নদীর পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
কুড়িগ্রামে বৃষ্টি ও উজানের ঢল কমে আসায় তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতির অনেটাই উন্নতি হয়েছে। তিস্তার পানি গত ২৫ ঘণ্টায় ৩৯ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে নদী অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকার ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও এখনও তলিয়ে আছে শতশত হেক্টর জমির আমন খেত।
এসব এলাকার কৃষকরা জানান, আকস্মিক বন্যায় আমন খেত তলিয়ে থাকায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে চলমান বন্যায় জেলার ৪৩১ হেক্টর জমির আমন খেতসহ অন্যান্য ফসল নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় এসব ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
অন্যদিকে পানি বাড়া-কমার সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠছে তিস্তা পাড়ের ভাঙন।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, ব্রহ্মপু্ত্রের ভাঙনে ওই ইউনিয়নের খুদির কুটি গ্রামে তার নিজের বসতভিটাসহ ৬০টি পরিবারের বসতভিটা গত তিন দিনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ওই এলাকার আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়, দোতলা বিশিষ্ট বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ওই স্থাপনাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানান, পানি কমার সঙ্গে ভাঙন শুরু হলেও কোনো ব্যবস্থা নেই প্রতিরোধে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তার অববাহিকার আব্দুল মজিদ নামের একজন বলেন, ‘দুই দিনের বন্যায় আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। মরিচের আবাদ তো শেষ। এছাড়াও তিস্তা নদী ভাঙছে। আমরা খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বন্যার পানিতে প্রায় সাড়ে ৪০০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত। এর মধ্যে রোপা আমনের ক্ষতি কম হলেও অন্যান্য ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘এখন সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ভাঙন রোধে জরুরি কাজের অনুমতি না থাকার কারণে কাজ করতে পারছি না। অনুমতি পেলে ভাঙনকবলিত এলাকায় কাজ করা হবে।’
২ মাস আগে
নদীর পানি কেবলমাত্র রাজনীতি নয়, এটা কূটনীতি ও অর্থনীতিও: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আমাদের একটি কথা মাথায় রাখতে হবে। সেটা হলো নদীর পানি কেবলমাত্র রাজনীতি নয়, এটা কূটনীতি ও অর্থনীতিও।
তিনি বলেন, যদি সরকারি পর্যায়ে কোনো নীরবতা বা নিষ্ক্রিয়তা থেকে থাকে সে দিনটি শেষ হয়ে গেছে। এজন্য আমাদের মানুষের দুর্ভোগ ও প্রত্যাশা বুঝতে, সেই অনুযায়ী উজানের দেশের সঙ্গে কথা বলতেই এখানে এসেছি।
আরও পড়ুন: নদী রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনীর পরশুরামের নিজ কালিকাপুর এলাকায় বন্যায় ভাঙনকবলিত বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মানবিক কারণে দুইটা দেশকে এক জায়গায় মিশে নদীর পানি ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজ ৫৩ বছর হয়ে গেল, আমরা তিস্তার চুক্তি সই করতে পারিনি।
আরও পড়ুন: অভিন্ন নদীর পানি ছাড়ার আগে আগাম বার্তা দেয়নি ভারত: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
তিনি আরও বলেন, আমার দেশের মানুষকে তো বাঁচাতে হবে। সে দাবি প্রতিবেশী রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারবে না। সে জায়গা থেকে আমরা তথ্যগুলো চাইব, আলোচনা শুরু করব। এই বিষয়গুলোর একটা রূপরেখা প্রস্তুত করেছি। আপনাদের সঙ্গে কথা বলে চুড়ান্ত করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পানিসম্পদ সচিব নাজমুল আহসান, ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয় পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে পলিসি সহায়তা দেবে: রিজওয়ানা হাসান
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
৩ মাস আগে
যমুনা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় ডব্লিউএফপির আগাম পদক্ষেপ
যমুনা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় আগাম পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
শুক্রবার ডব্লিউএফপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ওপর আসন্ন বন্যার প্রভাব প্রশমিত করতেই এই পদক্ষেপ।
এটি এখন পর্যন্ত ডব্লিউএফপির সবচেয়ে বড় আগাম পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণে ডব্লিউএফপি'র সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি)।
যমুনা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় ডব্লিউএফপি ও এর অংশীদাররা, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা), ইউরোপীয় কমিশনের মানবিক সহায়তা বিভাগ (ইসিএইচও), সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড (সিইআরএফ) এবং জার্মানি ও আয়ারল্যান্ড সমর্থিত অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন (এএ) -ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রতিক্রিয়া মন্ত্রণালয়সহ একাধিক দাতা মিলে প্রাক-অর্থায়নে সর্বকালের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
