রক্ত
রক্তের গ্রুপ: কে কাকে রক্ত দিতে পারবে?
নিরাপদ রক্তদানের জন্য দাতা-গ্রহীতাসহ রক্তদানের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে যে বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয়, তা হচ্ছে রক্তের শ্রেণীবিভাগ। রক্তের ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের মধ্যে রক্তের আদান-প্রদানের সামঞ্জস্যতার ওপর নির্ভর করে জরুরি চিকিৎসার অগ্রীম প্রস্তুতি। সঠিক সময়ে সঠিক রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে বেঁচে যেতে পারে একটি জীবন। আর এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সাধুবাদ জানিয়েই প্রতিবছর ১৪ জুন পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। এই উপলক্ষটি নিরাপদ রক্তের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায় এবং উদ্বুদ্ধ করে এই মহান কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে। চলুন, বিভিন্ন ধরনের রক্তের গ্রুপের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের মধ্যকার সামঞ্জস্যতা সম্বন্ধে সম্যক ধারণা নেওয়া যাক।
বিভিন্ন ধরনের রক্তের গ্রুপ
রক্তের শ্রেণীবিন্যাসের নেপথ্যে রয়েছে রক্তে বিদ্যমান দুটি উপাদান।
১. লোহিত রক্তকণিকার (আরবিসি) পৃষ্ঠে থাকা প্রোটিন অণু, যার নাম অ্যান্টিজেন। অ্যান্টিজেন মুলত 'এ', 'বি', এবং ‘রেসাস (আরএইচ) ডি’ – এই ৩ ধরনের হয়ে থাকে।
২. প্লাজমাতে অবস্থিত বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন, যেগুলো অ্যান্টিবডি নামে পরিচিত। অ্যান্টিবডি ‘অ্যান্টি-এ’ এবং ‘অ্যান্টি-বি’ – এই ২ শ্রেণীর হয়ে থাকে।
এই উপাদানগুলো মা-বাবার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে সন্তানের দেহে আসে। রক্তের শ্রেণীবিন্যাসের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত দুটি ব্যবস্থা হচ্ছে- ‘এবিও’ এবং ‘রেসাস (আরএইচ) ফ্যাক্টর’।
আরও পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
এবিও সিস্টেমে রক্তের ধরন ৪ প্রকার- 'এ', 'বি', 'এবি', এবং 'ও'। রক্তে অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডির উপস্থিতির উপর নির্ভর করে এগুলোর ভিন্নতা হয়।
আরএইচ সিস্টেমে রক্তে 'আরএইচডি'র উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে এবিওর প্রত্যেকটি গ্রুপ পজিটিভ বা নেগেটিভ হয়ে থাকে। এভাবে আরএইচ সিস্টেম অনুসারে গ্রুপ হয় মোট ৮টি। চলুন, এবার এই গ্রুপগুলোর বিস্তারিত জানা যাক।
এ+
লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠে অ্যান্টিজেন 'এ' এবং 'আরএইচডি’র উপস্থিতির মাধ্যমে গ্রুপ 'এ+' চিহ্নিত করা হয়। এই গ্রুপের রক্তের প্লাজমাতে অ্যান্টি-বি অ্যান্টিবডি থাকে। এই অ্যান্টিবডিগুলো 'বি' অ্যান্টিজেনযুক্ত লোহিত রক্ত কোষকে আক্রমণ করে। 'আরএইচডি'র উপস্থিতির অর্থ হলো এই রক্ত 'এ-' রক্তের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থা এবং রক্তদানের সময় এই দুই মেরুর রক্ত শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।
এ-
এই গ্রুপেও লোহিত রক্তকণিকায় অ্যান্টিজেন 'এ' উপস্থিত থাকে। তবে 'আরএইচডি'র অভাবে গ্রুপটি 'আরএইচডি-' হিসেবে প্রতীয়মান হয়। 'এ+' রক্তের মতো 'এ-' রক্তের প্লাজমাতেও অ্যান্টি-বি অ্যান্টিবডি থাকে। ফলে এটি 'বি' গ্রুপের রক্তের বিরুদ্ধে নেতিবাচক অবস্থান নেয়। অন্যদিকে, 'আরএইচডি'র অনুপস্থিতি গর্ভাবস্থায় আরএইচ অসামঞ্জস্যতার মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে একজন ‘আরএইচডি-’ মায়ের রক্ত একটি ‘আরএইচডি+’ ভ্রূণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এতে করে নবজাতকের হেমোলাইটিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
