জেলেনস্কি
ওভালকাণ্ড: পুতিনের পৌষমাস, জেলেনস্কির সর্বনাশ!
কারো পৌষমাস, কারো সর্বনাশ—বাংলা ভাষার অতি প্রচলিত এই প্রবাদটির অর্থ এই ভাষাভাষী মোটামুটি সবাই জানে, যার অর্থ— এক পক্ষ সমস্যায় পড়লে অন্য পক্ষের সুবিধা হওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির অপদস্ত হওয়ার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের স্বার্থ ব্যাখ্যায় এই প্রবাদটিই হয়ে উঠেছে অতি প্রাসঙ্গিক।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডায় জড়ান ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। ওই ঘটনার পর রুশ মিডিয়াগুলোকে নানাভাবে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
অবশ্য দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর ইউক্রেন নিয়ে নিজের যে অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প, তাতে এরকম কিছু যে ঘটতে চলেছে—তা অনেকটাই ছিল অনুমেয়।
জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের এই বিবাদ রাশিয়ার জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। একদিকে, এতদিন ধরে যে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনে ও সামরিক সহায়তায় ইউক্রেন দেশটির আক্রমণ প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা করে আসছিল, ইউক্রেনের মাথা ওপর থেকে সহায়তার সেই হাত সরে গিয়েছে। অন্যদিকে, খনিজ চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বাগিয়ে নিতে কিয়েভের যে আশার প্রদীপ নিভু নিভু করে হলেও জ্বলছিল, তাও নিভে গেছে দপ করে।
আরও পড়ুন: মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
তাই রাশিয়া এবং দেশটির গণমাধ্যগুলো ট্রাম্পের প্রশংসায় হয়ে উঠেছে পঞ্চমুখ, ট্রাম্পের মাধ্যমে তারাই যেন এক হাত নিয়েছে জেলেনস্কিকে!
ট্রাম্প–জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই উন্মাদের (জেলেনস্কি) মুখের ওপর একদম সত্যি কথা বলেছেন যে, কিয়েভের শাসনকাঠামো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে খেলছে।’
ট্রাম্পের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) ঠিক কাজই করেছেন। তবে এটিই যথেষ্ট নয়, কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দেওয়াও বন্ধ করতে হবে।’
ইউক্রেনের মিত্র দেশ পোল্যান্ড, ফ্রান্স ও ব্রিটেন সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফর করায় বেশ খানিকটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল মস্কো।
ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প ইউক্রেনে ইউরোপের শান্তিরক্ষীদের সহায়তা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন; এতে চিন্তা বাড়ছিল মস্কোতে। তবে শুক্রবারের ওভাল অফিসে যে কাণ্ড হলো, তাতে নিশ্চয়ই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ক্রেমলিন।
ওভাল অফিসের ঘটনার পর রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রাম পোস্টে লেখেন, ‘ট্রাম্প ও ভ্যান্স যেভাবে এই জঘন্য ব্যক্তিকে (জেলেনস্কি) আঘাত করা থেকে নিজেদের বিরত রাখলেন, সেটি সংযম প্রদর্শনের এক অলৌকিক ঘটনা।’
এ ঘটনায় ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে কিছু না বললেও রুশ প্রেসিডেন্ট যে খুশি হয়েছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র বলেছে, ‘নিঃসন্দেহে প্রেসিডেন্ট এই তামাশা উপভোগ করেছেন। তিনি এখন ইউক্রেন থেকে আরও বেশি কিছু দাবি করতে পারেন বলে বিশ্বাস করেন।’
এছাড়া ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিন ফোনালাপ করতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ওই সূত্র। ফোনালাপে (ইউক্রেনের ক্ষমতায়) জেলেনস্কির বিকল্প নিয়ে কথা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
সম্প্রতি জেলেনস্কির ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকার বৈধতা নিয়ে একই সুরে কথা বলতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে।
মূলত জেলেনস্কিকে সরিয়ে রুশ-সমর্থিত কাউকে ইউক্রেনের মসনদে বসানোর বাসনা পুতিনের নতুন নয়। বেশ আগে থেকেই তিনি এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে এসেছেন। এতদিন যুক্তরাষ্ট্রই এই ধারণার অন্যতম প্রধান বিরোধী হিসেবে ভূমিকা পালন করলেও আশ্চর্যজনকভাবে এবার পুতিনের সুরে সুর মেলাতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে শিগগিরই আলোচনার টেবিলে বসতে জেলেনস্কিকে হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প।
সে সময় জেলেনস্কিকে ‘অনির্বাচিত স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তি নিশ্চিত করতে হয় তাকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, অথবা তার দেশকে হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির বৈধতা নিয়ে ট্রাম্প আগেই যেহেতু প্রশ্ন তুলেছেন, তাই শুক্রবারের ঘটনা পুতিনকে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে অব্যশই সুবিধা দেবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য অ্যালেক্সি পুশকভ এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, হোয়াইট হাউসও এখন জেলেনস্কিকে সরিয়ে ইউক্রেনের ক্ষমতায় নতুন কাউকে বসানো নিয়ে আরও গুরুত্ব দিয়ে চিন্তাভাবনা করবে বলে তার বিশ্বাস।