এই সহায়তায় যা যা অন্তর্ভুক্ত-
• আগাম সহায়তা: বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণের চার দিন আগে ৮১ হাজারেরও বেশি পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
• আগাম অ্যান্টিসিপেটরি শক রেসপন্সিভ সোশ্যাল প্রটেকশন: বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগে বন্যাকবলিত অঞ্চলে বসবাসরত ৮ হাজার ১০০ জনেরও বেশি সরকারি সামাজিক সুরক্ষা সহায়তা গ্রহীতা দুটি জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার (এমসিবিপি ও ইজিপিপি) অধীনে সহায়তা পেয়েছিলেন। এটি জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা বিনিয়োগ থেকে পাওয়া অর্থনৈতিক ও পুষ্টিকর অর্জনকে রক্ষা করে। এছাড়া আগামী সপ্তাহে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ১ হাজার পরিবারকে জরুরি সহায়তা দেওয়া হবে।
এছাড়াও ২০ হাজারেরও বেশি পরিবার বন্যা বিমার আওতাভুক্ত।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোম স্ক্যালপেল্লি বলেন, ‘আমরা আমাদের দাতাদের সমর্থনের জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, যাদের কারণে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে এই আসন্ন বিপর্যয়ের মুখে দ্রুত এবং কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে। অরক্ষিত অবস্থানে থাকা পরিবারগুলো যেন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সহায়তা পায় সেজন্য আমাদের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।’
প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে ডব্লিউএফপির অন্যতম পদক্ষেপ হলো আগাম প্রস্তুতি। বন্যার পানি বিপজ্জনক অবস্থায় যাওয়ার আগেই জীবন ও জীবিকা রক্ষা, সম্পত্তির ক্ষতি রোধ এবং দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা কমানো ডব্লিউএফপির লক্ষ্য।
কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বগুড়া ও জামালপুরসহ যমুনা নদীর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি জেলাকে কেন্দ্র করে কাজ করছে ডব্লিউএফপি। এই অঞ্চলগুলো এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে আছে। প্রায় ৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বন্যাদুর্গত অবস্থায় আছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় অবস্থান করতে হচ্ছে। এছাড়াও খাবার ও নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে তারা।
ডোম স্ক্যালপেল্লি বিবৃতিতে আরও বলেন, বন্যাদুর্গতদের তাৎক্ষণিক ত্রাণ সরবরাহের জন্য নয় বরং তারা যেন ভবিষ্যতেও বন্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকতে পারে এবং পূর্বপ্রস্তুতিকে গুরুত্ব দেয় সেজন্য আমাদের এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় অংশীদার ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে এই প্রচেষ্টাগুলো টেকসই ও কার্যকর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বিস্তৃত ও সফল কর্মসূচির জন্য প্রত্যাশিত কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ডব্লিউএফপি। আসন্ন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ বজায় রেখে সে অনুযায়ী নিজ কার্যক্রম চালিয়ে নেবে সংস্থাটি।
এই কার্যক্রম চালাতে গিয়ে ডব্লিউএফপি ১৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতিতে পড়েছে। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহায়তায় দাতা সদস্যদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ডব্লিউএফপি’র রেশন আংশিক বাড়ছে
১৫ বছরে বাংলাদেশের 'ব্যাপক সাফল্যের' প্রশংসা ডব্লিউএফপি’র
৫ মাস আগে
হবিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
হবিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি কমলেও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নিকট কালনী কুশিয়ারা নদীর পানি এখনো বাড়ছে।
জেলার ৬টি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। উপজেলাগুলো হলো- নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল ও মাধবপুর।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ৭ লাখ ৭২ হাজারের বেশি শিশু ক্ষতিগ্রস্ত: ইউনিসেফ
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিস সূত্র জানায়, আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের সংখ্যা কমছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে ২ হাজার ৭৫০ জন অবস্থান করছে। ১১৬ আশ্রয় কেন্দ্রর মধ্যে ৮টি চালু আছে। এর বেশিরভাগই নবীগঞ্জ উপজেলায়। এ২১ জুন (ইউএনবি)-পর্যন্ত ৫১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এলজিআরডির নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম জানান, বন্যায় ৫৭ কিলোমিটার পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৮১ কোটি টাকা।