বি+
বি অ্যান্টিজেন এবং 'আরএইচডি' সমন্বিত লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠ রক্তকে 'বি+' গ্রুপ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে। এই ধরনের রক্তের প্লাজমাতে থাকে অ্যান্টি-এ অ্যান্টিবডি, যা অ্যান্টিজেন 'এ' সমৃদ্ধ লোহিত রক্তকণিকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। 'বি+' রক্তের 'আরএইচডি' 'বি-' রক্তের তুলনায় ভিন্ন প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে পারে।
বি-
এই গ্রুপটি রক্তের এমন ধরনকে প্রতিনিধিত্ব করে, যার লোহিত রক্ত কণিকায় অ্যান্টিজেন 'বি' থাকে কিন্তু 'আরএইচডি' থাকে না। এই রক্তের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এর প্লাজমায় অ্যান্টি-এ অ্যান্টিবডি বিদ্যমান। আরএইচ ফ্যাক্টর না থাকার ফলে 'বি-' রক্তের অধিকারী ব্যক্তিরা রক্ত সঞ্চালন এবং গর্ভাবস্থায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। কেননা ‘আরএইচডি+’ ভ্রূণ বহনকারী একজন 'আরএইচডি-' মায়ের রক্ত আরএইচ ফ্যাক্টরের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে।
ও+
এই গ্রুপের রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠে 'এ' এবং 'বি' কোনো অ্যান্টিজেনই থাকে না, কিন্তু 'আরএইচডি' থাকে। 'ও+' রক্তের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর প্লাজমায় অ্যান্টি-এ এবং অ্যান্টি-বি দুই অ্যান্টিবডিই থাকে। এতে করে এই রক্ত ‘এ’ এবং 'বি' উভয় অ্যান্টিজেন থাকা লোহিত রক্তকণিকাকে আক্রমণ করে। 'এ' এবং 'বি' অ্যান্টিজেনের অনুপস্থিতির কারণে অন্যান্য রক্তের সঙ্গে এর ব্যাপক সামঞ্জস্যতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
ও-
এটি এমন একটি গ্রুপ যার রক্তের লোহিত রক্তকণিকায় অ্যান্টিজেনে 'এ', 'বি', এবং 'আরএইচডি' কোনোটাই থাকে না। 'ও+' এর মতো এই রক্তেও প্লাজমা অ্যান্টি-এ এবং অ্যান্টি-বি অ্যান্টিবডিতে সমৃদ্ধ। এই সমস্ত অ্যান্টিজেনের অনুপস্থিতির কারণে 'ও-' রক্ত সার্বজনীন দাতার গ্রুপ হিসেবে বিবেচিত। এটি অ্যান্টিজেন সংক্রান্ত কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াই যে কোনো রক্তের রোগীদের দেওয়া যেতে পারে।
এবি+
যে রক্তের লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠে অ্যান্টিজেন 'এ' এবং 'বি' এর পাশাপাশি আরএইচ ফ্যাক্টরও থাকে, সে রক্তের গ্রুপের নাম 'এবি+'। এ ধরনের রক্তের প্লাজমায় অ্যান্টি-এ বা অ্যান্টি-বি কোনো অ্যান্টিবডিই থাকে না। এই বৈশিষ্ট্যটি 'এবি+' রক্তকে সার্বজনীন গ্রহীতা গ্রুপ হিসেবে প্রতীয়মান করেছে। 'এ' এবং 'বি' উভয় অ্যান্টিজেন এবং আরএইচ ফ্যাক্টরের উপস্থিতির কারণে রক্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এটি সর্বাঙ্গীনভাবে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ গ্রুপ।
এবি-
লোহিত রক্ত কণিকায় 'আরএইচডি' নেই অথচ 'এ' এবং 'বি' উভয় অ্যান্টিজেনই বিদ্যমান, এমন রক্তকে চিহ্নিত করা হয় 'এবি-' হিসেবে। 'এবি+' এর মতো এই রক্তের প্লাজমাও অ্যান্টি-এ বা অ্যান্টি-বি অ্যান্টিবডি-বিহীন। 'এবি-' রক্তের অধিকারীদের আরএইচ সংবেদনশীলতা রোধ করতে অবশ্যই আরএইচ পজিটিভ রক্ত গ্রহণ থেকে দূরে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
রক্তের গ্রুপগুলোর মধ্যে কে কাকে রক্ত দিতে পারবে
যে রক্তগুলো পারস্পরিক সহাবস্থানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, অনাকাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরী। চলুন, রক্তের বিভিন্ন গ্রুপগুলোর মধ্যকার রক্ত সঞ্চালনের সামঞ্জস্যতা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
