রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
বিশ্বব্যাপী দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে সকলকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে জনগণকে মিতব্যয়ী হওয়ার পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্য জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম কতটা বাড়বে তা এখনও অনিশ্চিত। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে। বরং আমরা এগুলো অন্তত (কিছু পরিমাণে) নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
মঙ্গলবার ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় সভাপতিত্বও করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে বলে মনে হয় না। ‘আমাদের সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে। আমাদের মনোযোগ দিতে হবে যাতে খাবার কোনোভাবেই নষ্ট না হয়।’
আরও পড়ুন: জনশুমারি শুরুর প্রাক্কালে ১৪ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, পণ্য পরিবহনের জন্য জাহাজ ভাড়া ৮০০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২৫০০-৩০০০ মার্কিন ডলার হয়েছে।
বেতন বাড়ানোর জন্য তৈরি পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানি বাজারে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের কঠিন সময়ে এই খাতে কোনো অস্থিরতা তৈরি হলে তারা (শ্রমিকরা) চাকরি হারাতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘কারও কথায় কোনো ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হলে তা শুধু দেশের নয়, শ্রমিকদেরও ক্ষতি করবে। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। আমি মনে করি বিষয়টি শ্রমিক ও তাদের নেতাদের জানানো উচিত।’
তিনি বলেন, শ্রমিক নেতারা কোনো সমস্যায় পড়বে না। কারণ তারা উসকানিদাতাদের কাছ থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ পাবে। কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্যে কী হবে? রাস্তায় নামলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে অনলাইনে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা পাবেন গ্রামবাসী: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বিভিন্ন সময়ে পোশাক শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করেছে। একজন শ্রমিক এখন মাসে আট হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পান। কিন্তু আগে বেতন ছিল মাত্র এক হাজার ৬০০ টাকা।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বাঙালিদের ম্যাগনা কার্টা ছয় দফা দাবির ভিত্তিতে পাকিস্তানিদের অপশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেছিলেন।
২ বছর আগে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অষ্টম দিন: যা যা জানতে হবে
রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার বেলারুশে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। আট দিন আগে দেশটিতে হামলা চালায় রাশিয়া। হামলা চালানোর পর দু’দেশ দ্বিতীয়বারের মতো আলোচনায় বসছে।বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে রুশ সেনারা দেশটির কোনো শহর দখল করেছে কি না সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।রুশ সেনাদের ‘বিভ্রান্ত শিশু’ উল্লেখ করে তাদের ‘দেশে ফিরে যাওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে জেলেনস্কি বলেন, ‘তারা এখানে কোনো শান্তি পাবে না।’ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য এমন সময়ে করলেন যখন রাশিয়া হামলার শুরুর পর থেকে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে তাদের ৫০০ জনের মতো সেনা নিহত এবং প্রায় এক হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে। তবে কতজন ইউক্রেনীয় সেনা হতাহত হয়েছে এমন কোনো তথ্য দেয়নি দেশটির কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জটিলতার মুখেজাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ আগ্রাসনের শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে কমপক্ষে ২২৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫২৫ জন আহত হয়েছেন। তবে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, দুই হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন। তবে তাদের এমন দাবি যাচাই করা অসম্ভব।এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, গত সপ্তাহে হামলার পর থেকে ইউক্রেন ত্যাগ করেছেন ১০ লাখ মানুষ। এছাড়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এ হামলার নিন্দা জানিয়ে ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান করেছে।সহিংসতা নিয়ে যে সব প্রধান বিষয় জানতে হবে:সম্ভাব্য আলোচনাবুধবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনা করতে তাদের প্রতিনিধি দল পথে রয়েছে। তবে প্রতিনিধি দল কখন পৌঁছাবে সেটি জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করল নরওয়ে ও জার্মানিপ্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ও রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি সাংবাদিকদের বলেছেন, পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী বেলারুশের ব্রেস্ট অঞ্চলে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দল আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।ইউক্রেনে সহিংসতাজেলেনস্কির কার্যালয় জানিয়েছে, বুধবার রাতে কিয়েভের দক্ষিণ রেলওয়ে স্টেশন ও ইবিস হোটেলের মধ্যে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়েছে। আর এর পাশেই রয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।ইউক্রেনীয় বার্তা সংস্থা ইউএনআইএএন দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভের প্রধান স্বাস্থ্য প্রশাসক সেরহি পিভোভারকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, শহরটির একটি হাসপাতালে দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।তিনি বলেন, হাসপাতালের মূল ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ নিহতের সংখ্যা নির্ণয়ে কাজ করছে।মারিউপোলে রুশ বোমা হামলায় কমপক্ষে এক কিশোর মারা গেছে এবং দুজন আহত হয়েছে। নিহতের পরিবার জানিয়েছে, তারা একটি বিদ্যালয়ের কাছে ফুটবল খেলছিল।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাসট্যাঙ্ক ও অন্যান্য সাঁজোয়া যানবাহনসহ ৪০ মাইল দীর্ঘ একটি রুশ সেনাবহর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে অবস্থান করছে।রাশিয়া বলছে, রুশ সেনারা ইউক্রেনের বন্দর শহর খেরসন দখল করেছে। তবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী তা অস্বীকার করেছে। এছাড়া রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে বোমা হামলা করছে এবং দুটি কৌশলগত সমুদ্রবন্দর অবরোধ করেছে।মানবিক পরিস্থিতিজাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি টুইটারে লিখেছেন, ইউক্রেন থেকে গত সাতদিনে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ১০ লাখ মানুষ গিয়েছেন। যা দেশটির মোট জনসংখ্যার দুই শতাংশ। তবে তাদের মধ্যে অন্য দেশের কিছু নাগরিকও রয়েছেন।জাতিসংঘের এই সংস্থাটি বলছে, ৪০ লাখ মানুষ ইউক্রেন ত্যাগ করতে পারেন। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২০ সালে ইউক্রেনে চার কোটি ৪০ লাখ মানুষ ছিল।জাতিসংঘের নিন্দা ও যুদ্ধাপরাধের তদন্তবুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বন্ধ এবং সব সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দেয়। জাতিসংঘের ১৪১টি দেশ পক্ষে এবং পাঁচটি দেশ বিপক্ষে এবং ৩৫টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই ভোট ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ‘বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের মাত্রা প্রদর্শন করে।’আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর বুধবার ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। প্রসিকিউটর করিম খান বলেছেন, এ আদালতের ৩৯টি সদস্য রাষ্ট্র এ বিষয়ে তদন্তের অনুরোধ করার পর তিনি তা করেছেন।তবে রাশিয়া বা ইউক্রেন, কোনো দেশই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য নয়।নিষেধাজ্ঞা কী রাশিয়াকে আঘাত করছে?হোয়াইট হাউস রাশিয়া ও বেলারুশের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রুশ তেল পরিশোধন এবং উভয় দেশের সামরিক বাহিনীকে সমর্থন করা প্রতিষ্ঠানের রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো।ইউরোপ ও কানাডার মতো যুক্তরাষ্ট্রও রুশ এয়ারলাইন্সের জন্য তাদের দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।এছাড়া এয়ারবাস ও বোয়িং জানিয়েছে, তারা রুশ বিমান সংস্থার জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বন্ধ করবে। ফরাসি ভিত্তিক এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বোয়িং অধিকাংশ রুশ যাত্রীবাহী বিমান সরবরাহ করে থাকে।এসব নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাশিয়ার অতি উচ্চ বিত্তবানদেরও আনা হয়েছে যারা ইউরোপজুড়ে সম্পত্তির মালিক এবং তাদের সন্তানদের অভিজাত ইউরোপীয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান।এছাড়া সাধারণ রুশ নাগরিকরাও নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অনুভব করতে শুরু করেছেন।
২ বছর আগে