অপরদিকে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, সওজের অধীন পাগলা-জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ সড়কের আধা কিলোমিটার বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যাবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি
৬ মাস আগে
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি, ধীরে কমছে নদীর পানি
গেল ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি কম হওয়ায় সিলেট নগরীসহ ৭ উপজেলার নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। শনিবার পানি বাড়লেও রবিবার থেকে কমতে শুরু হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
রবিবার (২ জুন) সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমা থেকে সামান্য (১ সে.মি.) নিচে নেমেছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিন দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ১০ দশমিক ৮০ থেকে ১ সে. মি. কমে ১০ দশমিক ৭৯ সে. মি. নিচে নেমে এসেছে। টানাবৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে বলে জানায় পাউবো।
সিলেট নগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার পর থেকে সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করে বিভিন্নভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: নগরীর ৪ হাজার পরিবার আক্রান্ত
সিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বন্যা দেখা দেয়। তবে বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বেশির ভাগ এলাকার। তাছাড়া বন্যার ঝুঁকিতে আছে এমন সব ওয়ার্ডে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি বাড়লে তাদের ওই আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে। সুরমা তীরবর্তী বিদ্যুৎ সাব স্টেশনগুলো রক্ষার জন্য বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়ছে।
সাজলু লস্কর বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর ও আমাদের নিজস্ব তথ্যমতে আনুমানিক চার হাজার পরিবার বন্যাকবলিত আছে।
সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।
সিটি করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডসহ ৮টি উপজেলার বন্যাকবলিত ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৩৫ জন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
এদিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের জাফলং এলাকায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যার পরিমাণ ছিল ১১৩ মিলিমিটার। তাছাড়া অন্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কম ছিল বলে জানিয়েছে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড।
আরও পড়ুন: ধীরগতিতে হলেও সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির প্রত্যাশা
সিলেটের তিন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
৬ মাস আগে
বৃষ্টি অভাবে খুলনায় ফসল আবাদে নদীর পানি ব্যবহার
বর্ষার মৌসুমে এবার বৃষ্টির দেখা নেই। তাই খুলনায় বীজতলা কৃষি জমিতে নদীর পানি ব্যবহার করার কথা জানিয়েছেন খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই মাসের শেষ দিকে হতে থেমে থেমে মাঝারী বা ছিটে ফোটা বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম বা মাঝামাঝি সময়ে নিম্নচাপ হতে পারে, সেই সময়ে ভারী বৃষ্টি হতে পারে এমনটি আশা করছেন আবহাওয়া অফিস।
তবে ভরা মৌসুমে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা না পেয়ে হতাশায় কৃষকসহ মৎস চাষিরা। সেই সঙ্গে গরমে ভোগান্তি পড়েছে সাধারণ মানুষ। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে রয়েছে পাট চাষি, তারা পাট জাক দিতে পারছে না।
মৎস ঘেরে পানির অভাবে মাছ বড় হচ্ছে না। নিয়মিত খাবার পেলেও বর্ষার পানির সঙ্গে মাছের বড় হওয়ার একটি যোগ আছে বলে জানান মৎস চাষিরা।
তাছাড়া নলকূপ থেকে পানি উঠিয়ে মৎস খামারে দিতে হচ্ছে। এতে করে তাদের মাছ চাষের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিহীন, তীব্র তাপদাহে রোপা আমন ও সবজি নিয়ে বিপাকে নওগাঁর কৃষকরা
তাছাড়া জেলার আমন চাষসহ অন্যান্য ফসলি জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। তবে একেবারে আশা না ছেড়ে বৃষ্টি অপেক্ষার প্রহর গুণছেন কৃষকেরা।
