দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চতুর্থ দিনের মতো ফেরি চলাচল ব্যাহত
চতুর্থ দিনের মতো ঘন কুয়াশায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে কুয়াশায় ফেরি বন্ধ হয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে চালু হয়। এর আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ছোট-বড় ৪টি ফেরি মাঝ নদীতে দিক হারিয়ে আটকা পড়ে। দুর্ভোগের শিকার হন কয়েকশ’ মানুষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানিয়েছে, কুয়াশার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে টানা ৪দিন ধরে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সোমবার দিবাগত রাত থেকে চতুর্থ দিনের মতো ভারী কুয়াশা পড়তে থাকে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে ফেরিসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়। এক পর্যায়ে সামনের সামান্য দূরের কিছুই যখন দেখা যাচ্ছিল না, তখন দুর্ঘটনা এড়াতে রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে এই রুটে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তার আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো (বড়) ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, খানজাহান আলী, এনায়েতপুরী ও কেটাইপ (মাঝারি) ফেরি ফরিদপুর মাঝ নদীতে দিক হারিয়ে ঘুরপাক খেয়ে পরে নোঙর করতে বাধ্য হয়। রাতভর ফেরিগুলো মাঝ নদীতেই নোঙর করে ছিল।
বিআইডব্লিউটিসি আরও জানিয়েছে, এ সময় ফেরি ৪টিতে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী গাড়িসহ প্রায় ৮০টির মতো বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ছিল। কুয়াশা আর শীতে দুর্ভোগের শিকার হন অন্তত ৩ শতাধিক মানুষ। এ সময় দৌলতদিয়া প্রান্তে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, কেরামত আলী নামক দু’টি বড় ফেরি এবং রজনীগন্ধ্যা ও কবরী নামক দু’টি ছোট ফেরি নোঙর করে ছিল।
একইভাবে পাটুরিয়া প্রান্তে বীরশ্রেষ্ঠ হামীদুর রহমান, ভাষা শহীদ বরকত, ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা ও শাহ পরান নামক চারটি বড় ফেরি এবং হাসনা হেনা ও বনলতা নামক ২টি ছোট ফেরি নোঙর করে ছিল।
১১ মাস আগে
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ আবারও জেগে উঠেছে ডুবোচর, ফেরি চলাচল করছে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে জেগে ওঠা ডুবোচর খননের এক মাসে ফের ডুবোচর জেগে উঠেছে। এছাড়া উজানের বালুমাটি এসে চ্যানেলে পড়ে ভরাট হওয়ায় ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলাচল করছে।
এর আগে ডুবোচরের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার তিন কিলোমিটার নদী পাড়ি দিতে অতিরিক্ত দুই-তিন কিলোমিটার ঘুরতে হতো। যে কারণে ২৫-৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগতো প্রায় এক ঘন্টার মতো। প্রায় এক মাস আগে দুই হাজার ফুট লম্বা ও ৩০০ ফুট চওড়া করে ডুবোচর কেটে চ্যানেল তৈরি করে গত ২৩ জানুয়ারি খুলে দেয়া হয়। খননকৃত চ্যানেলে বালুমাটি পড়ে ভরাট হওয়ায় ও ডুবোচর জেগে উঠায় পাশাপাশি দুটি ফেরি আসা-যাওয়া করতে পারছে না। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরিগুলো চলাচল করছে। ফেরি মাস্টাররা দ্রুত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখার দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গোয়ালন্দে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করায় ৬ জেলের কারাদণ্ড
রো রো ফেরি শাহ জালাল-এর প্রধান মাস্টার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ফেরি চলাচলের সময় পাখার ঘূর্ণিপাকে বালুমাটি দুই পাশ থেকে ধসে চ্যানেলে পড়ছে। উজান থেকেও প্রতিনিয়ত রাতের তোড়ে বালুমাটি চ্যানেলে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দুই পাশে পানি কম থাকায় মার্কিং চিহৃ থাকলেও পাশাপাশি দুটি ফেরি আসা যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। পুনরায় দ্রুত খনন করা প্রয়োজন। নতুবা যে কোনো মুহূর্তে চ্যানেল বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দৌলতদিয়া চার নম্বর ফেরি ঘাট থেকে পাটুরিয়া ঘাট বরাবর প্রায় দেড় কিলোমিটার পরেই বিশাল ডুবোচর। বিশাল জায়গা জুড়ে জেগে ওঠা ডুবোচরের পাশ দিয়ে প্রায় এক মাস আগে তৈরি করা চ্যানেল দিয়ে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলছে। এতে আগের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে।
শুষ্ক মৌসুমে নদী পাড়ি দিতে সময় লাগতো ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। ডুবোচর এড়িয়ে দীর্ঘ পথ ঘুরে আসতে সময় লাগতো প্রায় এক ঘন্টা। চ্যানেল দিয়ে পাশাপাশি আসা যাওয়া করতে না পাড়ায় পাটুরিয়া থেকে ছাড়া ফেরি প্রায় দুই কিলোমিটার ভাটি ঘুরে দৌলতদিয়া আসতে সময় লাগছে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ১৫ মিনিট বেশি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আব্দুস সাত্তার বলেন, ডুবোচরের কারণে দুই-তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে ফেরি চলাচল করায় ড্রেজিং শেষে ২৩ ডিসেম্বর নতুন চ্যানেল খুলে দেয়া হয়। কিন্তু নতুন করে উজানে রাতের তোড়ে এবং ফেরির পাখার ঘূর্ণয়নে বালুমাটি চ্যানেলে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আমরা চ্যানেলটি ঠিক রাখতে বিআইডব্লিউটিএকে জানিয়েছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. মাসুদ রানা বলেন, এক মাসের বেশি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার ফুট লম্বা ও ৩০০ ফুট চওড়া মধ্যবর্তী ডুবোচর চ্যানেল তৈরি করা হয়। চ্যানেলের মাঝে পানির গভীরতা ছিল প্রায় ১৬ ফুট। চ্যানেলে বালুমাটি পড়ে ভরাট হলে নতুন করে ড্রেজিং করা হবে। এ জন্য তারা প্রস্তুত আছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: গোয়ালন্দে গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা!
গোয়ালন্দে গরুর দুধ নিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশু, বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
১ বছর আগে
ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তির শঙ্কা
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে প্রয়োজনের তুলনায় ফেরি ও ঘাট স্বল্পতা থাকায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ নিয়েই নৌযান পারাপার চলছে। এছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় এই দুটি ঘাটে বাড়তি চাপ পড়ছে।
ইতোমধ্যে প্রায় দুই মাস ধরে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে শত শত গাড়ির লাইন থাকছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজারো মানুষ। ফেরি ও ঘাট স্বল্পতার দ্রুত সমাধান করতে না পারলে আসন্ন ঈদযাত্রায় বাড়তি ভোগান্তিতে পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ
এদিকে সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের বিশেষ ব্যবস্থার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া ফেরি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২ বছর আগে