ত্রিপুরা
বাংলাদেশে বন্যার জন্য ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ দায়ী নয়: নয়াদিল্লি
বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। তবে বন্যার কারণ হিসেবে বাংলাদেশে যা বলা হচ্ছে তা তথ্যগতভাবে সঠিক নয় বলে দাবি দেশটির।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা দেখছি ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। এটি তথ্যগতভাবে সঠিক নয়।’
তারা আরও জানায়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী অভিন্ন নদীগুলোতে হওয়া বন্যা দুই দেশের অভিন্ন সমস্যা যা জনগণের দুর্ভোগের কারণ এবং এর সমাধানে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর নিকটবর্তী এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বছরের সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বড় জলাভূমির পানির কারণে হয়েছে।
যেহেতু দুটি দেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, তাই নদীর পানি সহযোগিতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করে ভারত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, 'আমরা দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানিসম্পদ ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগের সমাধান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ডুম্বুর বাঁধ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে বেশ দূরে- বাংলাদেশ থেকে ১২০ কিলোমিটার উজানে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা এক গ্রিডে সরবরাহের বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। বাংলাদেশও ত্রিপুরা থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়ে থাকে।
প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীর গতিপথ বরাবর অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুড়া ২ এ ভারতের তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ ক্ষেত্র রয়েছে।
গত ২১ আগস্ট থেকে পুরো ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের আশপাশের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পানির পরিমাণ বেড়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি চলে গিয়েছে।
অমরপুর স্টেশনটি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি অংশ যেখানে বাংলাদেশের বন্যা সঠিক পরিস্থিতি জানানো হচ্ছে। ২১ আগস্ট বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির পর থেকেই তথ্য দেওয়া হচ্ছে মাঝে কিছু সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে তথ্য দেওয়া ব্যাহত হয়েছিল।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়ও জরুরি ভিত্তিতে তথ্য পাঠাতে অন্যান্য উপায়ে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি আমরা।’
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৩ মাস আগে
খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরার সাজে দেবী দুর্গা
সারাদেশের সঙ্গে তাল না মিলিয়ে এবার ভিন্ন সাজে দেবী দুর্গাকে নিজস্ব পোশাকে সাজিয়েছে খাগড়াছড়ির সনাতন ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন। দেবী দুর্গাকে শাড়ি না পরিয়ে তারা পরিয়েছে তাদের ঐতিহ্যবাহী রিনাই-রিসা, চন্দ্রাহারসহ বিভিন্ন অলংকার।
খাগড়াছড়ির খাগড়াপুর এলাকার অষন্ড মণ্ডলি মন্দিরের আয়োজনে এই চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন নিজস্ব সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে। এদিকে দেবী দুর্গাকে নিজেদের পোশাকে সাজানো দেখে খুশি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা ২০২৩: সুষ্ঠুভাবে উদযাপনে পুলিশ সদর দপ্তারের পরামর্শ
দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে শিশু-কিশোর, কিশোরীরাও উল্লসিত। উৎসবের আমেজ ছোট-বড় সবার মধ্যে। অন্যসব দুর্গা পূজা মণ্ডপের দেবী দুর্গার সাজের সঙ্গে ত্রিপুরা পল্লিতে সাজে ভিন্নতা রযেছে।
মণ্ডপে দেখা যায়, দেবীর ডান পাশে লক্ষ্মী ও কার্তিক, বাম পাশে সরস্বতী ও গণেশ। তাদের পরনেও ঐতিহ্যবাহী পোশাক আর অলংকার। দেখেই মনে হবে যেন স্বয়ং দেবী দুর্গা এসে বসে আছেন সন্তানদের নিয়ে। প্রতিমার সঙ্গে মিলিয়ে মঞ্চ সজ্জা আর মণ্ডপে প্রবেশ পর্যন্ত সবকিছুই পাহাড়ের ত্রিপুরাদের সংস্কৃতির আদলে সাজিয়েছেন শিল্পীরা।
