বর্ডারহাট
বর্ডারহাট বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিক খুলে দিয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বর্ডারহাট বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিক খুলে দিয়েছে। এ হাট উভয় দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। ভারত বাংলাদেশের শুধু প্রতিবেশি দেশই নয়, বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। উভয় দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন একই।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগ আয়োজিত মৌলভীবাজার জেলার কুরমাঘাট এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ঢালাই জেলার কামালপুর সীমান্তে বর্ডারহাট এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা এবং ভারতের শহীদ যোদ্ধাদের বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা ভরে সবসময় স্মরণ করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ত্রিপুরাতে বাংলাদেশের ৮০ ভাগ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ভারতের সীমান্ত এলাকার কুড়িগ্রাম, ফেনি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং সুনামগঞ্জে চারটি বর্ডারহাট চালু রয়েছে। উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার মানুষ এর সুফল ভোগ করছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী এবং দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের কুরমাহাট এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কামালপুর সীমান্তে বর্ডারহাট এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন একটি ঐতিহাসিক কাজ। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বর্ডারহাট স্থাপনের বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়।বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তরাঞ্চলে রপ্তানি বাণিজ্যের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধি করলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ভারতসহ প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সবধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলের রাজ্যের সঙ্গে কম খরচে বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশের চট্রগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে উভয় দেশ উপকৃত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:ব্যাংকিং চ্যানেলের জটিলতা দূর হলে রাশিয়ায় রপ্তানি বাড়বে: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বেশ ভালো। ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। বিগত দশ বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অনেক বেড়েছে। দশবছর আগে ২০১০-২০১১ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল ৫ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিগত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস চলমান বর্ডারহাটগুলো থেকে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার মানুষ নিজেদের শাকশব্জি, ফলমূল, মসলা, গামছা-লুঙ্গির মত কাপড়, প্লাস্টিক পণ্য, মাছ, মেলামাইন পণ্য, মধু, তৈরি পোশাক, ক্রোকারি পণ্যসহ বিভিন্নপণ্য ক্রয়-বিক্রয় করাপর সুযোগ পাচ্ছেন। এতে করে উভয় দেশের মানুষের আন্তরিকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার শ্রী বিক্রম দোরাইস্বামী, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে মৌলভীবাজর-৪ আসনের সংসদ সদস্য, প্রাক্কলন সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ এবং ত্রিপুরা ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান শ্রী টিংকু রায় বক্তব্য দেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্যের চিফ মিনিস্টার শ্রী বিপ্লব কুমার দেব, ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী মোনজ কান্তি দেব ভারতের পক্ষে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: তিন মাসের মধ্যে ই-কমার্সের নিবন্ধন না করলে আউট: বাণিজ্যমন্ত্রী
ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া সম্ভব: বাণিজ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে