বাংলাদেশি গণমাধ্যম
ইউক্রেন নিয়ে কিছু বাংলাদেশি গণমাধ্যমের সংবাদ প্রচার পক্ষপাতমূলক: রুশ রাষ্ট্রদূত
ইউক্রেন পরিস্থিতি ও সেখানে রাশিয়ার পদক্ষেপ নিয়ে সংবাদ প্রচারে বাংলাদেশি কিছু গণমাধ্যমের ‘পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি’র অভিযোগ তুলে তাদের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি. মান্তিতস্কি।
তিনি এটাকে ঢাকা ও মস্কোর সম্পর্ক নষ্ট করার ‘ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা’ বলেও বর্ণনা করেছেন।
রবিবার বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক, রেডিও ও টিভি প্রধানদের কাছে এক খোলা চিঠিতে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইউক্রেন পরিস্থিতি ও সেখানে রাশিয়ার পদক্ষেপের প্রতি কিছু বাংলাদেশি গণমাধ্যমের দৃষ্টিভঙ্গি পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে করি। আর এটা যারা সর্বদা রাশিয়ান ফেডারেশন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতাকে ক্ষুন্ন করতে চায় সেই শক্তির ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টার ফল।’
আরও পড়ুন: বন্যা প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও বাঁধ দরকার: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত ১৯৭১ সালের কথা উল্লেখ করেন যখন বাংলাদেশিরা ভারত ও ইউএসএসআরের সক্রিয় সমর্থনে বাঙালিদের প্রতি হয়রানি, বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ এবং মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার উপভোগের অবাঙালি প্রভুদের উৎখাত করে।
তিনি বলেন, ‘পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের রুশ ভাষাভাষী জনগণ আট বছর ধরে একই অধিকার পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করে আসছে এবং কিয়েভ শাসনে তারা গণহত্যারও শিকার হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আমার খোলা চিঠির মাধ্যমে আপনার পাঠকরা ইউক্রেনের চারপাশের বিষয়ে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিচিত হতে সক্ষম হবেন।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে রুশ বিমান হামলায় নিহত ৩৫
সম্পাদকদের কাছে তার চিঠিটি বাংলাদেশি পাঠকদের কাছে আবারও ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ এর লক্ষ্য ও কার্যক্রম ব্যাখ্যার একটি প্রচেষ্টা বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূতের মতে লক্ষ্যগুলো হলো:
১. ইউক্রেনের রুশ ভাষাভাষী বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা যারা আট বছর ধরে কিয়েভ সরকার দ্বারা গণহত্যার শিকার হয়েছে;
২. নব্য ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা;
৩. ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ রোধ করা এবং
৪. ইউক্রেনে ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটি স্থাপন বন্ধ করা।
কার্যক্রমগুলো হলো:
১. ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং ডিনাজিফাই করা (নাৎসি মতাদর্শ থেকে মুক্ত করা);
২. মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ইউক্রেনে মাথা চাড়া দিয়ে উঠা নব্য ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটানো;
৩. রাশিয়ান ফেডারেশনের সীমান্তে সামরিক হুমকি দূর করা;
৪. শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য হুমকিস্বরূপ ইউক্রেনের আগ্রাসী সত্তাকে নিরস্ত্র করা এবং
৫. রাশিয়ান ফেডারেশনের আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক এবং রাশিয়ান নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং শাস্তি দেয়া।
রাষ্ট্রদূত মানতিতস্কি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেন দখলের পরিকল্পনা করছি না। আমরা ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। আমরা জোর করে কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। আমরা অনেকবার ব্যাখ্যা করেছি ইউক্রেনের পরিস্থিতি এমনভাবে বিকশিত হয়েছে যে এটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ৮৫ শিশু নিহত: ইউক্রেন
২ বছর আগে