রোগীর স্বজন
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্মচারীদের মারধর, চিকিৎসাসেবা বন্ধ
শরীয়তপুর ১০০ শয্যা সদর হাসপাতালের পাঁচ কর্মচারীকে এক রোগীর স্বজনেরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বেলা পৌনে ১১টা থেকে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসক ও নার্সেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
আরও পড়ুন: একদিন পর শেবাচিম হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা চালু
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন শারমিন নামে এক রোগী। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই রোগীর স্বজন পরিচয়ে রায়হান নামে এক যুবক তার ফাইল আনতে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় নার্সদের কক্ষে যান। সেখানে নার্স নাসিমা আক্তার চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে ফাইল নিতে বলেন। তখন রায়হান চার থেকে পাঁচজন সহযোগী নিয়ে ওই নার্সের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং মারতে উদ্যত হন। তখন হাসপাতালের অন্য কর্মীরা এর প্রতিবাদ করেন। ঘটনার ১৫ মিনিট পর রায়হান বেশ কিছু লোকজন নিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী দুলাল ঢালী, বাবুর্চি খালেদ সিকদার, অফিস সহকারী জোবায়ের হোসেন ও ফার্মাসিস্ট বিকাশ কুমার সরকারকে মারধর করেন। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে যান তত্ত্বাবধায়ক হাবীবুর রহমান।
এসময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবীবুর রহমান বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছেন, তাদের মধ্যে রায়হান নামে একজনকে চিনতে পেরেছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অন্যদের শনাক্ত করা হবে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত জরুরি বিভাগ ছাড়া সব সেবা বন্ধ থাকবে।’
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, ‘হামলার পর আমরা এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই জরুরি চিকিৎসাসেবা ছাড়া অন্য সব সেবা বন্ধ রেখেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি আমরা।’
আরও পড়ুন: ঢামেক ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বহির্বিভাগ পুরোদমে চালু
হাসপাতালের সিনিয়র নার্স নাসিমা আক্তার বলেন, ‘রোগীর স্বজন পরিচয়ে ফাইল নিতে আসেন এক যুবক। তাকে শুধু বলেছি, এভাবে কোনো রোগীর ফাইল আমরা দিতে পারি না। ওই ফাইল রোগীর চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক নার্সদের কাছে থাকে। বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে নিতে হয়। আমি চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে ফাইল নিতে বলেছিলাম। তখন তিনি আমার ওপর চড়াও হন ও আমাকে অপদস্থ করেন।’
হাসপাতালের কর্মচারী দুলাল ঢালী বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই রোগীর স্বজন বাইরে থেকে লোকজন এনে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমারা দুইজন কর্মী আহত হয়েছি। এ ঘটনার বিচার চাই।
এদিকে এই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বেলা পৌনে ১১টা থেকে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেন। তখন জরুরি বিভাগের কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে দুপুর ১টার দিকে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম আবার শুরু হয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও হাসপাতালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি বিভাগ ছাড়া সব সেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীহ আহমেদ বলেন, হাসপাতালের কর্মচারীদের ওপর হামলার তথ্য পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। ততক্ষণে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তাদের ধরতে অভিযান চালানো হবে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চমেক হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন
৩ মাস আগে
রোগীর স্বজনকে ছুরিকাঘাত: মামলার সব আসামির জামিন
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ঢুকে রোগীর স্বামীকে ছুরিকাঘাতে জখম করা মামলার আসামি নার্স ইলা শিকদার ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেবাশীষ নয়নসহ সব আসামি উচ্চ আদালত থেকে ২১ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন আগাম জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সুমন রঞ্জন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সব তথ্য প্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে। শুধু মেডিকেলের প্রতিবেদন পেতে বাকি। সেটা পেলেই আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের সেই পুলিশ পরিদর্শকের জামিন নামঞ্জুর
এব্যাপারে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ওই নার্স তাকে ফোন করে আগাম জামিনের কথা জানিয়েছেন। তবে তাকে কর্মস্থলে যোগদানে নিষেধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি নার্স ইলা শিকদারের সরাসরি সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। তাদের কাছ থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি।
ভুক্তভোগী ফাহিম আহমেদ রাসেল জানান, এ মামলার একজন আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি। এই সুযোগে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থায় আমি পুলিশকে আমার নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছি।
তার অভিযোগ, আসামিরা রাজনৈতিক আশ্রয়ের লোক। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ঢুকে রোগীর স্বজনকে ছুরিকাঘাত
গত ২১ ফেব্রুয়ারি শহরের টেপাখোলা বিন্দাবনের মোড় এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত খায়ের মোল্যার সন্তান ফাহিম আহমেদ রাসেল তার স্ত্রী হীরা ওরফে বাঁধনকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে প্রতিদিন দু’বার রক্ত পরীক্ষার নির্দেশনা দেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সরকারি হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য রাসেল কর্তব্যরত নার্স ইলা শিকদারকে স্ত্রীর শরীর থেকে সিরিঞ্জে রক্ত টেনে দিতে বলেন। নার্স ইলা এতে অপারগতা জানালে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে মোবাইলে দেবাশীষ নয়নকে ডেকে এনে হাসপাতালের ভেতরেই রাসেলকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠে। গুরুতর আহত রাসেলকে প্রথমে ফরিদপুরের মেডিকেল হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ওই নার্স ইলা শিকদার, নার্সিং সুপারভাইজার জহুরা বেগম ও দেবাশীষ নয়নসহ অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। এদের মধ্যে দেবাশীষ নয়ন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।
২ বছর আগে
হাসপাতালে ঢুকে রোগীর স্বজনকে ছুরিকাঘাত
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বামীকে ছুরিকাঘাতে জখম করার অভিযোগ উঠেছে কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত রাসেল শহরের টেপাখোলা বিন্দাবনের মোড় এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ছুরিকাঘাতে মাদরাসাছাত্র নিহত
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে রাসেল তার স্ত্রী হীরাকে নিয়ে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। স্ত্রী হীরাকে চিকিৎসক প্রতিদিন দু’বার রক্ত পরীক্ষার নির্দেশনা দেন। রাতে জেনারেল হাসপাতালের প্যাথালজি ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য দায়িত্বরত সিস্টার ইলা সিকদারকে সিরিঞ্জে রক্ত টেনে দিতে বলেন হীরার স্বামী রাসেল। এই সময় তিনি রক্ত টেনে দেয়া তার দায়িত্ব না জানিয়ে রাসেলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং সুপারভাইজারের কাছে নালিশ জানান। একই সঙ্গে শহরের খাবাসপুর এলাকার যুবলীগ কর্মী দেবাশীষ নয়নকে ফোন করে ডেকে আনেন।
পরে রাসেল নার্স সুপারভাইজারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বের হওয়ার পর পরই দেবাশীষ নয়ন ও তার সঙ্গে থাকা আরও তিন জন রাসেলকে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইফুজ্জামান জানান, আহত রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার প্রচুর পরিমানে ব্লিডিং হয়েছে। এখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এই বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুত্রবধূর ‘ছুরিকাঘাতে’ আহত শাশুড়ির মৃত্যু
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সুমন রঞ্জন সরকর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এ ঘটনার পর ওই নার্স আত্মগোপনে আছেন। ঘটনার তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২ বছর আগে