কন্টেইনার টার্মিনাল
চট্টগ্রামে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করেছেন, চট্টগ্রামের লালদিয়ায় একটি নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ড্যানিশ শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক জায়ান্ট মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাবে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ বিবেচনা করবে।
সোমবার (২৮ আগস্ট) মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা এবং বাংলাদেশে ডেনিশ চার্জস ডি'অ্যাফেয়ার্স আন্দ্রেস বি কার্লসেন তার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে প্রধানমন্ত্রী এ আশ্বাস দেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে ৫০টিরও বেশি ডেনিশ কোম্পানি কাজ করছে এবং মায়ের্স্ক গ্রুপ এখন লালদিয়ায় এপিএম টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করতে আগ্রহী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্দর উন্নয়নে লজিস্টিক নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম ও মোংলা দুটি বন্দর ইতোমধ্যে চালু রয়েছে। সরকার পায়রা বন্দর নামে আরেকটি বন্দর নির্মাণ করছে, শিগগিরই এটি চালু হবে।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশিদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় সহায়তা করবে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত, নেপাল ও ভুটানকে পারস্পরিক সুবিধার জন্য এই বন্দরগুলো ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বন্দরে; বিশেষ করে পায়রা বন্দরে অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
জাতির উন্নয়ন ও কল্যাণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই মহান নেতা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন।
বৈঠকে মায়র্স্ক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে কনটেইনার শিপিং ও লজিস্টিক সাপোর্টের ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রেস সচিব জানান, মায়ের্স্ক উগলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে প্রতিফলিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বাংলাদেশে বন্দর ও লজিস্টিক সহায়তার উন্নয়নে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, এ খাতে অনেক সুযোগ রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে মায়ের্স্ক গ্রুপের সিইও বলেছেন, এইচঅ্যান্ডএম, এমঅ্যান্ডএস, ওয়ালমার্ট এবং অন্যান্য বড় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে আরও আরএমজি পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, সহযোগিতার বৈচিত্র্যের অনেক সুযোগ রয়েছে। কারণ ডেনিশ সরকার লজিস্টিক নীতিতে অনেক বেশি সমর্থন করে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেল উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশিদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় সহায়তা করবে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার
জাপানের নিরাপত্তা সহায়তা প্রাপ্ত প্রথম ৪ দেশে থাকছে বাংলাদেশ
১ বছর আগে
জুনে চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল: বন্দর চেয়ারম্যান
চট্টগ্রামের নির্মাণাধীন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) চলতি বছরের জুনে চালু হবে এবং টার্মিনালটি চালু হলে বছরে ১৪৫ মিলিয়ন টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান। তিনি বলেন, করোনা মহামারির সংকটময় সময়ের মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর শতভাগ কাজ চালিয়ে গেছে। আমাদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তারপরও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে শতভাগ কাজ চালিয়ে যেতে বন্দর বদ্ধ পরিকর।
রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, ইতালির রাষ্ট্রদূত ও বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দ: মামলার চার্জ গঠন ১০ নভেম্বর
এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বর্তমানে বন্দরে ৫০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতা আছে। তবে এখন ৩৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার রয়েছে। অর্থাৎ বন্দরে এখন কোন কনটেইনার জট নেই।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে-টার্মিনাল ও পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল চালু হলে বন্দরের কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতার পাশাপাশি কাজের সক্ষমতা আরও বাড়বে।
সভায় ইতালির রাষ্ট্রদূত এইচ ই এনরিকো নানজিয়াটা বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জনপ্রিয়তা রয়েছে। চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে জাহাজ চালু হয়েছে, এটা দু’দেশেরই বাণিজ্যিক প্রসারতার বড় সুযোগ। আমি মনে করি বাণিজ্যের পাশাপাশি দু’দেশের সুসম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
আরও পড়ুন: ১৫ কোটি টাকার কোকেনসহ চট্টগ্রামে যুবক আটক
বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচ ই চার্লস স্টুয়ার্ড হুইটলে বলেন, প্রথমবারের মত চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে পোশাক পণ্য নিয়ে জাহাজ চলাচল করবে, এর মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি হবে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রশংসা রয়েছে। করোনার কারণে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, পোশাক খাতে আমদানি ও রপ্তানিকারক সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনীতির উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক খাতের অগ্রগতিতে বিজিএমইএ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কাজের মান, নকশাসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের তৈরি পোশাকের চাহিদা রয়েছে। এটি ধরে রাখতেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশিয় জিডিপি বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: পণ্য পরিবহন ধর্মঘট: চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর প্রতিনিধিদলে প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক মো. এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, এএম শফিউল করিম (খোকন), মো. হাসান (জ্যাকি), এম এহসানুল হক ও মোহাম্মদ মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার)।
এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি, বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২ বছর আগে