জোবাইদা রহমান
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার দুই-তিন মিনিটের মাথায় আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা স্লোগান নিয়ে দক্ষিণ হলে প্রবেশ করে। এ সময় বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করে। এসময় আ. লীগ সমর্থক আইনজীবীরা হলরুম থেকে বের হয়ে যান।
এরপর শুরু হয় সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা স্লোগান দিয়ে হল ত্যাগ করেন। তারা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দিয়ে স্লোগান দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় এবং তা অন্তত ১০ মিনিট চলে।
আরও পড়ুন: সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
পরে সমিতির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। তারা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে। এ ব্যাপারে মামলা করা হবে।’
এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা যখন আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা চালায়, তখন আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারা আরও আগ্রাসী আচরণ করে।’
সচিবের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘তারা নিজেরাই কক্ষ ভাঙচুর করে এখন আমাদেরকে দোষারোপ করছে।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি: সুপ্রিমকোর্টের এফিডেভিড শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একযোগে বদলি
তারেক-জুবাইদার বিচারের রায় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে
তারেক-জোবায়দার দেশের বাইরে থেকে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, পলাতক থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের আইনি লড়াই করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমাদের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোর্টে হাজির না হয়ে আইনি লড়াই করার কোনো নজির নেই। করোনার সময়ে দুই ভাই (রণ হক শিকদার) দেশের বাইরে থেকে জামিন আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্ট তাদের জামিন শোনেননি। উল্টো দেশের বাইরে থেকে জমিন আবেদন করায় আদালত তাদের জরিমানা করেছিলেন। তাই পলাতক থেকে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানেরও আইনি লড়াই করার সুযোগ নেই।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পলাতক হওয়ায় তাদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করে আইনি লড়াই করার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও আইন অনুযায়ী কখনো কোনো পলাতক ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ না করে কোনো ধরনের আইনগত প্রতিকার চাইতে পারেন না।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এই মামলাটি করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা, অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ২৯ মার্চ এ মামলায় পলাতক তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নিতে আবেদন করেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। দুজনের পক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শুনানিতে অংশ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এই আইনজীবী।
তবে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তাদের আইনের আশ্রয় নিতে কে নিষেধ করেছে? তিনি (তারেক রহমান) থাকবেন লন্ডনে রাজকীয় ভবনে, আর বলবেন তাকে আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত (অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকলে) থাকার পরও তারা আইনজীবী নিয়োগের আবেদন আদালতের সময় নষ্ট ও আদালত অবমাননার সমান।
দুদকের এই আইনজীবী আরও বলেন, এর আগে আপিল বিভাগ তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের আবেদন খারিজ করে বিচারিক আদালতে আশ্রয় লাভের নির্দেশ দেন। তারা তা করেননি। নতুন একটা আবেদন নিয়ে এসেছেন। তাই তাদের আবেদন খারিজ করে অভিযোগ শুনানি শুরু করার প্রার্থনা করেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান শুনানি নিয়ে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের পক্ষে আইনজীবী থাকবে কি না এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।
১ বছর আগে
তারেক-জোবাইদা পলাতক কি না, জানা যাবে ২৬ জুন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান পলাতক কি না এবং তাদের পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবেন কি না-এমন প্রশ্নে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত জানা যাবে আগামী ২৬ জুন।
