ট্র্যাজেডি
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: সোহেল রানার জামিন আদেশ আরও ৬ মাস স্থগিত
সাভারের রানা প্লাজা ধসে মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি ৬ মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মূলতবি) রেখেছেন আপিল বিভাগ। এই ৬ মাস তার জামিন স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান।
আরও পড়ুন: অবশেষে রানা প্লাজা ধস মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
গত ৬ এপ্রিল এ মামলায় সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে। এই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৯ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। ফলে রানার মুক্তিও স্থগিত হয়ে যায়।
এরপর গত ৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ১০ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার ফের তার জামিনের বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি ৬ মাস স্ট্যান্ডওভার (মূলতবি) রাখেন। পাশাপাশি হাইকোর্টের জামিন আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসের ঘটনা ঘটে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়।
যাদের প্রায় সবাই ছিলেন পোশাক কারখানার শ্রমিক। এ ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি ভবনের মালিক সোহেল রানা।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজা ধসের ৯ বছর আজ
রানা প্লাজা ধস : ৮ বছরে কেমন আছেন ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ পরিবার
১ বছর আগে
করতোয়ায় নৌকাডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮
পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় মঙ্গলবার আরও ১৮টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
এসব লাশের মধ্যে নারী ৩০ জন, শিশু ২১ জন এবং পুরুষ ১৭ জন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় জানান, মঙ্গলবার রাতে তৃতীয় দিনের মত উদ্ধার অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে আর মাত্র চারজন নিখোঁজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকা ট্র্যাজেডি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৪
মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত জরুরি তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ২৫ জন এবং সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ২৫ জন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক জানান, নদীর পানি নামতে শুরু করেছে, নদীর তলদেশে কাঁদার মধ্যে আটকে পড়া লাশ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ভাটির দিকে ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুডুরি দল স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করছেন।
তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত লাশগুলো শনাক্ত করে স্বজনদের হাতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত থাকবে জানান ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
অনুকূল আবহাওয়া ও নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারনে দ্রুতই লাশ উদ্ধার সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫
মঙ্গলবার দুপুরে রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিভেন্সের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়াহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদাসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসেন।
এসময় মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত জরুরি তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্রে রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য অবহিত করেন।
মন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে আউলিয়ার ঘাটে ওয়াই মডেলের ব্রিজ নির্মাণ শুরু হবে। ইতোমধ্যে নকশাসহ একনেকে প্রকল্পটি পাস হয়েছে।
২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজটির খুব শিগগিরই টেন্ডার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া নৌকাডুবিতে কর্মহীন মানুষ যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবার পূর্ণবাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: দু’দিনে অর্ধশত লাশ উদ্ধার
তিনি আরও জানান, সরকারের পক্ষে মৃতের প্রত্যেক পরিবারকে সৎকারের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ২৫ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। সকল লাশ উদ্ধারের পর পরিবারগুলোর অবস্থা বিবেচনা করে কার জন্য কি করা যায় সেটা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, নিখোঁজের যে তালিকা করা হয়েছে, শেষ ব্যক্তিটিকে উদ্ধার করা পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে।
পরে রেলমন্ত্রী মৃত পরিবারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতাও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বধেশ্বর মন্দিরে (নদীর অপরপাড়ে) মহালয়া উপলক্ষে এক বিশাল ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। এই ধর্মসভায় যোগ দিতে জেলার বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন শ্যালো মেশিন চালিত নৌকা করে যাচ্ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে মাঝনদীতে গিয়ে ট্রলারটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। সাঁতার জানা যাত্রীরা তীরে উঠে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে অনেককে উদ্ধার করে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় ট্রলারডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬, এখনও নিখোঁজ ৪০