দেবীর গলায় মালা হিসেবে পরানো হয়েছে রূপার চন্দ্রাহার আর টাকার মালা (যা পয়সা দিয়ে তৈরি বিশেষ মালা), খোঁপায় পরানো হয়েছে কালসি, সুরাম, কানে পরানো হয়েছে ‘য়াংকুং’, হাতে বাংগ্রী এবং পায়ে পরানো হয়েছে 'বেংকি'। দেবী দুর্গা ছাড়াও একই সাজে সাজানো হয়েছে লক্ষ্মী ও সরস্বতীকে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে শুক্রবার
১ বছর আগে
বন্যায় ক্ষতি ৮৬,৮১১ কোটি: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
এ বছর বন্যায় সারা দেশে আনুমানিক ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, এ বছর মে মাসের ২য় সপ্তাহে দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে অবিরামভাবে কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া ভারতের মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরায় কয়েকদিন ধরে অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাত হয়। দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের কয়েকদিনের অবিরাম ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ১৩ মে থেকে পূর্বাঞ্চলের সিলেটের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ ও আশেপাশ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পর্যায়ক্রমে এই বন্যা দেশের ১৮টি জেলায় বিস্তৃতি লাভ করে।
প্রতিমন্ত্রী সোমবার বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সাম্প্রতিক বন্যা, ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক পর্যালোচনা ও করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি’র সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের (সম্পূর্ণ) আনুমানিক আর্থিক মূল্য এক হাজার ২৫৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯১ হাজার ১১২ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের (আংশিক) আনুমানিক আর্থিক মূল্য ৫৫ হাজার ৯৫৭ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ৫০৮ টাকা।
আরও পড়ুন: ১ হাজার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে সরকার: এনামুর
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি (সম্পূর্ণ) ৩৬৪ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ০৪৩ টাকা এবং (আংশিক) এক হাজার ৩৫৫ কোটি তিন লাখ ১০ হাজার ৫৫৫ টাকা।
তিনি বলেন, এভাবে ব্রিজ/কালভার্ট পাকা সড়ক, ইট-নির্মিত সড়ক, কাঁচা সড়ক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা, কমিউনিটি স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির এবং বাঁধের সম্পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে আনুমানিক বন্যায় সারা দেশে ক্ষতি ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকা।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণের লক্ষ্যে ১ এপ্রিল থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সাত হাজার ২০ মেট্রিক টন চাল, ৯ কোটি ৪৪ লাখ নগদ টাকা, এক লাখ ৪০ হাজার ১৩২ প্যাকেট/বস্তা শুকনো ও অন্যান্য খাবার , শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ৪০ লাখ টাকা, গো-খাদ্য ক্রয়ের জন্য ৪০ লাখ, গৃহ মঞ্জুরী বাবদ দুই কোটি ৬১ লাখ টাকা, এবং আট হাজার ৭০০ বান্ডিল ঢেউ টিন বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৯: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
২ বছর আগে
চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড় থেকে অপহৃত ৩ শ্রমিক উদ্ধার
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অপহরণের শিকার তিন শ্রমিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ত্রিপুরা সুন্দরী এলাকার গহীন বন থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার তিন শ্রমিক হলেন- উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের হাজির খিল মাওলানা গ্রামের মৃত সামছুল আলমের ছেলে এজলাস মিয়া (৬০), একই ইউনিয়নের হায়দুরকুল গ্রামের মৃত মো. সোবহানের ছেলে মো. বাচা (৪৫) ও কক্সবাজার জেলার মো. জাফর (২২)।
আরও পড়ুন: হাইস্পিড পেট্রল বোট নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে ‘সোঙ্গা চিতা’
