাডাপ্টিভ টেস্ট (বরাদ্দ সময় ৪৫ মিনিট)
এটিই পরীক্ষা প্রধান অংশ, যেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে ইংরেজি দক্ষতা পরিমাপ করা হয়। প্রতিটি প্রশ্ন কতটা কঠিন হবে তা নির্ভর করবে ঠিক আগের প্রশ্নে পরীক্ষার্থীর দেওয়া উত্তরের উপর।
রাইটিং স্যাম্পল অ্যান্ড স্পিকিং স্যাম্পল (বরাদ্দ সময় ১০ মিনিট)
এখানে যাচাই হবে ইংরেজি লিখতে ও কথা বলতে পারার দক্ষতা। কথা বলার নমুনার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া প্রদানের জন্য সময় পাওয়া যাবে ১ থেকে ৩ মিনিট। আর লেখার ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে ৩ থেকে ৫ মিনিট।
ডিইটি স্কোর পদ্ধতি
ইংরেজি ভাষার পারদর্শিতা মূল্যায়নের জন্য স্কোর করা হয় ১০ থেকে ১৬০ ডিইটি স্কেলে। এখানে ন্যূনতম ১২০ এর উপরে স্কোর থাকলে ইংরেজিতে দক্ষ বলে বিবেচিত হয়। পরীক্ষা দেওয়ার পর ফলাফল পাওয়া যায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
এই ফলাফলটি সামগ্রিক এবং সাবস্কোর এই ২ ভাগে সরবরাহ করা হয়। সামগ্রিক স্কোরে ফলাফল হিসেবে ১০ থেকে ১৬০-এর মধ্যে একটি সংখ্যা উল্লেখ থাকে। আর সাবস্কোরে ৪টি বিভাগে স্কোর দেখানো হয়। এগুলো হলো-
- কম্প্রিহেনশন (পড়া ও শোনার দক্ষতা)
- কনভারসেশন (শোনা ও কথা বলার দক্ষতা)
- লিটারেসি (পড়া ও লেখার দক্ষতা)
- প্রডাকশন (লিখতে ও কথা বলার দক্ষতা)
প্রাপ্ত ফলাফল হিসেবে ডিইটি স্কোর বা গ্রেডের মেয়াদ থাকে ২ বছর।
আরও পড়ুন: ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
বিশ্বব্যাপী ডুওলিঙ্গো (ডিইটি) পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা
ডিইটি স্কোর হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি) এবং ইয়েলসহ ৫ হাজারেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা হয়। আয়ারল্যান্ড তার স্টুডেন্ট ভিসা প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, কিংস্টন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ সাউদাম্পটন এবং মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির মতো স্বনামধন্য ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ডুওলিঙ্গো স্কোর গ্রহণ করে।
পরীক্ষার একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনলাইনে হওয়ায় এখানে আলাদা করে ভেন্যু ব্যবস্থাপনার ঝামেলা নেই। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক পরীক্ষার স্কোর ট্র্যাক রাখাও সহজতর। সর্বসাকূল্যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক কম প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদেরকে মূল্যায়ন করতে পারে।
আরও পড়ুন: ফুড ব্লগার বা ভ্লগার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়
৭ মাস আগে
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
সৃজনশীল উদ্দীপনার নেপথ্যে পরিবেশের প্রভাব অনস্বীকার্য। সেই সূত্রে প্রাকৃতিক নৈসর্গের মাঝে জীবনযাপনের পাশাপাশি শিক্ষা জীবনের মানোন্নয়নের নিমিত্তে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভিড় করে নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়েতে। পূর্বে বাংলাদেশের জন্য নির্দিষ্ট কোটা থাকলেও এখন আর সে সুবিধা নেই। কিন্তু এরপরও বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য এই দেশটি। চলুন, নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়গুলো জেনে নিই।
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষায় স্কলারশিপ
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষায় স্কলারশিপের জন্য গত কয়েক শিক্ষাবর্ষ ধরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি যে স্কলারশিপ প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হয়েছে তা হলো- ইরাসমাস মুন্ডাস। এটি ছাত্র-ছাত্রীদের যৌথ প্রোগ্রামে মাস্টার্স বা ডক্টরেট প্রোগ্রামের সুবিধা দিয়ে থাকে।
