হাইকোর্টের রায়
রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধা দূর হলেও বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর মৎস্যভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে আছেন তার সমর্থকরা। এদিকে আরও জোরালো আন্দোলন করতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাইকোর্টের রায়ের পর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ইশরাক বলেন, ‘আন্দোলনকারী ভাইদের বলবো— এইসব মূলা দিয়ে গাধা বস করা যায়; আমাদের না। দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগের খবর না আসা পর্যন্ত চলেছে, লড়াই চলবে। রাস্তা তো ছাড়বেন না—আরও বিস্তৃত করতে হবে।’
ইশরাকের পক্ষে হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরও কাকরাইল মসজিদ এলাকায় অবস্থান করে প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন বিক্ষোভকারীরা। রায়ের খবর পেয়ে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
এ সময় স্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীরা বলতে থাকেন, ‘এই মুহূর্তে খবর এলো, ইশরাক মেয়র হলো’, ‘এই মাত্র খবর এলো, জনগণের বিজয় হলো’।
তারা বলছেন, হাইকোর্টের রায় তাদের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু, তাদের নতুন আরেকটি দাবি আছে। সেটি হলো—সরকারের দুজন উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজকে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। তারা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ইশরাককে শপথ পড়ানোর পাশাপাশি দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে সড়কে অবস্থান করছেন তারা। যতক্ষণ না ওই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এর আগে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অবস্থান কর্মসূচিতে এসে ঘোষণা দেন, মেয়র পদে তাকে দায়িত্ব বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট খারিজ: ইশরাক হোসেনের শপথে বাধা নেই
পাশাপাশি তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করেন। পরে সমর্থকদের সঙ্গে আন্দোলনস্থলে অবস্থান নেন তিনি।
এদিকে ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধা কাটায় ‘জনগণের বিজয়’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটা হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে।’
‘এটাতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটা বিজয় হয়েছে। আমরা জানি যে যখন মেয়র নির্বাচন হয়, তখন সেটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি জোর করে এই ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। জনতার মেয়র হিসেবে ঢাকাবাসীসহ দেশের জনগণ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেছিল,’ বলেন ফখরুল।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশিদ।
অন্যদিকে ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে ওইদিনই আন্দোলন শুরু করেন তার সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়ে নগর ভবন। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
১৯৭ দিন আগে
আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা: হাইকোর্টের রায় যেকোনো দিন
বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট।
শুনানি শেষ করে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে বি রুমি। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ ও জামিউল হক ফয়সাল। এছাড়া এই মামলায় শুরুর দিন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করেছিলেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী শিশির মনির।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়।
গত অক্টোবর মাসে বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ উদ্যোগ নেন।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন আদালত।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে: নাহিদ ইসলাম
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।
আরও পড়ুন: আবরার ফাহাদ হত্যার ৫ বছর, এক মায়ের অন্তহীন দুঃখ
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ।
মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর অভিযোগ পত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। এরপর বিচার শেষে রায় দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও মামলার নথি হাইকোর্টে আসে।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ৬ হাজার ৬২৭ পৃষ্ঠার ডেথ রেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়।
এরপরই আসামিরা দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিল করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। দণ্ডিত আসামিরা উচ্চ আদালতে ফৌজদারি আপিল এবং জেল আপিল করতে পারেন।
এরপর ডেথরেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: বুয়েটছাত্র আবরারের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
২৮৩ দিন আগে
নারীরা বিয়ের কাজি হতে পারবে না: হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিয়ের কাজি) হতে পারবে না মর্মে ৬ বছর আগে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
১৭৮৯ দিন আগে
জুয়া খেলা বন্ধ, তবে ক্লাবগুলোতে অভিযান নয়: আপিল বিভাগ
অভিজাত ১৩টি ক্লাবসহ সারা দেশে অর্থের বিনিময়ে জুয়া খেলা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেননি আপিল বিভাগ। তবে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্লাবগুলোতে অভিযান চালাতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
২১০১ দিন আগে
১৫০ দিনের বেশি কাউকে ওএসডি রাখা যাবে না: হাইকোর্ট
সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে ১৫০ দিনের বেশি অফিসার অন স্পেশাল ডিউটিতে (ওএসডি) রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
২১৫৭ দিন আগে