জলাশয়
বগুড়ায় হাত-মুখ বেঁধে ইজিবাইক ছিনতাই, চালককে জলাশয়ে নিক্ষেপ
বগুড়ার নন্দীগ্রামে হাত-মুখ বেঁধে চালককে জলাশয়ে ফেলে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়েছে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ করেছেন ইজি বাইকচালক সেলিম হোসেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের নন্দীগ্রাম উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন এলাকায় এ ছিনতাই হয়।
আরও পড়ুন: বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়িতে হামলা, আহত ৪
চালক সেলিম হোসেন (৪২) নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের কাথম গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে।
অভিযোগে জানা গেছে, শনিবার ভোরে প্রতিদিনের মতো সেলিম হোসেন বাড়ি থেকে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার ইজিবাইক নিয়ে নন্দীগ্রামের উদ্দেশে বের হন।
আরও পড়ুন: বাকৃবি অধ্যাপক আব্দুল কাফির মৃত্যু, বগুড়ায় দাফন
পথিমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন এলাকায় পৌঁছিলে হঠাৎ পেছন থেকে অজ্ঞাতনামা একটি প্রাইভেটকার ইজিবাইকের সামনে এসে দাঁড়ায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রাইভেটকার থেকে চারজন নেমে ইজিবাইকের চালক সেলিমের হাত-মুখ বেঁধে গাড়িতে তোলে।
এরমধ্যে একজন সেলিমের ইজিবাইক ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। গাড়িতে থাকা অন্য তিনজন সেলিমকে হাত, মুখ ও চোখ বাঁধা অবস্থায় কুন্দারহাট-রুপিহার বাজারের মাঝামাঝি সড়কের জলাশয়ে ফেলে দিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বগুড়ার মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে পিকআপে আগুন
পরে স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে চালক সেলিম হোসেনকে উদ্ধার করে।
নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজমগীর হোসেন বলেন, অভিযুক্তদের আটক ও ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
১০ মাস আগে
চুয়াডাঙ্গায় তীব্র গরমে জলাশয়ের মাছ মরে যাচ্ছে
চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র দাবদাহ। বৃষ্টির না হওয়ায় শুকিয়ে যাচ্ছে খাল, বিল, পুকুর। ফলে বাড়ছে পানির তাপমাত্রা। এই তীব্র গরমে চুয়াডাঙ্গার জলাশয়ের মাছ মরে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মাছচাষিরা।
কই, জিয়লসহ সব ধরনের মাছের রেণু, পোনা মরে যাওয়ার কারণে মাছচাষিদের মধ্যে আহাজারি শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে মাছ চাষ ব্যাহত হবে। মাছের সংকট দেখা দেবে।
মাছের আড়তের পাইকারি বিক্রেতারাও হতাশ। কারণ পর্যাপ্ত মাছ তারা আমদানি করতে পারছেন না। আবার যাও পারছেন, সেই মাছ অধিকাংশ গরমে স্ট্রোক করে মরা। এই অবস্থার জন্য তীব্র লোডশেডিংকে দায়ি করছেন ব্যবসায়ীরা।
এঅবস্থায় পুকুরে কচুরিপানা দিয়ে পানি ঠাণ্ডা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টিপাত হয়নি। তাপমাত্রা থাকছে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর মাছ চাষের জন্য ২৫ থেকে ৩২ ডিগ্রি আদর্শ তাপমাত্রা। তাপমাত্রা বাড়ার কারণে মাছ মারা যাচ্ছে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন পুকুরে গেলে দেখা যায়, মাছ চাষিরা তাদের মাছ বাঁচানোর পানি সেচসহ নানাভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তারপরও অতিরিক্ত তাপে মরে যাচ্ছে মাছ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ১০০ দিন ও বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ
আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা গ্রামের হালদারপাড়ার মদন হালদার জানান, এই দুই দিনে গরমের কারণে আমাদের প্রায় ৩শ’ মণ মাছ মরে গিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবার গরমেই এই দুইদিনেই আমাদের ১৫-২০ লাখ টাকা লস।
জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ফুলবগাদী গ্রামের জব্বার আলী ফেরি করে গ্রামে গ্রামে মাছ বিক্রি করেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার সব থেকে বড় পাইকারি মাছের বাজার শহরের মাছপট্টিতে মাছ পাইকারি দরে কিনতে এসেছেন।
জব্বার আলী বলেন, ‘মাছ মইরে যাইছে, মাছ পাওয়া যাইছে না। গরমে পুকুরের পানির অবস্থা ভালো না, পানি নেই। আবার দাম বেশি।’
আমিরুল নামের একজনের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা মাছপট্টিতে কথা হয়।
তিনি বলেন, ‘পানি নেই, পানি হলি মাছের দাম কম হবে। এতি করে চাষিরাও বাচবে, যারা ফোড়ে তারাও বাঁচবে। মিয়ারাও বাঁচবে। তাড়াতাড়ি পানি হোক।’