এদিকে, কৃষি কর্মকর্তারা আশাঙ্কা করছেন যে এমন উষ্ণ আবহাওয়া যদি চলমান থাকে আর ছিটে ফোঁটা বৃষ্টি হয়। তাহলে কৃষি উৎপাদন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর বৃষ্টির দেখা নেই এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যা। জুলাই-আগস্ট মাসে মোট ৬শ’মিলিমিটারের মত বৃষ্টিপাত হয়েছে। যে কারণে আমরা ফসলের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কিত আছি। তবে এর বিকল্প হিসেবে আমরা নদীর পানি ব্যবহার করবো। ইতোমধ্যে আমরা পানি পরীক্ষা করেছি। খুলনা কয়রা ও দাকোপ উপজেলা ছাড়া অন্যান্য নদীর পানি ব্যবহার উপযোগী।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের নদীর পানি ২ ডিএস এর নিচে আছে তবে ৪ ডিএস ওপরে থাকলে অতিরিক্ত পানি লবণাক্ত থাকে। যে কারণে আমরা বিকল্প নদীর পানি ব্যবহার শুরু করেছি। লক্ষ্য হিসেবে পাঁচ হাজার হেক্টর বীজতলার ফসলী আবাদের জমিতে পানি দেয়া হবে। এর মধ্যে ১০৯ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সুইচ গেটের মাধ্যমে খালে ও বিলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এভাবে পানির সঙ্কট মোকাবিলা করতে হবে। তবে কয়রা ও দাকোপে খাল ও বিলের পানি ব্যবহার ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। এছাড়া মাটির তলোদেশের পানি বেশি লবণাক্তের কারণে এই বিকল্প উপায় ব্যবহার করছি। তবে আমরা আশাবাদী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো।
আরও পড়ুন: বিজয়নগরে বছরে ৫০ কোটি টাকার ফল বিক্রি
এ ব্যাপারে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আঞ্চলিক আবহাওয়া কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ মাসে শেষের দিকে বৃষ্টির সম্ভবনা আছে। এছাড়া ছিটে ফোটা দুই এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। তবে আকাশ এখন মেঘমুক্ত। সেপ্টেম্বর মাসে নিম্নচাপ হলে মাঝারী বা ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশাঙ্কা আছে। মূলত মৌসুমী বায়ু এখনও সক্রিয় নেই যে কারণে বৃষ্টি হচ্ছে না।
২ বছর আগে
কুড়িগ্রামে কমেছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। তবে বানভাসিদের কষ্ট রয়েই গেছে। বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করলেও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তারা। আরও বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
এদিকে, এক সপ্তাহ ধরে জেলার সবকটি নদ-নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। একদিকে বন্যার চাপ অন্যদিকে নদী ভাঙন। এতে বন্যার্ত ও নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অসময়ে যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
তাছাড়া বন্যার পানি নেমে গেলেও পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। খাদ্য সংকট অনেক এলাকায় দেখা দিলেও সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছে বানভাসিরা। অনেকেই একবার ত্রাণ পেলেও আরও প্রয়োজন বলে জানান।
একদিকে বন্যার চাপ অন্যদিকে নদী ভাঙন। এতে বন্যার্ত ও নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার বিকালে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্র নদের ২২টি পয়েন্টে এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়নের পাড়ামৌলা,ঘড়িয়ালডাঙা ও খিতাব খাঁ এলাকায় এবং সদর উপজেলার ধরলা নদীর ভাঙনে হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রাম এবং উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে বজরা গ্রামে দেড় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। আরও ঘর বাড়ি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা নদী ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে বিশ্বনাথের গোবিন্দনগর গ্রাম
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিস্তা ও ধরলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে তীব্র নদী ভাঙন চলছে। তবে ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন পয়েন্টে বালুর বস্তা ফেলে নিবারণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
২ বছর আগে
বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও নদীর পানি সংরক্ষণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমাতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও নদীর পানি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার চট্টগ্রাম ওয়াসার নবনির্মিত শেখ হাসিনা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট-২ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘আমাদের যেভাবেই হোক বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করতে হবে এবং বর্ষায় নদীর পানি সংরক্ষণ করতে হবে যাতে আমরা পানির সঠিক ব্যবহার করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (পর্যায়-২) এর আওতায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় নির্মিত পানি শোধনাগার চালুর ফলে চট্টগ্রাম ওয়াসার সার্বিক পানি সরবরাহ ক্ষমতা এখন১৪ দশমিক ৩০ কোটি লিটার বেড়ে দৈনিক ৫০ কোটি লিটারে পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও বর্ষাকালে নদীর পানি সংরক্ষণের জন্য যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতিটি স্থানে পানির সংরক্ষণাগার রাখতে হবে, তা আবাসন বা শিল্প যাই হোক না কেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-২ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে