সাকার মাছ
কুড়িগ্রামে ধরলা নদীতে মিলল সাকার মাছ
কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে এক যুবকের জালে ‘সাকার’ মাছ ধরা পড়েছে। মাছটি দেখতে এলাকায় উৎসুক জনতা ভীড় করছে। স্থানীয়রা অনেকে এ মাছটিকে আন্ধারি শোল কিংবা 'উড়ুক্কু' মাছ নামে ডাকে।
সোমবার ৫ জুন সকালে উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের নয়ারহাট এলাকার ধরলা নদীতে মাছটি পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মামুন আহমেদ জানান, ফজলের মোড় এলাকার ওয়েলডিং মিস্ত্রী মো. ইউনুস আলী শখের বসে ধরলা নদীতে ঝাঁকি জাল নিয়ে মাছ ধরতে যান। মাছ ধরার এক পর্যায়ে বিরল প্রজাতির একটি মাছ জালে উঠে আসে। মাছটি রাক্ষুসে মাছ সাকার মাছ বলে পরিচিত। পরে মাছটিকে বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ছেড়ে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটনে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা ১ জুন থেকে
মো. ইউনুস আলী বলেন, মাছটি জালে উঠার পর প্রথমে আমরা কেউ চিনতাম না। অনেক মানুষ এসে অনেক নাম বলতো। এ কারণে পুকুরে ছেড়ে দিয়েছি। যদি মাছটি রাক্ষুসে মাছ বা ভয়ংকর মাছ হয়ে থাকে তাহলে আজকেই মাছটি পুকুর থেকে তুলে মেরে ফেলা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রী কালিপদ রায় বলেন, সাকার মাছটি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি এই অঞ্চলে পাওয়া যায় নাই কিংবা শোনা যায় নাই। তবে মাছটি কেউ পেয়ে থাকলে মেরে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি। কেননা এই মাছটি অনান্য প্রজাতির মাছগুলোর বংশ বৃদ্ধি নষ্ট করে। এ বিষয়ে জেলে ও সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে দুই মাসের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু আজ
১ বছর আগে
বাংলাদেশে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করেছে সরকার
বাংলাদেশ সরকার সাকারমাউথ ক্যাটফিশ আমদানি, চাষ, পরিবহন, বিক্রি, সরবরাহ বা সংরক্ষণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। স্থানীয়ভাবে এটি সাকার মাছ হিসেবে পরিচিত।
এক প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মৃণাল কান্তি দে স্বাক্ষরিত এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়।
যেখানে বলা হয়, ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট-১৯৫০’ এর প্রেক্ষিতে দুই জাতের মাছ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তি সাকারমাউথ ক্যাটফিশ ও ক্লারিয়াস গ্যারিপিনাস মাছের কোনো প্রজাতির আমদানি, চাষ, পরিবহন, বিক্রয়, গ্রহণ, বাজারজাত, মজুদ, প্রকাশ বা অধিকার করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: দেশের জলাশয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়া সাকার মাছ-এর ক্ষতিকর দিক
মাছের আঁশ: রপ্তানি বৈচিত্র্যে আশা জাগানো নতুন পণ্য
কক্সবাজার সৈকতে মাছ কুড়ানোর উৎসব!
১ বছর আগে
দেশের জলাশয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়া সাকার মাছ-এর ক্ষতিকর দিক
বিগত প্রায় চার দশক জুড়ে অ্যাকোয়ারিয়ামের শোভা বর্ধক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সাকার মাছ এখন দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জলাশয়গুলোতে। ঢাকার বুড়িগঙ্গা থেকে ধরে এনে অনেকেই এখন শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন সাকার মাছ। খাবারের জন্য চওড়া দাম দিয়ে কিনে নিচ্ছেন অনেকেই। তবে বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে দেশের মাছ চাষে মাছটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বদ্ধ এবং উন্মুক্ত উভয় জলাশয়েই এর ক্ষতিকর দিকগুলোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন এরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া? চলুন জেনে নিই সাকার মাছের বৈশিষ্ট্য ও এর ক্ষতিকর দিকগুলো।
সাকার মাছ-এর বৈশিষ্ট্য
মাছটির পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ (Suckermouth Catfish)। অ্যাকোয়ারিয়াম পালনকারীদের কাছে প্লেকোস্টোমাস বা কমন প্লেকো নামেই বেশি পরিচিত। বর্মযুক্ত ক্যাটফিশ গোত্রের অন্তর্গত এই মাছটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় মিঠা পানির মাছ। এর মাথা এবং শরীরের উপরের অংশকে আবৃত করে রাখে বর্ম-সদৃশ কাটার অনুদৈর্ঘ্য সারি আর মাথা এবং পেটের নীচের পৃষ্ঠটি নগ্ন নরম ত্বক। মুখটি যেন যে কোন কিছু চুষে নেয়ার জন্য উদ্যত, আর এর জন্যই এর বৈজ্ঞানিক নামকরণ করা হয়েছে হাইপোস্টোমাস প্লেকোস্টোমাস। মুখের এই আকৃতিটি মাছটিকে জলাশয়ের পৃষ্ঠের সাথে লেগে থেকে স্রোতের প্রতিকূলেও খাবার শুষে নিতে সাহায্য করে।
এই সর্বভুক প্রজাতির মাছটি শেওলা, জলজ উদ্ভিদ এবং ছোট ছোট পোনা মাছ খেয়ে থাকে। আশেপাশের যেকোন নড়াচড়ার প্রতি এরা বেশ সংবেদনশীল। এই বৈশিষ্ট্যটি তাদের যেকোনো ধরনের শিকারীকে নিমেষেই এড়িয়ে যেতে সাহায্য করে। অপরদিকে কোন কারণে এদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হলে এরা শরীর থেকে ফেরোমোন নিঃসরণ করে এবং কোনো বিপদ দেখা দিলে লড়াই করার জন্য পূর্ব সংকেত দেয়।
প্রায় ৩৯ ইঞ্চির উত্তর আমেরিকান এই মাছগুলোর ওজন হয় প্রায় দেড় কেজি। তবে বাংলাদেশিগুলো ১৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি লম্বা ও ওজনে ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: মাছ, মাংস, ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা খামারিদের অনন্য অর্জন: স্পিকার
সাকার মাছ-এর ক্ষতিকর দিকগুলো
অন্যান্য মাছ খেয়ে ফেলে
এই সর্বভূক মাছটি জলাশয়ের পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি অন্য ছোট ছোট মাছ বা মাছের পোনাও খেয়ে ফেলে। ফলে চাষিদের মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
২ বছর আগে