ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ঢুকে রোগীর স্বামীকে ছুরিকাঘাতে জখম করা মামলার আসামি নার্স ইলা শিকদার ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেবাশীষ নয়নসহ সব আসামি উচ্চ আদালত থেকে ২১ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন আগাম জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সুমন রঞ্জন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সব তথ্য প্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে। শুধু মেডিকেলের প্রতিবেদন পেতে বাকি। সেটা পেলেই আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের সেই পুলিশ পরিদর্শকের জামিন নামঞ্জুর
এব্যাপারে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ওই নার্স তাকে ফোন করে আগাম জামিনের কথা জানিয়েছেন। তবে তাকে কর্মস্থলে যোগদানে নিষেধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি নার্স ইলা শিকদারের সরাসরি সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। তাদের কাছ থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি।
ভুক্তভোগী ফাহিম আহমেদ রাসেল জানান, এ মামলার একজন আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি। এই সুযোগে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থায় আমি পুলিশকে আমার নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছি।
তার অভিযোগ, আসামিরা রাজনৈতিক আশ্রয়ের লোক। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ঢুকে রোগীর স্বজনকে ছুরিকাঘাত
গত ২১ ফেব্রুয়ারি শহরের টেপাখোলা বিন্দাবনের মোড় এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত খায়ের মোল্যার সন্তান ফাহিম আহমেদ রাসেল তার স্ত্রী হীরা ওরফে বাঁধনকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে প্রতিদিন দু’বার রক্ত পরীক্ষার নির্দেশনা দেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সরকারি হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য রাসেল কর্তব্যরত নার্স ইলা শিকদারকে স্ত্রীর শরীর থেকে সিরিঞ্জে রক্ত টেনে দিতে বলেন। নার্স ইলা এতে অপারগতা জানালে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে মোবাইলে দেবাশীষ নয়নকে ডেকে এনে হাসপাতালের ভেতরেই রাসেলকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠে। গুরুতর আহত রাসেলকে প্রথমে ফরিদপুরের মেডিকেল হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ওই নার্স ইলা শিকদার, নার্সিং সুপারভাইজার জহুরা বেগম ও দেবাশীষ নয়নসহ অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। এদের মধ্যে দেবাশীষ নয়ন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।