২ বছর আগে
করতোয়ায় নৌকা ট্র্যাজেডি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৪
পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে আরও নয়টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় জানান, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার আত্রাই নদী থেকে দুটি ও পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা থেকে দুটি এবং বাকিগুলো দুর্ঘটনার স্থানের আশপাশ থেকে উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫
তিনি জানান, সকাল ৭টার দিকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে এবং নিখোঁজ আরও ২০ জন যাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, স্বজনদের কাছ থেকে তারা নিখোঁজ ৪০ জনের তালিকা পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় নৌকাডুবি: দু’দিনে অর্ধশত লাশ উদ্ধার
এদিকে, পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) দীপঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করতোয়ায় ট্রলারডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬, এখনও নিখোঁজ ৪০
রবিবার মহালয়া উপলক্ষে প্রায় ৮০ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা বধেশ্বর মন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় দুপুর আড়াইটার দিকে করতোয়া নদীর মাঝখানে ডুবে যায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
ওইদিনই নদী থেকে ২৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং বেশ কয়েক জন সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
২ বছর আগে
বিআরটি গার্ডার ট্র্যাজেডি: দুর্ঘটনার ১২ কারণ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত সংস্থা
গত মাসে উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যুর জন্য চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটিকে দায়ী করা হয় ।
রবিবার সচিবালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এ তথ্য জানান।
তদন্ত সংস্থা দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না গেঝুবা গ্রুপ করপোরেশন বা সিজিজিসিকে দায়ী করেছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: উত্তরায় গার্ডার ট্র্যাজেডি: প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা
পৃথকভাবে, তদন্ত সংস্থা দুর্ঘটনার পিছনে বারোটি পরিস্থিতিগত কারণ নির্দেশ করেছে। এগুলি নিম্নরূপ:
১. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো দিনের বেলা গার্ডারটি স্থানান্তর করছিল, যা দুর্ঘটনার পিছনে প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি।
২. ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো পূর্বানুমতি না নিয়েই সরকারি ছুটি উপেক্ষা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
৩. ক্রেনটি একজন সহকারী অপারেটর বা ক্রেনের প্রধান অপারেটরের সাহায্যকারী দ্বারা চালিত হয়েছিল।
৪. এমনকি অপারেটরের কোন লাইসেন্স ছিল না।
৫. একটি ভাঙা রাস্তায় ক্রেনটিকে চালাতে দেখা গেছে। ৬. ক্রেনে কোন ডিজিটাল মনিটর ছিল না।
৭. শ্রমিকরা কাজের জন্য কোনো পূর্বানুমোদন নেয়নি।
৮. কোন নির্দিষ্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ছিল না।
৯. ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কর্মীদের অযোগ্যতা।
১০. নিরাপত্তা প্রকৌশলীর অভাব।
১১. কোন জরুরি পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনা ছিল না।
১২. ওই দিন যারা কাজ করতে দেখা গেছে তাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেয়নি।
দুর্ঘটনার কয়েকদিন পর বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, সরকারি তদন্তে ট্র্যাজেডির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি থাকবে না।
আরও পড়ুন: উত্তরায় ক্রেন দুর্ঘটনা: বিআরটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
তদন্ত সংস্থা চুক্তি অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়াসহ কিছু সুপারিশও প্রদান করেছে। এগুলি হলো-নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার জন্য পূর্বানুমতি নিন; প্রকৌশলী, পরামর্শক, পুলিশ, সিটি করপোরেশন এবং সড়ক সংক্রান্ত কাজের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে; গার্ডারের মতো ভারী জিনিসগুলি স্থানান্তর করা উচিত সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পর রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত; জরুরি ঘটনায় ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রকল্প এলাকায় স্ট্যান্ডবাই ক্ষমতার ক্রেন বা রেকার, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি ডাক্তার রাখতে হবে।
কমিটি পূর্ব সম্মতি অনুযায়ী দুর্ঘটনায় আহতদের খরচ বহন করার পরামর্শ দিয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের একটি গার্ডার ক্রেন থেকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে গেলে দুই শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হন।
ঘটনার পরদিন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ছয় সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ মর্মান্তিক ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অবহেলার কারণে মৃত্যুর এফআইআরে কারও নাম নেই। তবে ক্রেন অপারেটর এবং প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না গেঝুবা গ্রুপ কো. লিমিটেডের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গার্ডার তুলতেই বেরিয়ে এলো ৫ নিথর দেহ!
