এনসিটিবি
পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি ও ভুল: এনসিটিবি চেয়ারম্যানকে ফের তলব
মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের (৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত) পাঠ্যপুস্তকে ভুল ও ইতিহাস বিকৃতি থাকায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনটিসিবি) চেয়ারম্যান ও এক সদস্য (কারিকুলাম)কে আগামী ২৯ নভেম্বর স্বশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আলী মুস্তফা খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাঈনুল হাসান।
পরে অ্যাডভোকেট আলী মুস্তফা খান বলেন, গত বছর তারা হাজির হয়ে আদালতকে জানান, ২০২২ সালের শিক্ষাবর্ষের বইতে আর এমন ভুল থাকবে না। সংশোধন করে দেবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একই ভুল এখনও রয়েছে। এ কারণে ফের তাদেরকে তলব করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার তাদেরকে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ ২৮ নভেম্বর
জানা যায়, গত বছর পাঠ্যবইতে ভুল ও বিকৃতি তুলে ধরে রিট আবেদনটি দায়ের করেন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা মো. আলমগীর আলম। রিট আবেদনে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ে অন্তত পাঁচশ ভুল ও ইতিহাস বিকৃতি তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, ভুলে ভরা মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই। একই সঙ্গে করা হয়েছে ইতিহাস বিকৃতিও। এছাড়া সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক-এমন অনেক বিষয় পাঠ্য বইগুলোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের পাঁচ শতাধিক ভুল ও বিকৃতির তথ্য সামনে এসেছে। মাধ্যমিক স্তরের নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা’ বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘মুজিব নগর সরকারের রাষ্ট্রপতি’ বলা হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলা হয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি’। আবার জাতীয় সংগীতও লেখা হয়েছে ভুল। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে বঙ্গভবনকে লেখা হয়েছে প্রেসিডেন্ট ভবন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যকাল পাঁচ বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ সংবিধানের কোথাও আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যকালের কথা উল্লেখ নেই।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর পাঠ্যপুস্তকে থাকা এসব ভুল ও ইতিহাস বিকৃতির ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান এবং বোর্ডের একজন সদস্য (কারিকুলাম)কে তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে নিয়ে বিকৃতি ও ভুলে ভরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ের দায়সারা ও দায়িত্বহীন প্রকাশনা কেন অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে এবং ওইসব ভুল ও বিকৃতি সংশোধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। শিক্ষা সচিব, ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ডের চেয়ারম্যান, সদস্য (কারিকুলাম), সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের জবাব দিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: ১৮ মিলিয়নের শিক্ষা উদ্যোগ চালু করল বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র
চবির মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে ফটকে তালা লাগিয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
১ বছর আগে
শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে: দীপু মনি
শিক্ষার্থীদের আগের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘আগের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়তো এক শিক্ষাবর্ষে সব ঘাটতি পূরণ সম্ভব না। আশা করছি এই শিক্ষাবর্ষ এবং আগামী শিক্ষাবর্ষ মিলিয়ে যেখানে যত ঘাটতি সব পূরণ করা সম্ভব হবে।’
বুধবার সকালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের আগে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী বছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন: শিক্ষামন্ত্রী
এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকের ক্লাসও আজ শুরু হয়েছে। মাধ্যমিকের ক্লাস আগেই শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারব।
তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী এইচএসসি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাবে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কথা বলব, তারা যাতে শুরুর দিকের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণে কিছু এসেসমেন্ট করিয়ে নেয়।
পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি বইগুলো ভালো হবে। চেষ্টা করা হয়েছে বইগুলো ভুলত্রুটি মুক্ত রাখতে। তবে একবারেই তো ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। আমাদের রিভিউ কমিটি আছে। তারা আবার রিভিউ করবে। আগামী দিনে আমাদের পাঠ্যপুস্তক আরও ভালো হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চাই, যেখানে তারা আনন্দের সঙ্গে শিখবে। শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জন করবে, মূল্যবোধ নিয়ে বড় হবে। সেই জায়গা থেকে বইয়ের বড় ভূমিকা আছে।
আরও পড়ুন: আমরা আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না: শিক্ষামন্ত্রী
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, এটা ঠিক যে সাত কলেজে আগে কিছু সমস্যা ছিল, যেটা খুব-ই স্বাভাবিক। যখন থেকে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়, তখন থেকেই তাদের মানের ভিন্নতা আসে, তাদের পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম ভিন্ন মানে করতে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীর চেয়ে কয়েকগুন শিক্ষার্থী এই সাত কলেজে। এটা দুই দিক থেকে সমন্বয়ের ব্যাপার রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ধীরে ধীরে তারা এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠছে। আমরাও সাত কলেজের সঙ্গে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা সমন্বয় করছে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে আছি। সে কারণেই সেশনজট এখন অনেকটাই কমে এসেছে। আশা করি সেশনজট সমস্যা আর থাকবে না।পরীক্ষার ফলাফলগুলো যথাসময়ে দিতে তারা উদ্যোগ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অধিভুক্ত কলেজগুলোকে যেভাবে দেখা দরকার, সাত কলেজকেও সেভাবেই দেখবে। কাজেই আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করা এটা কোনো চিকিৎসা কিংবা সমাধান নয়। এটাকে এই মুহূর্তে আমি কোনো যৌক্তিক দাবি বলে ভাবছি না। সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানে উন্নত হচ্ছে, এটিই আমাদের জন্য যথার্থ মনে করি।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনও করেছে তারা।
আরও পড়ুন: ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের পরীক্ষা চলবে
২ বছর আগে
আগামী বছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন: শিক্ষামন্ত্রী
আগামী বছর থেকে দেশের সকল সরকারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শনিবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নতুন কারিকুলাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এখনই সাপ্তাহিক দুইদিন ছুটি আছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে কোথাও কোথাও এখন দুইদিন আছে। আমরা যখন কারিকুলামের রূপরেখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম তখনই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় দুইদিন ছুটি করতে চাই।’
আরও পড়ুন: ২২ ফেব্রুয়ারি খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: শিক্ষামন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী পরে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও এ পরিকল্পনায় যুক্ত করেছেন বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৩ সাল থেকে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুদিন করে। পাশাপাশি নতুন কারিকুলামে যুক্ত হওয়া ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এখন থেকেই সপ্তাহে দুদিন ছুটি পাবে।
তিনি বলেন, আজ নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই উদ্বোধন করা হলো। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ নতুনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে, সে কারণে নানা ধরনের ভুল-ভ্রান্তি চিহ্নিত হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, নতুন কারিকুলাম পাইলটিং শুরু হলে প্রতি সপ্তাহে আমরা ফিডব্যাক পাবো। সেসব ফিডব্যাক পেলে বোঝা যাবে আমাদের প্রচেষ্টা কতটুকু সফল। আশা করি, শিক্ষার্থীরা এসব বই হাতে পেলে আনন্দ নিয়ে পড়ালেখা করবে।
আরও পড়ুন: কওমি মাদ্রাসাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন: শিক্ষামন্ত্রী
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কারিগরি শিক্ষা শুরুর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা খাতে বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। কারণ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কারিগরি করার জন্য ওয়ার্কশপ, ল্যাবরেটরি, সরঞ্জামের মতো অবকাঠামোগত বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৬০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কারিগরি শিক্ষা চালু করা হয়েছে। এটি পর্যায়ক্রমে করা প্রয়োজন হবে না একবারে কারণ আমরা নতুন পাঠ্যক্রমে জীবন ও জীবিকার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছি।
২ বছর আগে