সোমবার তৃতীয় দিনের মতো শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ রায়ের ওই দিন ধার্য করেন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও হিসাববিবরণীতে সম্পদ গোপন করার অভিযোগে করা মামলা দায়ের ও এর প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে তারেক ও তার স্ত্রী জোবাইদা ১৫ বছর আগে হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট করেন। তখন হাইকোর্ট রুল দিয়েছিলেন। রুল শুনানির জন্য তারেক রহমানের করা দুটি রিট ও জোবাইদা রহমানের করা একটি রিট গত ২৯ মে হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে।
সেদিন পলাতক তারেক রহমানের পক্ষে আইনজীবী সময়ের আরজি জানাতে পারেন কি না-তা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন দুদকের আইনজীবী। এরপর ৫ জুন তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান পলাতক কি না এবং তাদের পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবেন কি না-এমন প্রশ্নে শুনানি হয়। এরপর ১২ জুন ও আজ (১৯ জুন) শুনানি হয়।
আদালতে তারেক-জোবাইদার রিটের বিষয়ে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে অংশ নেন।
শুনানিতে অংশ নিয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, তিনটি মামলায় তারেক রহমান দণ্ডিত হয়েছেন। তার সাজাপরোয়ানা এখনো ঝুলছে। যদি তিনি দণ্ডিত না হতেন আর মামলাগুলোর বিচার শেষ না হতো, তাহলে ভিন্ন কথা। তারেক রহমান এ মামলায় পলাতক। একই মামলা বাতিল চেয়ে জোবাইদা রহমানের করা আবেদনের ওপর সর্বশেষ আপিল বিভাগ গত ১৩ এপ্রিল রায় দেন। এই রায়ে আপিল বিভাগ বলে দিয়েছেন, জোবাইদা রহমান পলাতক। পলাতক বলে তাদের পক্ষে আইনজীবী শুনানি করতে পারেন না।
পড়ুন: তারেক-জোবায়দার দুর্নীতি মামলার রুল শুনানি ৫ জুন
অন্যদিকে, তারেক ও জোবায়দার বিষয়ে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মামলাটি ভ্রূণ অবস্থায়। এখনো অভিযোগ আমলে নেয়া হয়নি। তাই আত্মসমর্পণ করার পর্যায়ে আসেনি। জোবাইদা রহমানের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হবে, তাই এ বিষয় নিয়ে বলছি না। তবে তারেক রহমান যখন রিট করেন, তখন তিনি পলাতক ছিলেন না। কোনো মামলায় কেউ দণ্ডিত হলে বিচারাধীন অপর মামলায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পলাতক হয়ে যাবেন-এমন নজির দেখছি না। তারেক রহমান এ মামলায় জামিন পেয়েছেন, যা আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন। তাই এ মামলায় তাকে পলাতক বলা যাবে না।’
এর আগে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আপিল বিভাগ রায়ে বলে দিয়েছেন, জোবায়দা রহমান পলাতক। এ মামলায় পলাতক হিসেবে বিবেচিত হবেন। ওই মামলা বাতিল আবেদনে ২০০৮ সালের ৭ এপ্রিল জোবায়দা হাইকোর্টে হাজির হন। পরদিন হাইকোর্ট রুল ও স্থগিতাদেশ দেন। এমন চর্চা করা যাবে না বলে রায়ে বলেছেন আপিল বিভাগ।
একই মামলা নিয়ে রিট ও বাতিল আবেদন করা যাবে না। আট সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের অংশবিশেষ বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের রায়ের রিভিউ চাইতে হলে তাকে (জোবাইদা) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এ অবস্থায় আপিল বিভাগের রায় কার্যকর থাকবে। রিট ও বাতিল আবেদনের পরিণতি একই হবে। আপিল বিভাগের অভিমত অনুসারে পলাতক জোবাইদার পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবেন না।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে বলেন, এ মামলায় তারেক রহমানকে ২০০৭ সালের ৩১ অক্টোবর গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর হয়। রিট দুটির একটিতে লেটার অব অথরিটি (ক্ষমতা অর্পণপত্র) দেয়া হয়েছে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এবং অন্যটিতে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর, অর্থাৎ গ্রেপ্তার দেখানোর আগে। এখন তিনি পলাতক।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে মামলার কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করে তারেক ও জোবাইদা এবং সম্পদের হিসাব চেয়ে দেয়া নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে তারেক রহমান একটি রিট করেন।
পড়ুন: ১৫ বছর পর তারেক-জোবায়দার রিট মামলা চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য
২ বছর আগে
পলাতক আসামির মামলা শুনে ভুল করেছেন হাইকোর্ট