২ বছর আগে
সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: দুই শিশুকে নিয়ে স্বামীর খোঁজে ঘুরছেন রেশমি
সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর থেকে গত দুই দিন ধরে নিখোঁজ স্বামীর সন্ধানে ছবি হাতে নিয়ে এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন রেশমি। কিন্তু কোথাও নেই স্বামী কাভার্ডভ্যান চালক শাহজাহানের খোঁজ। এভাবে প্রিয়তম স্বামীর খোঁজে গৃহবধূ রেশমির চোখে গভীর শোক আর দুশ্চিন্তার অশ্রু।
আজ সোমবার দুপুরে রেশমি এসেছেন ডিএনএ পরীক্ষার জন্য। কোলে তিন মাসের ছেলে সন্তান রিহাদ, বাম হাতে ধরেছিলেন তিন বছর বয়সী আরেক ছেলে রিহানকে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রের সামনে দেখা গেছে রেশমিকে।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফেনীর ৩ বাড়িতে শোকের মাতম
রেশমি জানান, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি নাজিরহাটে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। স্বামী কাভার্ডভ্যান চালক শাহজাহানের সঙ্গে শনিবার রাতে তার শেষ কথা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন কাভার্ডভ্যান নিয়ে ভাটিয়ারী যাচ্ছে। আগেও অনেকবার সেই ডিপোতে গিয়েছিল। কিন্তু এবার গিয়ে আর ফিরে আসেনি। সেই রাত থেকেই রেশমি বিভিন্ন স্থানে ছুটোছুটি করেছেন, কিন্তু খোঁজ মেলেনি তার।
রেশমি বলেন, ‘জানিনা কোথায় গেলে তাকে (স্বামী) ফিরে পাবো। অন্তত লাশটা পেলেও সান্ত্বনা পেতাম।’
একইভাবে সন্তানের খোঁজ পেতে ডিএন নমুনা দিতে এসেছেন হেমায়েতুল্লাহ নামে এক বাবা।
নোয়াখালী জেলার দক্ষিণ হাতিয়ার বাসিন্দা হেমায়েতুল্লাহ শনিবার গভীর রাত থেকেই প্রিয় সন্তানকে খুঁজে দিশাহারা। ছেলে মাইনুদ্দিনের (২০) ছবি নিয়ে কাঁদছিলেন এই বাবা।
তিনি জানান, আশুলিয়া থেকে কাভার্ডভ্যানে মালামাল নিয়ে চট্টগ্রামের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে এসেছিলেন তার ছেলে। শনিবার রাতে তার ছেলে ভিডিওতে আগুনের সেই দৃশ্য বাবাকে দেখাচ্ছিলেন। এরপর থেকে আর সন্তানের কোনো খোঁজ পাননি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ সিরাজগঞ্জের শফিউল
এছাড়াও কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এলাকার মো. রাসেলের (২০) খোঁজে তার স্বজনরা ডিএনএ নমুনা কেন্দ্রে ভিড় করছেন। রাসেল গাড়ি ওয়ারিং এর কাজ করতেন। এ রকম আরও বিপুলসংখ্যক স্বজন ভিড় করেন ডিএনএ নমুনা কেন্দ্রের সামনে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে ছুটে বেড়াচ্ছেন অনেকে। একটিবারের জন্য যাতে প্রিয়জনকে খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু কোথাও না পেয়ে হতাশ হয়ে শেষ পর্যন্ত আসছেন ডিএনএ নমুনা কেন্দ্রে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগের বাইরে স্থাপিত ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রের বাইরে বিপুল মানুষের ভিড়। স্বজনদের কান্না, আহাজারি। শোকাহত অনেকে বুকে নিখোঁজ স্বজনের ছবি লাগিয়ে প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। অনেকে ডিএনএ দেয়ার জন্য তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে চিকিৎসকরা তাদের নমুনা সংগ্রহ করছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ ৮ স্বজনের বিপরীতে ১২ জন নিকট আত্মীয় স্বজন ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: এখনও জ্বলছে সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপো
২ বছর আগে