শাহজালাল
দেশের এভিয়েশন সেক্টরে রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন শনিবার
দেশের এভিয়েশন সেক্টরে রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহুল প্রত্যাশিত তৃতীয় টার্মিনাল শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে উদ্বোধন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। এটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গৃহীত সমস্ত ‘মেগা প্রজেক্টের’ মধ্যে অন্যতম আলোচিত।
উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে বিমানবন্দরে চলছে মহড়া।
উদ্বোধনের দিন রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করে ঢাকা ত্যাগ করবে। সেই ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংও করবে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সহযোগিতায় উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি৩৭১ ফ্লাইটটি ইতোমধ্যে টার্মিনাল থেকে দু'বার উড্ডয়ন করেছে। যদিও সেখানে ইমিগ্রেশন ও অন্যান্য কাগজপত্রের কাজ সম্পন্ন হয়নি।
উদ্বোধনের আগে ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় টার্মিনাল-৩ এর নির্মাণকাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
মূল টার্মিনাল ছাড়াও আমদানি-রপ্তানি সুবিধা সম্বলিত কার্গো কমপ্লেক্সের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, কার্গো কমপ্লেক্সটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবারের সফট ওপেনিং- এর জন্য বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আমাদের লক্ষ্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে টার্মিনালটি যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি চালু করা।
তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ এগিয়ে চলছে এবং আমরা নিশ্চিত যে নির্ধারিত সময়সীমার আগে টার্মিনালটি চালু হবে।
এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম ইউএনবিকে বলেন, টার্মিনাল-৩ সফট ওপেনিংয়ের জন্য জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
টার্মিনাল-৩ এর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এর জন্য নতুন সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কর্তব্যরত কর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের ইউনিফর্ম সরবরাহ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন মহড়া চালিয়েছে এয়ারলাইন্সটি।
টার্মিনাল ৩ একটি অত্যাধুনিক ব্যবস্থায় যাত্রীদের অভিজ্ঞতা এবং পছন্দের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এটি ৩৭টি বিমান পার্কিং স্পেস দিয়ে শুরু হয়, যেখানে ইতোমধ্যে কিছু এয়ারলাইন্স দেখা গেছে। এর আগে সেগুলোকে বাংলাদেশে ফ্লাইট চালু করতে দেখা যায়নি।
২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ (যার মধ্যে ১২টি অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা) এবং ১৫টি সেলফ-সার্ভিসসহ ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার ঢাকা ছেড়ে যাওয়া বা উড়ে যাওয়া যে কোনো ব্যক্তির জন্য একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা।
নিচতলায় ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, দ্বিতীয় তলায় ডিপারচার লাউঞ্জ ও বোর্ডিং ব্রিজ এবং বিস্তৃত শুল্কমুক্ত দোকান ও এক্সিট লাউঞ্জ থাকবে।
আরও পড়ুন: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল
টার্মিনাল ৩ সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে বার্ষিক ১ দশমিক ২০ কোটি (১২ মিলিয়ন) যাত্রীকে সেবা দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। বর্তমানে বিমানবন্দরটি বছরে ৮০ লাখ (৮ মিলিয়ন) যাত্রীকে সেবা দিতে সক্ষম।
একটি বহুতল গাড়ি পার্কিং সুবিধা, কাস্টমস হল, ভিআইপি এবং ভিভিআইপি যাত্রী এলাকা এবং একটি ট্রানজিট যাত্রী লাউঞ্জও টার্মিনালের অংশ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি কর্পোরেশন (প্রাইভেট) লিমিটেড সিঙ্গাপুরের রোহানি বাহারিনের নকশায় নির্মিত তিনতলা টার্মিনালের ফ্লোর স্পেস হবে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। বাহারিনের সিভিতে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের প্রশংসিত তৃতীয় টার্মিনাল এবং আহমেদাবাদের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে একটি করিডোর এবং ১ হাজার ৩৫০ টি পার্কিং স্পেস সহ মাল্টি লেভেল কার পার্কিং বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে।
যাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন টার্মিনালে অটোমেটেড পাসপোর্ট কন্ট্রোল বা ই-গেট চালু করা হবে।
যাত্রীরা ই-গেটের মাধ্যমে নিজেই ইমিগ্রেশন করতে পারেন বা ৫৬টি প্রস্থান ইমিগ্রেশন কাউন্টারের মধ্যে যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন।
একটি আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং উন্নত নিরাপত্তা স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করবে।
টার্মিনালে মুভি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট, এয়ারলাইন লাউঞ্জ এবং বিশ্বমানের শুল্কমুক্ত দোকানও থাকবে।
ওয়াই-ফাই, মোবাইল চার্জিং, প্রার্থনার জায়গা এবং একটি মিটার্স এবং গ্রিটার প্লাজার মতো সুবিধাগুলো ভালো পরিমাপের জন্য স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া মায়েদের জন্য ব্রেস্টফিডিং বুথ, ডায়াপার চেঞ্জিং এলাকা, পারিবারিক বাথরুমসহ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাচ্চাদের একটি ডেডিকেটেড খেলার জায়গা থাকবে।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল
চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বিগত ২০২০ সালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার ৪৭১ দিনের মধ্যে সফট ওপেনিং করার কথা ছিল। আজ (২ অক্টোবর) চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার ২৪১ দিন। আগামী ৭ অক্টোবর সফট ওপেনিং হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: বিমান সিইও
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন সফট ওপেনিং এ উপস্থিত থাকবেন। নির্ধারিত সময়ের আগে সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে তৃতীয় টার্মিনালের। সফট ওপেনিংয়ের অনুষ্ঠান তৃতীয় টার্মিনালের ভেতরে অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশের মানুষ যেন উদ্বোধনের দিন গণমাধ্যমের মাধ্যমে এই টার্মিনাল দেখতে পারেন, সেজন্য আমরা ভেতরে উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি।
তৃতীয় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি নিয়ে এম মফিদুর রহমান বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল সফট ওপেনিংয়ের আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করা। বর্তমানে এখন প্রায় ৮৮ শতাংশের ওপরে অর্থাৎ ৮৯ শতাংশের কাছাকাছি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি ওপেনিংয়ের আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে যাত্রীদের জন্য টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু (ফুল ফাংশনাল) করার। তবে আমাদের কাজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক আগে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। নির্ধারিত সময়ের আগে যাত্রীদের জন্য টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হবে বলে আশা করছি।
তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত জনবল আছে কি না- প্রশ্ন করা হলে মফিদুর রহমান জানান, জনবলের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। এ ছাড়া আমাদের এখন যারা আছেন তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নতুন টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে সেবার মান বাড়বে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই তৃতীয় টার্মিনাল করা হয়েছে যাত্রীসেবার মান উন্নয়নের জন্য। এভিয়েশন হাব হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এই তৃতীয় টার্মিনাল করা হয়েছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও জানান, যাত্রী সেবা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশি একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে বিদেশি সংস্থা কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থাকবে আমাদের হাতে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
তিনি বলেন, বিদেশি সংস্থাকে বলে দেওয়া হবে যেন যাত্রী সেবার মান সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর অথবা সমমনা বিমানবন্দরগুলোর মতো হয়। যাত্রীসেবার মান সুনিশ্চিত করতে পারবে। এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরে আমরা বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করব।
এ ছাড়া আমাদের দেশীয় স্টেকহোল্ডার যারা রয়েছে তাদেরও বলা হয়েছে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। নতুন টার্মিনালে যাদের যতটুকু প্রয়োজন ততটুক অনুযায়ী অফিসের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে।
নতুন তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রস্তুত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, এটা কোনো একক কাজ না। আমরা সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা করব, দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরের মতো।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণে আধুনিকতা নিয়ে এসেছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ।
এ ছাড়া টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ৪৪ শতাংশ সম্পন্ন: প্রতিমন্ত্রী
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে এবং এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হয়েছে বলে জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: অসুস্থ সেই পাইলটের চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস বিমান প্রতিমন্ত্রীর
তিনি জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা যাবে। এছাড়া থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিনটি টার্মিনাল দিয়ে বছরে ২২ মিলিয়ন যাত্রীকে সেবা দিতে পারবে। বিদ্যমান অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর হওয়ায় তখন যাত্রীরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন।
মাহবুব আলী বলেন, বিমানবন্দরে যাত্রীরা যাতে কোন হয়রানির শিকার না হন, সেটা আমরা খেয়াল রাখছি। মনিটরিং বৃদ্ধি করায় লাগেজ ডেলিভারিতেও আগের থেকে সময় অনেক কম লাগছে। যেখানে প্রয়োজন সেখানেই অতিরিক্ত জনবল দেয়া হয়েছে। আশা করছি যাত্রীরা সুন্দর ব্যবহার পাবেন।যখন দেখবো সব ঠিকঠাক হচ্ছে, তখন বুঝবো আমাদের কর্মকাণ্ড স্বার্থক।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন এয়ারপোর্টে যে সেবা দেয়া হয়, সেই ধরনের আন্তর্জাতিক সেবা যাতে দেয়া হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুকেশ কুমার সরকার, মহিদুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরুর প্রস্তুতি আছে: বিমান প্রতিমন্ত্রী
শিগগিরই নিউইয়র্কে বিমানের ফ্লাইট চালু করা হবে: বিমান প্রতিমন্ত্রী
শাহজালালে মশা নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশা নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে করা এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজিবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভির আহমেদ।
পরে তানভির আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ২০১৯ সালের ১২ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণ জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশা’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ওই রিটে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত। আদালত আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানকে একটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেছেন।
আরও পড়ুন: জাপানি মায়ের কাছে থাকবে দুই শিশু, পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তির নির্দেশ
২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশা নিধনে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠান আইনজীবী মো. তানভির আহমেদ। ওইসময় আইনজীবী তানভির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমার দাদিকে নিয়ে টিকিট কেটে দর্শনার্থী হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করি। ওইদিন রাত ১০টার দিকে সেখানে অবস্থানকালে অনেক দেশি-বিদেশি বিমানযাত্রীকে মশার আক্রমণের শিকার হতে দেখি। শাহজালাল বিমানবন্দর দেশের সুনামকে প্রতিনিধিত্ব করে। অথচ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতায় বিমানবন্দরের ভেতরে মশার তীব্রতা বেড়েই চলছে। এরপর মশা নিধনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। নোটিশ পাওয়ার নির্দিষ্ট তিনদিনের মধ্যে বিমানবন্দরের ভেতর মশা নিধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়। কিন্তু নোটিশের জবাব না পেয়ে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করি। রিট আবেদনটির প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারি করেন।
রুলে শাহজালাল বিমানবন্দরে মশা নিধনে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি মশা নিধনে কেন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিমানবন্দর সংলগ্ন ওয়ার্ড কমিশনারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বর থেকে পালানো হত্যা মামলার আসামি ফের গ্রেপ্তার
দেশের অধস্তন আদালত তদারকিতে ৮ বিচারপতির মনিটরিং কমিটি