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা বাতিল চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে তাকে শুরু থেকেই পলাতক ঘোষণা করে বলা হয়েছে, পলাতক আসামির মামলা শুনে হাইকোর্ট আইনানুযায়ী ভুল করেছে। একই সঙ্গে সংবিধান বহির্ভূতভাবে জোবাইদাকে দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত সুবিধা।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ জোবাইদা রহমানের লিভ টু আপিল খারিজ করে সংক্ষিপ্ত রায় দেন।
বুধবার আপিল বিভাগ ওই রায়ের ১৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন। রায়টি লিখেছেন বিচারপতি বোরহানউদ্দিন। রায়ে একমত পোষণ করেছেন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
রায়ে বলা হয়েছে, দুর্নীতির মামলায় জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়নি বিচারিক আদালত। যেখানে অভিযোগ আমলে নেয়নি সেখানে কি করে উনি মামলা বাতিল চেয়ে ৫৬১ক ধারায় আবেদন করেছেন। আর যখন আবেদনটি করেছেন তখন উনি আইনের দৃষ্টিতে পলাতক। আইনের দৃষ্টিতে একজন পলাতক ব্যক্তির করা ওই আবেদন শুনে মামলার বিচার কাজ স্থগিতের পাশাপাশি রুল জারি করেছে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। আমরা মনে করি হাইকোর্টের এ ধরনের আদেশ প্রদান আইনানুযায়ী সঠিক ছিল না। কারণ আইনের দৃষ্টিতে পলাতক ব্যক্তির আইনি প্রতিকার চাওয়ার কোন সুযোগ নেই। দুর্নীতির মামলা বাতিলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ক ধারায় করা তার আবেদন শুনে ও আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট আইনানুযায়ী ভুল করেছে।
পড়ুন: চট্টগ্রামে দুই বোনকে এসিড নিক্ষেপ, ভাই-বোনের যাবজ্জীবন
আপিল বিভাগ রায়ে আরও বলেছে, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে ও পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় না নিয়ে বিচার কাজ পরিচালনার শপথ নিয়েছেন। যে কোন পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগ এই নীতিতে অবশ্যই অটল থাকবে। বিচার বিভাগ এমন কোন নজির সৃষ্টি করবে না যা সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রায়ে আপিল বিভাগ বলেছে, প্রত্যোক নাগরিকের আদালত থেকে সমান বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছেন। কারণ আইনের দৃষ্টিতে কেউ বড় বা ছোট নয়, সকলেই সমান।
এ রায়ের ব্যাপারে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আত্মসমর্পণ না করেই মামলা বাতিল চেয়ে সরাসরি এ ধরণের একটি আবেদন হাইকোর্টে করা নজিরবিহীন। আপিল বিভাগ একটি কথা বার বার বলেছেন, ফিউজিটিভ ফোরাম জাস্টিস। আইনের দৃষ্টিতে তিনি প্রথম থেকেই পলাতক। যেদিন মামলা বাতিল আবেদনের এফিডেভিট দাখিল করেছেন, সেদিনও উনি পলাতক ছিল। একজন পলাতক আসামি কিভাবে এই মামলা দায়ের করলেন, এরপর হাইকোর্ট কিভাবে এই মামলাটি গ্রহণ করলো এবং শুনলো তা নিয়ে আপিল বিভাগ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আপিল বিভাগ সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা করে বলেছেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। সবাই সমান অধিকার লাভের অধিকারী হলেও জোবাইদা রহমানকে অতিরিক্ত সুবিধা সুবিধা দেওয়া হয়েছে। যে কারণে সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হয়েছে এবং হাইকোর্টের একটি খারাপ নজির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ আরও বলেছেন হাইকোর্ট বিভাগ সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে। কোন ব্যক্তি/আসামি পলাতক হলে কোন রিট, ফৌজদারি মামলা বা কোন আইনগত পদক্ষেপই নিতে পারেন না আত্মসর্পণ করা ছাড়া। কিন্তু হাইকোর্ট আইন বহির্ভূতভাবে জোবাইদা রহমানকে বেশি সুবিধা দিয়ে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছরে জোবাইদা রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে জোবাইদা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই বছর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল আবেদন করেন জোবাইদা রহমান। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ জোবাইদা রহমানের আবেদন খারিজ করে রায় দেন। প্রকাশিত রায়ে, জোবাইদা রহমান পলাতক ঘোষণা করার পাশাপাশি তাকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের যে আদেশ হাইকোর্ট দিয়েছিলেন, সেটাও বাতিল করেছেন।
আইনজীবীরা বলছেন, জোবাইদা রহমান এ মামলায় পলাতক থাকায় এখন আত্মসমর্পণ করে আগে কারাগারে যেতে হবে। এরপর সে জামিন আবেদন করতে পারবেন। তার আগে কোন আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারবেন না তিনি।
পড়ুন: ঢাবিতে সংঘর্ষ: ছাত্রদল সভাপতি-সম্পাদকসহ ৩৫ জনের আগাম জামিন
এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ বহাল
২ বছর আগে