মাছচাষি মো. আমানউল্লাহ বলেন, ‘আমার দুইটি পুকুর রয়েছে। একটা এক বিঘার। আরেকটা ৭ বিঘার খননের কাজ চলছে। কিন্তু এ বছর পুকুরের মাছগুলো বাচিঁয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। স্যালোমেশিন দিয়ে পুকুরে পানি দিচ্ছি। যে পাওয়ার পাম্প মেশিন কিনেছি, তাতে ঠিকঠাক পানি উঠছে না। গরমে মাছ ছটফট করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবগুলো পুকুরের পানিই তলানিতে নেমেছে। প্রচণ্ড গরমে মাছের রোগ দেখা দিচ্ছে। আমরা চুনসহ শ্যালো চালিয়ে পুকুরে পানির উচ্চতা বাড়াচ্ছি। সময় না হলেও কিছু মাছ তুলে বিক্রিও করে দিয়েছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় প্রায় ১১ হাজারের বেশি পুকুর রয়েছে। যার জলকরের আয়তন প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমি। আর পুরো জেলায় ৬৫ হাজার হেক্টরের বেশি জলকর রয়েছে।
এছাড়া এ জেলায় ১২ নদী ও ১০টি হাওড় আছে। যেখানে চাষ ছাড়াও প্রাকৃতিকভাবেই মাছ পাওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বার্ষিক উৎপাদন ২৩ হাজার ৭৪১ মেট্রিক টন লক্ষ মাত্রা রয়েছে।
তবে এবার গরমের কারণে উৎপাদন কম হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে লক্ষযমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধরলা নদীতে মিলল সাকার মাছ
১ বছর আগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জলাশয়ে ডুবে ২ ভাইয়ের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পানিতে ডুবে দুই চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের বাছিদপুর গ্রামে বাড়ির পাশে পরিত্যাক্ত জলাশয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের বাছিদপুর গ্রামের প্রবাসী মাঈন উদ্দিনের ছেলে উসমান (৩) ও বাচ্চু মিয়ার ছেলে আবদুল্লাহ (৪)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে বাড়ির পাশে খেলাধুলা করছিল উসমান ও আবদুল্লাহ। কিছুক্ষণ পর থেকে তাদের আর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের জলাশয়ে তাদের ভাসতে দেখে। এ সময় তাদের উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূরে আলম জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় শিশু দু’জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে পানিতে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু
দিনাজপুরে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
২ বছর আগে
দেশের জলাশয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়া সাকার মাছ-এর ক্ষতিকর দিক
বিগত প্রায় চার দশক জুড়ে অ্যাকোয়ারিয়ামের শোভা বর্ধক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সাকার মাছ এখন দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জলাশয়গুলোতে। ঢাকার বুড়িগঙ্গা থেকে ধরে এনে অনেকেই এখন শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন সাকার মাছ। খাবারের জন্য চওড়া দাম দিয়ে কিনে নিচ্ছেন অনেকেই। তবে বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে দেশের মাছ চাষে মাছটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বদ্ধ এবং উন্মুক্ত উভয় জলাশয়েই এর ক্ষতিকর দিকগুলোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন এরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া? চলুন জেনে নিই সাকার মাছের বৈশিষ্ট্য ও এর ক্ষতিকর দিকগুলো।
সাকার মাছ-এর বৈশিষ্ট্য
মাছটির পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ (Suckermouth Catfish)। অ্যাকোয়ারিয়াম পালনকারীদের কাছে প্লেকোস্টোমাস বা কমন প্লেকো নামেই বেশি পরিচিত। বর্মযুক্ত ক্যাটফিশ গোত্রের অন্তর্গত এই মাছটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় মিঠা পানির মাছ। এর মাথা এবং শরীরের উপরের অংশকে আবৃত করে রাখে বর্ম-সদৃশ কাটার অনুদৈর্ঘ্য সারি আর মাথা এবং পেটের নীচের পৃষ্ঠটি নগ্ন নরম ত্বক। মুখটি যেন যে কোন কিছু চুষে নেয়ার জন্য উদ্যত, আর এর জন্যই এর বৈজ্ঞানিক নামকরণ করা হয়েছে হাইপোস্টোমাস প্লেকোস্টোমাস। মুখের এই আকৃতিটি মাছটিকে জলাশয়ের পৃষ্ঠের সাথে লেগে থেকে স্রোতের প্রতিকূলেও খাবার শুষে নিতে সাহায্য করে।
এই সর্বভুক প্রজাতির মাছটি শেওলা, জলজ উদ্ভিদ এবং ছোট ছোট পোনা মাছ খেয়ে থাকে। আশেপাশের যেকোন নড়াচড়ার প্রতি এরা বেশ সংবেদনশীল। এই বৈশিষ্ট্যটি তাদের যেকোনো ধরনের শিকারীকে নিমেষেই এড়িয়ে যেতে সাহায্য করে। অপরদিকে কোন কারণে এদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হলে এরা শরীর থেকে ফেরোমোন নিঃসরণ করে এবং কোনো বিপদ দেখা দিলে লড়াই করার জন্য পূর্ব সংকেত দেয়।
প্রায় ৩৯ ইঞ্চির উত্তর আমেরিকান এই মাছগুলোর ওজন হয় প্রায় দেড় কেজি। তবে বাংলাদেশিগুলো ১৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি লম্বা ও ওজনে ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: মাছ, মাংস, ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা খামারিদের অনন্য অর্জন: স্পিকার
সাকার মাছ-এর ক্ষতিকর দিকগুলো
অন্যান্য মাছ খেয়ে ফেলে
এই সর্বভূক মাছটি জলাশয়ের পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি অন্য ছোট ছোট মাছ বা মাছের পোনাও খেয়ে ফেলে। ফলে চাষিদের মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
২ বছর আগে