এর আগে গতকাল রবিবার (১৫ মে) সকাল ৮টার দিকে সরফভাটা ইউনিয়নের বড়খোলা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জমিতে ধান কাটার সময় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাদের অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যান।
জমির মালিক আকতার হোসেন বলেন, গত বেশ কিছুদিন ধরে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মোবাইলে ফোন করে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে।হয়তো তারাই অপহরণ করেছে।
অপহৃত কৃষকদের উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম জানান, উক্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ঘেরাও করে কোন রকম মুক্তিপণ ছাড়াই তিন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আনসার ও নির্বাচনী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
২ বছর আগে
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মানিক সাহা
ডেন্টাল সার্জন থেকে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা এবং ত্রিপুরা বিজেপির সভাপতি মানিক সাহা রবিবার রাজ্যের ১২তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।
এর আগে শনিবার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানা যায়, সাহা একাই শপথ নেবেন, নাকি তার সঙ্গে অন্য কোনো নতুন মন্ত্রী শপথ নেবেন; তা দলীয় সূত্র এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি।
৬৯ বছর বয়সী সাহা গত ৩১ মার্চ রাজ্যসভায় ত্রিপুরার একমাত্র আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং শনিবার বিজেপির আইনসভায় দলের নেতা হিসেবে তিনি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্যের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠি দিয়ে সরকার গঠনের দাবি করেন।
দুই কন্যার জনক সাহাকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিধানসভায় নির্বাচিত হতে হবে।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে ভবনে আগুন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯
সাহা ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ এবং আগরতলার বি.আর. আম্বেদকর মেমোরিয়াল টিচিং হাসপাতালের অধ্যাপক। সেইসঙ্গে ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি ২০১৫ সালে বিজেপিতে যোগ দেন।
২০২১ সালে সাহা বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী দেবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে ত্রিপুরা বিজেপি প্রদেশ কমিটির সভাপতি হন।
আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পরে সাবেক রাজ্য বিজেপির সভাপতি দেব বলেন, দলের স্বার্থে এবং আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের ২৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে ২০১৮ সালে বিজেপি-আইপিএফটি জোট ক্ষমতায় আসে এবং বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রী হন।
আরও পড়ুন: গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলো ভারত
দিল্লিতে ভবনে আগুন লেগে ২৬ জন নিহত
২ বছর আগে
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-১
চাহিদা মতো প্রশিক্ষণ শিবির চালু না হওয়াতে যুব শিবির নামে কিছু ট্রানজিট ক্যাম্প চালু হয়েছে। তাছাড়া পরিবারের সাথে ক্ষুদ্র কুড়েঘর শেয়ার করে থাকার চাইতে প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেয়া উত্তম। কেউ দেশের গ্রামে পালিয়ে বেড়াচ্ছে আবার কেউ শহরে ঘরের কোনে লুকিয়ে আছে। ছাত্র শিক্ষক, শ্রমিক বিভিন্ন পেশার লোক, এমনকি জেল ভেঙে পালিয়ে যাওয়া দাগি আসামিরাও মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে শুরু করেছে। বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিরোধ করা সেনা বাহিনী, ইপিআর, আনসার, মুজাহিদ, পুলিশ সদস্যরা ক্লান্ত। যুদ্ধ করার সাপোর্ট পাচ্ছে না। অগত্যা তারাও ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে যোগ দেয়া শুরু করলো। যুদ্ধে যেতে হবে কি হবে না তা কাউকে বলে দিতে হচ্ছে না। দেশের এই ক্রান্তিকালে কেউ বসে নেই আদেশ-নির্দেশের অপেক্ষায়।