গত বছর তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ২ হাজার ৪৫০টি বৃত্তি বরাদ্দ করেছিলো। চলতি বছর তারা ২ হাজার ৭৫৬টি স্কলারশিপ প্রদান করবে। প্রায় প্রতিটি বিষয়েই পড়াশোনার সুযোগ দিয়ে থাকে ইউরোপের এই উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপটি।
মাস্টার্স প্রোগ্রামের ২ বছর বা ডক্টরাল প্রোগ্রামের ৩ বছরের পুরো অধ্যায়নকালের সমস্ত ব্যয়ভার বহন করে থাকে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ। সম্পূর্ণ খরচটি পরিচালিত হয় ইউরোপীয় কমিশন দ্বারা।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
স্কলারশিপের সুযোগ-সুবিধা
ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য তিনটি ভিন্ন ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশে অধ্যয়ন করতে পারবে। অর্থাৎ প্রতিটি সেমিস্টার তারা কাটাতে পারবে আলাদা দেশে। প্রোগ্রাম শেষে তারা ইউরোপের দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দ্বৈত ডিগ্রি অর্জন করতে পারবে।
মাসিক উপবৃত্তি হিসেবে শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে প্রায় ১১০০ থেকে ১২০০ ইউরো, যার মূল্যমান ১২০০ থেকে ১৩০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি।
আন্তর্জাতিক বিমান ভাড়ার টিকিট ও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে টিউশন ফি’র পাশাপাশি আছে অধ্যয়নকালীন যাতায়াত ভাতা। সেমিস্টার শেষ হলে দেশ থেকে দেশে ভ্রমণ খরচ দেয়া হয়। পড়াশোনা শেষে দেশে ফেরার জন্য কোন সীমাবদ্ধতা নেই। মাস্টার্স/পিএইচডি করার পর জব ভিসা দেয়া হয়। ডিগ্রির পর থাকছে ইউরোপে চাকরির সুযোগ।
আরও পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
স্কলারশিপের জন্য যোগ্যতা
ব্যাচেলরে থাকা তৃতীয় বর্ষের বা ফলাফল প্রতীক্ষিত শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবে এই স্কলারশিপের জন্য। কোন প্রফেসরের সাথে বা অন্য কোন যোগাযোগের প্রয়োজন নেই। ফলে বাদ থেকে যাচ্ছে জিআরই’র প্রয়োজনীয়তা।
আবেদনের সময় ব্যাচলরসহ ন্যূনতম ১৬ বছরের অধ্যয়নকাল দেখাতে হয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ব্যাপার হলো, এখানে কাজের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই এবং সিজিপিএ’র ক্ষেত্রে বেশ শিথিলতা আছে। ২.৫ থেকে ৩ সিজিপিএ প্রাপ্তরাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারছে। এছাড়া থাকছে না বয়সের কোন সীমাবদ্ধতা।
তবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতায় প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য গড়ে আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোর ৬.৫ চাওয়া হয়। এক্ষেত্রে যে ইনস্টিটিউটে আবেদন করা হচ্ছে তার ওয়েবসাইটে ভালোভাবে খোঁজ করতে হবে ভাষাগত কোন বাধ্যবাধকতা আছে কি না। সম্প্রতি আইইএলটিএস-এর বিকল্প হিসেবে ডুয়োলিঙ্গো নামে একটি ইংরেজি দক্ষতা টেস্ট চালু করা হয়েছে। এটাও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ে থাকে। ডুয়োলিঙ্গো টেস্ট অনলাইনে ঘরে বসেই দেয়া যায়।
আরও পড়ুন: সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার কিছু উপায়
২ বছর আগে
সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার কিছু উপায়
উন্নত জীবন ধারণ পদ্ধতির লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষা একটি মোক্ষম হাতিয়ার। আর গত এক দশক ধরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্যও এই হাতিয়ারের যোগান দিয়ে যাচ্ছে ইউরোপের অন্যতম আধুনিক দেশ সুইডেন। ৯৯ শতাংশ শিক্ষার হারের দেশটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্কলারশিপের সুযোগ দিচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিও এই সুযোগ নিয়ে সুইডেনে পড়াশোনা করছে। পড়াশোনা শেষে শুধু সুইডেনে স্থায়ীভাবে চাকরির সুযোগ-ই নয়, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন শিল্পে দেশটির গ্রহণযোগ্যতা থাকায় অন্যান্য উন্নত দেশগুলোতেও ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠায় এর শিক্ষাগত সনদ যথেষ্ট কার্যকরী। তাই আজকের ফিচারে আলোচনা হবে সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় নিয়ে।
সুইডেনে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ
অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় সুইডেনে পড়ালেখার খরচ কম হলেও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তা অনেক বেশি। স্বভাবতই বাংলাদেশিদের জন্য সুইডেনে উচ্চশিক্ষার সেরা উপায় হলো স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাওয়া।
সুইডেন মূলত দুই ধরণের স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে।
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে
২. সুইডিশ সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত
আরও পড়ুন: চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে শিক্ষার আলোকবর্তিকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপটি দেয়া হয় শুধুমাত্র প্রতি সেমিস্টারের টিউশন ফি-এর উপর। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে স্কলারশিপের ধরণ আলাদা আলাদা হয়। এখানে বাড়তি কোন সুবিধা থাকে না।
কিন্তু সরকারি স্কলারশিপে টিউশিন ফি-এর পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধাদির মধ্যে মাসিক ভাতাও দেয়া হয়। এই স্কলারশিপটির নাম সুইডিশ ইন্সটিটিউট বা সংক্ষেপে এস আই স্কলারশিপ।
সুইডিশ সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তিন বছরের স্নাতক এবং দুই বছরের স্নাতকোত্তর করার সুযোগ রয়েছে। তার মধ্যে ইংরেজি ভাষায় স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম সংখ্যা প্রায় নয়শত।
এস আই স্কলারশিপটি স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ চারটি বিষয়ে স্নাতকোত্তরের জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এস আই স্কলারশিপের সুবিধাগুলোর মধ্যে আছে-
আরও পড়ুন: এলডিসি পরবর্তী সময়ের জন্য বাংলাদেশের এখনই প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন: প্যাট্রিসিয়া ড্যানজি
→ সম্পূর্ণ ফ্রি টিউশন ফি
→ পুরো অধ্যয়নের সময়কাল জুড়ে জীবনযাত্রার খরচ বহনের জন্য প্রতি মাসে ১০ হাজার সুইডিশ ক্রোনা বা ১,০৯৫.৯৪ মার্কিন ডলার অর্থ
→ অসুস্থতা এবং দুর্ঘটনার জন্য বীমা
→ এস আই-এর নেটওয়ার্ক ফর ফিউচার গ্লোবাল লিডারস (এনএফজিএল)-এর সদস্যপদ
এটি সুইডেনে থাকাকালীন নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার উন্নয়নে সাহায্য করবে।
→ স্কলারশিপের মেয়াদ শেষে শিক্ষার্থী এস আই অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের সদস্য হবেন। এটি শিক্ষা পরবর্তী বিভিন্ন চাকরীসহ ক্যারিয়ারের অন্যান্য বিকাশে সহায়তা করবে। বর্তমানে নেটওয়ার্কটি ১৪০ টিরও বেশি দেশ থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি প্রতিভাবান প্রাক্তন শিক্ষার্থী নিয়ে গঠিত।
→ সমগ্র অধ্যয়নের সমকালের মধ্যে ভ্রমণের জন্য এককালীন ১৫ হাজার সুইডিশ ক্রোনা বা ১,৬৪৩.৯১ মার্কিন ডলার অর্থ।
আরও পড়ুন: ঢাবি গ্রন্থাগার: পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
২ বছর আগে