তবে ট্রাম্প-জেলেনস্কি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়কেই চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে না দেখে রাশিয়াকে কৌশলের সঙ্গে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক ফিওদর লুকানভ। ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত স্বভাবের কারণে তিনি এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের ভর্ৎসনার শিকার হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অভ্যর্থনা পেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্র সহায়তার হাত সরিয়ে নিলেও ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার।
এর আগে, জেলেনস্কির প্রশংসা করে এক এক্স পোস্টে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেয়েন লিখেছিলেন, ‘আপনার এই ব্যক্তিত্ব ইউক্রেনের জনগণের সাহসিকতাকে সম্মানিত করেছে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অভ্যর্থনা ও পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন জেলেনস্কি
জেলেনস্কিকে সাহসী ও নির্ভীক থাকতে অনুপ্রেরণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি একা নন, আমরা রয়েছি আপনার পাশে।’
তবে শুধু আশ্বাস নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হওয়ায় এখন ইউরোপ কিয়েভকে ঠিক কতটা সহায়তা দেবে কিংবা ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে কি না—এর ওপর নির্ভর করছে ইউক্রেনের ভাগ্য।
অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপের হাত ধরে ইউক্রেন জয় পাবে না কি যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে ইউক্রেন জয় করবে রাশিয়া—তা-ই এখন দেখার অপেক্ষা।
১৯ দিন আগে
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্দ্বে
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে দ্রুতই আলোচনার টেবিলে বসতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হুঁশিয়ারি করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জেলেনস্কিকে ‘অনির্বাচিত স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তি নিশ্চিত করতে হয় তাকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে অথবা তার দেশকে হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে।’
দুই নেতার এই দ্বন্দ্ব ইউরোপীয়দের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু করার জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যাতে হাজার হাজার ইউক্রেনীয়কে জীবন দিতে হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘ভোটারদের মধ্যে তার (জেলেনস্কির) জনপ্রিয়তা তলানিতে চলে গেছে।’ আর বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার ছড়ানোর ভুল তথ্যের জগতেই বাস করছেন ট্রাম্প।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই কী ইউক্রেন জয়ের পথে রাশিয়া?
যদিও যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নিজস্ব বয়ানের বাইরেও এসব এসব তথ্য ছড়িয়েছে বলে দাবি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি তিন বছর ধরে এই যুদ্ধের মধ্যে আছেন, আপনার এটা বন্ধ করা উচিত...আপনার এটা শুরু করা উচিত হয়নি, আপনার উচিত ছিল একটি চুক্তিতে পৌঁছানো।’
পশ্চিম ইউক্রেনে রুশভাষীদের রক্ষায় ও ইউক্রেন যাতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে না পারে, সে জন্য ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন মার্কিন ডেমোক্র্যাটদলীয় আইনপ্রণেতারা। কয়েকজন রিপাবলিকানকেও তাতে যোগ দিতে দেখা গেছে। কংগ্রেসে দ্বিদলীয় সমর্থনেই এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প ‘রাশিয়ার বিভ্রান্তিকর তথ্যের ফাঁদে’ পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘এসব অপতথ্য দেখেছি, আমরা জানি এগুলো রাশিয়া থেকে এসেছে।’ এ সময়ে প্রকাশ্যে ট্রাম্পকে এভাবে সমালোচনার বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইলকে তিনি বলেন, ‘জেলেনস্কি ট্রাম্পের যে সমালোচনা করছেন, তা এই ঘটনায় সহায়ক হবে না। সংবাদমাধ্যমে বাজে ভাষা ব্যবহার করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন গলানোর চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি। সবাই জানেন যে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই প্রশাসনকে মোকাবিলার জন্য এটা একটি জঘন্য উপায়।’
এদিকে যেসব শর্তে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেগুলো রাশিয়ার জন্য অনেক বেশি অনুকূলে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। কিন্তু সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে ট্রাম্প বলেন, ‘একটু ভেবে দেখুন তো, একজন মাঝারি সফল কৌতুকাভিনেতা, ভলোদিমির জেলেনস্কি, এমন একটি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে বলছেন, সাড়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে বলছেন, যেটাতে জয়ী হওয়া যাবে না, কখনোই এই যুদ্ধ শুরু করা উচিত হয়নি, যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্পকে ছাড়া এই যুদ্ধের অবসানও করতে পারবে না।’
