রনিল বিক্রমাসিংহে
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
দেউলিয়া অবস্থার মধ্যেই শ্রীলঙ্কায় শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ নাগরিক ক্রুদ্ধ ও উদ্বিগ্ন এবং তারা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার মতো অবস্থায় নেই।
দেশটির অনেক বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মযাজক রাজধানীতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
অনেক মানবাধিকার কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকও তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে স্বাধীনতা বার্ষিকী উদযাপনকে অর্থের অপচয় হিসেবে অভিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, সমালোচনা সত্ত্বেও সশস্ত্র সৈন্যরা কলম্বোর প্রধান এসপ্ল্যানেড বরাবর প্যারেড করে, নৌবাহিনীর জাহাজ সমুদ্রে যাত্রা করার সময় ব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শন করে এবং হেলিকপ্টার ও বিমানগুলো শহর প্রদক্ষিণ করে।
ক্যাথলিক ধর্মযাজক রেভ. সিরিল গামিনি ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার স্মরণে এই বছরের অনুষ্ঠানকে একটি ‘অপরাধ ও অপচয়’- বলে অভিহিত করেছেন, দেশ যখন এমন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যদিয়ে হচ্ছে।
গামিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই যে তারা ২০০ মিলিয়ন রুপি (৫৪৮ হাজার ডলার) খরচ করে গর্বের সঙ্গে কোন স্বাধীনতা উদযাপন করতে যাচ্ছে?’
তিনি আরও বলেন, ক্যাথলিক চার্চ উৎসব উদযাপনে জনসাধারণের অর্থ ব্যয় করাকে ক্ষমা করে না এবং কোনও যাজক সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ শ্রীলঙ্কার ২২ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে প্রায় ৭ শতাংশ খ্রিস্টান, যাদের বেশিরভাগই ক্যাথলিক। সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও দেশটিতে চার্চের মতামতকে সম্মান করা হয়।
বিশিষ্ট বৌদ্ধ সন্ন্যাসী রেভ. ওমালপে সোবিথা বলেন, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের কোনো কারণ নেই এবং অনুষ্ঠানটি অন্য দেশে তৈরি অস্ত্রের প্রদর্শনী মাত্র।
শ্রীলঙ্কা কার্যকরভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনায় কোনো সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত, এই বছর প্রায় ৭ ডলার বিলিয়ন বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে।
দেশটির মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫১ ডলার বিলিয়ন ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে ২৮ বিলিয়ন ডলার ২০২৭ সালের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারি থেকে উদ্ভূত দীর্ঘস্থায়ী সংকটগুলোর শীর্ষে স্বল্পমেয়াদি ঋণ এবং পরিশোধে গুরুতর ভারসাম্য সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যেমন- জ্বালানি, ওষুধ ও খাদ্য।
ঘাটতির কারণে গত বছর দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখা দেয়; যা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে দেশ ছেড়ে পালাতে এবং পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের অধীনে অর্থনৈতিক অবস্থার কিছুটা উন্নতির লক্ষণ দেখা গেছে। কিন্তু জ্বালানির ঘাটতির কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে, হাসপাতালগুলোতে ওষুধের ঘাটতি রয়েছে এবং কোষাগার সরকারি কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে লড়াই করছে।
অর্থনৈতিক সংকট জনগণকে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত করে তুলেছে।
দেশের ব্যয় পরিচালনার জন্য সরকার আয়কর দ্রুত বৃদ্ধি করেছে এবং এই বছর প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দকৃত তহবিল ৬ শতাংশ কমানোর ঘোষণা করেছে।
এছাড়াও, দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের কারণে গড়ে ওঠা দুই লাখেরও বেশি সদস্যের সামরিক বাহিনীর আকার, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় অর্ধেক হ্রাস পাবে।
সরকারের স্বাধীনতা উদযাপন এবং অর্থনৈতিক বোঝা কমাতে ব্যর্থতার নিন্দা জানিয়ে শুক্রবার রাজধানীতে একদল নেতাকর্মী নীরব বিক্ষোভ শুরু করেন।
১ বছর আগে
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে
ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার দেশটির সংসদের এমপিরা ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করেন।
এর আগে গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত দেশটিতে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে মে মাসে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
তবে গোতাবায়া রাজাপাকসে গত সপ্তাহে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এবং ইমেলের মাধ্যমে পদত্যাগ করার পর বিক্রমাসিংহে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন।
