মো.আব্দুর রাজ্জাক
পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলাসহ উপকূলের পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো.আব্দুর রাজ্জাক।তিনি বলেন, এ অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিতে বছরে একটি মাত্র ফসল আমন ধান হয়; আর বাকী সময় পতিত থাকে। এ বিপুল পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে সরকার নিরলস কাজ করছে। ইতোমধ্যে দেশের বিজ্ঞানীরা উন্নত জাতের ধান, মুগ ডাল, তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। এসব জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।সোমবার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাকেরকাঠি ও নন্দপাড়া গ্রামে পতিত জমিতে বোরো ধান আবাদের ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবসে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাকেরকাঠি গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো পতিত জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। লো-লিফট পাম্পের (এলএলপি) মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করে কৃষকদেরকে চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। অনুষ্ঠানে কৃষকেরা লো-লিফট পাম্পের অভাব, খাল না থাকা ও পাওয়ার টিলার না থাকাকে জমি পতিত থাকার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হিসেবে মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য: কৃষিমন্ত্রীএ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, লো-লিফট পাম্প, খাল খনন-পুনঃখনন ও পাওয়ার টিলার সরবারহ করার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সম্পৃক্ত করে এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হবে।
তিনি বলেন, এটি করতে পারলে এসব এলাকার কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন আসবে। পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে। অন্যদিকে এক ফসলি জমি দুই-তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হবে। এর মাধ্যমে বরিশাল পুনরায় বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডারে পরিণত হবে।পরে দুপুরে কৃষিমন্ত্রী পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর ও করমজাতলা গ্রামে মুগ ডালের মাঠ পরিদর্শন করেন।
এসময় তিনি বলেন, পটুয়াখালী, ভোলাসহ এ অঞ্চলে মুগ ডালের সম্ভাবনা অনেক। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার কৃষকদেরকে উন্নতমানের বীজসহ সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বারি মুগ ডাল-৬ এর উৎপাদনশীলতা অনেক ভাল। বিঘাতে ৫-৬ মণ। এ বছর শুধু পটুয়াখালী জেলাতেই প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল চাষ হয়েছে। আর পটুয়াখালী ও ভোলা দুই জেলা মিলে বছরে দুই লাখ টন মুগ ডাল উৎপাদন হয়। এই মুগ ডালের চাষকে আরও ছড়িয়ে দেয়া হবে।মুগ ডালের মাড়াই সমস্যা সমাধানের জন্য যন্ত্র দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা মাড়াইযন্ত্র তৈরি করেছে, যার দাম ৬০-৭০ হাজার টাকা। আগামী বছর ভর্তুকি মূল্যে এ যন্ত্র কৃষকদের দেয়া হবে। এর ফলে দাম পড়বে ২৫-৩০ হাজার টাকা। এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কম পড়বে ও তারা লাভবান হবেন।
অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
দেশে খাদ্য সংকটের বিএনপির আশা পূরণ হবে না: কৃষিমন্ত্রী
২ বছর আগে