কাঠালিয়া ক্যাম্পে জনস্ফীতি, অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার কারণে এখান থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানানো হলো। শত্রুর কামানের গোলার রেঞ্জের মধ্যে এরূপ ক্যাম্প থাকা বিপদজনক। গোলাগুলির শুরুতেই অনেক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হবে। ক্যাম্প কোথায় যাবে জল্পনা কল্পনা চলল। হাবিলদার মেজর নির্দেশ দিল সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে সকাল সকাল তৈরি হয়ে নিতে। কে কি গোছাবে। আছেইবা কি? কারো পকেটে টাকা পয়সা নেই। একজন সেনা সদস্য জানালেন সরকার গঠন করা হয়েছে। এখন টাকশাল বসে যাবে। টাকা ছাপানো শুরু হলেই বেতন ও পকেট খরচ দেয়া হবে। সহজেই বিশ্বাস করলাম। তখন এত বুদ্ধি হয়নি যে সরকার কিভাবে কাজ করে আর টাকা ছাপাতে কি কি লাগে। মনোবল উঁচু রাখার জন্য যেভাবে বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে আছেন আর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে টাকা ছাপানোর গল্পটাও তাই।
তবু রেশন ও অন্যান্য সামগ্রী ট্রাকে তুলে দিয়ে আমরা হেটে রওনা দিলাম সোনামুড়া অভিমুখে। ত্রিপুরার জেলা শহর সোনামুড়া গোমতী নদীর তীরে অবস্থিত। সীমান্তের এক দিকে কুমিল্লা বিবির বাজার অপরদিকে সোনামুড়া। পূর্বে সবাই ত্রিপুরার অধিবাসী ছিল।
ঘাটে মালপত্র নামিয়ে সারা রাত ফেরিতে করে মালামাল পারাপার করা হলো। ক্লান্ত নির্ঘুম জনযোদ্ধারা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। বিএসএফ এর নন কমিশন অফিসাররা পারাপার তদারকি করছেন। ফেরি বলতে দুটি কাঠের নৌকা জোড়া দিয়ে লাগানো, খরস্রোতা গোমতীর সাথে তামাশায় লিপ্ত।
আমাদের ক্যাম্প ত্রিপুরা রাজ্যের অম্পিনগরে স্থানান্তরিত হল বিএসএফ এর তত্ত্বাবধানে ট্রেনিং পরিচালনার জন্য। মাঝে বিশালগরে একদিনের যাত্রা বিরতি হয়েছিল। সেই মিলিটারি ক্যান্টিনের গরম পাকুরা ও জিলাপি পেয়ে সবাই আত্মহারা। কত যুগ পর এরকম খাবারের দেখা মিললো।
অম্পিনগরে আমাদের প্রশিক্ষণ শুরু হলো। অম্পিনগর ছিল ত্রিপুরায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম সুসংগঠিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্প।
কাঠালিয়ার প্রকৃত অবস্থান
কুমিল্লা থেকে ফেনী যাওয়ার পথে মিয়াবাজার নামে একটা ছোট বাজার কাঁকড়ি নদীর পাড়ে অবস্থিত। মিয়াবাজার এর পূর্ব দিকে কাঁকড়ি নদীর ধারে বিএসএফ ক্যাম্প। এর পাশেই কাঠালিয়া বাজার। মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে কাঠালিয়া থেকে আরেকটু ভেতরে নির্ভয় পুর এ মুক্তিযোদ্ধাদের নুতন ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন মেহবুব বীর উত্তম (প্রয়াত)।
লেখক: কলামিস্ট কর্নেল (অব.) মো. শাহ জাহান মোল্লা
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: সমীরুদ্দী ও মুনিয়ারা-একই সমতলে
বীরের খেতাব হরণ
বীর উত্তম লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দারের বিদায়
২ বছর আগে
ভারত থেকে ফিরলেন পাচারের শিকার ৬ বাংলাদেশি
ভারতে পাচারের শিকার ছয় বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশে করেছেন। এ সময় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আবেগঘন পরিবেশের তৈরি হয়।
তারা হলেন- বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলার জিয়ারুল ইসলাম,কিশোরগঞ্জ সদরের হানিফা আক্তার, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলপনা খাতুন, ঢাকার কেরানীগঞ্জের রীনা আক্তার, জামালপুরের মানিক মিয়া এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মো.শাহাজান মিয়া।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় এই ছয়জনকে বাংলাদেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।
আখাউড়ার নো ম্যান্স ল্যান্ডে তাদেরকে গ্রহণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন- ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন, প্রথম সচিব আসাদুজ্জামান ও রেজাউল হক, আখাউড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমিকা) সাইফুল ইসলাম, ওসি ইমিগ্রেশন আব্দুল হামিদ, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম এবং পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ
পরিবারের কাছে হস্তান্তরের পর ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে পাচারের শিকার ব্যক্তি ও তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে জরুরি অর্থ সহায়তা এবং কাউন্সিলিং সেবা দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান তাদের হাতে এসব সাহায্য তুলে দেন।
নথিপত্র বলছে, পাচারের শিকার ছয় বাংলাদেশিই মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশে তারা আগরতলার মর্ডান সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের অনেকেই এই হাসপাতালে চার থেকে পাঁচ বছর বা আরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাইকমিশন সবসময় তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাদের দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে তারা কীভাবে ভারতে এসেছিলেন সেটি তারা বলতে পারেননি।
আরও পড়ুন: আখাউড়া স্থলবন্দরে বাংলাদেশি যাত্রীদের দুর্ভোগ
পাচারের শিকার জিয়ারুলের আত্মীয় মোহাম্মদ রাজ্জাক জানান, ২০১৪ সালে তার স্ত্রীর বোনের স্বামী জিয়ারুল নিখোঁজ হয়ে যান। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এমন একজন মানুষ কীভাবে ভারতে পাচার হলেন সেটা নিয়ে তারাও বিস্মিত।
আলপনার চাচাত ভাই দুলাল জানান, ১০ বছর আগে হঠাৎ করে একদিন তাদের বোন নিখোঁজ হন। অনেক পরে পুলিশের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, আলপনা আগরতলায় মানসিক হাসপাতালে আছেন। কিন্তু কীভাবে সে ভারত গেল আমরা তা বুঝতে পারছি না।
হানিফা আক্তারর ছেলে হেফজ ছাত্র ইয়াছিন জানান, ৫ বছর আগে হঠাৎ করে তাদের মা হারিয়ে যান। তারা ভেবেছিলেন কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে গেছেন। পরে নানাবাড়ি করিমগঞ্জ থানায় খোঁজ করেন, কিন্তু পাননি। পরে মে মাসে পুলিশ খোঁজ নিতে বাড়িতে এলে জানতে পারেন আগরতলায় আছেন তার মা। দীর্ঘদিন পর এখন মাকে পেয়ে তারা খুশি।
আরও পড়ুন: ৬ বছর পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা রপ্তানি শুরু
৩ বছর আগে
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আম উপহার
ভারতের সীমান্তবর্তী ও বন্ধুপ্রতীম রাজ্য ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে বাংলাদেশের রংপুর জেলায় উৎপাদিত বিশেষ জাতের 'হাড়িভাঙ্গা' আম পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
সোমবার সকালে ৩০০ কেজি আম আখাউড়া সীমান্তে পৌঁছালে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে তা গ্রহন করেন রাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন৷
আরও পড়ুন: মোদির জন্য আম পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
সোমবার বিকেলে জোবায়েদ হোসেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই আম হস্তান্তর করেন৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী সানন্দচিত্তে এই উপহার গ্রহণ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহারের জন্য ধন্যবাদ দেন৷
আরও পড়ুন: মোদির মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল আসছে!
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ তিনি ত্রিপুরার প্রসিদ্ধ কুইন ভ্যারাইটি আনারস প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে পাঠানোর ঘোষণা প্রদান করেন৷
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে মোদির চিঠি: মানবজাতি শিগগিরই মহামারি কাটিয়ে উঠবে
৩ বছর আগে
সীমানা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাধা হওয়া উচিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
রাজনৈতিক সীমানা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভৌত বাধা হয়ে উঠা উচিত নয় বলে মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৩ বছর আগে
নৌপথে ত্রিপুরার সাথে বাণিজ্যে গোমতীর নাব্যতা সংকটই প্রধান বাধা
ভারতের ত্রিপুরার সাথে কুমিল্লার ব্যবসা-বাণিজ্য চলত নৌপথেই। কিন্তু স্বাধীনতার পর সীমান্ত আইনের ফলে তা আর সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে সরাসরি পণ্য আমদানি-রপ্তানির রুট হিসেবে নৌপথ পর্যবেক্ষণের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ১০টন সিমেন্ট বোঝাই কার্গো গোমতী নদীপথে পাঠানো হয় সোনামুড়ায়। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে সোনামুড়া পৌঁছাতে নৌযানটির সময় লেগেছে দুই দিন। এর মধ্যে প্রায় ১৪ স্থানে যানটি আটকা পড়ে।
৪ বছর আগে