৭৩ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহে একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ যার কূটনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে একটি অর্থনৈতিক বেলআউট প্যাকেজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রনিল বিক্রমাসিংহে পেয়েছেন ১৩৪ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা পেয়েছেন ৮২ ভোট।
পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ: স্পিকার
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মনোনয়নপত্র গ্রহণে প্রস্তুত শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্ট
২ বছর আগে
শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি
শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মধ্যেই দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে।
বিক্রমাসিংহের জারি করা জরুরি ডিক্রিতে জননিরাপত্তা অধ্যাদেশের এমন ধারাগুলোকে উল্লেখ করা হয়েছে; যা তাকে জননিরাপত্তার স্বার্থে, জনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিদ্রোহ দমন, দাঙ্গা বা নাগরিক উত্তেজনা বা প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে নিয়ম-কানুন আরোপ করার অনুমতি দেয়।
জরুরি নিয়ম-কানুনের অধীনে বিক্রমাসিংহে যে কাউকে আটকের অনুমোদন দিতে পারেন, যেকোন সম্পত্তির দখল নিতে পারেন এবং যেকোন জায়গা তল্লাশি করতে পারেন। এমনকি তিনি যেকোনো আইন পরিবর্তন বা স্থগিতও করতে পারেন।
বিক্রমাসিংহে এমন সময় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন যখন তার পদত্যাগের দাবিতে দেশের বেশিরভাগ জায়গায় বিক্ষোভ চলছে। এমনকি বিক্ষোভকারীরা তার কুশপুত্তলিকা পর্যন্ত পোড়াচ্ছে।
এর আগে রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেন তার পূর্বসূরী গোতাবায়া রাজাপাকসে।
আগামী দুই দিন পরেই দেশটির আইন প্রণেতারা নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। শনিবার থেকে আইনপ্রণেতারা রাজাপাকসের বাকি মেয়াদের জন্য নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। মঙ্গলবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য মনোনয়নের শুনানি হবে এবং একাধিক প্রার্থী থাকলে বুধবার আইন প্রণেতারা ভোট দেবেন।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত, যা তার রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সূত্রপাত করেছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আইনপ্রণেতাদের বৈঠক
শ্রীলঙ্কার ২২ মিলিয়ন মানুষের জন্য খাদ্য, সার, ওষুধ ও জ্বালানির মতো মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানির জন্য অর্থের অভাব রয়েছে। এর ফলে দেশটির নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে মধ্যবিত্ত মানুষেরাও পথে নামতে বাধ্য হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য ঋণদাতাদের কাছ থেকে সাহায্য চাইছে।
কিন্তু এসব গোষ্ঠীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রীলঙ্কার আর্থিক অবস্থা এতটাই দুর্বল যে এমনকি বেলআউট পাওয়াও কঠিন হয়ে গেছে।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। এপ্রিলে অনেক মন্ত্রী পদত্যাগ করলেও প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
রাজধানী কলম্বো ছিল বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু। যেখানে বিক্ষোভকারীরা ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে দখল করে রেখেছে।
বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসে ও তার শক্তিশালী রাজনৈতিক পরিবারের বিরুদ্ধে সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ পাচারের এবং অর্থনীতির অব্যবস্থাপনা করে দেশের পতন ঘটানোর করার অভিযোগ তোলে।
তার পরিবার দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে স্বীকার করেছেন যে তার কিছু নীতি শ্রীলঙ্কার বিপর্যয়ে ইন্ধন জুগিয়েছে।
রাজাপাকসে বুধবার পালিয়ে প্রথমে মালদ্বীপে এবং পরে সিঙ্গাপুরে যান।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে
ইমেইল পাঠিয়ে পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
২ বছর আগে
শ্রীলঙ্কায় নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
শ্রীলঙ্কার নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছে। বুধবার তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা কলম্বোয় তার কার্যালয়ে হামলা করেছে।
এর আগে বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের বাড়ি ও অফিস দখল করে। এদিন একটি সামরিক জেটে করে গোতাবায়া মালদ্বীপ পালিয়ে যান এবং বিদেশে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন।
দায়িত্ব পাওয়ার পর বিক্রমাসিংহে দ্রুত দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। যাতে করে দেশটিতে চলমান বিক্ষোভ বন্ধ করা যায়।