টেবিল: রক্তের বিভিন্ন গ্রুপের সামঞ্জস্যতা সারণী
রক্তের গ্রুপ
গ্রহীতা গ্রুপ
দাতা গ্রুপ
এ+
এ+, এবি+
এ+, এ-, ও+, ও-
এ-
এ+, এ-, এবি+, এবি-
এ-, ও-
বি+
বি+, এবি+
বি+, বি-, ও+, ও-
বি-
বি+, বি-, এবি+, এবি-
বি-, ও-
ও+
এ+, বি+, এবি+, ও+
ও+, ও-
ও-
সব গ্রুপ
ও-
এবি+
এবি+
সব গ্রুপ
এবি-
এবি+, এবি-
এবি-, এ-, বি-, ও-
আরও পড়ুন: নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
'এ+' গ্রুপের ব্যক্তিরা 'আরএইচডি' নির্বিশেষে 'এ' বা 'ও' গ্রুপ থেকে রক্ত গ্রহণ করতে পারবে, কিন্তু দিতে পারবে শুধুমাত্র 'এ+' এবং 'এবি+' গ্রুপের ব্যক্তিদের। 'এ-' গ্রুপ শুধু 'এ-' এবং 'ও-' গ্রুপ থেকে রক্ত নিতে পারবে, তবে দান করতে পারবে 'আরএইচডি' নির্বিশেষে 'এ' এবং 'এবি' উভয় গ্রুপকে।
'বি+' এর দাতা হিসেবে করতে পারে 'বি+', 'বি-', 'ও+', এবং 'ও-' গ্রুপ। অন্যদিকে গ্রহীতা হিসেবে কাজ করতে পারবে শুধু 'বি+' এবং 'এবি+' গ্রুপ। 'বি-' গ্রুপ 'বি-' এবং 'ও-' গ্রুপের রক্ত নিতে পারবে, আর রক্ত দিতে পারবে 'বি+', 'বি-', 'এবি+', এবং 'এবি-' গ্রুপগুলোকে।
'ও+' রক্তের গ্রহীতারা হলো যেকোনো আরএইচ+ গ্রুপ, তবে দাতা গ্রুপ হলো শুধু 'ও+' এবং 'ও-'। 'ও-' রক্ত গ্রহীতা হিসেবে শুধু 'ও-' রক্ত নিতে পারে, কিন্তু সার্বজনীন দাতা হিসেবে রক্ত দিতে পারে সমস্ত গ্রুপকে। অপরদিকে, সার্বজনীন গ্রহীতা হিসেবে 'এবি+' গ্রুপ সব ধরনের রক্ত গ্রহণ করতে পারে, কিন্তু দাতা হিসেবে শুধু 'এবি+' গ্রুপভুক্ত ব্যক্তিদেরকেই রক্ত দিতে পারে। 'এবি-' রক্তের দাতা গ্রুপ হলো 'এবি-', 'এ-', 'বি-', এবং 'ও-' এবং গ্রহীতা গ্রুপ 'এবি+' এবং 'এবি-'।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
শেষাংশ
সর্বপরি, লোহিত রক্তকণিকায় অ্যান্টিজেন 'এ' এবং 'বি' থাকা এবং না থাকার ভিত্তিতে রক্তের গ্রুপ যথাক্রমে 'এ' এবং 'বি' হিসেবে চিহ্নিত হয়। দুটো অ্যান্টিজেনই থাকলে 'এবি' গ্রুপ এবং দুটোর কোনটিই না থাকলে নির্ধারিত হয় গ্রুপ 'ও' হিসেবে।
পাশাপাশি আরএইচ ফ্যাক্টরের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি সংশ্লিষ্ট গ্রুপের সঙ্গে যথাক্রমে পজিটিভ এবং নেগেটিভি মার্ক যুক্ত করে। ৮টি গ্রুপের প্রত্যেকটি নিদেনপক্ষে নিজ গ্রুপের সঙ্গে রক্তের আদান-প্রদান করতে সক্ষম। তন্মধ্যে প্রতিটি ‘আরএইচ+’ গ্রুপকে রক্ত দিতে পারে বিধায় 'ও+' রক্তের চাহিদা থাকে সর্বাধিকা। উপরন্তু, সর্বদাতা গ্রুপ হিসেবে পরিচিত 'ও-' এবং সর্বগ্রহীতা 'এবি+'।
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
৬ মাস আগে
বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান
বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত রক্তদাতা-রক্তগ্রহীতা মিলনমেলায় থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজকর্মীগণ।
বুধবার (১৪ জুন) বিকালে রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগী ও দুই শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতার ব্যতিক্রমী এক মিলনমেলায় এ আহ্বান জানানো হয়।
এসময় থ্যালাসেমিয়া রোধে বাহক-বাহক বিয়ে বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোধে রক্ত পরীক্ষার বিকল্প নেই। পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ার বাহক নির্ণয় ও তালিকারণ জরুরি। বিশেষ করে বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময় রক্ত পরীক্ষার সনদ বাধ্যতামূলক করতে পারলে দেশকে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত করার ক্ষেত্রে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সফলতা আসবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএসএমএমইউ-এর মেডিসিন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে থ্যালাসেমিয়া রোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরবেন বলে আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: ১৪ জুন পালিত হবে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস
স্বেচ্ছা রক্তদাতারা নীরবে তাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রক্ত দান করে যান। রক্তদানের সময় তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানেন না, তার রক্ত কোন মানুষটির শরীরে বইবে। একইভাবে রোগীদের কাছেও অচেনা থেকে যান রক্তদাতারা। দেশে প্রথমবার রক্তদাতা-গ্রহীতার এ মেলবন্ধনে রক্তগ্রহীতারা স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। আবেগাপ্লুত হয়ে সজল নয়নে ধন্যবাদ জানান।
রক্তদাতারাও নিজেদের দায়িত্ববোধ আর ভালো লাগার কথা জানিয়ে বলেন, রক্তদানের মাধ্যমে এ সেবা দিতে পেরে তারা গর্বিত ও আনন্দিত।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের উপদেষ্টা সৈয়দ দীদার বখত।
তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে বলেন, বিয়ের আগে রক্তপরীক্ষার কারণে তারা থ্যালাসেমিয়াকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছে।
অদূর ভবিষ্যতে একইভাবে বাংলাদেশও একদিন থ্যালাসেমিয়ামুক্ত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অপর বিশেষ অতিথি হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. এ কে মো. মোস্তফা আবেদীন তার বক্তব্যে দেশের সকল থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় এবং তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান। এসময় ৪১ বারের স্বেচ্ছা রক্তদাতা উম্মে সালমা মৌসুমী ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রক্তগ্রহীতা মায়িশা বিনতে শাহাদৎ তাদের অনুভূতি ও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারী।
আরও পড়ুন: সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করবে
উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
১ বছর আগে
বাংলাদেশ-ভারতের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের ঐতিহাসিক অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না এবং তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
বুধবার সকালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় ‘দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ওয়ান ইলেভেনের কুশিলবরা আবার সরব হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
এসময় তথ্যমন্ত্রী ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক এখন অনন্য উচ্চতায়' বলে উল্লেখ করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন আয়োজিত এ উৎসব উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে। এ সময় ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী সম্মানীয় অতিথি, বাংলাদেশের মমতাজ বেগম এমপি, সাইমুম সারওয়ার কমল এমপি, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, ভারতে বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার নুরাল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সফরসঙ্গী চিত্রতারকা ফেরদৌস, অপু বিশ্বাস ও সংগীতশিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুযোগ পেলে হাজার জায়গায় বোমা ফাটাবে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির হুমকি শুনে মানুষ হাস্যরস করে: তথ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে