স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়
সিলেটে করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু
সিলেটে করোনাভাইরাসে ২৪ ঘন্টায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: একদিনে বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১১৬
তারা জানায়, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টার মধ্যে সিলেটে দুই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
এ নিয়ে বিভাগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৫৫ জনে।
মৃতদের মধ্যে ওসমানী হাসপাতালে ১২৩ জনসহ সিলেটের এক হাজার ৫৯ জন রয়েছেন। এছাড়া সুনামগঞ্জের ৭৫ জন, মৌলভীবাজারের ৭২ জন এবং হবিগঞ্জের ৪৯ জন মারা গেছেন।
সবমিলিয়ে সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা এখন ৬৭ হাজার ৮৫৯ জন। এদের মধ্যে ৬৬ হাজার ৩১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: করোনায় আরও ৪ মৃত্যু, শনাক্ত ৩৫০
করোনায় আরও ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৫.৩৮ শতাংশ
২ বছর আগে
বন্যা শেষে সিলেটে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির পর সিলেট ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ডায়রিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা।
সিভিল সার্জন সিলেট অফিস সূত্র জানায়, সিলেটে ১৭ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত সিলেটে ৪০০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া চর্মরোগ ও শ্বাসতন্ত্র জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৫০ জন। দিন দিন পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে ডায়রিয়া আক্রান্ত নারীর মৃত্যু
সূত্র জানায়, কয়েকদিনে সিলেটে ডায়রিয়ার প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। গত ১৭ মে থেকে ২২ মে রবিবার পর্যন্ত ১১৪ জন ডায়রিয়ার রোগী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ৩ দিনে তা ৫৫০ জনে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জেলায় ১৪০টি এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে তিনটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে সর্বোচ্চ ১৬টি করে মেডিকেল টিম রয়েছে। এছাড়া কানাইঘাটে ১২, জৈন্তাপুরে ১১, বিশ্বনাথে ১১, গোয়াইনঘাটে, জকিগঞ্জে, সদর ও ফেঞ্চুগঞ্জে ১০টি করে, ওসমানীনগরে ৯, দক্ষিণ সুরমায় ৮, বালাগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জে ৭টি করে টিম কাজ করছে। এর বাইরে জেলা শহরের জন্য তিনটি টিম রাখা হয়েছে।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মে জয় শংকর দত্ত বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে জেলায় ৪৫০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি চর্মরোগসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চর্মরোগ নিয়ে অনেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তবে ডায়রিয়া ছাড়া অন্যান্য রোগের রিপোর্টিং এখনো পুরোপুরিভাবে নেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রিপোর্টিং করা হচ্ছে। সিলেটে বন্যাপরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য পরিস্থিতির তেমন অবনতি ঘটছে না। আমাদের মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের তিনটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এছাড়াও ওয়ার্ড ভিত্তিক স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন চালু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা প্রতিদিন ওয়ার্ড ভিত্তিক স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন করবো। যা আগামী ১৫ দিন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, নগরীর বন্যা কবলিত প্রধান সমস্যা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি আর বস্তি এলাকার মানুষ বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এদিকে বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে নগরীতে এক লাখ ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিনই যে এলাকায় যাচ্ছে পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেট বিতরণ করছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, সিলেটে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগী বাড়ছে। তবে আতঙ্কজনক পর্যায়ে নয়। গ্রামীণ জনপদ নিয়ে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই। তবে সিটি করপোরেশন নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। কারণ নগরীর যেসব এলাকা পানিতে তলিয়েছে এর একটা বিশাল জনগোষ্টী বস্তিবাসী। এই নিম্ন আয়ের মানুষই বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, আগের ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ১৮৩ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবারের রিপোর্টে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭১ জনে। হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর কোন চাপ নেই। ওসমানী হাসপাতালে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত কিছু রোগী থাকলেও তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। নগরীর শাহী ঈদগাহের সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগীর কোন চাপ নেই। সব মিলিয়ে সিলেটের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুব একটা খারাপ বলা যাবে না।
আরও পড়ুন: ডায়রিয়া: শয্যা সংকট, মানিকগঞ্জে মেঝেতে চলছে চিকিৎসা
ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিশুদ্ধ পানি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের উদ্যোগে চারটি ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে একটি, মোট পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ পানি বিশুদ্ধকরণ মেশিন বর্তমানে কাজ করছে। ইতোমধ্যে নগরীতে দুটি মেশিন বিশুদ্ধ পানি দিতে কাজ করছে। একটি মেশিন ঘণ্টায় ৫০০ লিটার পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারে। আর একটি মেশিন সুনামগঞ্জে রাখা হয়েছে। অপর দুটি মেশিন সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলা এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কাজ করছে।
২ বছর আগে