তবে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিক্রমাসিংহের নিয়োগ কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে শান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে গোতাবায়া রাজাপাকসে বুধবার পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ: স্পিকার
এ বিষয়ে সংসদের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্দেনা বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি অবিলম্বে তা (পদত্যাগ)করবেন। যদি তিনি পদত্যাগ করেন তাহলে ২০ জুলাই পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেও পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে নতুন সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকবেন।
ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের সর্বশেষ মেয়াদটি ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। গত মে মাসে রাজাপাকসে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন; এই আশায় যে অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ তার কূটনীতি ও যোগাযোগ দক্ষতা দিয়ে ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করবেন। কিন্তু জ্বালানি, ওষুধ ও রান্নার গ্যাসের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় এবং তেলের মজুত কমে যাওয়ায় জনগণের ধৈর্য্য কমে যায়।
দেশটি ভারত ও অন্যান্য দেশের সাহায্যের ওপর নির্ভর করে টিকে আছে। দেশটির নেতারা এখনও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে একটি বেলআউট নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন৷
কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ দুই দশকের বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কাকে শাসন করা রাজাপাকসের রাজনৈতিক রাজবংশকে ভেঙে দিয়েছে। এই পরিবারের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর গত মে মাসে প্রেসিডেন্টের বড় ভাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। নিরাপত্তার স্বার্থে তখন তাকে একটি নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা
অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগ
২ বছর আগে
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ: স্পিকার
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। বুধবার লঙ্কান পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্দেনা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে স্পিকার বলেন, রাজাপাকসে দেশ থেকে দূরে থাকায় সংবিধান অনুযায়ী বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা
২ বছর আগে
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে
শ্রীলঙ্কার পাঁচবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শপথ নেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের বাসভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের সামনে শপথ নেন বিক্রমাসিংহে।
বিক্ষোভকারীরা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রবেশপথ অবরোধ করে রেখেছে।
প্রেসিডেন্টের ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে যায়।
বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার ঢেউ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ বুধবার রাজধানীর রাস্তায় সাঁজোয়া যান ও সেনা মোতায়েন করেছে। এ পর্যন্ত রাজাপাকসে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ৯জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় দেশব্যাপী শুরু হওয়া কঠোর কারফিউ সত্ত্বেও অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর অব্যাহত থাকায় নিরাপত্তা বাহিনীকে সহিংসতায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার ভাইয়ের পদত্যাগ দাবি করে আসছে।
আরও পড়ুন: রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হবেন: দলীয় কর্মকর্তা
শ্রীলঙ্কা প্রায় দেউলিয়া এবং চলতি বছর বকেয়া সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে দেশটি।
আইএমএফ বলেছে যে কোনও স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা ঋণ পুনর্গঠনের বিষয়ে ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। শ্রীলঙ্কাকে বর্তমান মোট ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ২০২৬ সালের মধ্যে কমপক্ষে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি মাসের শুরুতে বলেছিল, দেশের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক রিজার্ভ মাত্র ২৫ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির ফলে আমদানি হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে জ্বালানি, রান্নার গ্যাস, খাদ্য ও ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে নাগরিকেরা প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, এদের মধ্যে অনেকেই খালি হাতে ফিরেছেন।
নির্বাচিত হলে বিক্রমাসিংহে সম্ভবত প্রেসিডেন্টের কাছে নিয়োগের জন্য মন্ত্রিসভার একটি তালিকা উপস্থাপন করবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বা নতুন মন্ত্রিসভার বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকলে আইনপ্রণেতারা হাউস স্পিকারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিতে পারেন। তারপর প্রস্তাবটি নিয়ে বিতর্ক এবং ভোট হবে।
৭৩ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহে ৪৫ বছর ধরে সংসদে রয়েছেন। তার ব্যাপক আন্তর্জাতিক সংযোগ রয়েছে এবং একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।
তার রাজনৈতিক দল ২০১৯ সালে নেতৃত্বের সঙ্কটের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ সিনিয়র সদস্য মিলে একটি নতুন দল গঠন করে; বর্তমানে্ এ দলটিই দেশের প্রধান বিরোধী দল।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় চলতি সপ্তাহে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ
শ্রীলঙ্কায় সহিংসতাকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ
২ বছর আগে
রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হবেন: দলীয় কর্মকর্তা
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে দেশটির পাঁচবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
বৃহস্পতিবার দলটির একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) একজন কর্মকর্তা ভাজিরা আবেওয়ার্দেনা বলেছেন, ‘তিনি আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। কারণ পার্লামেন্টের বেশ কয়েকজন সদস্য তাকে দায়িত্ব নিতে এবং দেশের সমস্যা সমাধান করতে বলেছেন।’
আবেওয়ার্দেনা বলেন, ২২৫-সদস্যের সংসদে ১৬০ জনেরও বেশি আইনপ্রণেতা বিক্রমাসিংহের নির্বাচনকে সমর্থন করেন। তবে এসব তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেন নি।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় কারফিউ উপেক্ষা করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত
রাজাপাকসে যদি বিক্রমাসিংহেকে নির্বাচন করেন; তাহলে এটিকে সঙ্কটের কারণে সৃষ্ট সহিংসতার অবসান এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
প্রেসিডেন্টের ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে যায়।
বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার ঢেউ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ বুধবার রাজধানীর রাস্তায় সাঁজোয়া যান ও সেনা মোতায়েন করেছে। এ পর্যন্ত রাজাপাকসে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ৯জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় দেশব্যাপী শুরু হওয়া কঠোর কারফিউ সত্ত্বেও অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর অব্যাহত থাকায় নিরাপত্তা বাহিনীকে সহিংসতায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার ভাইয়ের পদত্যাগ দাবি করে আসছে।
শ্রীলঙ্কা প্রায় দেউলিয়া এবং চলতি বছর বকেয়া সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে দেশটি।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগ
আইএমএফ বলেছে যে কোনও স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা ঋণ পুনর্গঠনের বিষয়ে ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। শ্রীলঙ্কাকে বর্তমান মোট ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ২০২৬ সালের মধ্যে কমপক্ষে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি মাসের শুরুতে বলেছিল, দেশের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক রিজার্ভ মাত্র ২৫ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির ফলে আমদানি হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে জ্বালানি, রান্নার গ্যাস, খাদ্য ও ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে নাগরিকেরা প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, এদের মধ্যে অনেকেই খালি হাতে ফিরেছেন।
নির্বাচিত হলে বিক্রমাসিংহে সম্ভবত প্রেসিডেন্টের কাছে নিয়োগের জন্য মন্ত্রিসভার একটি তালিকা উপস্থাপন করবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বা নতুন মন্ত্রিসভার বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকলে আইনপ্রণেতারা হাউস স্পিকারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিতে পারেন। তারপর প্রস্তাবটি নিয়ে বিতর্ক এবং ভোট হবে।
৭৩ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহে ৪৫ বছর ধরে সংসদে রয়েছেন। তার ব্যাপক আন্তর্জাতিক সংযোগ রয়েছে এবং একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।
তার রাজনৈতিক দল ২০১৯ সালে নেতৃত্বের সঙ্কটের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ সিনিয়র সদস্য মিলে একটি নতুন দল গঠন করে; বর্তমানে্ এ দলটিই দেশের প্রধান বিরোধী দল।
আরও পড়ুন: রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব শ্রীলঙ্কার বিরোধীদলের
২ বছর আগে