জোনায়েদ সাকি
জোনায়েদ সাকির ওপর হামলায় বিএনপির নিন্দা
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এটি একটি নারকীয় হামলা এবং ইতিহাসে কলঙ্ক হিসেবে থাকবে।’
মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে হাসপাতালে গিয়ে হামলার শিকার হন সাকি। এ ধরনের হামলা কেবল কাপুরুষের পক্ষেই সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘এই হামলা সভ্যতা ও মানবিক মূল্যবোধ বিরোধী। সরকার সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে যে দেশ চালাতে চায়, আজকের (গতকাল) ঘটনা তারই প্রমাণ।’
আরও পড়ুন: চমেকে জোনায়েদ সাকির ওপর ছাত্রলীগের হামলা
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের সব ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর কৌশলও এই হামলা।
সাকির ওপর হামলার মধ্য দিয়ে ‘পৈশাচিক নাৎসিবাদ’ আরও তীব্রভাবে প্রকাশ পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফখরুল বলেন, সরকার সমর্থিত সন্ত্রাসীদের রক্তাক্ত ছোবল থেকে নিস্তার পাচ্ছে না বিরোধী দল ও মতের মানুষেরা। এটা কীসের আলামত? ভোট, গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ বিরোধী শক্তিকে আক্রমণ করে ধ্বংস করতে তাদের অপচেষ্টা থেমে নেই। সরকার তাদের সব শক্তি দিয়ে একের পর এক অশুভ পরিকল্পনা এঁটে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে জোনায়েদ সাকির ওপর আক্রমণ করে তাঁকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এখন তাদের প্রতিহত করার সময়।’
‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে রাজপথে ব্যারিকেড দিয়ে ‘অবৈধ’ সরকারকে পরাজিত করতে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফায়ারম্যান সাকিলের দাফন সম্পন্ন
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি জোনায়েদ সাকির ওপর আওয়ামী ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সহিংস হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তার দ্রুত সুস্থত কামনা করছি।’
হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর হামলায় সাকিসহ তার দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২ বছর আগে
গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘যুগপযোগী’ আন্দোলনে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে ঐক্যমতে পৌঁছেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা রাজনৈতিক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের সকল জনগণ ও রাজনৈতিক দলকে একত্রিত করে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসনকে উৎখাত করে জনগণের সত্যিকারের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়েও একমত হয়েছি।’
আরও পড়ুন: ভয়-ভীতি আমাদের দমন করতে পারবে না: ফখরুল
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারলে দেশে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
তিনি বলেন, উভয় দল বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, নির্বাচন পরিচালনার পর নিরপেক্ষ প্রশাসনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন ইত্যাদি ব্যাপারেও একমত হয়েছেন।
জোনায়েদ সাকির অনুসরণে তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে দেশের রাজনীতিতে কিছু মৌলিক বিষয় আসা দরকার। জোনায়েদ সাকি এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে মৌলিক কিছু পরিবর্তন এবং সংবিধানের সংশোধন প্রয়োজন। আমি আশা করি আমরা আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জাতীয় সরকারের ফর্মুলার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সরকার গঠন করা হবে। যারা নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে নির্বাচনে জয়ী হবে।
আরও পড়ুন: অর্থপাচারকারীদের জন্য সরকারের দায়মুক্তির পরিকল্পনার সমালোচনা বিএনপির
তিনি বলেন, গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে তাদের আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে এবং অন্যান্য দলের সঙ্গেও এ ধরনের আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
ফখরুল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়াকে আমরা খুব দ্রুত শেষ করে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব এবং কার্যকর বিরোধী শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে পারব। জনগণের সংসদ ও সরকার গঠনে আমরা আশাবাদী।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি এবং ৩৫ লাখ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অন্য সব রাজনৈতিক দলও তাদের দলের দাবির সঙ্গে একমত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বৃহত্তর আন্দোলনে শক্তিশালী ঐক্য গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হাতিরপুলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে যোগ দেন।
সাত দলের সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম 'গণতন্ত্র মঞ্চ' গঠন নিয়ে জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই বিএনপি তাদের অন্যতম সম্ভাব্য গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
আরও পড়ুন: আ.লীগের নেতারা মাথা নত করে দেশ ছাড়বেন: ফখরুল
গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে দলটির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আক্তার প্রমুখ।
২৪মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে প্রথম বৈঠকের মাধ্যমে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।
তিন দিন পর দলটি ২০ দলীয় জোটের অন্যতম অংশ লেবার পার্টির সঙ্গেও সংলাপ করে বিএনপি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
২ বছর আগে