রুশ বাহিনী
ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিভল
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর গোলার আঘাতে দেশটির জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে লাগা আগুন নেভানো হয়েছে। শুক্রবার দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে। তবে রুশ বাহিনী ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে বলেও জানানো হয়।
এর আগে শুক্রবার ভোরে রুশ হামলায় জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। এটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং এ প্লান্ট থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশ আসে।
দেশটির এনেরহোদার শহরের মেয়র দিমিত্রো অরলভ শুক্রবার সকালে বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নেভানো হয়েছে।
ইউক্রেনের আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির এক নম্বর বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এর পাওয়ার ইউনিট সুরক্ষার কোনো ক্ষতি হয়নি।
আরও পড়ুন: পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বান করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অপারেশনাল কর্মীরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। এছাড়া ওই এলাকায় বিকিরণের মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে ছিল না। তবে এ ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ হামলার পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতা ফোনালাপ করেছেন। এছাড়া মার্কিন জ্বালানি বিভাগ সতর্কতা হিসাবে এর নিউক্লিয়ার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে সক্রিয় করেছে।
এর আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মুখপাত্র আন্দ্রি টুজ ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, গোলা সরাসরি জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়ছিল এবং এর ছয়টি চুল্লির মধ্যে একটিতে আগুন ধরে যায়। ওই চুল্লিটি কাজ করছে না এবং সংস্কার করা হচ্ছে। তবে এর ভেতরে পারমাণবিক জ্বালানি রয়েছে।
জাপোরিঝিয়ার আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসন জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় করা পরিমাপে দেখা যায় এই অঞ্চলে বিকিরণের মাত্রা ‘অপরিবর্তিত এবং জনসংখ্যার জীবন ও স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে না’।
এদিকে এ হামলার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান করবেন বলে জানিয়েছে তাঁর কার্যালয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার হামলায় ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, জনসন শুক্রবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। ব্রিটেন অবিলম্বে রাশিয়া ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানান।
মধ্যরাতে একটি আবেগঘন বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি একটি বিস্ফোরণের আশঙ্কা করছিলেন যা ‘সবাইকে শেষ করে দেবে। ইউরোপকে শেষ করে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপের জরুরি পদক্ষেপই রুশ সেনাদের থামাতে পারে। একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপর্যয় থেকে ইউরোপ ধ্বংসের অনুমতি দেবেন না।’
২ বছর আগে
ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় হামলা জোরদার রুশ বাহিনীর
ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় হামলা জোরদার করেছে রাশিয়ান বাহিনী। মঙ্গলবার আগ্রাসনের ষষ্ঠ দিনে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের সেন্ট্রাল স্কয়ার এবং কিয়েভের প্রধান টিভি টাওয়ারে বোমাবর্ষণ করেছে। এ ঘটনার কঠোর সমালোচনা করে একে সন্ত্রাসের নির্লজ্জ প্রচারণা বলে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘কেউ ক্ষমা করবে না। কেউ ভুলবে না।’
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) তার প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘মূল্য দিতে’ হবে দায়ী করে তার বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।
ইতোমধ্যে শত শত রাশিয়ান ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য যানবাহনের ৪০ মাইলের (৬৪ কিলোমিটার) দীর্ঘ সেনা বহর প্রায় তিন মিলিয়ন লোকের রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয়েছে।
রুশ বাহিনী দক্ষিণে ওডেসা এবং মারিউপলের কৌশলগত বন্দরসহ অন্যান্য শহরগুলোতে তাদের আক্রমণ জোরদার করেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে তদন্ত করবে আইসিসি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্থল যুদ্ধের ষষ্ঠতম দিন রাশিয়া কার্যত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা অব্যাহতে রেখেছে।
ইউক্রেনে যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা এখনও অস্পষ্ট। একজন ঊর্ধ্বতন পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তার মতে, যুদ্ধে ৫ হাজারের বেশি রাশিয়ান সৈন্য বন্দী বা নিহত হয়েছে। তবে ইউক্রেন সেনা ক্ষয়ক্ষতির কোনো সামগ্রিক হিসাব দেয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বলছে, তারা ১৩৬ বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড করেছে। প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই দিনে জনবহুল এলাকায় রাশিয়ার বিমান ও কামান হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আরও বলা হয়, তিনটি শহর- খারকিভ, খেরসন এবং মারিউপল-রাশিয়ান বাহিনী দ্বারা বেষ্টিত হয়ে পড়েছে।
পড়ুন: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পরবর্তী শান্তি আলোচনা বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে
৫৭১০ রুশ সেনা হত্যার দাবি ইউক্রেনের
২ বছর আগে