এছাড়া এই যুদ্ধঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যে সহায়তা দিয়েছে, জেলেনস্কি সেগুলোর অপব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ট্রাম্প। এরইমধ্যে যুদ্ধ বন্ধে মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা। এতে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের ডাকা হয়নি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় নেই ইউক্রেন
ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কের উচিত ছিল আগেই একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করা। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াই তার জন্য ভালো, নতুবা তিনি তার দেশকে হারাতে যাচ্ছেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে আমরা সফলভাবে আলোচনা করছি। সবাই এটা স্বীকার করবেন যে ট্রাম্প ও ট্রাম্প প্রশাসনই এটা পারে। ইউরোপ শান্তি আনতে ব্যর্থ হয়েছে, জেলেনস্কি সম্ভবত এই অপচেষ্টা অব্যাহত রাখতে চাচ্ছেন।’
৩০ দিন আগে
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে উচ্চ পদে রদবদল
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর উচ্চপদে রদবদল ঘটিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ বাহিনী কমান্ডারকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
যৌথ বাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইউরি সোডলকে বরখাস্ত করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অ্যান্ড্রি হানাটোভকে যৌথ বাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ইউক্রেনীয় স্থল বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলের অপারেশনাল কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হানাটোভ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যৌথ বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে বরখাস্ত হলেন সোডল।
আরও পড়ুন: ‘৫২ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সৈন্যকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইইউ’
২৭০ দিন আগে
রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে: জেলেনস্কি
রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে গত দুই বছরে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
রবিবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) কিয়েভ ফোরামে ‘ইউক্রেন ইয়ার-২০২৪’ -এ এই তথ্য জানান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, এই সংখ্যা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের দেওয়া অনুমানের চেয়ে অনেক কম।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। তিন লাখ বা দেড় লাখ নয়, বরং পুতিন ও তার প্রতারক চক্র যা বলছে তা মিথ্যা। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের এই প্রতিটি ক্ষতি একটি মহান ত্যাগ।’আরও পড়ুন: রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের বাজারে গোলাবর্ষণে নিহত ১৩
ইউক্রেনের এই নেতা বলেন, কতজন সেনা আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন তা তিনি প্রকাশ করবেন না। তিনি আরও বলেছিলেন যে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে ‘কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক’ নিহত হয়েছে, তবে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক কোনও পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না তারা আমাদের কতজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। আমরা জানি না।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থন দিতে ইউক্রেনে ৮০০টিরও বেশি ড্রোন পাঠাবে কানাডা
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কিয়েভ ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা নিশ্চিত করল।
তবে হতাহতের আনুষ্ঠানিক কয়েকটি পরিসংখ্যান জানিয়েছে রাশিয়া। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিকতম তথ্যে ৬ হাজারের বেশি মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছিল যে ইউক্রেনে ৩ লাখ ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে। যদি এই সংখ্যা সঠিক হয়, তাহলে যুদ্ধের আগে রাশিয়ার কাছে থাকা ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার ৮৭ শতাংশই হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাশিয়ার স্বাধীন সংবাদমাধ্যম মিডিয়াজোনা শনিবার জানিয়েছে, ২০২২ ও ২০২৩ সালে যুদ্ধে প্রায় ৭৫ হাজার রুশ পুরুষ নিহত হয়েছেন।
রাশিয়ার আরেক স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম মিডিয়াজোনা ও মেদুজা প্রকাশিত এক যৌথ তদন্তে দেখা গেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির হার কমছে না এবং মস্কো দৈনিক প্রায় ১২০ জন করে সেনাকে হারাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আজ রাতে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করবেন
৩৯০ দিন আগে
মিউনিখে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে হোটেল বায়েরিসচার হোফের সম্মেলনস্থলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শনিবার একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জার্মান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী সভেঞ্জা শুলজে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত তহবিল যোগানের বিকল্প নেই: মিউনিখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২৪ এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখ পৌঁছান।
