প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
বিদ্রোহের পর পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রিগোজিন: ক্রেমলিনের মুখপাত্র
স্বল্পমেয়াদি বিদ্রোহের মাত্র পাঁচ দিন পরে রাশিয়ার ‘ভাড়াটে’ বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের কমান্ডাররা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং সরকারের প্রতি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সোমবার (১০ জুলাই) সরকারের এক জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র এ কথা বলেন। বিষয়টিকে বিস্ময়কর পর্বের সর্বশেষ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে দুই পক্ষের ক্ষমতা ও প্রভাব সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন জেগেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ২৯ জুন তিন ঘণ্টার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে প্রিগোজিনসহ তার ওয়াগনার গ্রুপের সামরিক ঠিকাদারের কমান্ডাররাও উপস্থিত ছিলেন। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ওয়াগনারের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করেন পুতিন। সেখানে ওয়াগনারের সৈন্যরা রুশ সৈন্যদের পাশাপাশি যুদ্ধ করেছে।
আরও পড়ুন: পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেন আন্তর্জাতিক আদালত
পেসকভ বলেন, কী ঘটেছিল তা নিজেদের মতো করে উপস্থাপন করেছেন কমান্ডাররা। তারা রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধান কমান্ডারের কট্টর সমর্থক ও অনুগত সৈন্য বলে জানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, মাতৃভূমির জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত তারা।
সামরিক নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবিতে গত মাসে মস্কোয় সৈন্যদের পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রিগোজিন। তার সঙ্গে পুতিনের সাক্ষাতের বিষয়টিকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যদিও বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুশ নেতা প্রিগোজিনকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করা হয়েছিল এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে জানানো হয়েছিল। বিদ্রোহের অভিযোগে ভাড়াটে প্রধানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও পরে প্রত্যাহার করা হয়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭
ক্রেমলিনের বৈঠক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রিগোজিন এবং তার চূড়ান্ত ভাগ্য এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। তবে সোমবারের ঘোষণায় জানানো হয়েছেম রুদ্ধদ্বার বেঠকে অনেক কিছুই আরোচনা করা হয়েছে। তিনি এখনও আর্থিক অস্বচ্ছতা বা অন্যান্য অভিযোগের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন।
সোমবার সামরিক প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভের একটি ভিডিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশ করার পর এই ঘোষণা আসে। তিনি মূলত প্রিগোজিনের বিদ্রোহের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। বিদ্রোহের পর এই প্রথম গেরাসিমভকে দেখা গেল।
ভিডিওতে দেখা যায়, গেরাসিমভ তার দলের সঙ্গে একটি টেবিলে বসে রাশিয়ার মহাকাশ বাহিনীর চিফ অব স্টাফের কাছ থেকে রবিবার রাশিয়ার ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখছেন। গেরাসিমভ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির বিরুদ্ধে আগাম হামলা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার উন্নতির আহ্বান জানিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ওয়াগনারের 'স্বল্পস্থায়ী' বিদ্রোহের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জড়িত ছিল না: বাইডেন
১ বছর আগে
রাশিয়ায় বিবিসিসহ একাধিক বিদেশি গণমাধ্যম নিষিদ্ধ
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটিতে বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর দমনমূলক ব্যবস্থা তীব্রতর করেছেন। এছাড়া দেশটিতে ‘ভুয়া’ প্রতিবেদন ছড়ানোকে অপরাধ গণ্য করে একটি আইন পাস করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার; ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা, রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি, জার্মান ডয়েসে ভেলে, লাটভিয়া ভিত্তিক ওয়েবসাইট মেডুজাকে রাশিয়ায় নিষদ্ধ করা হয়েছে।
রুশ যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসকোমনাডজোর জানায়, তারা প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টুইটার ও ফেসবুক বন্ধ করেছেন। এর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি টুইটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তারা রুশ সরকারের নিষিদ্ধ করা আধেয় মুছে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুতিনের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল চায় ইউক্রেন
শুক্রবার বিকালে টুইটার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ায় তাদের প্লাটফর্ম বন্ধের বিষয়ে জ্ঞাত রয়েছে। তবে বিষয় সেটা কি না তারা এখনও নিশ্চিত নয়।
রুশ সংসদের উভয় কক্ষে পাস হওয়া আইনে বলা হয়েছে, রুশ সামরিক বাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানোর দায়ে তিন বছর পর্যন্ত সাজা বা জরিমানা এবং ‘গুরুতর পরিণতি’ রয়েছে এমন ক্ষেত্রে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড।
রুশ সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোডিন বলেছেন, এই ব্যবস্থা ‘যারা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে অসম্মান করে এমন বিবৃতি দিয়েছে এবং তাদের কঠোর শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করবে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিভল
এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে তারা রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। এদের মধ্যে সিএনএন ও ব্লুমবার্গও রয়েছে। এছাড়া বিবিসি রাশিয়ায় কর্মরত তাদের সাংবাদিক কাজ সাময়িক স্থগিত করেছে।
২ বছর আগে