গত মাসে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তার প্রথম সরকারি বিদেশ সফর।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র বানচাল করতে হবে: মিউনিখে সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
৩৯৮ দিন আগে
পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী সপ্তাহে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পৃথকভাবে দেখা করবেন। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গুতেরেস মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন।
পরে জাতিসংঘ জানায়, গুতেরেস ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে যাবেন।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে কিয়েভে দূতাবাস খুলবে যুক্তরাজ্য
জাতিসংঘের মুখপাত্র এরি কানেকো বলেছেন, দুই সফরেই গুতেরেস যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মানুষকে নিরাপদে নিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য ‘এখনই নেয়া যেতে পারে এমন পদক্ষেপ’ নিয়ে আলোচনা করা লক্ষ্য স্থির করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গুতেরেস ইউক্রেনে শান্তি আনতে জরুরিভাবে কী করা যেতে পারে সে বিষয়ে কথা বলার আশা করছেন।’
দুই মাস আগে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকেই যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
১০৬৪ দিন আগে
গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য ‘জন এফ কেনেডি প্রোফাইল ইন কারেজ অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত পাঁচজনের মধ্যে জেলেনস্কির নাম ঘোষণা করা হয়।
জন এফ কেনেডি লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন জেলেনস্কিকে নির্বাচিত করার বিষয়ে জানায়, তাকে নির্বাচিত করার কারণ হলো তিনি ‘তাদের দেশের জন্য জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে ইউক্রেনের জনগণের চেতনা, দেশপ্রেম ও অক্লান্ত আত্মত্যাগকে সংগঠিত করেছেন।’
পুরস্কারের জন্য মনোনীত অন্য চারজন হলেন-ওয়াইমিং-এর রিপাবলিকান ইউএস রিপাবলিকান লিজ চেনি, মিশিগান সেক্রেটারি অফ স্টেট জোসেলিন বেনসন, অ্যারিজোনা হাউসের স্পিকার রাস্টি বোয়ার্স ও জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টির নির্বাচনী কর্মী ওয়ান্ড্রিয়া ‘শায়ে’ মস। ফাউন্ডেশন বলছে, এ চার মার্কিন কর্মকর্তাকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডনবাসে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া: জেলেনস্কি
ক্যারোলিন কেনেডি ও তার ছেলে জ্যাক শ্লোসবার্গ ২২ মে বোস্টনের জন এফ কেনেডি প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে পুরস্কার বিতরণ করবেন। পুরস্কারটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিবারে পক্ষ থেকে প্রবর্তন করা হয় এবং কেনেডির ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী বই ‘প্রোফাইলস ইন কারেজ’ এর নামানুসারে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়।
ক্যারোলিন কেনেডি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের দেশ এবং বিশ্বের সামনে আজ গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা নেই। ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বকে দেখিয়েছে যে আমরা স্বাধীনতাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের সাহস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করা এবং আমাদের ভোট দেয়ার মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করা।’
আরও পড়ুন: লাভিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৭ জন নিহত: ইউক্রেন
মারিউপোলে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম প্রত্যাখান ইউক্রেনীয় সেনাদের
১০৬৫ দিন আগে
পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: জেলেনস্কি
আগামী সপ্তাহ যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে ইউক্রেনীয়দের সতর্ক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কি।
রবিবার রাতের ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে আরও বড় অভিযানে যাবে রাশিয়ান সেনারা।
এসময় রাশিয়া যুদ্ধাপরাধের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন জেলেনেস্কি।
তিনি বলেন, ‘মানুষ যখন তাদের ভুল স্বীকার করার, ক্ষমা চাওয়ার, বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নেয়ার এবং শেখার সাহসের অভাব বোধ করে, তখন তারা দানব হয়ে যায়। এবং যখন বিশ্ব এটিকে উপেক্ষা করে, তখন দানবরা সিদ্ধান্ত নেয় যে এই বিশ্বকে তাদের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। ইউক্রেন এই সব বন্ধ করবে।’
ইউক্রেনীয় নেতা বলেন, ‘সেদিন আসবে যখন তাদের সবকিছু স্বীকার করতে হবে। সত্যকে স্বীকার করুন।’
এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সাথে বৈঠক করেছেনে প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি। এসময় তিনি জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে ইউক্রেনে আরও সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানান।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এটা জেনে আনন্দিত যে সম্প্রতি জার্মান অবস্থান ইউক্রেনের পক্ষে পরিবর্তিত হয়েছে। এটিকে যৌক্তিক বলে মনে করি।’
পড়ুন: রেলস্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: কড়া জবাব চায় ইউক্রেন
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ইমরান খানের
১০৭৬ দিন আগে
রাশিয়ান সৈন্যরা পিছু হটছে: জেলেনস্কি
ইউক্রেনীয় সেনারা কিয়েভ ও চেরনিহিভের আশেপাশের অঞ্চলগুলো রুশ বাহিনী থেকে পুনরুদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, তার সেনারা রাশিয়ানদের বিনা লড়াইয়ে পিছু হটতে দিচ্ছে না। বরং তাদের গোলাবর্ষণ করছে।
জেলেনস্কি শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে তার ভিডিও ভাষণে বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল দখল করতে চায়।
আরও পড়ুন: পিছু হটা রুশ সেনারা অসংখ্য মাইন রেখে গেছে: জেলেনস্কি
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান সৈন্যদের লক্ষ্য কি? তারা ডনবাস এবং ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল দখল করতে চায়, আমাদের লক্ষ্য কি? আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের ভূমি এবং আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।’
রুশ সামরিক বাহিনীর হামলার পরও ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলকে রক্ষা করায় ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রশংসা করেন জেলেনস্কি। রুশ সেনাদের হাতে অবরুদ্ধ এই শহরটি কয়েক সপ্তাহের ভারী রাশিয়ান বোমা হামলায় কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ২ শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি
জেলেনস্কি রাশিয়ান হামলার পরও দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলকে রক্ষা করার তার দেশের সেনাদের প্রশংসা করেন।
ভাষণে ইউক্রেনীয় নেতা পশ্চিমাদের কাছে আরও আধুনিক অস্ত্র সরবরাহের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
১০৮৪ দিন আগে
পিছু হটা রুশ সেনারা অসংখ্য মাইন রেখে গেছে: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের জনগণকে সতর্ক করে বলেছেন, রুশ বাহিনী পিছু হটার সময় রাজধানী কিয়েভের বাইরে ‘সম্পূর্ণ বিপর্যয়ের’ ফাঁদ তৈরি করে রেখে গেছে। তারা আশেপাশের পুরো অঞ্চল জুড়ে; এমনকি বাড়িঘর ও লাশের নিচেও মাইন রেখে গেছে।
শনিবার ভোরে এমন সময় জেলেনস্কি এই সতর্কবার্তা দিলেন যখন মারিউপোলে মানবিক করিডোর খুলে দেয়া হয়েছে। বেসামরিক নাগরিকরা শহর ছাড়ার চেষ্টা করছেন। যদিও রুশ সেনারা এই প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন।
জেলেনস্কি জাতির উদ্দেশ্যে তার রাতের ভিডিও ভাষণেও বলেন, তারা পুরো এলাকায় মাইন রেখে গেছে। তারা বাড়ি-ঘর, যন্ত্রপাতি, এমনকি নিহত ব্যক্তিদের লাশের নিচেও মাইন ফেলে গেছে।
তিনি বাসিন্দাদের তাদের স্বাভাবিক জীবন শুরু করার জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানান। যতক্ষণ না তারা আশ্বস্ত হয় যে মাইনগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে এবং গোলাগুলির বিপদ কেটে গেছে।
এদিকে ক্রেমলিন ইউক্রেনীয়দের রাশিয়ার মাটিতে একটি জ্বালানি ডিপোতে হেলিকপ্টার হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করে। যদিও ইউক্রেন এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধে ইউক্রেনের ৫৩ ঐতিহাসিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত: ইউনেস্কো
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, নিশ্চয়ই এ ধরনের ঘটনা আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য আরামদায়কপরিস্থিতি তৈরি করবে না।
এই সপ্তাহের শুরুতে ইউক্রেনের রাজধানী এবং উত্তরের শহর চেরনিহিভের কাছে সামরিক তৎপরতা কমিয়ে দেয়ার কথা বলে, রাশিয়া কিয়েভের আশেপাশের এলাকা থেকে তার কিছু স্থল বাহিনী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
রাশিয়া কিয়েভ ও চেরনিহিভের চারপাশে তাদের বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখলেও, ইউক্রেনীয় সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে।
ইউক্রেন ও তার মিত্ররা সতর্ক করে বলেছে, ক্রেমলিন দর কষাকষির টেবিলে যেভাবে সময়ক্ষেপণ করছে, তা মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সেনাদের পুনরায় মোতায়েন ও স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে। রাশিয়া এখন পূর্বের ডনবাস অঞ্চলে (অধিকাংশ রুশ ভাষাভাষী) একটি তীব্র আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে; যার মধ্যে মারিউপোলও রয়েছে।
রাশিয়া তার সেনাদের পুনরায় মোতায়েন করা দেখে জেলেনস্কি সামনে কঠিন যুদ্ধের বিষয়ে তার দেশের মানুষকে সতর্ক করে বলেন, আমরা আরও সক্রিয় প্রতিরক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে শুক্রবার ভিডিওর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপের বিষয়ে জেলেনস্কি কিছু বলেননি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেল ডিপোতে ইউক্রেনের হামলা: রুশ গভর্নর
চেরনোবিল ছেড়েছে রুশ সেনারা
১০৮৪ দিন আগে